-কি ব্যাপার বয়ফ্রেন্ড কি খবর ?
তানজিলার দুষ্টুমি দেখে আমি খানিকটা মনে মনে হাসলাম । এতো সহজে সে আমাকে বয়ফ্রেন্ড বলতে পারলেও আমি তাকে কিছুইতে গার্লফ্রেন্ড বলতে পারছি না । তবে আমি না বলতে পারলেও এতোক্ষনে আমার আর ওর পরিচিত সবাই জেনে গেছে যে, আমি আর ও এই সম্পর্কে জড়িয়ে গেছি ।
ওর পরিচিত গোটা পঞ্চাশেক মানুষ এরই মধ্যে আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে ফেলেছে । আমি জানি আমার পরিচিত মানুষেরাও তাকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে ফেলেছে এরই মধ্যে । এই ঘন্টাখানেক আগে ফেসবুকে মেয়েটা সাথে আমার ইন এ রিলেশনশিপ স্টাটাস আপডেট করা হয়েছে । যদিও ঘটনা খানিকটা অন্য রকম !
তানজিলার সাথে পরিচয়টা বেশ অদ্ভুদ ভাবে । একদিন বিকেল বেলা আমি ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম । এমন সময় একজন আমার ইনবক্সে নক দিয়ে বলল যে আমি বিশেষ কেউ কি না ! এরকম প্রশ্ন আমার কাছে বেশ অদ্ভুদ মনে হল । অন্তত এমন করে আমার কাছে এর আগে কেউ কিছু জানতে চায় নি কোন দিন !
আমি বিশেষ কেউ কি না !
আমি জানতে চাইলাম হঠাৎ এই প্রশ্ন ?
এরই ভেতরে আমি মেয়েটির প্রোফাইলে ঘুরে এসেছি । মেয়েটির নামের বানানটা বেশ অদ্ভুদ । লাজিনতা । এই নাম আমি আগে কোন দিন শুনিও নি । লাজিনতা তখন আমাকে জানালো যে আমার ফ্রেন্ড লিস্টে একজন ঢুকতে চায় । এবং সেই মানুষটি লাজিনতাকে আমার কাছে অনুরোধ করতে বলেছে যেন আমি তাকে লিস্টে যুক্ত করে নিই ।
তখন অবশ্য আমার ফ্রেন্ড লিস্ট ছিল খুবই ছোট । পরিচিত মানষ ছাড়া আমি কাউকেই আমার লিস্টে যুক্ত করতাম না । আমি তাকে তখন সরাসরিই মানা করে দিলাম । ব্যাপারটা তানজিলার কাছে সম্ভবত একটু অন্য রকম লেখেছিলো । এই মেয়ে সম্ভবত না শুনে খুব একটা অভ্যস্ত নয় । তার পেছনে অবশ্য কারনও ছিল । সুন্দরীদের খুব একটা না শুনতে হয় না । কেউ তাদের কিছু বললে সেটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হয়ে যায় । আর সত্যি বলতে আমি তানজিলার মত সুন্দর চেহারার কাউকে না বলাটা খুবই কষ্টের । মন কিছুতেই সায় দিতে চায় না । তবে আমি অনলাইনের ব্যাপারে সব সময়ই সাবধানী । অনলাইনের চেনা জানা পরিচয় সব সময়ই খুব ঠুনকো হয়ে থাকে । খুব সহজেই মানুষকে ঝামেলাতে ফেলতে পারে ।
মনে ভেতরে আমার খানিকটা আকুপাকু করছিলো তানজিলার অনুরোধটা শোনার জন্য । তবে এর থেকেও বেশি তানজিলা যদি অন্যের জন্য না হয়ে নিজে আমার লিস্টে যুক্ত হতে চাইতো তাহলে বেশি খুশি হতাম । তারপর দিনই তানজিনার সাথে আবার কথা হল । সে সেদিন আমাকে আবারও সেই একই প্রশ্ন করলো এবং আমি আবারও বললাম যে আমি খুবই সাধারন একজন । তবে এবার সে নিজেই খুজে বের করলো সব । আমি যে গল্প লিখি সেটা সে নিজেই বের করে ফেলল । তারপর আমাকে বলল এতো ভাব না নিলে বলে দিলেই হত । সেদিন আরও কিছু কথা হল । সে কোথায় থাকে কি পড়ে এই । সেদিনই জানতে পারলাম যে তার নাম আসলে তানজিলা । নামটা সে ঠিক উল্টো করে লিখেছে । সেই হিসাবে আমাকে সে ডাকতে শুরু করলো "পুঅ" বলে । কি হাস্যকর দেখাচ্ছিলো নামটা । কয়েকবার মনে মনে উচ্চারন করে দেখলাম । আরও বেশি হাস্যকর শোনাচ্ছে ।
তারপর কিভাবে যে তানজিলা আমার লিস্টে যুক্ত হয়েছিলো আমি মনে করতে পারছি না । হয় সে নয়তো আমি তাকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম । তারপর তার হোয়াটসএপেও যুক্ত হয়ে গেলাম । নিয়মিত কথা না হলেও মাঝে মাঝেই তানজিনার সাথে কথা হত । আর ওর ছবি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করতাম । কারন তানজিলা সত্যিই সত্যিই নিখুত সুন্দর ছিলো । চোখ নাম মুখ আর চেহারার একেবারে চমৎকার সংযোজন । সত্যিই আমি ওর মত চমৎকার চেহারা অনেক দিন দেখি নি ।
সেদিন ও একটা ছবি দিয়েছিলো ওর ছোট ভাইয়ের সাথে । ছবিটার দিকে বেশ কিছু সময় তাকিয়ে রইলাম । মেয়েটা কালো রংয়ের একটা টিশার্ট পরেছিলো । সে সাথে একটা সাদা লেগিংস । অন্যান্য সময় ওর চুল ছাড়া থাকলেও আজকে চুল ও পোনিটেল করে বেঁধেছে । সেই সাথে আবার হাতে মেহেদি দিয়েছে । সাদা লেগিংস আর মেয়েদীর উপর আমার এমনিতেও একটা দুর্বলতা আছে । আর আজকে ওকে দেখে যেন আমি নিজেকে খানিকটা হারিয়েই ফেললাম । লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে ওকে ছবিটার একটা স্ক্রিনশট পাঠিয়ে বললাম যে ছবিটা ভাল হয়েছে । ও হাসলো কেবল । নিজেকে ধরে রাখতে চাইলাম । বললাম যে আর না, আর কিছু বলা মোটেই ঠিক হবে না । মেয়েটা কি না কি ভেবে বসবে কিন্তু শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করেই ফেললাম । ওকে বললাম যে এই পোশাকের তার সিঙ্গেল ছবি আছে কি না!
বলেই নিজেকে একটা কষে চড় মাড়তে ইচ্ছে হল । এই ভাবে কারো কাছে ছবি চাওয়াটা কত খানিকটা ছ্যবলামো সেটা আমি জানি । তানজিলা নিশ্চয়ই আমাকে সেই রকমই ভাবছে । আমি সরি লিখতে যাবো তখনই দেখলাম মেয়েটা বেশ কিছু ছবি পাঠিয়ে দিল । ওর বিভিন্ন পোজে । ঐদিন আর কোন কথা হল না । আর কোন কাজও আমার হল না । আমি কেবল ছবি গুলোর দিকেই তাকিয়ে রইলাম বেশ কিছুটা সময় ! অন্য কিছু যেন আমি ভাবতেই পারছিলাম না ।
এভাবেই আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে যাচ্ছিলো । আমরা তখনও একে অন্যকে কেবল আপনিই বলি । মাঝে মাঝে কথা হয় । তারপরই গত সপ্তাহে সে আমাকে কথাটা বলল । আমার কাছে সাহায্য চাইলো । সাহায্যটা হচ্ছে আমাকে ওর বয়ফ্রেন্ড হওয়া লাগবে । আমার অভিজ্ঞতা থেকেই আমি জানি সুন্দরী মেয়েদের লাভ লাইফ কিছুতেই স্বাভাবিক থাকে না । তাদের প্রেম জীবনে দুনিয়ার ঝামেলা থাকে । তানজিলারও তাই ছিল । আমি শুরু থেকেই জানতাম ওর একটা রিলেশন ছিল. সেটা ভেঙ্গে গিয়েছিলো তবুও সমস্যা রয়েই গিয়েছিলো ।
তানজিলা আমাকে বলল যে ওর সাথে পাব্লিক্যালি রিলেশনশীপ স্টাটাস দিতে আমার কোন সমস্যা আছে কি না । আমি সিঙ্গেল রয়েছি । আমার কোন সমস্যা এমনিতেও নেই । আমি বুঝতে পারছিলাম ও ওর আগের কোন ঝামেলা থেকে পুরোপুরি মুক্ত হওয়ার জন্য এই কাজটা করতে চাইছে । আমার কোন সমস্যা ছিল না । এই ভাবেই তানজিলা হয়ে গেল আমার ভার্চুয়াল প্রেমিকা ।
তানজিলার মেসেজটার দিকে আমি আরও কিছু সময় তাকিয়ে রইলাম । কি জবাব দিবো সেটা ভাবতেই তানজিনা আরেকটা মেসেজ পাঠিয়ে দিল ।
-শুনেন, আজকে থেকে আপনি বলা বাদ । বুঝছেন ? আর মাসেজেও আপনি বলা বন্ধ করতে হবে । আমার কিছু ফ্রেন্ড আছে যারা মাঝে মাঝে ফোন চেক করে । সেখানে যদি এই আপনি আপনি দেখে তাহলে কিছু সব ফাঁস হয়ে যাবে । বুঝতে পেরেছেন ?
আমি বললাম
-হুম । বুঝতে পেরেছি ।
যদি আমার কাছে অস্বস্থি লাগছিলো । এতোদিন ধরে আপনি বলা কাউকে চট করেই আপনি বলা যাায় না । আমি অন্তত বলতে পারি না । আমি কেবল ভাবছি এই অনলাইনে না হয় বললাম তুমি তুমি করে কিন্তু যদি সত্যি সত্যি দেখা হয় তখন কি বলবো ? সত্যি কি তুমি বলতে পারবো ?
আমার মনের কথা মনেই রয়ে গেল । তানজিলা তারপর বলল
-শোন, আগামী পরশুদিন আমাদের মেলাতে দেখা হবে । কেমন ?
বই মেলা শুরু হয়েছে কয়েকদিন । আমি এখনও সেখানে যাই নি তবে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলাম । আমি কিছু বলতে গেলাম তার আগেই তানজিলা বলল
-শুনো কোন রকম অযুহাত দিবা যে দেখা করবা না । এসব চলবে না । যখন গার্লফ্রেন্ড বানিয়েছো তখন ঝামেলাও গলায় নিয়েছো । কথা কম কম বলবা । আমার কথার উপরে কথাই বলবা না । মনে থাকবে ?
-হুম ।
-হুম কি ? বল যে মনে থাকবে ।
-হুম মনে থাকবে ।
-গুড বয় । এখন আগামী পরশুদিন আমাদের দেখা হচ্ছে । ঠিক আছে ?
-হ্যা ঠিক আছে !
আমি মনে মনে একটু চিন্তিত হয়ে গেলাম । সত্যি সত্যিই দেখা হচ্ছে তাহলে এই মেয়ের সাথে ।
বই মেলাতে যখন ঢুকছিলাম তখনও বুকের ভেতরে কেমন যেন করছিলো । বুকের ভেতরে একটা দুরু দুরু ভাব কাজ করছিলো । যদিও এতো ভয় কিংবা অস্বস্তির কোন কারন ছিল না । আমি চারিদিকে তানজিলাকে খুজতে শুরু করলাম । ঠিক সেই সময়ই ওর ফোন এসে হাজির !
-কি জনাব ! এসেছেন ?
-হ্যা । কোথায় আপ.... মানে কোথায় তুমি ?
ফোনের ওপাশ থেকে হাসির শব্দ শুনতে পেলাম । আমি ওকে আপনি বলে ফেলেছিলাম প্রায় তবে সেটা ঠিক করে নিয়েছি । তানজিলা বলল
-হ্যা দেখতেই পাচ্ছি তুমি চলে এসেছো । একটু ডান দিকে ঘোরো । আমাকে দেখতে পাবে ।
আমি ফোন কানে নিয়েই ডান দিকে ফিরে তাকালাম । এরই ভেতরে অনেক মানুষ চলে এসেছে । কিন্তু এতো মানুষের ভীড়ে আমার তানজিনাকে চিনতে মোটেও কষ্ট হল না । আজকে তানজিনা পুরোপুরি সাদা পরে এসেছে । ও সব সময় জানতো আমার সাদা পোশাক পছন্দ । সাদা কামিজের সাথে সাদা লেগিংস আর সাদা ওড়না । চুল গুলো আজকে খোলা । অবশ্য খোলা রেখে ভাল করেছে । হাতের দিকে তাকাতে সেখানে গাঢ় মেহেদী দেখতে পেলাম । আসার আগে দিয়ে এসেছে নিশ্চয়ই । একেবারে সাদা পরীর মত লাগছে ওকে !
আমি কিছু সময় কোন কথা বলতে পারলাম না । কেবল তাকিয়ে রইলাম একভাবে । তানজিলা হাসি মুখ নিয়ে একটু একটু করে এগিয়ে আসতে লাগলো । আমি কেবল তাকিয়ে রইলাম এক ভাবেই ।
পুরো বইমেলা আমার কাছে অন্য রকম ছিল । বই আমি একটাও ঠিক মত দেখি নি । কেবল ওর দিকেই তাকিয়ে ছিলাম । কিছু সময় পরে ওর বন্ধুরা এসে হাসির হল । আমার সাথে পরিচিত হল । আমি নিজের ভেতরে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করলেও ঠিক পারছিলাম না । তবে তানজিলা ছিল স্বাভাবিক । ওর আচরন এমন ছিল যেন আমাদের কতদিনের সম্পর্ক । একটা সময় ও খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমার হাত ধরলো, ঠিক যেভাবে একজন প্রেমিকা তার প্রেমিকার হাত ধরে ।
মেলা থেকে ফিরেও আমার স্বভাবিক হতে বেশ কিছুটা সময় লাগলো । আমি ওকে ওর বাসা পর্যন্ত পৌছে দিয়ে তারপর এসেছি । বাসায় পৌছে দেখতে পেলাম ওর প্রোফাইল পিকচার বদলে গিয়েছে । সেখানে আমার সাথে মেলাতে তোলা একটা ছবি শোভা পাচ্ছে । কেন জানি এটা দেখে খুব বেসি ভাল লাগলো ।
তারপর থেকেই আমাদের দেখা সাক্ষাত হতে লাগলো । প্রায় কাছাকাছি বাসা হওয়ার কারনে দেখা হওয়াটা সহজ হয়ে গেল । আমি যেতাম নয়তো ও নিজেই আসতো আমার এলাকাতে । ক্যাম্পাস থেকে ফিরার সময় নিজের স্টোপেজে না নেমে আমার স্টোপেজে নামতো । এক সাথে লাঞ্চ করে তারপর বিকেলে বাসায় যেত । আর আমাদের প্রোফাইল আমাদের একসাথে ছবিতে ভর্তি হতে লাগলো ।
এমন কি আমার বাসাতেও ব্যাপারটা জেনে গেল । ভাইয়া কেমন করে যেন আমার প্রোফাইলের ছবি দেখে ফেলল । যদিও তাকে আমি অনেক আগেই ব্লক করে রেখেছিলাম । বাসা থেকে আমাকে ফোন করে জানালো যে মেয়ে তাদের পছন্দ হয়েছে । আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম । বলে কি এইসব !
তানজিলাকে বলতেই সে হেসে গড়াগড়ি খেতে শুরু করলো । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আমি যদি তোমার বউ হই তাহলে তোমার জীবন ভেজে ভাজা ভাজা করে ফেলবো । বুঝতে পারো নাই এখনও ?
-হ্যা তা আবার না বুঝতে পারছি !
আমি ভেবেছিলাম আমাদের সম্পর্ক হয়তো খুব বেশি দিন টিকবে না । আমি বলতে চাচ্ছি যে এই লোক দেখানো সম্পর্কটা বেশিদিন টিকবে । আমার ধারনা সত্যিই হয়ে গেল কয়েক দিন পরেই ।
সেদিন লেকের ধারেই বসে বসে গল্প করছিলাম । এমন সময় কয়েক জন ছেলে এসে আমাদের ঘিরে ধরলো । কিছু বুঝার আগেই আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করলো । আমি ব্যাপারটা ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না । কারন আমরা ছাড়াও আরও বেশ কিছু কাপল ছিল সেখানে । আমি খানিকটা বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু সংখ্যাতে আমি ওদের সাথে কোন ভাবেই পেরে উঠবো না ।
কিন্তু যেই না আমাকে ধাক্কা দিল একজন তখনই তানজিলার অন্য রূপ দেখতে পোলম ।
আমার সামনে এসে দাড়িয়ে সামনের ছেলেটাকে এতো জোড়ে ধাক্কা দিল আর চিৎকার করতে লাগলো যে আমি ভরকে গেলামই সামনের ছেলে গুলোও ভরকে গেল । দেখি আশে পাশ থেকে বেশ কিছু মানুষ এগিয়ে এল আমাদের সাহায্যের জন্য । অবস্থা বেগতিক দেখে ছেলে গুলো সরে গেল । আমি তখন তানজিলা শান্ত করতে লাগলাম । ওকে নিয়ে রিক্সায় উঠে ওর বাসার দিকে রওনা দিলাম । সন্ধ্যা হয়ে অন্ধকার হয়ে গেছে ।
তানজিলা আমার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলো । আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না ।
ওর বাসার কাছে এসে নেমে বললাম
-কি হয়েছে ! এমন ভাবে রেগে গেলে কেন ?
-ওরা তোমার গায়ে হাত দিবে কেন ?
-আচ্ছা বাবা দিক । যা হবার হয়েছে । ওদের একজন কি তোমার এক্স ছিল ?
তানজিলা মাথা ঝাকালো । তারপর বলল
-ওর কাছ থেকে পুরোপুরি সরে যেতেই আমি তোমার কাছে এসেছিলাম । ওকে দেখানোর জন্য । কিন্তু ওর এটা সহ্য হচ্ছে না । এই জন্য তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে এসেছে ।
আমি বললাম
-বুঝতে পারছি । যাক, এবার একটু মাথা ঠান্ডা কর । বাসায় যাও । কাল দেখা হবে আবার । ঠিক আছে ?
ও মাথা ঝাকালো !
তানজিলা তখনও আমার হাত ধরেই রেখেছে । আমি হাত ছাড়িয়ে চলে যেতে যাবো দেখলাম ও হাত ছাড়লো না । মৃদু আলোতে আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়েই চমকে উঠলাম । মেয়েটাকে এমন কেন লাগছে । চোখে কেমন ঘোর লাগা দৃষ্টি !
তানজিলা বলল
-আমি জানি না সে সময় আমার কি হয়েছিলো যে আমি ওরকম আচরন করলাম !
আমি চুপ করে তাকিয়ে আছি ওর দিকে ! ও বলেই চলেছে
-কিন্তু আমার মনে হচ্ছে যে আমি তোমার উপর ফল করেছি !
লাইনটা বলেই ও আমাকে গভীর ভাবেই চুমু খেলো ! ওদের বাসাটা একটা গলির ভেতরে দিকে যেতে হয় । একটু অন্ধকার মত হলেও মাঝে মাঝেই সেখান দিয়ে লোকজন আসা যাওয়া করে । যে কেউ চলে আসতে পারে কিন্তু আমার কিংবা তানজিলার সেই দিকে খেয়াল ছিল না । বেশ কিছুটা সময় পরে আবার নিজেকের ভেতরে ফিরে আসার পর আমি তানজিলার দিকে তাকালম । ও তখন চোখ নামিয়ে ফেলেছে । এই এতো দিকে আমি ওকে দেখলাম ওর চোখে একটা লজ্জা মিশ্রিত হাসি । এতো দিন আমিা কেবল লজ্জা পেয়েছি ।
আমি বলল
-আমি আসি কেমন ?
-হুম ! সাবধানে যেও !
-যাবো !
আমি ওকে রেখে হাটা দিলাম । গলি দিয়ে বের হওয়ার আগ পর্যন্ত কতবার পেছনে ফিরে তাকিয়েছি আমি নিজের জানি না । প্রত্যেকবার তানজিলাকে দেখেছি ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে । স্বল্প আলোতেও ওর চোখে আমার জন্য ব্যকুলতাটা আমার চোখে এড়ালো না । আমার লোক দেখানো সম্পর্কটা সত্যি সত্যি শেষ হয়ে গেল । এখন থেকে সেটা একেবারে সত্যিই সম্পর্কে পরিনত হল। আমাদের নতুন গল্প শুরু হয়ে গেল আজকে থেকে । আমার আর সাদা পরীটার গল্প !
(সমাপ্ত)
নতুন বছরের প্রথম গল্প । সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা !
(গল্পটা মিথ্যে হলেও কিন্তু গল্পের এই পরীটার অস্তিত্ব কিন্তু সত্যিই আছে)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:২৭