প্রিন্ট মিডিয়ায় বিহারীদের নিয়ে এর আগে কোন কাজ হয়েছে কিনা আমার ঠিক জানা নেই । তবে এদেশে আমার দেখা বিহারীদের নিয়ে এটাই প্রথম কোন মিডিয়া কন্টেন্ট । মিডিয়াতে আমি যতবারই বিহারীদের উপস্থিতি দেখেছি মূলত সেগুলো ছিল ক্ষুদ্র কোন চরিত্র এবং সবই সম্ভবত ছিল নেগেটিভ চরিত্র । এবারই প্রথম কোন কনটেন্ট দেখলাম যে কোন বিহারী চরিত্রকে কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে ।
সিরিজের কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম ইকবাল । মোহাম্মাপুরের বিহারী ক্যাম্পে তার বসবাস মা আর ভাইয়ের সাথে । তার ছোট ভাই অনেক যাবৎ জেলা খানাতে আটক গ্যাঙ ওয়ারের শিকার হয়েছে ! ইকবাল একজন ড্রাগ ডিলার । স্কুল কলেজ আর ইয়াং ছেলে মেয়েদের সে ড্রাগ সাপ্লাই দেয় । এটা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অফিসার মারিয়া ঠিকই জানে । ইকবালকে গ্রেফতার না করে তাকে নিজের চর হিসাবে কাজে লাগায় মারিয়া । ইকবালকে আরও আশ্বাস দেওয়া হয় যে ঠিক মত কাজ করতে পারলে তার ভাইকেও জেল থেকে ছাড়ানো হবে । সেই জন্য ইকবাল মারিয়ার হয়ে কাজ করে । ইকবাল মারিয়ার কথা মত ক্যাম্পের নেতার অফিসে একটা এয়ারপিচ সেট করে আসে ওখানে কি হচ্ছে সে সব শোনার জন্য।
সিরিজের প্রেক্ষাপট ২০০৭ সাল যখন বিহারীদের এদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে কিনা সেটা নিয়ে একটা বিতর্ক চলছে । কার্বন নামের একজন ইনটারন্যাশলাম টেরোরিস্ট ইকবালদের ক্যাম্পে লুকিয়ে আছে বলে সন্দেহ করা হয় । এবং ক্যাম্পের নেতার সাথে সেই কার্বনের কোন যোগাযোগ আছে কিনা সেটা জানার জন্য এমন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয় । এই কার্বন মূলত দেশে এসেছে বড় কোন কান্ড ঘটানোর জন্য । মারিয়া অনেক দিন থেকেই তার পিছনে লেগে আছে। ইকবালকে চোখ কান খোলা রাখতে বলা হয় । আর কাউকে যেন এই কথা না বলে সেটাও বলা হয় । তবে ইকবাল নিজের সব থেকে কাছের বন্ধু ওয়াসিমকে কার্বনের ব্যাপারে জানায় !
হইচই ট্রেইলার
এইভাবেই কাহিনী সামনের দিকে এগিয়ে চলে । শেষ পর্যন্ত আসলে ঘটনা কোন দিকে যায় । কার্বনকে কি মারিয়া এবং তার টিম ধরতে সমর্থ হয় নাকি কার্বন ঠিকই তার কাজ করে চলে যায় যার ভুক্তভোগি হয় হাজারও নির্দোষ মানুষ ?
আগেই বলেছি এর আগে বিহারী চরিত্র নিয়ে আমার কোন কাজ দেখা হয় নি । তাই আমার কাছে খানিকটা নতুনই ছিল ব্যাপারটা । বিশেষ করে তাদের ভেতরকার জীবন চলাচল আচরন সম্পর্কে খানিকটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে । বিহারীরা আসলে কেমন করে এই দেশে বেঁচে আছে সেটা নিয়ে আমার কোন ধারণা নেই । আমি কোন দিন ঐ ক্যাম্পের ভেতরে ঢুকেও দেখি নি । তাই আসলেই একেবারে ঠিকঠাক সেগুলো চিত্রায়িত করা হয়েছে কিনা সেই টা নিয়ে বলা কঠিন । তবে সিরিজ হিসাবে আমার কাছে এটা ঠিকঠাকই মনে হয়েছে ।
সিরিজের প্রধান কেন্দ্রীয় ইকবাল চরিত্রে অভিনয় করেছেন সোহেল মন্ডল । এর আগেও সোহেল মন্ডলকে পেট কাটা ষ ওয়েব সিরিজে দেখা গেছে । নতুনদের ভেতরে তার অভিনয় সত্যিই চমৎকার । ইকবাল চরিত্রকে চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে সে যদিও তার হিন্দি বলাটা একটু মেকি মনে হয়েছে আমার কাছে । এরপর মারিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন মম ! মমর অভিনয় নিয়ে তো কোন কথা বলার অপেক্ষা রাখে না । তার চুলের খানিকটা পাক ধরিয়ে তাকে একটু বয়স্ক দেখানোর চেষ্টা চালানো হয়েছে । এছাড়া টেরোরিস্ট কার্বন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফজাল হোসেন ।
এই সিরিজের সব থেকে বাজে যে ব্যাপারটা লেগেছে সেটা হচ্ছে ইংরেজিতে ''&#াক'' শব্দটার ব্যবহার ! বিশেষ করে মমর মুখ থেকে এই শব্দটা যতবারই বের হয়েছে ততবারই আমার খানিকটা অস্বস্তি লেগেছে । অস্বস্তি লাগার কারণ হচ্ছে আমার মনে হয় নি যে শব্দটা এখানে ন্যাচেরালি বের হয়েছে । অনেকটা জোর করে বলানোর মত মনে হয়েছে । এছাড়া আরও কিছু গালির ব্যবহার করা হয়েছে । এই গালিগুলো যদি পিপ শব্দ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হত তাহলে হয়তো আরও একটু ভাল লাগতো !
সিরিজটি এই মাসের দশ তারিখে মুক্তি পেয়েছে হইচই প্লাটফর্মে । সাবস্ক্রিপশন থাকলে আজই দেখতে পারেন হইচই থেকে।
হ্যাপি ওয়াচিং !
এছাড়া ওয়াচলিস্টে আরও যা যা দেখতে পারেন
তিনটি কোরিয়ান ড্রামা
দুটো বাংলা অরিজিনাল ওয়েব সিরিজঃ ''আইজ্যাক লিটন'' ও ''নিখোজ''
চরকি অরিজিনাল ফিল্মঃ রেডরাম
ঈদে দেখা দুটি বাংলা ওয়েব সিরিজ ও একটি বোনাস নাটক
নুহাশ হুমায়ূনের হরর ওয়েব সিরিজ ''ষ''
pic source