বর্তমানে বাংলাদেশের ওটিটি সার্ভার গুলোতে থ্রিলার জনরার ফিল্ম কিংবা সিরিজ গুলো পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে । আগে ড্রামার সংখ্যা বেশি থাকলেও দিন দিন এই জনরার সিরিজ গুলোর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে । কাইজার তেমনই একটা ডিটেক্টিভ সিরিজ যেখানে প্রধান নাম চরিত্রে কাইজার চৌধুরী, এডিসি বাংলাদেশ পুলিশের হিমিসাইড ডিটেক্টিভ অফিসার । সরকারী সিক্স গ্রেড স্কেলে যার বেতন ।
ঢাকার এক ফ্ল্যাটে দুই তরুণীর লাশ পাওয়া যায় । কে বা কারা এই দুই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে খুন করে রেখে গেছে । সাথে করে নিয়ে গেছে তাদের ব্যবহারের ল্যাপটপ মোবাইল সহ সকল দরকার ইলেক্টনিক জিনিস পত্র । দেশে হর হামেশাই খুণ হচ্ছে তাই এটাও তেমনও কোন সাধারণ খুন হবে হয়তো । কিন্তু ব্যাপারটা শুরুতেই ইন্টারেস্টিং হয়ে ওঠে যখন মোক্তার নামের একজন লম্বার চুলের লোক যাকে লোকে ব্যারিস্টার নামে চেনে, স্বয়ং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে ব্লাকমেইল করে এই কেইসটা ক্লোজ করার চেষ্টা করে । তখনই মনে হয় এই খুনের পেছনে আসলে আসলে অন্য কোন ব্যাপার আছে । অনেক বড় কিছু লুকিয়ে আছে এর পেছনে।
সিরিজ ট্রেইলার
খুনের তদন্তে নামে হোমিসাইড ডিটেক্টিভ কাইজার চৌধুরী । ব্যক্তি জীবনে কাইজার চৌধুরীর জীবন বড্ড এলোমেলো । প্রচন্ড ভিডিও গেমে আসক্ত সে । সকল কাজ কর্ম ফেলে দিয়ে সে গেম খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে । তবে সেই সাথে তার বুদ্ধিদীপ্ত তদন্তের কারণে ডিপার্টমেন্টে তার একটা আলাদা রেপুটেশটও আছে । অন্য দিকে বদনামও কম নেই । ব্যক্তি জীবনে সে অসুখী । স্ত্রীর সাথে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে তিন বছর আগে আর এক বছর আগে তার অন্য এক বাল্য বন্ধুর সাথে বিয়ে করেছে তার প্রাক্তন স্ত্রী । এই ব্যাপারটা কাইজারকে কোন ভাবেই মানসিক শান্তি দেয় না । অন্য দিকে তার মেয়ের সাথে কাইজারের নিয়মিত যোগাযোগ হলেও নতুন বাবাকে আব্বু বলে ডাকাটাও কাইজারকে কষ্ট দেয় !
খুনের তদন্ত এগিয়ে চলে । তবে শুরুতে কাইজারের উপরে হামলা হয় । তাকে হুমকি দেওয়া হয় যাতে করে কেসটা ড্রপ করে দেওয়া হয় । কিন্তু কাইজার থামে না । খুন হওয়ার মেয়ে দুটির অতীত ইতিহাস বের করা হয় । তারা কোথায় যেত কাদের কাছে মিশতো । জানা যায় তারা রিহ্যাব সেন্টারে এক সাথে ছিল । সেখান থেকেই তাদের পরিচয় তারপর বন্ধুত্ব । তাদের ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয় । সেখান থেকে একজনকে গ্রেফতারও করা হয় । কিন্তু কাইজারের কাজ শেষ । কেস অন্য ডিপার্টমেন্টে হস্তান্তর করা হয়ে যায় । কিন্তু কাইজারের মনে শান্তি লাগে না । সে বুঝতে পারে যে অন্য কোন ব্যাপার আছে । আসলে খুনী এখনও ধরা ছোয়ার বাইরেই আছে । শেষ পর্যন্ত কাইজার সেই আসল খুনীর কাছে পৌছে যায় । বের করে ফেলে আসল খুনী কে আর কেনই বা মেয়ে দুটোকে খুন করা হয়েছিলো । নাকি দুজনকে খুন করা হয় নি । তাদের মৃত্যুর পেছনে অন্য কোন কারণে আছে ! মোটমাুটি এই হচ্ছে কাইজারের কাহিনী !
কাইজারের ফিমেল চরিত্র গুলো এক সাথে
যে কোন সিরিজ দেখে শেষ করেই একটা অনুভূতি জন্মে যে এই এতো সময় নষ্ট করে (আমার বেলাতে আসলে রাতের ঘুম কামাই করে) সিরিজটা দেখলাম, এটা আমাকে ঠিক ঠাক আনন্দ দিলো কিনা ! কাইজার দেখার পরে মনে হয়েছে যে হ্যা এটা দেখে সময়টার ভাল ভাবে পার করেছি । কাইজারের কাহিনী গতানুগতি কাহিনী থেকে শতভাগ যে আলাদা সেটা আমি বলবো না তবে সেটা টিপিক্যাপ বাংলা ডিটেকটিভ কাহিনীর মতই না । এখানে সাসপেন্স যেমন রয়েছে, রয়েছে ব্যক্তি জীবনের ড্রামা । আছে প্রেম ভালবাসা আর আবেগ । সব শেষে আছে টুইস্ট । এটা অবশ্য আমি আশা করি । শেষর টুইস্টটা আমার বেশ ভাল লেগেছে । এছাড়া গল্পের শেষে একদম যখন আসল কাহিনী বের হয় মানে মেয়ে দুটোকে কেন মরতে হল সেটা আমাদের বাংলা ওয়েব সিরিজের বেলাতে বলতে গেলে একদম নতুন । ইংরেজি সিরিজ গুলোতে এটা খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার কিন্তু আমাদের দেশের বেলাতে এটা একেবারে অন্য রকম !
কাইজারের সকল চরিত্র
সিরিজের সংলাপ গুলো আমার সব থেকে ভাল লেগেছে । বিশেষ করে নিশো যে মাঝে মাঝে কয়েকটা ডায়লগ ছাড়ে সেটা মনে হয়েছে যেন একেবারে পার্ফেক্ট ভাবে পার্ফেক্ট সময়ে ছাড়া হয়েছে । নিশোর অভিনয় নিয়ে কোন কথা নেই । বর্তমানে বাংলাদেশে তার সমকক্ষ অভিনেতা খুব কমই আছে । প্রায় সকল চরিত্রেই সে সমান দক্ষতায় অভিনয় করে যাচ্ছে ।
আপনারা যদি থ্রিলার ঘরোয়ানার সিরিজ দেখতে পছন্দ করেন তাহলে কাইজার অবশ্যই দেখবেন । সময় ভাল যাবে আশা করি !
হ্যাপি ওয়াচ
এছাড়া ওয়াচলিস্টে আরও যা যা দেখতে পারেন
হইচই অরিজিনাল সিরিজঃ রিফিউজি
তিনটি কোরিয়ান ড্রামা
দুটো বাংলা অরিজিনাল ওয়েব সিরিজঃ ''আইজ্যাক লিটন'' ও ''নিখোজ''
চরকি অরিজিনাল ফিল্মঃ রেডরাম
ঈদে দেখা দুটি বাংলা ওয়েব সিরিজ ও একটি বোনাস নাটক
নুহাশ হুমায়ূনের হরর ওয়েব সিরিজ ''ষ''
pic source pic source 2 pic source 3