somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লুঙ্গি কি করিয়া সদ্য বড়লোকের জাত মারিল?

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেসবুকে ইভেন্ট ইনভাইটেশন পেয়ে সাথে সাথেই 'গোয়িং' সাইন করি। ভৌগলিক দুরত্বের কারণে সরেজমিন যেতে না পরলেও পত্রিকার বরাতে কনফার্ম হলাম এ লুঙ্গিমার্চ অত্যন্ত সফলভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। AAjfjsdআন্তরিক ধন্যবাদ আয়োজক ও অংশগ্রহনকারীদের।

একদার নিম্নজলাভূমি বারিধারা সাধারন মানুষের জোতজমি ছিল। সরকার আইনী গায়েরজোরে তা হুকুম দখল করে মূলত কূটনৈতিকপাড়া হিসেবে গড়ে তোলার জন্য। কিন্তু কালেকালে তাতে কিছু স্বদেশী বড়লোকও ড্যারা বাধেঁ। মোটাদাগে কমিশনখোর রাজনীতিক, অসাধু ব্যবসায়ী ও চোর আমলাদের নিরাপদ ভিআইপি আবাসস্থলে পরিণত হয় বারিধারা। উদাহরন হিসেবে চোরাধিরাজ লেজেহুমু এরশাদ প্রণিধানযোগ্য। হাতেগোনা কিছু সৎ ধনী মানুষ ওখানে নেই তা নয়, কিন্তু নিশ্চিৎ তারা হাতেগোনাই। ২০০৪-৫ সালে এরশাদের পাশের একটি বিল্ডিংয়ে নর্থসাউথে বিবিএ পড়ুয়া এক ছেলেকে আমি পড়াতাম। তার বাবার 'ইন্ড্রাস্ট্রি ছিল, ব্যবসা করেন' ইত্যাদি জানা গেলেও ছেলে, দারোয়ান, তার মা কাউকেই জিঙ্গাসাবাদ করে কর্তার পেশা পরিস্কার জানা যায়নি। এক মাসের বেতন পরের মাসে পাওয়া গেলেও তার পরের মাসের বেতন অদ্যাবধি (২০১৩) পাওয়া যায়নি! কয়েক মাস ফলোআপ করেও না! বারিধারার সব গৃহকর্তা/মা/ছেলেরা এমন 'বেঈমান ও প্রবঞ্চক' না হলেও তাদের অর্জিত সম্পদ ও অবস্থানে যে ব্যাপক মাত্রায় ঘাপলা আছে তা নিশ্চিৎ।

তবে ঘাপলাবাজরা আন্ধাররাইতে বিলাইর মত থাকলে কারো কিছু আসত না, যেতও না। হঠাৎ তাদের প্রেস্টিজের উদয় হয়েছে। লুঙ্গি নামক একটা নিরীহ প্রাণহীন পোষাক তাদের 'কস্টার্জিত' স্ট্যাটাসকে কর্দমাক্ত করেছে বলে খবরে প্রকাশ। তবে যেকোন মানুষ বা গোটাদেশ নয়, তাদের রোষানলে পড়েছে দরিদ্র রিকশাচালকরা। এলাকার সমিতির সভাপতি লুঙ্গি পরে বারিধারায় রিকশা চালনা ব্যান করেছেন। তা তামিল করছে রিকশাওয়ালাদের কাছাকাছি আরেকটি নিপীড়ীত গোস্টী প্রহরীরা। এমনিতে ঘাপলাবাজ চোর চাট্টা কিসিমের হঠাৎ বড়লোকরা স্ট্যাটাস ঝাড়েন কাজের বুয়া, দারোয়ান, ড্রাইভার, পিয়ন, ওয়ার্কার শ্রেনীর দুর্বল মানুষদের উপর। তারা কায়দা করে ব্যাংকডাকাতি করলেও পুলিশ গিয়ে প্রথম বাঁধে দারোয়ানকে!

এটা নিশ্চিৎ করেই বলা যায়- বারিধারার আলোচ্য বাঙ্গালী অধিবাসীরা স্পেন বা তুর্কিস্তান থেকে হিজরত/মাইগ্রেশন করে সেখানে আসেননি। এসেছেন সোনাইমুড়ি, ভুরুঙ্গামারি, মুলাদী, কালীহাতি থেকে। তাদের বাপদাদা চৌদ্ধগুস্টি লুঙ্গি শুধু পড়েননি- লুঙ্গিই ছিল জীবন। লুঙ্গির কোছায় মুড়ি, খৈ, বুট রেখে খেতেন; অনেকে বিড়ি, দেশলাই, লাইটার রাখতেন; এক কাছায় টাকা গুঁজে রাখতেন; অযুর পরে লুঙ্গি দিয়েই তোয়ালের কাজ সারতেন; গরমে ঘাম মুছতে লুঙ্গি। ছোটখাট নদীনালা সামনে আসলে তারা কাছাখুলে নদীপার বলে....তা পেরুতেন, মাছ ধরে কোচায় ভরতেন। এছাড়া প্রাকৃতিক চাপে লুঙ্গিওয়ালা কত আরামেই না যেথায় খুশি বসে যেতে পারেন। প্যান্টে কি এই সুবিধা আছে? ওদের বাপদাদাকে জিজ্ঞেস করলে জানা যাবে কত আরামে তারা রাইতে এ লুঙ্গি পরে ঘুমাতেন, অপরপক্ষের ডাকে তাৎক্ষনিক সাড়া দিতেন.....আরো কত সুবিধা।

এহেন লুঙ্গি কি করিয়া সদ্য বড়লোকের জাত মারিল তা বুদ্ধিতে কুলোয়না।

লুঙ্গি বাংলাদেশের ডমেস্টিক তৈরি পোশাক শিল্পের বড় খাত। জনপ্রতি ২ টি করে লুঙ্গি থাকলেও দেশে প্রায় ১৬ কোটি লুঙ্গির বাজার। ১ টি করে পাল্টালেও বছরে ৮ কোটি পিস নতুন লুঙ্গির মার্কেট। প্রবাসী বাঙ্গালীরা মাটি পানি ফল কিছুই নিয়ে যেতে পারেননা। কিন্তু বাঙ্গালীর আবহমান লুঙ্গি ব্যাগে নিয়ে ইমিগ্রেশন ছাড়ে। এভাবে দেশের বাইরে মধ্যপ্রাচ্য, ওশেনিয়া, আসিয়ান, ই ইউ, নর্থ আমেরিকাতে লুঙ্গির বিরাট বাজার ছড়িয়ে পড়েছে। নরসিংদী, সিরাজগন্জ, নারায়নগন্জ ও পাবনা এদেশের সবচে বড় লুঙ্গি উৎপাদনস্থল। এখানে গ্রামে গন্জে বাড়ির উঠোনে লাখ লাখ তাঁতে কাজ করছে মানুষ, বিশেষ করে ঘরের কাজ ও বাইরের কাজ একসাথে করার সুবিধাসম্পন্ন এ শিল্প পল্লীকর্মসংস্থানে মহান অবদান রেখেছে। লুঙ্গি বানানো একটি মহান শিল্প। যারা দেখেননি মিস করেছেন। একটি একটি সুতোকে হাত ও পায়ের কৌশলে বুনন করতে করতে এ লুঙ্গি। ২০০ থেকে ৫০০ টাকার আরামদায়ক লুঙ্গি ইউরোপ থেকে ইমপোর্ট করে ৩০০০ টাকায় পরলে জাত যেতনা, জাতে উঠত বোধ হয়।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×