মহাজোট সরকার কে যে আশা নিয়ে দেশের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ভোটার নির্বাচিত করেছিল তা যে আস্তে আস্তে হতাশায় রূপ নিতে যাচ্ছে তা না বললেও চলে। গত নির্বাচনে আওয়ামিলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২০০-র ও বেশি আসন নিয়ে বিজয় লাভ করে । আমার ধারণা মহাজোটের এ বিজয়ের পেছনে গত জোট সরকারের শাসনামলের ব্যর্থতাই বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছিল। বিশেষকরে জনগন যে সরকারের আমলে জংগীবাদের উত্থান ঘটেছিল তাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায়নি। দিন বদলের অঙ্গীকার নিয়ে আসা মহাজোট সরকারের দুই বছরেরও বেশি সময়ের শাসনামলে হয়তো ব্যর্থতার পাশাপাশি কিছু সাফল্যও থাকবে কিন্তু আমার কাছে যেটা সবচেয়ে দৃষ্টিকটু লেগেছে তা হল এদের স্বেচ্ছাচারিতা আর প্রতিহিংসাপরায়ন মনোভাব।
শুরুটা হয়েছিল সম্ভবত পিলখানায় সংঘটিত বি ডি আর বিদ্রোহ দিয়ে যার এখন পর্যন্ত সর্বশেষ হচ্ছে গ্রামীন ব্যাংক থেকে ডক্টর ইউনূসকে অপসারণ।
পিলখানা হত্যাকান্ড নিয়ে কারো কারো দ্বিমত থাকতে পারে কিন্তু বিদ্রোহ দমনে সরকারের কতটুকু সদিচ্ছা ছিল তা সবসময়েই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল বরং এই হত্যাকান্ডের সাথে সরকারি দলের কয়েকজন সাংসদের জরিত থাকার খবর পাওয়া যায়। পিলখানায় দায়িত্বপালনরত ৫ জন সেনা কর্মকর্তা এমনি এমনি তো আর ব্যারিস্টার তাপস কে হত্যা চেষ্টা করেন নি।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালিন সময়ে আওয়ামিলীগ সরকারের কাছে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নাম একটুও অসংগত মনে হয়নি এবারই হল। অবশ্য এ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু সেতুর নাম পরিবর্তন করাটা একটা কারন ছিল। তার মানে "প্রতিশোধ"। তারা দেখিয়ে দিল তাদের যা মন চায় তা করার ক্ষমতা আছে।
ডক্টর ইউনুস এর প্রতি এই প্রতিহিংসার কারণ আর কিছুই না তত্বাবধায়ক সরকারের সময় ডক্টর ইউনুসের কর্মকান্ড। একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে চেয়েছিলেন যা হয়তো ঐ সরকারের মাইনাস টু ফর্মুলার অংশ ছিল। যে কারনে আমরা দেখেছি সুযোগ পেলেই বিভিন্ন কারনে ডক্টর ইউনুসকে নিয়ে সমালোচনা। এমন কি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত সংসদে তার সমালোচনা করেছেন। সমালোচনা করা হয়ত ঠিক আছে কিন্তু একজনের নিজের প্রতিষ্ঠিত একটি প্রতিষ্ঠান থেকে কাউকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টাটা কি যুক্তিসংগত?
আমি জানি না জোট সরকারের চিন্তাভাবনাটা কি তারা কি মনে করছে যে তারা সবসময়ই ক্ষমতায় থাকবে? মনের মাঝে বিন্দুমাত্র সংসয় থাকলে তো এতটা স্বেচ্ছাচারি হওয়ার কথা নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১১ রাত ১০:১৭