গতদিন বলেছিলাম পেট কাটা ষ সিরিজটার কথা । সেটা ছিল প্যারানরমাল কাহিনী । আজকে আরও দুটো বাংলা থ্রিলার ওয়েব সিরিজের গল্প নিয়ে হাজির হলাম । যারা বাংলা নাটক সিনেমা দেখেন তারা আশা করি সকলেই মোশাররফ করিমের নাম শুনে থাকবেন । বিগত বেশ কিছু বছর ধরে মোশাররফ করিম তার অভিনয় দিয়ে বাংলার দর্শকদের আকৃষ্ঠ করে রেখেছেন । কমেডি থেকে শুরু করে সিরিয়াস সব ধরণের অভিনয়ে সে যে একেবারে সিদ্ধ হস্ত সেটা নিয়ে কোন তর্ক চলে না । এবার ঈদে দেখা দুটি ওয়েব সিরিজের প্রধান চরিত্র মোশাররফ করিম। প্রথম সিরিজটার নাম মহানগর আর দ্বিতীয় সিরিজটার নাম দৌড় ।
দৌড় মুক্তি পেয়েছে এবার ঈদ । আমার ঈদের দিনটা কেটেছে এই দৌড় দেখেই । দৌড়ের ট্রেইলারটা দেখে নিন আগে ।
দৌড় ওয়েব সিরিজটা থ্রিলার ঘরোয়ানার । একেবারে শুরুতে দেখা যায় একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি গাড়ি এক্সিডেন্ট করে কিংবা একটা ট্রাক এসে তাকে ইচ্ছে করে ধাক্কা দেয় । দেখা যায় একজন তাকে টেনে বের করে নিয়ে আসে গাড়ি থেকে । পরে জানা যায় যে তার মৃত্যু এক্সিডেন্ট থেকে নয় বরং গলা টিপার কারণে হয়েছে । পুলিশ তদন্তে নামে । অন্য দিকে রুহুল আমিন নামের ব্যবসায়ীর গাড়ি চুরি হয় তার অফিসের নিচ থেকে । এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল কিন্তু পরে জানা যায় যে ঐ গাড়ির ভেতরে একটা গোপন ফাইল ছিল । সেটা যদি পুলিশের হাতে পড়ে তাহলে রুহুল আমিনের অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে । ততক্ষণে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়ে গেছে । রুহুল আমিন তখন নিজেস্ব লোক সেট করে গাড়িটা খুজে পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য । এরপর জানা যায় যে রুহুল আমিনের ছেলে বাবার কাছাকাছি থাকার জন্য সেই গাড়ির ডিক্কির ভেতরে ঢুকে বসে আছে । এখন রুহুল আমিন কী করবে? সে তার লোককে ফোন দিতে থাকে কিন্তু তার লোক ফোন ধরে না । এক সময়ে মেসেজ আসে যে কাজ হয়ে গেছে । মানে হচ্ছে গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ?
একদিকে পুলিশ সেই ব্যক্তির খুনিকে খুজে বেড়ায় আবার রুহুল আমিনের গাড়ি এবং ছেলেকেও খুজে বেড়ায় । অন্য দিকে রুহুল আমি নিজেও সেই গাড়ির পেছনে লেগে থাকে । যারা গাড়ি টা চুরি করেছিল তারা কিভাবে করলো আর কেন করলো সে সব বের হয়ে আসে কাহিনী এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে । টানটান উত্তেজনার একটা সিরিজ যা আপনাকে কোন ভাবেই বিরক্ত হতে দেবে না ।
সিরিজটা দেখতে পাবেন হইচই এর প্লাটফর্মে।
দ্বিতীয় সিরিজটার নাম মহানগর । এটা গতত বছরে মুক্তি পেয়েছে । মোটামুটি ভাল সাড়া ফেলেছিলো এই সিরিজটি । সিরিজটিট ট্রেইলার আগে দেখুন ।
এই সিরিজের প্রধান চরিত্র মশাররফ করিম । সে পেশায় একজন পুলিশ অফিসার । থানার ওসি । গল্পের শুরু একটা পার্টি থেকে । সেখান থেকে মদ খেয়ে একজন বিখ্যাত ব্যবসায়ীর ছেলে বের হয়ে যায় । রাস্তায় একজনকে গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলে । তাকে থানাতে আনা হয় । সেখান থেকে কাহিনী শুরু । কিভাবে সেই ঘটনা কে ওসি সাহেব ম্যানেক করে কিংবা করতে চায় সেই কাহিনী আস্তে আস্তে এগিয়ে যেতে থাকে । আমি এই সিরিজে মোশাররফ করিমের অভিনয় দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি । থানার ওসির চরিত্রটা সে এতো চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে যে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না । এক সময়ে মিডিয়ার লোকজন খবর পেয়ে যায় । তারা সবাই এসে হাজির হয় থানার সামনে । অবস্থা আরও জটিল থেকে জটিল হয়ে যায় । উপর থেকে খবর পেয়ে হাজির হয় থানার এসি সাহেব ।
কিন্তু একেবারে শেষে গিয়ে একটা দারুন ধাক্কা খেতে হবে । আমি যেমনটা ভেবেছিলাম শেষে এসে দেখলাম তেমনটা আসলে নয় । রহস্যাটা বললাম না, নয়তো আপনারা মজা পাবেন না ।
এই সিরিজটাও আপনারা দেখতে পাবেন হইচই এর প্লাটফর্মে ।
এবার আসি একটা বোনাশ নাটক নিয়ে । আমাদের সামুর ব্লগার নাজিম উদ দৌলার লেখা একটা নাটক দেখলাম । লেখক হিসাবে নাজিমের জুড়ি নেই । বিশেষ করে থ্রিলার ছোট গল্প তার হাত খুব পাকা । এবার তার লেখা একটা মুভিও মুক্তি পেয়েছে । মুভিটির নাম শান । আপনারা স্ব-পরিবারে দেখে আসতে পারেন । যাই হোক, নাটকের নাম চম্পা হাউজ । এটা একটা ভৌতিক গল্প ।
এখানে প্রধান চরিত্র নিশো গাড়ি ঠিক করতে গিয়ে চম্পা হাউজের মালিকের সাথে পরিচয় হয় । নিশো এখানে একজন সাইক্রায়াটিস্ট থাকে যে কিনা মানুষের সাথে ঘটা ভৌতিক ব্যাপার গুলোর ব্যাখ্যার মাধ্যমে সমাধান করে থাকে । সেখানে চম্পা হাউজের মালিক তাকে অনুরোধ করে যেন তার বাসায় এসে বাড়ির সমস্যাটার একটা সমাধান করে দেয় । বিগত এক মাস ধরে তারা বাড়িতে খুব সমস্যার ভেতরে আছে । নিশো গিয়ে হাজির চম্পা হাউজে এবং এক সময়ে সমাধান খুজতে থাকে । শেষ পর্যন্ত কি সমাধান খুজে পায় নিশো? নাকি বাড়ি সত্যি সত্যিই একটা হন্টেড হাউজ ।
শেষটা দেখার পরে আমি একটু অবাকই হয়েছিলাম। অবাক মানে ভাল দিকে । কাহিনী যেমন আশা করে থাকি তেমন না হওয়া । এখানে লেখকের সার্তথকতা । পাঠক দর্শকদের অবাক করে দেওয়া। অন্তত এই রকম শেষ আমি আশা করি নি । আমি ভেবেছিলাম হয়তো ভুলভুলাইয়া মুভির মত কিছু একটা হবে। কিন্তু সেই রকম কিছুই হয় নি । তবে এই চমকের পরে শেষে আরও একটা চমক ছিল যেটা কিনা পুরো নাটকের পাশাই উল্টে দিয়েছে একেবারে । আপনারা দেখুন । আশা করি মজা পাবেন । এটা এবার ঈদে চ্যানেল আইতে মুক্তি পেয়েছে । সেই সাথে এখন ইউটিউবেও আছে । নাটক দেখতে পাবেন এখান থেকে।
হ্যাপি ওয়াচিং