এটি একটি অপপ্রচারের পর্যালোচনা এবং ইসলাম ও ইসলামী আন্দলনকে বিকৃতরূপে উপস্থাপনার প্রতিবাদী পোষ্ট! "দেহপূজা" নামক ব্লগারের পর পর দুটি পোষ্টের জবাবে- দেহপূজার পোষ্ট নং-১ ও দেহপূজার পোষ্ট নং-2
"দেহপূজা" নামক ব্লগার তার পোষ্টে বলেচে:
"১. ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (সপক্ষান্তরে
জামায়াতে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মাওলানা আবুল আ'লা মওদূদী(রঃ)।"
জামায়াতের গঠনতন্ত্র:
"মৌলিক আকীদা
ধারা-2
এ সংগঠনের মৌলিক আকীদা:
(.................কালেমা আরবীতে)
(লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ) অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল।"
(পৃ-১০, ১০ম সংস্করণ)
অভির কথা: দেখুন কি চরম মিথ্যার ধারক এই হিংস্ররা!
"দেহপূজা" নামক ব্লগার তার পোষ্টে বলেচে:
"২. ইসলাম ধর্মের ধর্মগ্রন্থের নাম: আল কোরআন, পক্ষান্তরে
জামায়াতে ইসলাম ধর্মের ধর্মগ্রন্থের নাম: তাফহীমূল কোরআন।"
জামায়াতের গঠনতন্ত্র:
"ধারা-৪
জামায়াতের স্থায়ী কর্মনীতি নিম্নরূপ হইবেঃ
১। কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ কিংবা কোন কর্মপন্থা গ্রহণের সময় জামায়াত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শুধুমাত্র আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সাঃ) নির্দেশ ও বিধানের প্রতি গুরুত্ব প্রদান করিব।" (পৃ-১৪, ১০ম সংস্করণ)
অভির কথা: উপরে উল্লেখিত "আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সাঃ) নির্দেশ ও বিধানের" বলতে আল্লাহর বিধান অর্থাৎ, আলকোরান এবং রাসূলের সুন্নার কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া জামায়াতের লোকদের পক্ষ হতে প্রকাশিত হয়েছে আরবী ভাষা থেকে অনুদিত তাফসীর "ফী যিলালিল কোরান" তাফসীরে ইবনে কাসীর সহ সকল তাফসীরই জামায়াতের লোকেরা সীমাহীন গুরুত্বের সাথে অধ্যয়ন করে।
তাহলে দেখুন কত ভয়াবহ মিথ্যার ধারক ও প্রচারক এই চক্রটি!
"দেহপূজা" নামক ব্লগার তার পোষ্টে বলেচে:
"৩. ইসলাম ধর্মানুসারে ইসলাম শব্দটি এসেছে সালাম শব্দ থেকে,যার অর্থ শান্তি পক্ষান্তরে জামায়াতে ইসলাম ধর্মানুসারে, ইসলাম শব্দটির অর্থ হচ্ছে আত্মসমর্পণ।"
অথচ অভিধানগুলোর প্রতি নযর করুন:
# "ইসলাম"(আরবী)=সমর্পন, আত্মসমর্পন, বশ্যতা, ইসলামগ্রহণ।
(আধুনিক আরবী-বাংলা অভিধান, ড. মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, রিয়াদ প্রকাশনী, বাংলা বাজার, ঢাকা। পৃ-৮০)
# ইসলাম[A]n=1 Islam, the Arabic name for the religion of peace as preached and practiced by prophet Muhammad (sm). 2 (lit) submitting to the will of/making peace with the Creator.
(Bengali-English Dictionary, Bangal Academy. P-69)
# ইসলাম, এসলাম=1 প্রাকৃতিক শান্তির ধর্ম- হজরত মুহম্মদ (সা.) একে পূর্ণতা দান করে প্রচার করেন। ২ আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ।
(ব্যবহারিক বাংলা অভিধান, বাংলা একাডেমী, পৃ-144)
অভীর কথা: কতটা মূর্খ হলে এই সব ঠুনকো পয়েন্ট দিয়ে ইসলামী আন্দোলনকে প্রতিহত করার আকাংখা করতে পারে তা ভেবেই আক্কেল গুড়ুম!
"দেহপূজা" নামক ব্লগার তার পোষ্টে বলেচে:
"৪. ইসলাম ধর্মে ইহকাল অপেক্ষা পরকাল কে গুরুত্ত্ব দেয়া হয়েছে বেশী পক্ষান্তরে জামায়াতে ইসলাম ধর্মে পরকাল অপেক্ষা ইহকাল কে গুরুত্ত্ব দেয়া হয়েছে বেশী।"
জামায়াতের গঠনতন্ত্র:
"মৌলিক আকীদা
ধারা-২
3। নিজেকে আল্লাহর নিকট দায়ী ও জবাবদিহি করিতে বাধ্য মনে করিবে, শক্তি-সামর্থের ব্যবহার এবং স্বীয় আচরণ ও ক্ষমতা প্রয়োগে সবসময় সত্যের প্রতি লক্ষ্য রাখিবে যে, পরকালে আল্লাহ তায়ালা সম্মুখে এইসব বিষয়ের হিসাব অবশ্যই দিতে হইবে।"
(পৃ-১1, ১০ম সংস্করণ)
অভির কথা: পৃথিবীর সকল জ্ঞানী এ বিষয়ে একমত যে জবাবদিহিমূলক সমাজব্যবস্থাই দুনিয়ায় শান্তি স্থাপনে সক্ষম। তেমনি জবাবদিহিমূলক জীবন ব্যবস্থার অনুসরণের মাধ্যমে পরকালে শান্তি লাভ সম্ভব যা জামায়াত গঠনতন্ত্রে সংযুক্ত করে তার কর্মীদের জন্য বাধ্যতামূলক করেছে।
তারপরও কি আপনারা এ অন্ধ-হিংসুটে ইসলাম বিদ্বেষীর কথাকে বিশ্বাস করবেন?
"দেহপূজা" নামক ব্লগার তার পোষ্টে বলেচে:
"৫.ইসলাম ধর্মে আধ্যাত্মিকতার গুরুত্ত্ব সর্বাধিক,পক্ষান্তরে জামায়াতে ইসলাম ধর্মে আধ্যাত্মিকতার কোন স্থান নেই।"
পোষ্টদাতা যদি আধ্যাত্মিকতার অর্থ সূফীবাদ-পীরবাদ-মাজারপূজা ধরে থাকে তবে ইসলামে তা হারাম তাই জামায়াতে ইসলামী আধ্যাত্মিকতার নামে এমন হারাম কাজ কখনোই করতে পারে না।
আর যদি আল্লাহর সাথে আত্মিক সম্পকর্ অর্থে ধরে থাকে তবে জামায়াতের প্রশিক্ষণ বৈঠকগুলোতে অনেক বেশী গুরুত্ব দেয়া হয় যে বইটিতে তা হল "চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান" লিখেছেন-নঈম সিদ্দিকী। এ বইয়ের শুরুতেই একটি অধ্যায় রয়েছে "আল্লাহর সাথে যথাযথ সম্পর্ক"। যেখানে লেখক-১। মৌলিক ইবাদাত ২। কোরান হাদীস অধ্যয়ন ৩। রাত্রিজেগে তাহাজ্জুদসহ যাবতীয় নফল ইবাদাত ও 4। সার্বক্ষণিক যিকির-দোয়া –এ চারটি পয়েন্টে আধ্যাত্মিকতা তথা আল্লাহর সাথে আত্মিক সম্পর্ক স্থাপনের অত্যন্ত সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন যা থেকে জামায়াত কর্মীরা উত্তম চরিত্রের প্রশিক্ষণ লাভ করে থাকে। (বইটি থাকলে অথবা কিনলে 9 থেকে 14 পৃষ্ঠার মধ্যে এগুলো পাবেন)
অভির কথা: তাহলে দেখুন তো জামায়াত সঠিক ইসলাম পালনে প্রচারে প্রতিষ্ঠায় কতটা উত্তম সংগঠন!
"দেহপূজা" নামক ব্লগার তার পোষ্টে বলেচে:
"৬. ইসলাম ধর্ম মানব জীবনের প্রতিটি দিক ও বিভাগ নিয়ে আলোচনা করে পক্ষান্তরে জামায়াতে ইসলাম ধর্ম রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিয়ে অধিক আলোচনা করে।"
জামায়াতের গঠনতন্ত্র:
"স্থায়ী কর্মসূচী
ধারা-6
জামায়াতের স্থায়ী কর্মসূচী নিম্নরূপ হইবেঃ
১। (আহ্বান ও প্রচার) সর্বশ্রেণীর মানুষের নিকট ইসলামের প্রকৃত রূপ বিশ্লেষণ করিয়া চিন্তার বিশুদ্ধিকরণ ও বিকাশ সাধনের মাধ্যমে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলামের অনুসরণ ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অনুভূতি জাগ্রত করা।
২। (সংগঠন ও প্রশিক্ষণ) ইসলামেক জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করিবার সংগ্রামে আগ্রহী সৎ ব্যক্তিদিগকে সংগঠিত করা এবং তাহাদিগকে জাহিলিয়াতের যাবতীয় চ্যালেঞ্জের মুকাবিলায় ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ ও ইসলাম কায়েম করিবার যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মীরূপে গড়িয়া তুলিবার উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষণ দান করা।
৩। (সামাজিক সংস্কার) ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে সামাজিক সংশোধন, নৈতিক পূনর্গঠন ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন সাধন এবং দুঃস্থ মানবতার সেবা করা।
৪। (রাষ্ট্রীয় সংস্কার) ইসলামের পূর্ণাংগ প্রতিষ্ঠাকল্পে গোটা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় বাঞ্ছিত সংশোধন আনয়নের উদ্দেশ্যে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সরকার পরিবর্তন এবং সমাজের সর্বস্তরে সৎ ও খোদাভীরু নেতৃত্ব কায়েমের চেষ্টা করা।"
(পৃ-১5, ১০ম সংস্করণ)
অভির কথা: প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন- চার দফা স্থায়ী কর্মসূচীর মধ্যে শুধুমাত্র চতুর্থ দফায় রাষ্ট্রীয় সংশোধনের কথা আছে। অথচ মানুষকে ইসলামের দিকে ডাকার জন্য প্রথম দফা, সংগঠিত করা ও ইসলামী প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য দ্বিতীয় দফা ও সামাজিক যাবতীয় খারাপ দিকগুলোর সংস্কার এবং যাবতীয় দূর্যোগে জামায়াতের সেবা-অনুদানের ব্যাপারগুলো নিয়ে কিন্তু ওদের কোন মাথাব্যাথা নেই। কেবল রাষ্ট্রীয় সংস্কার পয়েন্টেই তাদের মাথাটা খারাপ হয়ে পড়ে!
"দেহপূজা" নামক ব্লগার তার পোষ্টে বলেচে:
"৭. যুগে যুগে অনেক নতুন ধর্ম এসেছে, যেমন;-- দীন ঈ ইলাহী, কাদীয়ানী.
কবির ধর্ম,তাবলীগী, তেমনি একটি ধর্ম হচ্ছে জামায়াতে ইসলাম।"
উপরে উল্লেখিত জামাতের গঠনতন্ত্র ও বইপুস্তক থেকে দেয়া কোটেশনগুলো প্রমাণ করে যে জামাত আল্লার পাঠানো ও রাসূলে(সা.)র প্রচার করা ইসলামকেই মেনে চলে এবং প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে। তাছাড়া আরো লক্ষ্যণীয় যে, পোষ্টদাতা "তাবলীগী" শব্দ উল্লেখ করে ইসলামের এই খেদমতী ও দাওয়াতী দলটিকে একটি ধর্ম হিসেবে উল্লেখ করে দীন ঈ ইলাহী, কাদীয়ানী, ইত্যাদির সাথে তুলনা করেছে। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে পোষ্টদাতা ও তার সমর্থকরা আসলে জামাতের বিরোধী নয় বরং ইসলামের বিরোধী।
অভির কথা: প্রিয় পাঠক, আর সময় নষ্ট করা উচিত হবে না- সিদ্ধান্ত নিন। এরা জামাতকে একটা ইস্যূ হিসেবে রেখেছে আসলে এদের টার্গেট ইসলামকে বাংলার যমীন থেকে উৎখাত করা। আপনারা কি তা চান? বলুন?
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৮:০৮