আজীজ হঠাত করে হৃদয়ের অসুখে আক্রান্ত হওয়াতে ইন্ডিয়ার বেণ্গালুরু চলে গেল এক বন্ধুর সাথে অপারেশন করাতে। আমি ভিসা পাওয়ার পর প্রস্ততি নিলাম যাওয়ার এবং সৃজনের ভিসা হয়ে গেলে ও যাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে একাই চলে গেলাম আজীজকে সঙগ দেয়ার জন্যে। ৩-৪ দিন পর সৃজন ভিসা পেয়ে গেল। যেহেতু ছেলে (সৃজন) কখনও একা ট্রাভেল করেনি সেহেতু ভয় পাচ্ছিলাম কিভাবে কি করবে তাই ভেবে।



যেদিন সকালে সৃজন রওনা দিল, সেদিন প্লেন ছাড়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ফোনে বারবার কথা বলে নিশ্চিন্ত হয়ে নিয়েছি সব ঠিক আছে কিনা। ১ ঘন্টা পর একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে কল এল। ছেলের কন্ঠ শুনে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম - যাক বাবা কোলকাতা এয়ারপোর্ট এসেছে তো! কিন্তু সমস্যা হল এয়ারপোর্টে সিম পাওয়া যায় না.. আমরা ওকে একা একা বাইরে যেতে নিষেধ করেছি বিপদের আশংকায় তাই বাইরেও যায়নি ! পরে শুনলাম ভাগ্য গুণে আজীজের পরিচিত এক লোকের সাথে দেখা হয়েছিল ডোমেস্টিক এয়ারপো্র্টে যিনি ঢাকা ফেরার পথে তাঁর ফোনের সিমটা সৃজনকে ধার দিয়েছিলেন। ৬ ঘন্টা পর সৃজন বেণ্গালুরু রওনা হল আর আবার শুরু হল আমার টেনশন

রাত আটটায় বেন্গালুরু এয়ারপোর্ট থেকে ছেলে ফোনে জানাল সব ঠিক আছে এবং আমাদের নির্দেশমতই একটা ট্যাক্সি ক্যাব ভাড়া করে হাসপাতালের পথে রওনা করেছে।এয়ারপোর্ট থেকে হাসপাতাল যেতে দেড় ঘন্টার রাস্তা। আমি আর টেনশন ধরে রাখতে পারছিলাম না! ঘড়ির কাটা যতই এগুচ্ছে , আমার ব্লাড প্রেশারের ব্যারোমিটারও ততই একটু একটু করে বাড়ছে। আমার পাশের লোক নির্বিকার ভাবে শুয়ে আছে আর আমাকে বলছে বেন্গালুরু খুবই সিকিউরড জায়গা সুতরাং কোন ভয় নেই। কার কথা কে শুনে? আমি যা যা দোয়া-দরুদ জানি সব পড়ে শেষ করছি আর একটু পর পর ছেলেকে ফোন করছি। দেড় ঘন্টার রাস্তা, আসতে কেন দুই ঘন্টা লাগছে বলে ছেলে আর ছেলের বাবার কান ঝালাপালা করছি। হঠাত ছেলে বল্ল, "মা এখন আর ফোন করো না, আমি এসে সব বলছি।" মনে হল আমি আর নেই এই দুনিয়ায়





সৃজনের বয়স ১৬+ কিন্তু স্বাস্হ্যের কারণে ওকে দেখায় ২৬+







এয়ারপোর্ট থেকে আসতে দেরি হয়েছে কারণ প্লেনে আনুমাণিক ২৫ বছর বয়সী এক লোক ওর সাথে খাতির জমিয়ে ওর কাছে লিফট নিয়েছে। ফাও ভাবে সে তার বাড়ি গেছে (



পরদিন সকালে পেপার খুলে দেখি রাত-বিরেতে ট্যাক্সি ক্যাব ভাড়া করা এখন রিস্কি হয়ে গেছে বেংগালুরুতে - এই নিয়ে একতা ফিচার ছেপেছে। পড়ে আমার তো চোখ ছানাবড়া


সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:২৯