আধুনিক কালের বাচ্চারা হাতে স্মার্ট ফোন আর ট্যাব নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো । তাদের ফোন ছিল না কোন ডাটা কানেকশন । কত আর অফলাইন গেম খেলা যায় ? তাদের খেলতে ইচ্ছে করে সিওসি কিংবা ফেসবুকে স্টাটাস দিতে ইচ্ছে করে । কিন্তু কোন ইন্টারনেট কানেকশন না থাকায় তাদের কিছুই করার ছিল না ।
একদিন তারা হাটতে হাটতে এক বাগানে চলে এল । এবং বাগানে ঢোকার সাথে সাথেই তারা লক্ষ্য করলো তাদের সবার স্মার্ট ফোন এবং ট্যাবে এক সাথে নোটিফিকেশন আশা শুরু করেছে । তারা সবাই অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো যে তাদের ডিভাইস গুলো একটা ফ্রি ওয়াইফাই জোনের ভেতরে চলে এসেছে ।
আর তাদের পায় কে ?
কেউ তারা সিওসি খেলাতে মেতে উঠলো কেউবা ফেসবুকে স্টাটাস দিল । কেউ বা সেলফি তুলে পোস্ট দিতে শুরু করলো । আর চেক ইন দিতে কেউ ভুল করলো না !
যে যাই করুক না কেন সবাই ফেসবুকে চেক ইন দিয়ে লিখলো ইনজয়য়িং ফ্রি ওয়াইফাই এট অমুক বাগান !
ব্যাস এইটা দেখার সাথে সাথে দলে দলে ছেলে মেয়েরা আসতে লাগলো সেই বাগানে । দেখতে না দেখতে সেই বাগানটা ভরে উঠলো শিশুদের মুখরিত কলতানে ।
সেই বাগান টা ছিল একটা দৈত্যের । এলাকার সবাই তাকে ভয় পেত । তাই বাসার আসে পাশে কেউ আসতো না । দৈত্য তাই ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করে নি কোন দিন । কিন্তু শিশুরা তো এসব বোঝে না । তারা দৈত্য সম্পর্কে জানতোও না । তারা কেবল জানতে পারলো যে তারা দৈত্যের ফ্রি ওয়াইফাই তারা ব্যবহার করছে । তাই তাদের কাছে দৈত্য হয়ে উঠলো প্রিয় চরিত্র ! তারা নিশ্চিন্তে চলে আসতো বাগানে । লাইন ধরে সবাই দৈত্য কে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালো । দৈত্যের প্রতিটি পোস্টে টারা লাইক কমেন্ট দিয়ে ভাসিয়ে দিল ।
দৈত্য ঘুম থেকে উঠে তো অবাক । যার পোস্ট দিনে একটাও লাইক পরতো না সেই পোস্টে শ খানেক লাইক আর কমেন্টের অভাব নেই । দৈত্য কিছু বুঝতে পারলো না প্রথমে । কিন্তু কিছু সময় যাওয়ার পরেই সব বুঝতে পারলো । ব্যস ! তার রাগ আর দেখে কে ?
কি এতো বড় সাহস ! আমার ওয়াইফাই ব্যবহার করে !
দৈত্য স্টাটাস দিল
"এতো বড় সাহস" feeling ভেরি এংড়ি
সাথে সাথে লাইক কমেন্টের বন্যা বয়ে গেল !
কেউ লিখলো
কি ব্যাপার ডুড ! কি সমস্যা ?
কি দৈত্য মামা ?
এক মেয়ে লিখলো
কি হয়েছে আমার সুইট দৈত্য ভাইয়াটা । রাগ কেন ?
দৈত্য তো এমনিতেই রেগে ছিল । সেই মেয়ের কাছ থেকে ভাইয়া ডাক শুনে আরও রেগে গেল । ব্যাস তখনই ওয়াইফাইটা পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড করে দিল । ব্যাস আর কেউ ওয়াইফাই ব্যব হার করতে পারলো না !
তারপর দৈত্য আবার স্টাটাস দিল !
আমার ওয়াইফাই আর কেউ ব্যবহার করবে না ! দিলাম পাসওয়ার্ড !
feeling শান্তি !
কিন্তু সেই স্টাটাস দেখার মত কেউ ছিল না । কেউ কোন লাইক দিল না কেউ দিল কমেন্ট !
এভাবে আরও কদিনেও দৈত্যের স্টাটাসের কেউ কোন লাইণ কমেন্ট দিল না । দৈত্যের মনের ভেতরে কেমন যেন হতে লাগলো । কদিন আগে যখন তার স্টাটাসে কমেন্ট আর লাইকের বন্যা বয়ে যেত দৈত্যের খুব ভাল লাগলো । নিজেকে খানিকটা সেলিব্রেটি সেলিব্রেটি মনে হত । সে এই জিনিস টা মিস করতে শুরু করলো ।
কদিন আগেও তার বাগানে হাজার মানুস চেক ইন দিতো কিন্তু তারপরে একজনও চেক ইন দেয় নাই । প্রতিদিন কিছু ছেলে মেয়ে আসে তবে ওয়াইফাই প্রোটেক্টেড দেখে আবারও চলে যায় মন খারাপ করে ।
শেষ দৈত্য সব কিছু দেখে নিজের ওয়াইফাই পাসওয়ার্ডটা খুলে দিল । তারপর বাগানের সামনে লিখে দিল ফ্রি ওয়াইফাই !
ব্যাস আবার সেদি বিকাল থেকে শুরু হয়ে গেল ছেলে মেয়েদের আনাগোনা !
স্টাটাসের পর স্টাটাস আসতে লাগলো ! দৈত্যের পোস্টে লাইকের পর লাইক আর কমেন্ট আসতে লাগলো !
সবাই চেক ইন দিতে লাগলো
-enjoying ফ্রি ওয়াইফাই at দৈত্যের বাগান with দৈত্য !
তারপর সবাই সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলো !
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩০