টিভির রিমোট চাপতে চাপতে কাল সন্ধ্যায় চোখ হঠাৎ আটকে গেল বিটিভির পর্দায়। সংসদ অধিবেশন লাইভ দেখাচ্ছে। সুরন্জিত বাবু (ঘুষের টাকার বস্তার মালিক হিসেবে খ্যাত) তার স্বভাবসুলভ মুখ চোখ খিঁচিয়ে তার অমৃতবাণী বর্ষন করছেন। তারপর তোফায়েল (কনফিডেন্টলি মিথ্যা বলার ওস্তাদ), এর আগে নাকি জাসদের মঈনউদ্দিন বাদল (কাস্তে মার্কায় জুত করতে না পেরে নৌকায় আরোহন) চোখের পানিও ফেলেছেন! শেখ সেলিমের (শেখ বিশেষন ছাড়া যিনি ছন্নছাড়া) 'মাইম শো' শুরু হওয়ার আগেই আমি অন্য চ্যানেলে চলে যাই। পত্রিকান্তরে, জানলাম শেখ হাসিনাও তার এসব ডেপুটিদের সাথে সুরে সুর মিলিয়ে বেগম জিয়ার চৌদ্দগুস্টি উদ্ধার করেছেন। এটাই হল কথিত 'সংলাপের' হোস্টদের আপডেটেড অবস্থান (২৭/১০/২০১৩, সন্ধ্যা ৭ টা)।
বাংলাদেশ কেন পৃথিবীর কোন জাতি-গোস্টির দেশেরই এমন হোস্টের বাসায় অভুক্ত ভিখারীও যায় না, যাবেনা। আর কেউ যদি যায়, তবে তার বা তাদের 'সেন্স অব হিউমিনিটি' নিয়ে প্রশ্ন আছে। রাজনীতি বা কুটনীতির খতিয়ানে তাদেরকে নাবালক বলাই শ্রেয়:।
যে নিদারুন অপরাধটি বেগম জিয়া করেছেন বলে আওয়ামীলীগারদের অভিযোগ, শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা ৩২ মিনিটে শেখ হাসিনা বেগম জিয়াকে টেলিফোন করে গণভবনে ভাতের দাওয়াত দিয়েছেন সোমবার রাতে। প্রত্যুত্তরে (সম্ভবত

এনালাইসিস:
-২৮ অক্টোবর সোমবার শেখ হসিনার জন্ম বা বিবাহবার্ষিকী গোছের কিছু নয়। এবং প্রোএকটিভলি সে ধরনের কোন সামাজিক অনুস্টানে তিনি আন্তরিকতা নিয়ে বেগম জিয়াকে দাওয়াত দেননি যে, এ তারিখ হোস্ট কতৃর্ক অপরিবর্তনীয়।
-শেখ হাসিনার দাওয়াতকে 'এমনি এমনি' দাওয়াতের পর্যায়ভুক্ত করা যায়। যেমনটি আমরা বলি থাকি 'বাসায় এসো, নেক্সট উইকে একদিন আমাদের সাথে ডিনার করো' ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব ক্যাজুয়াল দাওয়াতে গেস্টের ইনকনভেনিয়েন্স বিবেচনায় না নিয়ে তাকে জোরাজুরি করা, সেদিন দাওয়াতে আসতে না পারলে গালাগালি করা কোন সুস্থ হোস্টের লক্ষন নয়
-অবশ্য শেখ হাসিনার এ দাওয়াত পুরোপুরি এমনি এমনিও নয়। বরং তা শুক্রবার ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশের হুমকির ফসল। সেদিন বেগম জিয়া বলেছেন, নেক্সট ২ দিনের মধ্যে ট্রানজিশনাল গর্ভমেন্টের ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ গ্রহন না করলে রোববার থেকে ৩ দিনের লাগাতার হরতাল (যা এখন চলছে)। সুতরাং এ দাওয়াত পুরাপুরিই মেকী। ট্রানজিশনাল সরকারের অর্থবহ উদ্যোগ নামক 'ভারী' বস্তুটাকে যারা দু নেত্রীর ফোনের 'হালকা ও সরস' বস্তুর সাথে গুলিয়ে ফেলেছেন তারা মূল সমস্যাকে ওভারলুক করছেন।
-হাসিনার ফোন পেয়েই যদি হরতাল প্রত্যাহার করে খালেদা জিয়া পড়িমরি করে গণভবনে ছুটে যেতেন তাতে কি ১৮ দলীয় জোটের নেত্রীর দিগ্বিজয় হত!
-সোমবারের স্থলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দাওয়াত কবুল করার পর কথা না বাড়িয়ে আয়োজনে চলে যাওয়াই হোস্টের কাজ। অথচ, তার পরিবর্তে এখন চলছে গীবতের মচ্ছব!
আমি মনে করিনা, বিদ্যমান বাস্তবতায় হাসিনা খালেদার মাঝে কথা বলার বা একসাথে ভোজনের কোন দরকার আছে বা তাতেই সব কিছু সমাধান হয়ে যাবে। নেগোসিয়েশন হয় পার্টিদের বার্গেইনিং পাওয়ারের উপর। লেট আস সী..................।