somewhere in... blog

আমাদের বাড়ির কাজের বুয়া যদি ব্লগে আসত ! :D

১৩ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েক বছর আগের কথা। আমাদের বাড়ির দীর্ঘদিন এক মহিলা কাজ করেছেন । তারপর তার ছেলেদের অবস্থা একটু ভাল হয়ে গেলে আর তাকে কাজ করতে দেয় নি। তবে অভ্যাসের কারণে বলতে গেলে সারা দিনই আমাদের বাসায় থাকতেন। আমার মায়ের গল্প গুজব করতেন রান্না ঘরে বসে।

সেইবার ঈদে বাসায় গিয়েছি। বাসায় গেলে আমি সারাদিনই বলতে গেলে ঘরে থাকি। সেদিনও ঘরে শুয়ে শুয়ে বই পড়ছিলাম । সেই সময়ে বাইরে চিৎকার চেঁচামিচি শুনলাম। দুই মহিলা ঝগড়া করছে। এবং তাদের একজন হচ্ছে আমাদের বাড়ির সেই প্রাক্তন কাজের মহিলা। কথাবার্তা পরিস্কার কানে আসছিল । ঝগড়ার কথা বার্তা কানে যা আসলো তাতে বুঝলাম সেটা হচ্ছে কাজের মহিলার নাতির সাথে অন্য মহিলার ছেলে খেলা করার সময়ে কোন কিছু নিয়ে মারামারি বেধেছে । সেটাই নিয়ে ঝগড়া । এক পর্যায়ে অন্য বাচ্চারা জানালো যে কাজের মহিলার নাতির দোষ বেশি । সেই নাকি আগে মেরেছে।

এখন যখন ঝগড়ায় পেরে উঠছে না তখন কাজের মহিলা হঠাৎ বলে উঠল, হ্যা আমাদের বোনরা তো নাঙ্গের সাথে পালিয়ে যায় না !
এই লাইনটা আমার এখনও স্পষ্ট মনে আছে। এখানে বলে রাখি যে ঐ অন্য মহিলার এক বোন তার প্রেমিকার সাথে পালিয়ে বিয়ে করেছিল । এখন ঝগড়া হচ্ছিল দুই ছেলের মারামারি নিয়ে। সে ঝগড়াতে যখন কথায় না পারছিল তখন কাজের মহিলা প্রতিপক্ষ কে ঘায়েল করতে তার বোনের একটা কথা টেনে নিয়ে এল ঝগড়ায়। এসব গ্রামের ঝগড়ার মানায় । কোন কথা থেকে কোন কথা চলে যায় তার কোন ঠিক না। অশিক্ষিত কাজের বুয়া টাইপের মানুষদের ঝগড়া এমনই হবে। স্বাভাবিক ।

ঐ কাজের মহিলার আরেকটা স্বভাব ছিল । গ্রামের কোন মানুষ কী করলো, কার সাথে কী ঝগড়া হল, কে কিভাবে টাকা পয়সা আয় করলো, কে ঘুমালো, কে পালালো, এই সব তথ্য সারাদিন গ্রামে গ্রামে ঘুরে সংগ্রহ করত। বিশেষ করে যখন থেকে তার ছেলেরা তাকে আর আমাদের বাসায় কাজ করতে দিত না, তখন সেতো সারাদিন বেকার হয়ে গিয়েছিল । কোন কাজ কর্ম ছিল না । সেই জন্য সবার ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে এসে হাজির হত আমাদের বাসায় । আমি শুরু থেকেই দুই চোক্ষে দেখতে পারতাম না এই মহিলাকে । এমন কি এখনও পারি না। তবে সে প্রচুর কাজ করতে পারত। আমার বাসায় কাজের শেষ নেই। আমার মা একা পেরে উঠত না। বাধ্য হয়ে রাখতে হত তাকে। তবে আমি বাসায় থাকা কালে যদি এই অন্যের ব্যাপার নিয়ে গল্প করতে যেত আমি এক ধকম দিতাম। এই চোগলখোরী কুটনামী আর অন্যের ব্যাপারে কথা না লাগাতে না পারলে তার পেটের ভাত হজম হত না। শুধু আমাদের বাড়িতে না পুরো গ্রামে এই কাজ সে করে বেড়াতো।

আর ঝগড়ার মুখ ছিল একদম সবার সেরা । পুরো গ্রামে এমন কোন মানুষ নেই যে যার সাথে তার ঝগড়া বাঁধে নি। গ্রামের বলতে গেলে সবাই এই মহিলাকে দুই চোখে দেখতে পারত না । কেউ কেউ তো বাড়িতে ঢুকতে দিত না। এবং ঝগড়ার বিষয় যাই হোক না কেন এই মহিলা সব সময় পেছনের বিষয় নিয়ে আসতো । ঝগড়া শুরু হল এক ব্যাপার নিয়ে আরে সেটা চলে যেত অন্য দিকে ।

তবে অদ্ভুত কারণে সে আমার মাকে পছন্দ করত । যখন কাজ করতো তখন আমি দেখেছি সে আমার মায়ের উপরে কথা বলত না । যদি ঝগড়া চলত আমার মা যদি বলত চুপ কর তাহলে কথা বন্ধ করে দিয়ে চলে আসত ।

এই মহিলা যদি একটু পড়ালেখা জানতো তাহলে তাকে এই ব্লগে একটা একাউন্ট খুলে দিতাম । আমি নিশ্চিত সামুতে বেশ সুনাম করতে পারত। ঝগড়ার সময়ে যে যেভাবে নিজের বাক স্বাধীণতার প্রয়োগ করে আশা করি খুব নাম করত । এই কাজ করেই অনেকে অনেক মন্তব্য পাচ্ছে !
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:২৩
১৫০ বার পঠিত
১৬টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলমানেরা ভাগ্যন্নোয়নের জন্য পশ্চিমে গিয়ে, পশ্চিমের সংস্কৃতিকে হেয় করে ধর্মের নামে।

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২০



এখন পশ্চিম চাহে যে, মুসলমানেরা যেন "ভাগ্যান্নষন"এর জন্য তাদের দেশে আর না যায়; কারণ, মুসলমানেরা পশ্চিমের সংস্কৃতিকে হেয় করার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে। একই আব্রাহামিক ধর্মের লোকজন হলেও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অতঃপর সচিবালয়ের সেই পুড়ে যাওয়া কুকুর

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:০০




সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের পর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আর পাল্টাপাল্টি দোষারোপের কারণে তদন্ত রিপোর্টে কী উঠে আসে সেটি নিয়ে বিশেষ আগ্রহ ছিল অনেকের। দুই দিকের আলাদা কক্ষে আগুন লাগা, কুকুরের মৃতদেহ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭২-এর স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র ২০২৪-এর অর্জন না

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৩৯


৭২-এর রক্তস্নাত সংবিধান বাতিল করে । নিজেদের আদর্শের সংবিধান রচনা করতে চায় এরা‼️বাংলাদেশের পতাকা বদলে দিতে চায়! বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ভালো লাগেনা এদের!জাতিয় শ্লোগানে গায়ে ফোস্কা পরা প্রজন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আয়নাঘর শুধু ক্যান্টনমেন্টেই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়েও ছিল

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, আয়নাঘর শুধু ক্যান্টনমেন্টেই ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়, হোটেল এমনকি ব্যক্তিগত বাড়িতেও ছিল। আপনারা শুধু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০০

প্রতিযোগিতার এই দুনিয়ায় এখন আর কেউ নিজের মতো হতে চাই না, হতে চাই বিশ্ববরেণ্যদের মতো। শিশুকাল থেকেই শুরু হয় প্রতিযোগিতা। সব ছাত্রদের মাথায় জিপিএ ৫, গোল্ডেন পেতে হবে! সবাইকেই ডাক্তার,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×