somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক্সের জন্মদিনঃ এ বার্থ ডে ট্রিট (মহাপুরুষ সিরিজ)

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





- কিরে বন্ধু কি খবর? তোর অবস্থা এমন কেন?

বন্ধুর প্রশ্নে হাসব না কাদব বুঝতে পারছি না । তাই বললাম আরে না ভাল অবস্থা । কোন টেনশন নাই । চিন্তা নাই । মহাপুরুষদের আবার চিন্তা কিসের ।

- তারপর ও মনে হচ্ছে কিছু ভাবছিস। আমাকে বলতে পারিস।

- সারা জীবন তুই আমার কাছে সাহায্য নিলি । তোর সাড়ে ১৩ নাম্বার গার্লফ্রেন্ডের লগে ব্রেক আপের সময় যে কোলবালিশ ভিজাইলি তোরে নিয়া যে ওর বাসায় গেলাম । তুই যে ওরে জানলা দিয়া ফ্লাইং কিক দিলি । এই বুদ্ধি কার কাছ থেকে নিছিলি ।
ফ্লাইং কিক না । কিস দিছি। আমি ওরে সত্য ভালবাসতাম । ও আমার ট্রু লাভ ছিল ।

- হ তুই তোর পৌনে উনিশ নাম্বারের সময়ও এইটাই বলছিলি। যে ওর তোর ট্রু লাভ। আবার ওর জন্য ড্রেনেও পরছেন । মনে নাই ।
আচ্ছা বাদ দে দোস্ত । তারপর তোর জনের কি খবর।

- ছিঃ ছিঃ কি বলিস । মহাপুরুষদের গার্লফ্রেন্ড থাকে না। ভক্ত থাকে । বুঝলি ।

- বুঝলাম তা তার কি খবর। কোন খোজ রাখছিস।

আমার ব্যাকগ্রাউন্ডে গান বাজচ্ছে । আলো আলো তুমি কখনও আমার হলে না । না মহাপুরুষদের মনে দুঃখ থাকতে নেই ।
কিরে চুপ হয়ে গেলি কেন?

- আরে না । আজ তার জন্ম দিন । এই দিনটা ছিল আমার জন্য উতসব ছিল এক সময়। আহা কত কত গিফট দিয়েছি ।

- শালা!!! আমরা ট্রীট চাইলেই টাকা নাই । আর গার্লফ্রেন্ডরে গিফট দেয়ার সময় টাকা আসে কই থিকা।

- এসব উপরের লেভেলের ব্যাপার স্যাপার । তোর মাথায় যাবে না। এখন বল আজকের দিন সেলিব্রেট করা যায় কিভাবে ।
দোস্ত চল ওর বাসায় যাই । সারপ্রাইজ দেই । কি বলিস ।

- আমার সাথে থাকতে থাকতে তোর ও বুদ্ধি খুলছে। এই জন্য ই বলি মহাপুরুষদের সঙ্গে বেশি বেশি থাকবি।

যেই বলা সেই কাজ । বন্ধুকে নিয়ে চললাম এক্সের বাসায় । আজকে অনেক দিনের শোধ তুলব । দেখা যাক । সাথে আরও দুই তিন জন থাকলে ভাল হতো । মনে মনে গান চলছে চার বোতল ভদকা । নাহ ভদকা এখন পাওয়া যাবে না । এসব ভাবতে ভাবতে চলে এলাম এক্সের বাসার সামনে । সন্ধ্যায় সময় । তাই ওনার হাজবেন্ডের বাসায় আছে কিনা কেন জানে ।

ধুরর থাকলে ই কি । আমাদের কাজ খাওয়া । তারপর চলে যাওয়া । তিন তলায় উঠলাম । কলিং বেল চাপ দিলাম । বডি বিল্ডার টাইপ একজন দরজা খুলে দিল । তাকে দেখে তো আমার আর বন্ধুর দুজেনের অবস্থা ছিপতে আটকানো বোতল টাইপ । ইনি দেখতে অনেকটা আলিফ লায়লার তাক জ্বীন তবাক জ্বীনের মত । আর আমরা দুজন ই তালপাতার সেপাই । ফু দিলে একদম ঝড়া পাতার মত ই উড়ে যাব । বোধ করি ইনি ই সেই । যাক হ্যান্ডসাম পাত্র । বিয়ে করে সুখেই আছে ।

- কি চাই? গুরু গম্ভীর ভাবে জিজ্ঞেস করলেন ।

জ্বীনের মত কন্ঠ । এর প্রতিদিন দুই বেলা করে করল্লার জুস ও নিমপাতার রস খেয়ে ছাদে রেওয়াজ করা উচিত । তাতেও ঠিক হবে না । মনে মনে বললাম বেটা আমি আমার এক্সের কাছে এসেছি । তুমি জিজ্ঞেস করার কে । বললাম আমি আপনার স্ত্রী লাবন্যর কাছে এসেছি ।

মনে হল কেউ যেন ঘুমন্ত আগ্নেয়োগিরির জ্বালিয়ে দিয়েছে । এখন ই ফেটে পরবে ।

- তাকে কেন চাই, সে কি হয় , আপনাকে তো আগে দেখিনি, বডিবিল্ডার বলল ।

মনে মনে কলা খাওয়ার মত মনে মনে বললাম, চিনলে কবেই ডিভোর্স দিয়া দিতা । তখন আমি বগল বাজাইতাম । আর মুড়ি চানাচুর খাইতাম । সেটা তো বলতে পারি না । বললাম উনার সাথে আমার অনেক আগে পরিচয় ছিল । অনেক দিন খোজ নাই তাই খোজ নিতে আসলাম ।

- আচ্ছা, তা কেমন পরিচয় ছিল, আপনি তাকে কিভাবে চিনতেন, প্রশ্ন করেই চুপ ।

আমি পরলাম মহাফ্যাসাদে । বন্ধু কে খাওয়াব বলে নিয়ে আসছি । এখন পরেছি জ্বীনের খপ্পরে । এত এত প্রশ্ন যেন আমাকে উনাদের বাড়ির জামাই করবেন । বললাম উনাকে ঢাক দিন । আর বাইরে বসে কি কথা বলব ভিতরে বসি । বলে ওনার বডি বিল্ডার বডিকে তোয়াকা না করে চিপা দিয়ে আমার তাল পাতার বডি ঢুকিয়ে সোজা ড্রইং রুমে গেলাম । সোফা আরাম করে বসে উনাকে বললাম, ভাই এসিটা একটু ছেড়ে দিন । বাইরে অনেক গরম ।

উনি মনে হচ্ছে ভূত দেখছেন । আমার কর্মকান্ড তার ভাল সুবিধা লাগছে না । পুলিশে খবর দিলে আমিও শেষ হতে পারি । গত দুই বার ওসি ছেড়ে দিয়েছে । তবে এবার ডিম থেরাপি না দিলেও বাশ ডলা থেরাপি দিতে পারে । সম্ভাবনা আছে । তবুও পরাজয়ে ডরে না বীর ।

বন্ধুর মুখ চোখ শুকিয়ে পুরা লইট্যা মাছ শুটকি হয়ে গেছে ।

এদিকে সামনের সোফায় বসে উনি আমাকে ভাল ভাবে লক্ষ্য করছেন ।

- আমি বললাম ভাই, আমি ছেলে । মেয়ে না । আর ও টাইপের ও না । তাই এভাবে না তাকিয়ে । কিছু নিয়ে আসুন খাই । আজ তো আপনার বউর জন্ম দিন ।

ওনার চেহারা দেখার মত হলো । ওনার ওয়াইফ এর জন্ম দিন সেটা আমার জানার কথা না । মনে হচ্ছে উনি কিম জং উন কে দেখছেন । এখন উনি ডোনাল্ড ট্রাম্প । আমার বন্ধু বারাক ওবামা ।

দেখেন অনেক ক্ষুধা লাগছে । কেক এনেছেন । নিয়ে আসুন । গন্ধতে বোঝা যাচ্ছে বিরিয়ানি রান্না হয়েছে । যান নিয়ে আসুন ।

নিজেকে আমার অনেক ক্ষমতাধর মনে হচ্ছে । আহা পাশে দু চার জন বডি গার্ড থাকলে ভাল হতো । উনি ভিতরে গেলেন । খাবার সাজিয়ে ওনার স্ত্রী কাছ থেকে নিয়ে আসলেন ।

আমি আর আমার বন্ধু ঝাপিয়ে পরে খাওয়া শুরু করলাম । মনে হচ্ছে এই মাত্র আমরা আমাজন থেকে মুক্তি পেয়ে এসেছি ।
সব শেষ করে । বললাম ওনাকে একটু ঢাকুন । কথা বলে যাই ।

- উনি ঢাকলেন কই গো শুনছ । তোমার শুভাঙ্গক্ষীরা এসেছে । দেখে যাও ।
ওনার স্ত্রী আসার পর । আমি আর বন্ধু দুজনেই শকড হয়ে গেলাম । এ মা এ কে!!! ওনি আমার এক্স গার্লফ্রেন্ড না । তাহলে কোন বাসায় এলাম । আল্লাহ এবার বুঝি বাপের দেয়া প্রান নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারব না । কি বলব বুঝতেছি না । এইবারের মত বাচতে হবে ।

- বললাম ইয়ে আংকেল । আজ আমরা উঠি । হ্যা, অন্য দিন । আসব । আচ্ছা আন্টি আসি । ভাল থাকবেন । আর গুল্টু মল্টু কে আদর দিয়েন ।

বলে আর দেরি না পরি মরি করে দরজা খুলে ফ্ল্যাশের গতিতে নিচে নেমে পিছেনে আর তাকালাম না । দৌড়ে পাড়ায় চলে আসলাম ।

- শালা!!!! তোর সাথে আর কোথাও যাব । কোন দিন আবার কার বাসায় নিয়ে যাস । ওইটা তোর এক্স । চল্লিশ বছরের আন্টি তোর এক্স হয় ক্যামেন ।

- আরে পাগলা!!!! মেয়েদের বিয়ে হলে আন্টি হয়ে যায় ।

মনে মনে বললাম । ও তাহলে বাসা চেঞ্জ করে ফেলেছে । যাই হোক খানাটা ভাল ছিল । আন্টির হাতের রান্না চমতকার ।

- ওই শালা!!! মুনাজাত ধর । আর শপথ কর । আর কখনও এক্সের বাড়ি যাবি না । আর এক্সের কথা ভাববি ও না ।
- বন্ধু বলল, বন্ধু হেলে কি মোরা নতুন কইরা প্রেম হরমু ।

আমি বললাম, প্রেম ভালবাসা বিয়ে এই তিনের উর্ধ্বে আমি । বুঝলি । মহাপুরুষরা পৃথিবীর চিন্তা করে । মানব জাতির চিন্তা করে । এখন ই এক্সের ফোন আসল । আপাতত এক্সের চিন্তা বাদ দিয়ে দুজনেই আইস্ক্রিম খেয়ে বাসায় চলে আসলাম ।


এই সিরিজের আগের গল্প গুলোঃ

গল্পঃ বিয়ে কারাগার (মহাপুরুষ সিরিজ)

ব্যাচেলর্স সমিতিঃ এক ভাঙ্গা সমিতির গল্প (মহাপুরুষ সিরিজ)

সমুদ্র বিলাসঃ জার্নি বাই বাস (মহাপুরুষ সিরিজ)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১১
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দেশনায়ক তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত করার নেপথ্যে  

লিখেছেন এম টি উল্লাহ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৮


আগেই বলেছি ওয়ান ইলেভেনের সরকার এবং আওয়ামীলীগের যবনায় জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পৌনে একশ মামলা হলেও মূলত অভিযোগ দুইটি। প্রথমত, ওই সময়ে এই প্রজন্মের নিকট উপস্থাপন করা হয়েছিল দেশনায়ক তারেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পকে নিয়ে ব্লগারদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



**** এডমিন টিমের ব্লগারেরা আমাকে বরাবরের মতোই টার্গেট করে চলেছে, এভাবেই সামু চলবে। ****

ট্রাম্পের বিজয়ে ইউরোপের লোকজন আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী শংকিত; ট্রাম্প কিভাবে আচরণ করবে ইউরোপিয়ানরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পের বিজয়, বিশ্ব রাজনীতি এবং বাংলাদেশ প্রসংগ

লিখেছেন সরলপাঠ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২১

ট্রাম্পের বিজয়ে বাংলাদেশে বা দেশের বাহিরে যে সব বাংলাদশীরা উল্লাস করছেন বা কমলার হেরে যাওয়াতে যারা মিম বানাচ্ছেন, তারাই বিগত দিনের বাংলাদেশের ফ্যাসিস্টের সহযোগী। তারা আশায় আছেন ট্রাম্প তাদের ফ্যাসিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠেলার নাম বাবাজী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩১

এক গ্রামীণ কৃষক জমিদার বাড়িতে খাজনা দিতে যাবে। লোকটি ছিলো ঠোটকাটা যখন তখন বেফাস কথা বা অপ্রিয় বাক্য উচ্চারণ করে ক্যাচাল বাধিয়ে ফেলতে সে ছিলো মহাউস্তাদ। এ জন্য তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×