somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




প্রিয় এবং অপ্রিয় ব্লগারগন, আশা করি ভাল আছেন । প্রতিমাসের মত এই মাসেও হাজির হলাম আরেকটি ইন্টারভিউ নিয়ে। গতমাসেই একটি ইন্টারভিউ প্রকাশের কথা ছিল বটে তবে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেে সেটা আর করা হয় নি যদিও সব কিছু তৈরিই ছিল । কেবল পোস্ট করলেই চলত। তবে মানসিক ভাবে এতোটাই অস্থির ছিলাম যে কোন কিছুই ভাল লাগছিলো না। যদিও এখনও মানসিক ভাবে সুস্থির হয়ে ওঠে নি আমার মনের অবস্থা। আরও কিছুটা সময় লাগবে । এতোদিন অন্য কোন কাজও হয় নি। তবে বসেে থাকলে তো আর জীবন চলবে না । কোন কিছুই কারো জন্য বসে থাকে না ।
যাইহোক, আজকের ইন্টারভিউ শুরু করা যাক । আজকে আমাদের অতিথি হয়ে এসেছেন ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর । আসুন আর দেরী না করে ইন্টারভিউ শুরু করা যাক।



প্রশ্নঃ কেমন আছেন ?

উত্তরঃ আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি। ইন্টার্ভিউ দেয়ার মত কোন মানুষ আমি না। তারপরেও আপনার আমন্ত্রনে ইন্টার্ভিউ দিচ্ছি। আপনাকে ধন্যবাদ।

প্রশ্নঃ নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন ? পাব্লিক প্লাটফর্মে যতটা বলা সম্ভব আরকি !

উত্তরঃ আমার জন্ম ১৯৭২ সালে ঢাকার খিলগাঁয়ের তিলপা পাড়ায়। ৫২ বছরের জীবনে প্রথম ৫ বছর ঢাকাতে ছিলাম। তারপরে জীবনের বিভিন্ন সময়ে ১৫ বছর ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় ছিলাম। জেলাগুলি হল যশোর, টাঙ্গাইল, সাভার, বরিশাল এবং চট্টগ্রাম। তরুণ বয়সে ১ বছর সৌদি আরবে ছিলাম। কিছুদিন ফিলিপাইনে ছিলাম। অর্থাৎ ৩৬ বছর কাটিয়েছি ঢাকায়, ১৫ বছর অন্য জেলাতে আর ১ বছর বিদেশে। আমি একজন অ্যাকাউন্ট্যান্ট। বাংলাদেশের একটি পরিচিত কোম্পানিতে জেনারেল ম্যানেজার, ফাইন্যান্স এন্ড একাউণ্টস হিসাবে আছি। আমার ২ ছেলে ১ মেয়ে। আমার স্ত্রী হাউজ ওয়াইফ। আমার শখ হল গান শোনা, গান গাওয়া, আর বিচিত্র বিষয়ের বই পড়া (ধর্ম এবং ইতিহাস নিয়ে আগ্রহ বেশী)। আমার বড় ছেলে ডাক্তারি পড়ছে। বাকি দুইজনের একজন স্কুলে আর আরেকজন কলেজে পড়ে। আমি যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি তখনই বিভিন্ন জেলার সাতটা স্কুলে পড়া হয়ে গেছে আমার । আমার শহরের চেয়ে গ্রাম বা মফস্বল শহর ভালো লাগে। বাংলাদেশের গ্রামের প্রকৃতি আমার খুব পছন্দ। আমি মুলত একজন অন্তর্মুখী মানুষ। তবে কিছু বহির্মুখী প্রবণতাও আছে। শৈশবে অনেক ধরণের খেলাধুলা করেছি। যেমন ফুটবল, বাস্কেটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, হকি, স্কোয়াশ, টেনিস, কাবাডি, টেবিল টেনিস, দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট, ছি বুড়ি, এক্কা দোক্কা (কুতকুত), লাটিম, মার্বেল, গুলতি, তীর ধনুক, বরফ পানি, লুকোচুরি, কানামাছি, সাইকেল চালানো ইত্যাদি। দাবা আর ক্যারাম খেলার নেশা ছিল এক সময়। আমার দেশের বাড়ি বৃহত্তর বরিশাল।

প্রশ্নঃ সবার আগে যে প্রশ্নটা জানতে চাই যে এতো নাম রেখে ব্লগের নিকের নাম সাড়ে চুয়াত্তর কেন?

উত্তরঃ উত্তম এবং সুচিত্রার ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ সিনেমাটা ছোটবেলায় দেখার পর খুব ভালো লেগেছিল। এই সিনেমাতে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কমেডিগুলিও মনে দাগ কাটে । নিকের নাম দেয়ার সময় হঠাৎ এই সিনেমার কথা খেয়াল আসে এবং নিকের নাম দিয়ে ফেলি ‘সাড়ে চুয়াত্তর’।

প্রশ্নঃ ব্লগ সম্পর্কে ধারণা কবে এবং কিভাবে এসেছিল? সামু ব্লগের নাম জানতে পারলেন কিভাবে?

উত্তরঃ গুগলে বাংলায় বিভিন্ন বিষয়ে সার্চ করতে গিয়ে ২০১৬ সালের দিকে এই ব্লগের নাম জানতে পারি। ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে ব্লগে বিচরণ শুরু হলেও রেজিস্ট্রেশন ছিল না। ২০১৮ সালে রেজিস্ট্রেশন করি। প্রথম দিকে শুধু মন্তব্য করতাম। ২০২০ সালে করোনার সময় ঘরে অনেক সময় কাটতো। তখন পোস্ট দেয়ার ইচ্ছে জাগলো এবং ২০২০ সালে প্রথম পোস্ট দেই।

প্রশ্নঃ ব্লগ সম্পর্কে যে ধারণা পেয়েছিলেন আর সামুতে এসে ব্লগ সম্পর্কে যে ধারণা পেয়েছেন, দুটো কি একই রকম?

উত্তরঃ ব্লগের ক্যাঁচাল সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল না। আমার ধারণা ছিল ব্লগে একটা নির্মল পরিবেশ বিরাজ করে। ২০২০ সালে প্রথম কয়েকটা পোস্ট দেয়ার পরেই আক্রমণের শিকার হই। ঐ সময় ব্লগার মিরোরডডল পাশে না থাকলে ব্লগ তখনই ছেড়ে দিয়েছিলাম প্রায়। ফেইসবুক একাউন্ট না থাকায় ভার্চুয়াল জগতের খারাপ দিকগুলি সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল না।

প্রশ্নঃ ব্লগিং নিক ছদ্ম নাম কেন? নিজের আসল নামে লেখালেখি কি নিরাপদ মনে করেন না নাকি অন্য কোন কারণ রয়েছে?

উত্তরঃ আমি অন্তর্মুখী মানুষ মুলত। তাই ছদ্মনাম নিয়ে লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আর তাছাড়া যখন ব্লগে রেজিস্ট্রেশন করি তখন ব্লগার এবং ব্লগিং সম্পর্কে একটা নেতিবাচক ধারণা সমাজে ছিল।

প্রশ্নঃ বর্তমান ব্লগ কাচলার সম্পর্কে আপনার নিজেস্ব মতামত কী?

উত্তরঃ বর্তমানে ব্লগারদের মধ্যে দলাদলি বেড়ে গেছে। কয়েক বছর আগে এতো বিভাজন চোখে পড়েনি। এখন বিভাজনটা অনেকটাই পরিষ্কার। এক দলের লোক আরেক দলের পোস্টে আসতে চায় না। আসলেও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করে। এটা ব্লগের জন্য ক্ষতিকর।

প্রশ্নঃ আপনি কি মনে করেন যে কেবল ব্লগে লেখালেখি করেই আমাদের মত দেশে কোন ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব?

উত্তরঃ রাজাকারদের ফাঁসি দেয়ার ক্ষেত্রে অতীতে বিভিন্ন ব্লগের ব্লগাররা বলিষ্ঠ ভুমিকা রেখেছে। এই আন্দোলনের প্রথম দিকের নেতৃত্বে ব্লগাররাই ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেটা সম্ভব না। খুব কম মানুষ ব্লগে আসে। তাই ব্লগে লেখালেখি করে সমাজের পরিবর্তন করা এখন সম্ভব না। তবে সমাজের চিন্তাশীল মানুষদের মধ্যে ভাবের আদান প্রদান এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্লগের ভুমিকা আছে। চিন্তাশীল এবং সমাজ সচেতন মানুষ ফেইসবুকের চেয়ে ব্লগকে বেশী গুরুত্ব দেয়ার কথা।

প্রশ্নঃ এই যে আমাদের সামু ব্লগে কিছু ব্লগার সব সময় দেশ বিদেশের নানান ব্যাপারে পোস্ট দেন, মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য ঝড় তোলেন। আপনার কি মনে হয় এই তর্কে বিতর্কে কোন ফল পাওয়া যায়?

উত্তরঃ যদি সুস্থ তর্ক বিতর্ক হয় সেই ক্ষেত্রে তথ্য এবং জ্ঞানের আদান প্রদান হয়। কিন্তু ব্লগে কেউই নিজস্ব ধ্যান ধারণা থেকে সরতে চায় না। অনেক ক্ষেত্রে তর্ক বিতর্ক করতে গিয়ে সম্পর্ক নষ্ট হয়। অনেক সময় ক্যাচাল বেধে যায় এবং গালিগালাজের পর্যায়েও চলে যায়। তর্ক বিতর্ক করলেও কেউই নিজের অবস্থান পরিবর্তন করতে চায় না। তবে সুস্থ বিতর্ক হলে অনেক কিছু জানা এবং শেখা যায়। আমাদের সংবাদপত্র বা মিডিয়া খবরের পিছনের খবর কখনও বলে না। ব্লগ থেকে সেই খবরগুলির পাওয়ার সম্ভবনা থাকে।

প্রশ্নঃ আমাদের সামু ব্লগ কি বাংলাদেশের শিক্ষিত সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে? আরও ভাল করে বললে সামুর ব্লগারদের দিয়ে কি বাংলাদেশের শিক্ষিত সমাজকে মূল্যায়ন করা যাবে? যদি সেটা করা হয় তাহলে সেটা সঠিক হবে কি ভুল হবে?

উত্তরঃ সমাজের বিভিন্ন অঙ্গনের প্রতিষ্ঠিত বুদ্ধিজীবীরা সামুতে লেখালেখি করে বলে মনে হয় না। আম জনতাই সামু ব্লগে বেশী আসে। আগে সামুর ব্লগার অনেক বেশী ছিল। তখন সামু শিক্ষিত আমজনতার প্রতিনিধিত্ব করতো বলা চলে। বর্তমানে ব্লগার অনেক কম। বাংলাদেশে ১৮ কোটি মানুষ বাংলায় কথা বলে। এতো বিশাল জনগোষ্ঠীর মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার মত ব্লগার এখন সামুতে নেই। স্যাম্পল সাইজ ছোট হওয়ার কারণে বলা যাবে না যে সামু থেকে আমাদের শিক্ষিত সমাজকে মূল্যায়ন করা যাবে। সামুর ব্লগার দিয়ে আমাদের শিক্ষিত সমাজের মূল্যায়ন করা ঠিক হবে না।

প্রশ্নঃ আপনার আসলে মাল্টি নিক কয়টা?

উত্তরঃ আমার মাল্টি নিক কয়টা সেটা আপনার জানার কথা। কারণ আপনি, শায়মা আপু, মিরোরডডল সহ আরও কয়েকজন মাল্টি সনাক্ত করতে ওস্তাদ। 

প্রশ্নঃ এমন কি কোনদিন হয়েছে যে আপনি এই নিকে একজনের বিরুদ্ধে তর্ক করছেন কিন্তু অন্য নিকে আবার তাকেই সাপোর্ট দিচ্ছেন?

উত্তরঃ আমি আমার আসল নিক থেকেই একই ব্লগারের উদ্দেশ্যে কখনও মিষ্টি কথা বলি আবার কখনও বিরোধিতা করি বা খোঁচা দেই। শায়মা আপু আমার এই ব্যাপারটা ভালো জানেন এবং আমার আক্রমণের শিকার হন । এই কারণেই উনি প্রায়ই আমাকে বলেন যে আমি নাকি একটা কুটনা বুড়া। এই ধরণের কাজের জন্য মূল নিককেই ব্যবহার করে থাকি।

প্রশ্নঃ ব্লগের পেছনে গড়ে কত সময় বের করেন? দিনে বা সপ্তাহের হিসাবে একটা হিসাব বলুন!

উত্তরঃ আমি গড়ে প্রতিদিন ১ ঘণ্টা ব্লগে কাটাই। ২৪ ঘণ্টায় ৩/৪ বার ঢু মারি ব্লগে। সন্ধ্যার পরে বেশী সময় কাটাই।

প্রশ্নঃ ব্লগে ধর্ম নিয়ে লেখার ফলে কোন বিরূপ মনভাবে শিকার হয়েছেন কি? ব্লগে অন্য যে কোন বিষয় নিয়ে লেখার চেয়ে ধর্ম নিয়ে লেখা কঠিন বেশি? (প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে বলছি)

উত্তরঃ আমার ধর্ম নিয়ে লেখা পোস্টগুলির কারণেই আমি অনেকের বিরূপ আচরণের শিকার হয়েছি। আসলে আমাদের দেশে বা ব্লগে নাস্তিকের চেয়ে ইসলাম বিদ্বেষী মানুষ বেশী। বাস্তব জীবনে আমি নাস্তিকের সাথে দীর্ঘদিন শান্তিপূর্ণ আলোচনা বা বিতর্ক করেছি। কিন্তু ব্লগে ইসলাম বিদ্বেষীরা নাস্তিকের বেশে অসুস্থ তর্ক করে। শুধু নাস্তিক না আমাদের ইসলাম ধর্মের মধ্যেও অনেক দলাদলি আছে। ফলে ইসলামের অন্য উপদল বা বিপথগামী মুসলিমদের দ্বারাও আক্রমণের শিকার হতে হয় অনেক সময়। আমি ব্লগে ধর্ম ছাড়া অন্য বিষয় নিয়ে বিপদে পড়ি নাই বললেই চলে। তাই অন্য বিষয়ের চেয়ে ধর্ম নিয়ে ব্লগে লেখা কঠিন।

প্রশ্নঃ ধরেন আপনি সামু ব্লগের কোন ব্লগারকে সাইজ করতে চান। সাইজ বলতে তার কিছু আচরণ ঠিক করতে চান তাহলে আপনি কোন প্রক্রিয়া অবলম্বন করবেন?

উত্তরঃ উগ্র প্রকৃতির কারও আচরন ঠিক করার ক্ষেত্রে আমার কোন আগ্রহ নেই। তাকে এড়িয়ে চলবো। আর যদি মনে করি সমালোচনার মাধ্যমে কারও আচরণের উন্নতি করানো সম্ভব সেই ক্ষেত্রে তাকে বুঝিয়ে তার আচরণ পরিবর্তনের চেষ্টা করবো।

প্রশ্নঃ শায়মা আপুকে ভয় দেখানোর জন্য আপনার হাতে যদি কোন অপশন থাকে তাহলে সেই সুযোগ আপনি গ্রহন করবেন কিনা?

উত্তরঃ অবশ্যই করবো। সেই ধরণের অস্ত্র থাকলে আমাকে জানাবেন। তবে শায়মা আপু এমনিতেই একটু ভিতু টাইপের মেয়ে। ওনাকে ভয় দেখালে হার্ট ফেল করতে পারে। আর ওনাকে ভয় দেখানো খুব সহজ। ওনাকে প্লেনে বা লিফটে উঠিয়ে দিলেই হাত পা কাপতে থাকবে ওনার। আর সুযোগ পেলে একটা টিকটিকি ওনার মাথার উপর ছেড়ে দিতাম। সুযোগের অপেক্ষায় আছি। গুলশান পিঙ্ক সিটি মার্কেটে মাঝে মাঝে দাড়িয়ে থাকি ওনাকে পাকড়াও করার জন্য । উনি নাকি এই মার্কেটে মাঝে মাঝে আসেন। ওখানকার দোকানদারদের বলে রেখেছি যে শায়মা আপু আসলে আমাকে যেন খবর দেয়।

প্রশ্নঃ হঠাৎ একদিন ব্লগে লগিন করেই দেখতে পেলেন যে শায়মা আপু সহ আরও কয়েকজন ব্লগারের নিকের পাসওয়ার্ড আপনার হাতে চলে এসেছে। তখন কী করবেন?

উত্তরঃ শায়মা আপুর লেখা গল্পগুলি ভালো লাগে। গল্প পড়লে মনে হয় উনি নিজের জীবনের প্রেম কাহিনী বর্ণনা করছেন। কিন্তু কিছু জায়গায় একটু সংশোধন প্রয়োজন আছে। ওনার লেখা কিছু গল্পের নায়কের চারিত্রিক সংশোধন প্রয়োজন। ওদের চরিত্রে সমস্যা আছে। ওনার কয়েকটা গল্পে নায়কের চরিত্র হল বাদাইম্মা পোলার মত। তাই ওনার পাসওয়ার্ড পেলে এগুলি একটু এডিট করে ঠিক করে দিবো বিনা পয়সায়। উনি আমাকে ধন্যবাদ না দিলেও মাইন্ড করবো না।

শেরজা তপন ভাইয়ের পাসওয়ার্ড পেলে রাশিয়ার অপ্সরাদের নিয়ে নিজই একটা রোমান্টিক গল্প লিখে ওনার নামে চালিয়ে দিবো। সবাই ভাববে যে সেই গল্প শেরজা ভাইই লিখেছে। কেউ সন্দেহ করবে না।

আপনার পাসওয়ার্ড পেলে আপনার বান্ধবীদের সবাইকে বিনে পয়সায় দিয়ে দেবো। বাকি কাজ তারাই করবে। বান্ধবীদের তালিকা আমাকে দিয়েন। আর আপনি কাকে কাকে ব্লক করেছেন সেই তালিকা নিয়ে একটা পোস্ট দিব।

মিররমণির পাসওয়ার্ড পেলে কাঁচা ইলিশ মাছ মসলা দিয়ে মাখিয়ে কিভাবে চুলার আগুন ছাড়া রান্না ক’রে কাঁচা খাওয়া যায় সেই রেসিপির উপরে একটা পোস্ট দিব।

প্রশ্নঃ কখনও কি সামুর ব্লগ ডে তে গিয়েছেন? সামুর ব্লগারদের সাথে বাস্তবে দেখা হয়েছে কারো সাথে?

উত্তরঃ আমি সামুর ব্লগ ডে তে কখনও যাইনি। আমি যখন ব্লগে একটু সক্রিয় হই তখন করোনা শুরু হয়ে গেছে। তারপরে আর ব্লগ ডে হয় নাই মনে হয়। সামুর দুইজন ব্লগারের সাথে ফোনে এবং হোয়াটস অ্যাপে কথা হয়েছে। তবে বাস্তবে কারও সাথে দেখা হয় নাই। আপনার সাথে একদিন সাইকেল চালানোর ইচ্ছে আছে।

প্রশ্নঃ আপনাকে যদি বলা হয় যে কোন একজন ব্লগারকে ব্লগ ছাড়া করতে হবে নয়তো আপনার নিক ব্যান করা হবেব। ডু অর ডাই সিচুয়েশন । কাকে ব্লগ ছাড়া করবেন?

উত্তরঃ ব্লগে অনেক সময় অনেকে ব্লগ ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এদের কাউকে ব্লগ ছাড়া করবো।

প্রশ্নঃ ব্লগের মডারেশন প্যানেল সম্পর্কে আপনার মতামত কী? আপনার চোখে মডারেশন প্যানেলকে মূল্যায়ন করুন।

উত্তরঃ বর্তমানে মডারেশন প্যানেল থেকে বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে তাদের মনোবল কিছুটা কমে গেছে। তারা স্বল্প মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে আছেন। দীর্ঘ মেয়াদী কোন চিন্তা ওনাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না। ব্লগের ব্যাপারে কোন আশার বাণী তাদের থেকে শোনা যাচ্ছে না। মডারেশন প্যানেল অনেক সময় অতিরিক্ত ধৈর্য প্রদর্শন করছেন । ফলে অনেক ব্লগার খারাপ কাজের আশকারা পাচ্ছে। বাড়াবাড়ির চূড়ান্ত হওয়ার আগেই ব্যবস্থা নিলে কেউ বাড়াবাড়ি করার সাহস পেত না। আমরা বাঙ্গালীরা ডাণ্ডা খেলে সোজা পথে চলি। সুযোগ পেলেই সুযোগের অপব্যবহার করি। এটা মডারেশন পানেলের লোকদের মনে রাখা উচিত। জনবলের অভাবেও অনেক ক্ষেত্রে মডারেশনের কাজের গতি স্লথ হয়েছে মনে হয়।

প্রশ্নঃ আমরা জানি যে ব্লগ কর্তৃপক্ষ ব্লগারদের নীতিমালায় আওতায় আনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে থাকে। আপনার কি মনে হয় ব্লগ কর্তৃপক্ষের দেওয়া এই ছাড় সবার ক্ষেত্রে সমান নয়?

উত্তরঃ মনে করেন একজন ব্লগারের অনেক ভালো ভালো পোস্ট আছে এবং মন্তব্য আছে। কিন্তু মাঝে মাঝে সে নিয়ম ভঙ্গ করে। আবার আরেকজন ব্লগার তার মাল্টি নিক দিয়ে কেবলই অপ্রয়োজনীয় খোঁচাখুঁচি করে যায়। ব্লগে তার কোন অবদান নেই বরং ব্লগের সে ক্ষতি করছে । সেই ক্ষেত্রে প্রথম ব্লগার একটু বেশী ছাড় পেতে পারে বলে আমার মনে হয়। একজন ব্লগারকে ছাড় পাওয়ার যোগ্যতাও অর্জন করতে হবে।

প্রশ্নঃ অনেক প্রশ্ন করা হল । আরেকটা জরুরী প্রশ্ন। জীবনে প্রেম করেছেন কয়টা ? প্রেম করে বিয়ে নাকি পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়েছে? অথবা বিয়ে করেছেন নাকি এখনও আমার মত সুখী জীবন যাপন করছেন?

উত্তরঃ জীবনে প্রায় পৌনে ৩ টা প্রেম করেছি। একটা করেছি কিশোর বয়সে যখন প্রেম কী জিনিস সেটাই ভালো করে বুঝতাম না। আরেকটা স্বল্পকালীন অপূর্ণাঙ্গ প্রেম ছিল যখন কলেজে উঠেছিলাম। আরেকটা প্রেম এখনও চলমান। দিন দিন আরও মধুর হচ্ছে। আগের একটা প্রশ্নের উত্তরে বলেছি যে আমি ৩ সন্তানের পিতা। তাই বিয়ে করেছি কি না সেটা বুঝতেই পাড়ছেন। প্রেম ক’রে বিয়ে করেছি।

প্রশ্নঃ 'বর্তমানে দেশে বড় একটা রাজনৈতিক পরিবর্তন হল, এটা সম্পর্কে আপনার মতামত কী?

উত্তরঃ আমি ছাত্রদের এই আন্দোলনের ১০০% সমর্থক। বর্তমান প্রজন্ম সম্পর্কে আমাদের ভুল ধারণা ছিল। কিন্তু তারা তাদের রক্ত দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা ফেইসবুকমুখী, টিকটকমুখী বা তথাকথিত প্রশ্নফাঁস প্রজন্ম নয়। তারা দেশ এবং সমাজ নিয়ে ভাবে। তাদের সাহস, সততা, দেশপ্রেম প্রশ্নাতীত। তাদের কাছে থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। গত ১৬ বছরে রাজনৈতিক দলগুলি শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেনি। ছাত্ররা এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়েছে এবং দেশ গড়ায় অংশ নিচ্ছে। এটা একটা ঐতিহাসিক ব্যাপার। ওদের নাম ইতিহাসে লেখা হবে। এরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। আমি আশা করি এরা বাংলাদেশের অসুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে সমর্থ হবে। তরুণ প্রজন্ম থেকে ভালো মানুষেরা রাজনীতিতে আসবে এবং রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে গুণ্ডামি, খুনাখুনি, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি সহ সকল অনাচার দূর হবে। হয়তো একবারে হবে না। কিন্তু পরিবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। কোন রাজনৈতিক দল বাড়াবাড়ি করলে ছাত্ররা পুনরায় মাঠে নেমে এদেরকে শায়েস্তা করবে। অসৎ লোকের জন্য বাংলাদেশে ভবিষ্যতে রাজনীতি করা কঠিন হয়ে যাবে। এই কথা রাজনীতিবিদদের মনে রাখতে হবে।

প্রশ্নঃ সময় দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ । ব্লগারদের উদ্দেশ্য কিছু যদি বলতে চান তাহলে বলতে পারেন । আর আমাদের ব্লগাররা আপনাকে কিছু প্রশ্ন করতে পারে। আশা করি সময় করে সেই প্রশ্নের জবাব দিবেন !

উত্তরঃ আমার মতন নাদানের সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ। ব্লগারদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যে আমরা সবাই যেন ব্লগ প্রতিষ্ঠাতা জানা আপুর সুস্থতার জন্য দোয়া করি। হাজারো সমস্যা সত্ত্বেও উনি ব্লগটাকে দীর্ঘদিন চালিয়ে যাচ্ছেন। উনি সুস্থ হয়ে উঠলে ব্লগের আয়ু নিয়ে আমাদের আর চিন্তা করতে হবে না। যিনি এতদিন ব্লগটাকে চালিয়ে গেছেন তিনি নিশ্চয় এটাকে রক্ষার করার ব্যবস্থা নেবেন। ব্লগার হিসাবে আমাদের দায়িত্ব হল ব্লগে সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখা। পরিবেশ সুন্দর হলে আরও অনেক মানুষ ব্লগের প্রতি আগ্রহী হবে।

ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তরকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে সময় দেওয়ার জন্য । সময় করে আমার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার নেওয়া ইন্টারভিউ এখানেই শেষ হল । তবে ব্লগাররা চাইলে ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তরকে প্রশ্ন করতে পারেন। আশা করি তিনি জবাব দিবেন।

বিঃদ্রঃ এই মাসের ১৫ তারিখে আরেকটি ইন্টারভিউ প্রকাশিত হবে ।


আগের পর্ব
কাল্পনিক_ভালোবাসা
ভুয়া মফিজ
শায়মা




ছবি উৎস


সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৯
৩৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণভবনের গুপ্তধন!!!

লিখেছেন অনুপম বলছি, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৬

♦️উনার চরিত্র হননের জন্য গণভবন খুলে রেখেছিলেন। ভেবেছিলেন হাজার হাজার কোটি টাকা পাবে, বিলাসবহুল জীবনযাপন দেখবে জাতি, সোনা-দানা হীরা-জহরত মণি-মুক্তায় পূর্ণ থাকবে গণভবন!
♦️লুটপাটকারি থেকে শুরু করে আপনারা বকরি হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষ আপনাদের ১৩ কোটি টাকা অন্ধের মতন দিসে বন্যার্তদের মাঝে দান করার জন্য

লিখেছেন আহসানের ব্লগ, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

ত্রানের টাকা চুরি হয় নাই,ব্যাংক একাউন্টে আছে, মানুষ আপনাদের ১৩ কোটি টাকা অন্ধের মতন দিসে বন্যার্তদের মাঝে দান করার জন্য। এগুলো কারো মৃত মায়ের জমানো টাকা, কারো স্বর্গবাসী পিতা মাতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ক্লান্তি অনুভব হলেই সবুজের কাছে ফিরে যাই=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪২



©কাজী ফাতেমা ছবি
যখনই ক্লান্তি ছুঁয়ে যায় চোখ, চোখের কিনারে ঝাপসা আলো
সবুজের কাছে যাই, যেখানে কেবল সবুজের হাতছানি,
সকল ভ্রান্তি মুছে যায়, লাগে বড় ভালো,
মিহি হাওয়ায় সুখে হয় উতলা মনখানি।

যখনই... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিজার্ভ, ক্যাশ ও সরকারের বড় বড় ব্যয়ের খাত সম্পর্কে জানানোর দরকার ছিলো।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



**** পোষ্ট সামনের পাতায় যায় না; পোষ্টটিতে নতুন কিছু আছে মনে হলে, ১টি লাইক দিবেন, ধন্যবাদ। ****

সরকার পতনের পর, ১ জন সচেতন নাগরিক প্রথমেই দেশের নতুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভাগ্যিস বিখ্যাতগণ নেই.......

লিখেছেন জটিল ভাই, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:১৩

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(ছবি নেট হতে)

সকল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×