ঢাকা শহরের মানুষ শুক্র আর শনিবার বিনোদনের জন্য বাইরে বের হয় । ঢাকার নানান স্থানে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে । কিন্তু আজ এবং কাল ঢাকার অবস্থা খুব বেশি সুবিধার নয় । বাইরে বের হলে যে কোন সময়ে যে কোন কিছু হতে পারে । এমন অবস্থা যে বিদেশী এম্বাসী থেকে সংঘর্ষপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে তাদের নাগরিকদের, বিআইবিএম পর্যন্ত তাদের শুক্রশনিবারের ক্লাস অনলাইনে করে দিয়েছে । সুতরাং বুঝতেই পারছেন একটা ঝামেলা লাগার সম্ভবনা রয়েই গেছে । আমাদের মাঝে বেশির ভাগ মানুষই ঝামেলা এড়িয়ে চলার মনভাব রাখে। দেশে যা হয়ে যাক তাতে আসলে আমাদের খুব একটা কিছু যায় আসে না । সেই হিসাবে আমরা এই দুটো দিন কীভাবে সময় কাটাবো যেহেতু বাইরে বের হওয়াটা খানিকটা ঝুকিপূর্ণ । আজকে আবার খেলা রয়েছে তবে সেটা রাত নয়টা বাজে । এই সময় পর্যন্ত আমরা কী করতে পারি ? এই সময়ে আমরা বাসায় বসে কিছু চমৎকার মুভি আর টিভি সিরিজ দেখে শেষ করতে পারি ।
আজকে সেই কয়েকটা মুভি আর টিভি সিরিজের লিস্ট নিয়ে এলাম ।
প্রথম মুভিটার নাম ''Dobaaraa'' ''ডোবারা''
হিন্দিতে ডোবারা মানে হচ্ছে দ্বিতীয়বার অথবা দুই বারো । ঘড়িতে দুইটা বারোর দিকে নির্দেশ করা হয়েছে । এই মুভিটার কাহিনী বেশ ইন্টারেস্টিং । একজন নার্স । তার এক মেয়ে আছে । স্বামীর সাথে বসবাস করে । একটা বাড়ি কিনে বসবাস শুরু করে । এই বাসায় ২৫ বছর আগে এক ছেলে আর মা থাকতো । এক দুর্যোগপূর্ণ রাতে সেই ছেলে একদিন পাশের এক খুন দেখে ফেলে । এবং সেই ঘর থেকে বের হতে গিয়ে গাড়িচাপা পড়ে মারা যায় । তেমন এক দুর্যোগপূর্ন রাতে সেই ছেলেরই একটা টিভি আর ক্যামেরার মাধ্যমে এই নার্সের সাথে সেই ২৫ বছর আগের ছেলের যোগাযোগ হয় । অনেকটা আমরা যেমন করে ভিডিও করল করি সেই রকম ভাবে । কিন্তু এখানে সময় ভ্রমন করে । মানে বর্তমান সময় থেকে ২৫ বছর আগের ছেলের সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হয় । এবং এই নার্স সেই ছেলেকে বলে যাতে সে কোন ভাবেই বাসার বাইরে না বের হয় তাহলে সে মারা পরবে । এবং ছেলেটা বের হয় না । তার মানে ছেলেটা মারাও যায় না । এতে পুরো অতীত বদলে যায় । যে নার্স ঘুম থেকে উঠে দেখতে পায় যে সে নার্স একজন স্বনাম ধন্য সার্জন । তার কোন মেয়ে নেই । এভাবেই কাহিনী সামনের দিকে এগিয়ে যায় ! মুভিটা যত দুর আমার মনে পড়ে একটা স্প্যানিশ ছবির রিরেমেক । তবে হিন্দিটাই দেখতে পারেন । ভাল লাগবে ।
পরের মুভির নাম Monica, O My Darling
এই থ্রিলার ড্রামা ধরনের মুভি । মুভিতে গ্রাম থেকে উঠে আসা এক ছেলে কোম্পানীর সিইও হয়ে যায় মালিকের মেয়ের সাথে বিয়ে করে । কিন্তু পুরুষ মানুষের যা স্বভাব । অফিসের সেক্রেটারি মনিকা সাথেও চলে গুছুরপুছুর । মনিকা জানায় যে সে প্রেগনেন্ট । মাথায় আকাস ভেঙ্গে পড়ে । কিন্তু পরে জানা যায় যে মনিকা কেবল তাকেই না অফিসের আরও কয়েকজনের সাথেই এই কাজ করছে । বা্চা প্রেগেনেন্ট তারপর ব্লাকমেইল । তাদের ভেতরে একজন স্বয়ং মালিকের ছেলেও আছে । তিনজন মিলে ঠিক করে যে মনিকাকে মেরে ফেলবে। সেই মোতাবেগই প্লান করা হয় । কিন্তু মনিকা মরে না । মরে মালিকের ছেলে । তাহলে তাকে কে মারলো? শেষ পর্যন্ত কোন দিকে যায় ঘটনা আর মনিকার পেটে যে বাচ্চাটা রয়েছে সেটা আসলে কার?
মুভিটা দেখে নিশ্চিত মজা পাবেন কমেডি সাসপেন্স থ্রিল সব পাবেন।
এরপরের মুভিটার নাম Dhokha: Round D Corner
এই মুভিটার কাহিনী হচ্ছে জেল থেকে এক আসামী পালিয়ে গিয়ে এক ইঞ্জিনিয়ারের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেয় । ইঞ্জিনিয়ার তখন কাজের কারণে অফিসে ছিল । বাসায় কেবল তার বউ ছিল। সেই বউ আবার মানসিক রোগী । নির্দিষ্ট সময় পরপর তাকে ঔষধ নিতে হয় নয়তো তার অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে যায় । পুলিশ বাসাকে ঘিরে রাখে । সন্ত্রাসীর সাথে নেগোশিয়েশন ঘটে । তবে যতই মুভির কাহিনী সামনে এগোতে থাকে আসল কাহিনী বের হতে থাকে । সবারই কিছু না কিছু সত্য লুকানো থাকে । বলবো না যে খুব চমৎকার একটা মুভি তবে টাইম পাস করার জন্য বেশ ভাল ।
HIT: The First Case
এই মুভিটাও বেশ চমৎকার । যদিও আমি এটার সাউথ ইন্ডিয়ান ভার্শনটা দেখেছি । একটা মেয়ে গাড়ি নিয়ে বের হয় । পথে সেই মেয়েটার গাড়ি নষ্ট হয়ে যায় এবং পরে সেই মেয়ের আর খোজ পাওয়া যায় না । এই কেসে একজন পুলিশ অফিসার আসে । তার কিছু অতীত হয়েছে । মানসিক ভাবে খানিকটা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে সে মাঝে মাঝে । দারুক একটা থ্রিলার মুভি এটা । অবশ্যই দেখতে পারেন ।
এই তো গেল মুভির কথা । এবার আশা যাক সিরিজের বেলাতে ।
এই সিরিজটা নাম Khakee: The Bihar Chapter
বিহারের একজন সাধারণ ট্রাক ড্রাইভার কিভাবে শীর্ষ সন্ত্রাসী হয়ে ওঠে এবং একজন আইপিএস অফিসার তাকে ধরে সেই কাহিনী নিয়ে এই সিরিজ । অন্যান্য সকল পুলিশ সন্ত্রাসী সিরিজের মতই এই কাহিনীটা । নতুন টুইস্ট খুব কম রয়েছে তারপরেও উপভোগ্য !
এই সিরিজটার নাম 1899
আপনারা যারা ডার্ক সিরিজটা দেখেছেন এবং যাদের ডার্ক সিরিজটা ভাল লেগেছে তাদের এই সিরিজটা ভাল লাগবে আশা করি । সিরিজের কাহিনী হচ্ছে একটা জাহাজ ইউরোপ থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্য রওয়ানা দেয় । কিন্তু মাঝ পথে তারা চার মাস আগে হারিয়ে যাওয়া প্রমিথিউস নামের আরেকটা জাহাস থেকে বার্তা পায় । ক্যাপ্টেন জাহান ঘুরিয়ে সেই প্রোমিথিউসের দিকে নিয়ে যায় । সেই জাহাজে উঠে দেখে সেখানে কেউ নেই । এমন যে বার্তা পাঠানোর যে মেশিন সেটাও নষ্ট । তাহলে এই জাহাজ থেকে বার্তা কে পাঠালো । তবে একটা কাভার্ডের ভেতরে একটা ছোট বাচ্চাকে পায় তারা । সেই বাচ্চাকে নিয়ে ফিরে আসে তাদের জাহাজে । তার পরেই জাহাজে রহস্যময় ঘটনা ঘটতে থাকে । মানুষ মারা যেতে থাকে। এভাবে কাহিনী এগিয়ে যায় । তবে ডার্ক সিরিজের মতই শেষে পুরো কাহিনী একেবারে উল্টে যায় ।
সিরিজের নাম WEDNESDAY
এটা একটা টিনফিকসন । সিরিজের প্রধান চরিত্রের নাম wednesday। ঠান্ডা চরিত্রের এক মেয়ে । সব কিছুই সে অন্য টিনেজার মত করে ভাবে না, চিন্তা করে না । সব কিছুতেই তার ঠান্ডা প্রতিক্রিয়া । কয়েকটা স্কুল থেকে সে বহিস্কার হয়ে যাওয়ার পরে নেভারমোর স্কুলে আসে । এই স্কুলে wednesdayর মত সব আউসকাস্টদের স্থান । আউসকাস্ট হচ্ছে যাদের ভেতরে নানান অলৌকিক ক্ষমতা আছে । এই নেভারমোর স্কুলের আশে পাশেই এক অদ্ভদ জন্তু ঘুরে বেড়াচ্ছে কয়েকদিন যে কিনা মানুষ মেরে ফেলছে । এই খুনের তদন্তে নামে wednesday । এবং এক সময় রহস্য বের করে ফেলে কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে অনেক । শেষ পর্যন্ত কি নেভারমোরকে রক্ষা করতে পারে ওয়েনেসডে?
বড়দের এই সিরিজ ভাল না লাগারই কথা । তবে আপনার যদি স্ট্রেঞ্জার থিংঞ্জ আর চিলিংক এডভেঞ্চার অব সাবরিনা ভাল লাগে তাহলে এটাও ভাল লাগবে ।
তো আপাতত এই গুলো দেখে দিন পার করতে পারেন । সব গুলোই পাবেন নেটফ্লিক্সে । তবে কেউ যদি নেটফ্লিক্স থেকে না দেখতে চান তাহলে আরও অনেক মাধ্যম আছে । সেই সব সাইটের লিংক সামুতে দেওয়া নিষেধ তাই দিতে পারছি না তবে সাহায্য লাগলে জানাতে পারেন ।
হ্যাপি ওয়াচিং ।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:০২