কিছু ব্যাক্তি ঢাবি ইস্যুতে প্রথম থেকেই বাড়াবাড়ি প্রচার করছেন। ধার্মিকের চেয়ে ঢের বড় ধার্মিক হয়ে নিকাব খুলতে জোর খাটাচ্ছেন। মনগড়া বিষয় আল্লাহর নামে প্রচার করে যাচ্ছেন। এটা ঠিক নয়।
নারীদের পর্দা নিয়ে ইসলামে দুটি প্রধান মত রয়েছে। বিশ্বের সর্ব বৃহত অংশের মুসলিমগন মুখ ঢাকাকে ফরজের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে গ্রহন করেছেন। হানাফী মাজহাবের মানুষ এটাই মেনে চলেন। ইরান সহ কিছু মুসলিম দেশ মুখ ঢাকাকে ফরজের অন্তর্ভুক্ত মনে করেন না। এটা একেবারেই বিধানের ব্যাখ্যার কারনে হয়েছে। প্রতিটি মানুষ তার বিশ্বাসের আলোকে চলবেন এটাই হল সবচেয়ে বড় বিষয়। ইসলামও তা স্বীকার করে।
আগের বছর ২০১৫ সালেও ঠিক একই সিন ক্রিয়েট করেন ঐ অধ্যাপক-
নিরাপত্তার প্রশ্ন- ঢাবিতে ঐদিন নিরাপত্তা নিয়ে কোন বিষয় ঘটেনি। শুধু মাত্র নিজের মতবাদকে অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতে নিরাপত্তার বিষয় ব্যবহার করা হয়েছে। নিরাপত্তার ব্যাপারে কনসার্ন থাকা ঠিক যেমন গুরুত্বপূর্ণ, নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে অন্যের অধিকার দমন তেমনই গুরুতর। দিনের পর দিন একজন ছাত্রীকে ধর্মীয় বিধান পালনের কারনে উপস্থিতি থেকে বঞ্চিত করার পর উপস্থিতি দেয়ার বিনিময়ে ভরা ক্লাসে নিকাব খুলতে বলা কী পরিমান লাঞ্ছনার বিষয় তা কেবল ভুক্তভোগী ছাত্রীই বুঝতে পারেন!
নিরাপত্তা বনাম ধর্মীয় বিধান কখনো কারো স্থলাভিষিক্ত হতে পারেনা। এ দুটি বিষয়কে সম্মিলিত ভাবে মেন্টেনের দিকে নজর দেয়াই শৃংখলাবোধ লালনকারীর বিবেচ্য বিষয়।
তাছাড়া বর্তমানে মুখ দেখে চিহ্নিত করার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। অফিসগুলোতেও হাতের ছাপ রিড করে অফিসের উপস্থিতি মেন্টেন করা হচ্ছে। নিরাপত্তার সমস্যা হলে অন্যের ধর্মীয় অধিকার হরনের মত স্পর্ষকাতর বিষয় গ্রহন করার চেয়ে ঐ পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি গ্রহন করা যায়। আর আজিজুর নিজেই ঢাবির একজন প্রভাবশালী সরকারপন্থী শিক্ষক হওয়ায় তার সিকিউরিটি কনসার্ন দূর করার ক্ষেত্রে এটা তার জন্য কোন ব্যাপারই ছিলোনা। অথচ উনি নিরাপত্তার কনসার্ন ব্যবহার করে বছরের পর বছর পড়তে আসা হিজাবী ছাত্রীদের হেনস্ত করে চলেছেন। আর এই সুস্পষ্ট ক্রাইমের বিরুদ্ধেই সেদিন পুরো ক্লাস এক হয়ে প্রতিবাদ করেছিলো। শিক্ষক বনাব ছাত্রীদের ডিবেটে টেবিল চাপড়ে সমর্থন জানানোর আওয়াজ এই বিষয়টি সুস্পষ্ট করে দেয়।
সিকিউরিটি ডিভাইস ছাড়াও, ঢাবির মত সর্বোচ্চ বাজেট প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে প্রতিটি ক্লাসের সামনে একজন করে মহিলা নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ কোন ব্যাপারই নয়। তাছাড়া, গেটে প্রবেশের সময় হিজাবী/নেকাবী নারীদের আলাদা লাইন বা আলাদা গেট দিয়ে প্রবেশ করিয়ে নারী গার্ড দিয়ে চিহ্নিত করা কোন ব্যাপারই নয়।
অথচ নারী স্বাধীনতাবাদী কিংবা হিজাব ইস্যুতে সিকিউরিটি কনসার্ন ব্যাক্তিরা ঢাবির শ্লীলতাহানী নিয়েও এত উদ্বেগ/উদ্যোগ নেননা কখনই। ফলে মানবতাবাদী, নারীবাদীরা যে সংখ্যাগুরুর ধর্মীয় অধিকার নিয়ে মোটেও কনসার্ন নন তা আবারও প্রকাশ হয়ে পড়ল। যা বাংলাদেশের সাধারন শ্রেণীর মানুষকে অবিশ্বাস ও দ্বিধায় ফেলে দিতে যথেষ্ট।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৪৭