সে প্রায় এক যুগ আগের কথা। অফিস ট্যুর শেষে ব্যাংকক থেকে দেশে ফিরছিলাম থাই এয়ারওয়েজ এর বিমানে। সাথে ছিল এক কলিগ, যে উইন্ডো সাইডে বসেছিল। তো, কিছু কিছু বাঙ্গালীদের একটু স্বভাবের দোষ আছে। ফ্রী পেলে আলকতরাও খেতে চায়। সেখানে যখন থাই এয়ারওয়েজে লাল পানি দিচ্ছিলো, তখন নিজের কোন হিতাহিত জ্ঞান থাকলো না। ২-৩ গ্লাস খেয়ে ফেললো, মনে হচ্ছে এইবারই প্রথম খেলো। তারপর সে মিয়ানমারের আকাশে বসে ৩৫,০০০ ফিট উপর থেকে রাস্তায় চলা বাস, গাড়ি সব পরিষ্কার খালি চোখে দেখা শুরু করলো। আর ২০ মিনিট পর হড় হড় করে বমি করে দিলো। কাপড়-চোপড় বিমানের সিট সব একাকার হয়ে গেল। আমার অবস্থা চিন্তা করেন একবার।
আরেক কলিগের কথা বলি। সেও মারাত্মক খোর। বিমানে প্রথমবারের মত দেশের বাইরে যাচ্ছে। ইমিগ্রেশন পার হয়ে যখন ডিউটি ফ্রি জোনে ঢুকলো, তখন বিভিন্ন দোকানে সারি সারি লাল নীল বোতল দেখে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলো না। কিনে ফেললো ২ বোতল। বোতল নিয়েই বিমানে উঠলো, বিমানে গিয়ে দেখলো আরো এলাহী অবস্থা। চাইলেই পাওয়া যাচ্ছে, তাহলে খামাকা নিজের বোতল খুলবে কেন? থাইল্যান্ডে গিয়ে আরো চমকিত! এত সস্তায় শত শত রকমের বোতল!! খামাকা দেশের বোতল খরচ করে লাভ কি? সপ্তাহ খানেক থাইল্যান্ডের বোতল দিয়ে চললো তার। এবার দেশে ফেরার পালা। দেশের ঐ বোতল জোড়া নিয়েই ঢাকা বিমানবন্দর নামলো। মাথায় ছিল, দেশের কিনা বোতল দেশে গিয়েই খাবে।
কিন্তু বিধিবাম, কাস্টম কর্তৃপক্ষ তাকে ঐ বোতল জোড়া নিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে বের হতে দেয় নাই। সে চেয়েছিলো, এয়ারপোর্টে খেয়েই বোতল খালি করে দিবে, কিন্তু সেটাও দেয় নাই। বেচারার ঐ বোতলের দুঃখ অনেকদিন ছিল।
আজকে ফেসবুকে বাংলাদেশ বিমানের একটা ভিডিও দেখলাম, এক মাতাল প্যাসেন্জার এর। ৮-১০ ঘন্টা ভ্রমনের সময় যদি পাশের সহযাত্রী মাতাল হয়, তবে খুব কষ্টকর, যদি আপনার পানের অভ্যাস না থাকে। ঐ যাত্রীকে দেখলাম দড়ি মোটা দিয়ে বাঁধা হয়েছে। এই যাত্রীকে দেখে মনে হলো, মাতাল প্যাসেন্জারদের সামলানোর জন্য বিমানে ছোটখাটো গারদ রাখা দরকার মনে হয়।