somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেসক্লাবের গোলটেবিল: জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তিকে উৎখাতের উদ্দেশ্যই ছিল ২৮ অক্টোবর!

২৯ শে অক্টোবর, ২০০৭ সকাল ৭:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘২৮ অক্টোবরের ট্রাজেডিঃ বাংলাদেশের রাজনীতিতে শিক্ষা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন,

বাংলাদেশকে অকার্যকর করা, গণতন্ত্র ধ্বংস এবং জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তিকে উৎখাত করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবেই ২৮ অক্টোবরের ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। তারা বলেন, এই ঘটনার সাথে কারা জড়িত ছিল তা ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট বোঝা গেলেও তাদেরকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। বক্তারা দোষীদের দ্রুত বিচার আইনে শাস্তি দেয়ার দাবি জানান। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার চেতনায় লালিত জাতীয় নাগরিক সংগঠন চিরন্তন বাংলাদেশের উদ্যোগে এই গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিশিষ্ট সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও চিরন্তন বাংলাদেশের সভাপতি ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সঞ্চালনায় উক্ত গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনা করেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আসম হান্নান শাহ, সাবেক সচিব শাহ আব্দুল হান্নান, দৈনিক নয়াদিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, জাগপা’র সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব অধ্যাপক আহমদ আব্দুল কাদের, সাপ্তাহিক সোনার বাংলা সম্পাদক মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকুমার বড়ুয়া, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা, ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্বাধীনতা ফোরাম সভাপতি আবু নাসের মোঃ রহমতুল্লাহ, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, চিরন্তনের উপদেষ্টা ড. আইম নেছার উদ্দিন, সচেতন যুব সমাজের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আহসান প্রমুখ। মূল প্রব উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট কলামিস্ট সাদেক খান।

আসম হান্নান শাহ বলেন, ২৮ অক্টোবরের ঘটনা এত নিকটে ঘটেছে যে সেই ঘটনা সবারই জানা রয়েছে। তারপরও একটি চিহিßত মহল সাংবাদিকদের সহায়তায় সেই ঘটনা বিকৃত করার চেষ্টা করছে। তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এই ঘটনা ২৮ অক্টোবরে নয় অনেক আগেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকসহ বিভিন্নভাবে অকার্যকর করার চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রশাসন এখনও পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি। তিনি বলেন, যারা ঐদিন আত্মাহুতি দিয়েছে তাদের রক্ত বৃথা যাবে না। তারা প্রমাণ করেছে জান দেব তবুও ঈমান দেব না। তিনি বলেন, সেদিনের আক্রমণ শুধু জামায়াতের বিরুদ্ধে নয়, ৪ দলীয় জোট তথা জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী আদর্শের বিরুদ্ধে ছিল।

শাহ আব্দুল হান্নান বলেন, ২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক অবক্ষয়ের একটি কারণ ছিল। মূল ইসলামী শক্তিকে উৎখাত করার জন্য এই ঘটনার অবতারণা করা হয়েছিল। তিনি এ সময় সাবেক আইজিপি ও ডিএমপির ভূমিকার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, তাদের কর্তব্যের অবহেলার ব্যাপারটিও খতিয়ে দেখতে হবে। তিনি ২৮ অক্টোবরের ঘটনার সাথে জড়িত দোষীদের দ্রুত বিচার আইনে শাস্তি দেয়ার দাবি জানান।

আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, এ দেশ থেকে বৃটিশরা চলে যাবার পর সবচেয়ে কালো দিবস ২৮ অক্টোবর। এ ধরনের পিটিয়ে মানুষ হত্যার ঘটনা কখনো ঘটেনি। তিনি মিডিয়ার বিকৃত প্রতিবেদন ছাপা প্রসঙ্গে বলেন, মিডিয়ার এ অবস্থা চলতে থাকবে। রাজনৈতিক সরকার আগে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। তার কারণ মিডিয়ার মাধ্যমে সবচেয়ে তাড়াতাড়ি জনগণকে আকৃষ্ট করা যায়। শফিউল আলম প্রধান বলেন, ২৮ অক্টোবরের পূর্বাপর ঘটনাগুলো আমাদের বিবেচনা ও আমলে আনা উচিত। বাংলাদেশের অস্তিত্ব নষ্টের চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে করা হচ্ছিল। তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবরের শিক্ষা থেকে করণীয় ঠিক করতে হবে। এই ঘটনার অন্যতম শিক্ষা হলো বিদেশীদের ওপর নির্ভর করা যাবে না।

মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বলেন, ২৮ অক্টোবরের ঘটনার লক্ষ্য ছিল সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধা দিয়ে নৈরাজ্যকর পরিবেশ বজায় রাখা এবং ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা। তিনি বলেন, ৭ ঘণ্টা ধরে হামলা চলল অথচ পুলিশ কোন ব্যবস্থা করতে পারেনি। পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে আলাপ করলে কোন জবাব দিতে পারেনি। তিনি বলেন, সেদিন পুলিশ যদি অস্ত্র বাদেও শুধু দুটি সংগঠনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকত তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না। তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর জামায়াতের ওপর আঘাত হানলেও এর আসল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে ধ্বংস ও অকার্যকর করা। জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবেই এই সংকট উত্তরণ করতে পারবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অধ্যাপক সুকুমার বড়ুয়া বলেন, ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী আশরাফুল মাখলুকাত হলে আমাদের কাজও হবে সর্বশ্রেষ্ঠ। আমরা অধম কাজ করতে পারি না। ২৮ অক্টোবর জাতির জন্য কলংকময় দিন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। আব্দুল কাদের মোল্লা বলেন, সেদিন পল্টনের সমাবেশে ২ জন মন্ত্রী উপস্থিত থাকলেও তাদের সিকিউরিটির ব্যবস্থা করা হয়নি। ২টা মিটিংয়ের মাঝে কোন পুলিশ ব্যারিকেডও ছিল না। এমনকি পুলিশের বিবস্ত্র করার পরও ইউনিফর্ম রক্ষা করতে কেউ আসেনি। তাহলে কি কোনখান থেকে নির্দেশ ছিল-যত খুনই হোক কিছু বলা যাবে না? তিনি বলেন, আমিন বাজারে ২ র‌্যাব সদস্য হত্যার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আসামীদের ধরতে পারলেও স্পষ্ট ভিডিও ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে ধরতে পারেনি প্রশাসন। তারা গ্রেফতার হয় না কেন? তাহলে কি বুঝতে হবে এ ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছিল? তিনি বলেন, এসব প্রশ্নের জবাব দিতে হলে জড়িতদের গ্রেফতার করে দেখাতে হবে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোন দলের পক্ষের নয়।

ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এই ঘটনাকে মূল্যায়ন করলে বলতে হয় গণতন্ত্র হত্যা দিবস। রাজনৈতিক ব্যর্থতাই এ অবস্থার জন্ম দিয়েছে। আর এই ব্যর্থতার জন্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র কাজ করেছে। মূল প্রব েসাদেক খান বলেন, অমানবিকতা ও পাশবিকতা জাতীয় জীবনকে যে চরম পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে সেটা দেশবাসীকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে ২৮ অক্টোবরের ঘটনা। তিনি বলেন, হরতাল ধ্বংসের রাজনীতি যেন আর ফিরে না আসে সেটাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও জনগণের প্রত্যাশা। সূত্র
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×