somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ দ্বিতীয় বাসর রাত

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




এক

বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে আমার কোন কালেই ভাল লাগতো না । আজ পর্যন্ত যত বিয়ের দাওয়াত এসেছে আমি সব কয়টা এড়িয়ে গেছি । এমন কি ঘনিষ্ঠ কারোর বিয়ে হলেও না । মাঝে মাঝে মনে হত নিজের বিয়েতেও হয়তো আমাকে কেউ নিয়ে যেতে পারবে না । মানুষ জনের ভীড় আমার কেন জানি একদম ভাল লাগে না ।
কিন্তু নিজের আপন বড় ভাইয়ের বিয়েতে না যাওয়া কোন ভাবেই ভাল কিছু দেখায় না । তার উপর বাবার চোখ রাঙ্গানি তো আছেই ।
একটু যেন তাড়াহুড়া করেই ভাইয়ার বিয়ে হচ্ছে । ভাইয়া সবে মাত্র চাকরী পেয়েছে । এখনও বছরও পার হয় নাই । এতো জলদি ভাইয়ার বিয়ে না দিলেও পারতো আব্বা । কিন্তু আব্বার কথার উপর কথা কে বলবে ? তিনি যা একবার ভেবে বসবেন তাই হবে । আমরা খুব বেশি জানিও না ভাইয়ার বিয়ে কোথায় হচ্ছে । বাবার পছন্দ নাকি । বেশ ভাল জাগায় । প্রভাব প্রতিপত্তি আছে । তাড়াহুড়া করে আমাকে আর ভাইয়াকে ডেকে আনা হয়েছে ঢাকা থেকে । ভাইয়াকে নিয়েই মেয়ে দেখতে গিয়েছিল । সেদিনই বিয়ের তারিখ ঠিক করে এসেছে আব্বা ।
আমি অবশ্য আমার পরীক্ষা বলে কাটাতে চেয়েছিলাম, পরে মনে হল থাক কি আর হবে । কুরবানী তো ভাইয়া হচ্ছে আমি না হয় দুর থেকেই দেখলাম ! তা ছাড়া তার দুঃসময়ে যদি আমার তার ভাইয়ের পাশে না থাকি তাহলে আর কে থাকবে ।
ভাইয়ার বিয়ের জন্য আব্বা মোট ১১ টা মাইক্র ভাড়া করেছে । আর একটা কার গাড়ি ! কার গাড়িটা বরের জন্য । মানে বরের গাড়ি হিসাবে সাজনো হয়েছে ।

সবার আগে আমাদের কার গাড়িটা চলা শুরু করলো । আর পরপর বাকী গুলো । একটু অবাক হয়ে দেখলাম আমাদের গাড়িতে আমি আর ভাইয়া ছাড়া আর কেউ নেই । অন্য কেউ উঠতে চেয়েছিল কিন্তু ভাইয়া কেন জানি তাদের কে উঠতে দেয় নি । এমন কি ভাইয়ার বন্ধুরা রয়েছে অন্য গাড়িতে । কেউ অবশ্য মানা করে নি । কেন দেয় নি আমার অবশ্য জানি না । আমাদের গাড়িটা বেশ দ্রুতই চলছে । ভাইয়া বিরষ মুখে অনেকটা সময় ধরেই বসে রয়েছে আমার পাশে ! আমি ভাইয়াকে চিল করার জন্য বললাম
-ভাইয়া মেয়ে কি সুন্দর না ? আমি তো ছবি দেখেছি ! বেশ ভাল ! চিল !
ভাইয়া আমার কথায় খুব একটা কান দিল না ! অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো ।
-আরে ভাই । সবই তো বিয়ে করে । করতে হয় । সমস্যা কি !
-তুই কর !
-আরে আমিও তো করবো ! তবে সময় আসুক ! আমি তো কেবল .....
-মনে হচ্ছে আমি খুব বড় হয়ে গেছি ? তুই জানিস আমি এখানে কবুল বলবো আর ঐ দিকে সুচি বলেছে ও ১০ তলা থেকে ঝাপ দিবে !
আমি বললাম
-সুচিটা কে ?
-আমার কলিগ ! এক সাথেই পড়তাম । এখন এক সাথে চাকরি করি ।
-আব্বা কে বলতা !
-আব্বা শুনতো মনে হয় তোর ?
-তা অবশ্য ঠিক । কি আর করা । বেটার লাক নেক্সট টাইম !
-লাক মাই ফুট ! আমি এই বিয়ে করবো না !

আমার কেন জানি ভাইয়ার জন্য একটু মায়া হল । কিন্তু মায়া হলেও কিছু করা রনেই ! এখানে আমার কিছুই করারও নেই । আব্বার উপরে কথা বলবো এতো বড় সাহস আমার বড় ভাইয়েরই হয় নাই, আমার কিভাবে হবে ? জানি কিছুই হবে না । ভাইয়া কিছুটা গাই গুই করবে তারপর চুপ হয়ে যাবে । আসলেই এই জন্যই মনে হয় গাড়িতে আর কাউকে উঠতে দেয় নাই । আমার সাথে যেন একটু সুখ দুঃখের কথা বলতে পারে ।

আমি একটু পরেই লক্ষ্য করলাম যে আমাদের গাড়ি বেশ আগে চলে এসেছে । বেশ দ্রুতই চলছে । আমি পেছনে তাকিয়ে দেখলাম আমাদের পেছনের কোন গাড়িই দেখা যাচ্ছে না । ভাইয়াও আমার দেখা দেখি পেছনে তাকালো । যখনই দেখলো পেছনে কেউ নেই তখনই ড্রাইভার কে বলল গাড়ি থামাতে ।
আমি বললাম
-থামানোর কি দরকার ? স্লো করুক !
-চুপ থাক ! বেশি বুঝবি না !
গাড়ি থামাতে না থামাতেই ভাইয়ে বের হয়ে গেল । রাস্তা থেকে নেম গেল নিচে ! ভাবলাম হয়তো ভাইয়ার হয়তো বাধরুম চেপেছে । কিন্তু পরক্ষনেই আমার ভুল ভেঙ্গে গেল । আসলে ভাইয়া রাস্তা থেকে নামছে বাধরুম করার জন্য না । পালানোর জন্য ।
পালিয়ে যাবে !!
এতো দিন জানতাম মেয়েরা বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে যায় এখন দেখছি ভাইয়া বিয়ের আসর থেকে ...... না ঠিক বিয়ের আসর না বিয়ে গাড়ি বহর থেকে পালিয়ে যাচ্ছে । খাইছে আমারে ....।
-ভাইয়া ! শুনো ভাইয়া ......
কিন্তু কে শোনে কার কথা । আমার চোখের সমানেই ভাইয়া গাছ পালার ভেতরে আড়াল হয়ে গেল । আমি কেবল অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম ।
আমার তখনই মনে হল খাইছে এখন কি হবে ? আমার আব্বা যান তো ভাইয়া একদম খুন করে ফেলবে ।
সাথে আমারও খবর আছে !
আমিও কি পালাবো ভাইয়ার পিছু পিছু ?
না থাক !
আমি দাড়িয়ে থাকি ! আব্বার মাথা নিশ্চয় খারাপ হয়ে যাবে ! অবস্থা বেগতিক দেখলো তখন দৌড় মারা যাবে ।
৫ মিনিটের ভেতরেই গাড়ি বহর দেখা গেল ! আমি দুরু দুরু মন দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম ! অনেক দিন আব্বার রাগের সামনে পড়তে হয় নি । এখন হবে ।
নাহ ! পরীক্ষার অযুহাত দিয়ে না আসলেই ভাল হত । এই ঝামেলার ভেতরে পড়তে হত না ।



দুই

ভাইয়ার নামে হুলিয়া জারি হয়েছে । তাকে যদি বাড়ির আসে পাশে দেখা যায়, যেই দেখবে সেই যেন নিজ দায়িত্বে তাকে প্যাদানি দেয় এবং সেই সাথে তার সাথে পরিবারের সকল সদস্যের দেখা সাক্ষাত এবং কথা বার্তার বলার উপরেও নিষেজ্ঞা জারি হয়েছে । সেই দুর্ঘটনার পরে আমি নিজের এখন নিজের কাছে সুস্থির হতে পারি নি তার ভেতরে ভাইয়ার ফোন এসে হাজির ।
-অপু কোথায় রে তুই ? ঢাকায় এসেছিস ?
-হুম ।
-এক কাজ কর আজকে সন্ধ্যার দিকে আয় দেখা করি !
একটু মেজাজ খারাপ হল । আমি আর ভাইয়া একস সাথে ঢাকায় প্রায় তিন সাড়ে তিন বছর । কিন্তু আমরা এক সাথে থাকি না । আমার কেন জানি তার সাথে থাকতে ভাল লাগে না । আমি একাই থাকতে ভালবাসি । ভাইয়াও সেকরম । খুব দরকার না পরলে সে আমাকে ফোন করে না ! এমনি এমনি দেখা করার তো প্রশ্নই আসে না । আর আজকে বলতেছে আয় দেখা করি ।
অবশ্য তার আকামের জন্য যে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেই জন্য হয়তো সরি ফিল করছে । একবার ভাবলাম যে বলি আমার কাজ আছে কিন্তু বললাম না ।
ভাইয়া বলল
-সুচিও দেখা করতে চাইছে তোদের সাথে ?
-তোদের ? তোদের মানে ?
-আরে তুই আর মীমের সাথে । মেয়েটার নাম মীম তো ?
মীমের নাম আমি ঠিক মত জানি না ভাইয়া দেখি ঠিক ঠিকই জানে । আর জানবেই না কেন ? ভাইয়ার সাথেই তো বিয়ে হতে যাচ্ছিলো । যাকে রেখেই সে পালিয়ে গেছে । আমি কি বলবো খুজে পেলাম না ।
-মীম তো তোর ভার্সিটিতেই পারে । তাই না ?
-হুম !
-ওকে ফোন করে দে ।

আর কিছু না বলে ফোন রেখে দিল । আমি মীম কে ফোন দিলাম না । কেবল একটা মেসেজ করে দিলাম । বাসা থেকে আসার পর মীমের সাথে আমি একদিনও কথা বলি নি । বলতে পারি নি । ভাইয়ার জন্য যা হয়েছে সেই জন্য ও নিজে যেমন অস্বস্থিতে আছে আমিও ঠিক তেমনই । কি কথা বলবো কিংবা কি কথা বলা উচিৎ এখনও বুঝতে পারছি না । আরও কটা দিন যাক তারপর বোঝা যাবে ।
সন্ধ্যার সময় ঠিক সময়ে হাজির হলাম । গিয়ে দেখি ভাইয়া আর তার পাশে সেই সুচি আপু বসে আছে । একটা কথা বলতেই হবে যে দুজনকেই মানিয়েও বেশ । আমাকে দেখে হাসলো ।
ভাইয়া বলল
-মীম কই ?
-আসছে ।
-একসাথে আসবি না ?
-আরে আমরা কি একসাথে থাকি নাকি ? ও কখন আসবে আমি কিভাবে বলবো ? আসবে কি না তাও জানি না ।
-কথা হয় নি ।
-না !

ভাইয়া একটু রাগ করতে গেল কিন্তু সুচি আপুর জন্য কিছু বলল না । সম্ভবত মীম আসবে না । কেন আসবে ? আসার কি কোন কারন আছে ?

কিন্তু আমাকে খানিকটা ভুল প্রমানিত করে দিয়েই মীমকে আসতে দেখলাম । নীল রংয়ের একটা চুড়িদার পরে আসছে । রেস্টুরেন্টের উজ্ঝল আলোতে ওকে যেন আরও বেশি সুন্দর লাগছে । মাথাটা একটু নিচ করে আস্তে আস্তে হাটতে হাটতে আসছে ।
আমি তাকিয়ে রইলাম কিছুটা সময় । এসে বসলো ঠিক আমার পাশে সিটে । চারজনই কিছু সময় কোন কথা বলল না । আসলে কেউ কোন কথা শুরু করতে পারছে না । কি বলবে কিভাবে বলবে কেউ জানে না । সুচি আপুই সবার আগে কথা বলল । আমাদের ভেতরেই সেই মোটামুটি খানিকটা নির্ঝাট । অথচ সব ঝামেলা তাকে নিয়েই বেধেছে ।
-তো মীম তোমার কি খবর ?
মীম খুব আস্তে করেই বলল
-ভাল ।


মীমের কন্ঠস্বর এই প্রথম আমি শুনলাম । ঐদিন একটা বারের জন্যও আমি শুনতে পারই নি ।
ভাইয়া বলল
-দেখ আমি আজকে তোমাকে মানে তোমাদের ডেকেছি সরি বলার জন্য !
সকল আকাম করে আমাদের ঝামেলায় ফেলে এখন সরি । তুই যদি আমার থেকে ছোট হলে আজকে তোর খবর ছিল !
তারপর দুজন মিলে আমাদের কে আরও অনেক কথা বললেন তাদের কিভাবে পরিচয় কিভাবে কি সব কিছু । আমরা দুজনই বলতে গেলে চুপ করেই শুনে গেলাম । কোন কথার ভেতরে গেলাম না । যখন রেস্টুরেন্ট থেকে বের হলাম তখন প্রায় ১০ টা বেজে গেছে । ভাইয়া বলল ওকে হলে রেখে আসতে । না বললেও আমি ওর সাথে যেতাম এমনিতেও ।



তিন

এর আগেও রাতে আমি রিক্সা করে এই রাস্তা দিয়ে গিয়েছি এবং পাশে একটা মেয়ে তখনও ছিল কিন্তু আজকে কেন জানি অন্য রকম লাগছে । লাগার কথা নয় আবার হয়তো কথাও । মীম অবশ্য কোন কথা বলছে না । অন্য দিকে তাকিয়ে আছে । অন্য দিকে তাকিয়েই বলল
-তোমার আসার দরকার ছিল না ।
-হুম । জানি । দরকার ছিল না ।
-চাইলে এখনও নেমে যেতে পারো ।
-নাহ ! রিক্সাওয়ালা কি ভাববে বল ? ভাববে, ঠিক করলো দুজন বলে এখন যাচ্ছে একজন ।
কিছু সময় মীম কোন কথা বলল না । এরপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি কি আমাকে ইম্প্রেস করার চেষ্টা করছো ?
-তোমার কেন এমন টা মনে হচ্ছে শুনি ?
মীম আবারও অন্য দিকে তাকালো । আমি বললাম
-আচ্ছা আমি তোমাকে কেন ইম্প্রেস করতে যাবো বল ? ছেলেরা কোন মেয়েকে ইম্প্রেস করে ? যাদেরকে সে পটাতে চায় কিংবা যাদের সাথে প্রেম করার একটা ইচ্ছে থাকে কিংবা বিয়ে করার ...... তুমি তো ........
আমি কথাটা শেষ করলাম না । তার আগেই মীম আমার আবারও তাকালো । এবার ওর চোখে এমন কিছু ছিল যে আমি চুপ হয়ে গেলাম । ও এখন দুর্ঘটনাটা ঠিক মত নিতে পারে নি । বুঝা যায় একটা মেয়ের পক্ষে এটা মেনে নেওয়া একটু কষ্টেরই বটে । আমি আর কথা বাড়ালাম না ! বাকি পথ টুকু চুপচাপ রইলাম ।
হলের সামনে গিয়ে মীম নামার আগে বলল
-এতো কেয়ার দেখানোর দরকার নেই । তোমার আর আমার সম্পর্ক কোন দিন সহজ হবে না । তোমাদের পরিবারের সাথেও কোন দিন সহজ সম্পর্ক তৈরি করতে পারবো বলে আমার মনে হয় না ।
-আই আন্ডারস্ট্যান্ড !
-ইউ বেটার বি !
মীম রিক্সা থেকে নেমে গেল । গেটের যেতে ওর আরও দশ সেকেন্ডের মত সময় লাগার কথা । আমি তাকিয়ে রইলাম ওর চলে যাওয়ার দিকে । কেন জানি মনে হচ্ছিলো যে ও একবার হলেও ফিরে তাকাবে আমার দিকে । কিন্তু তাকালো না । কোন প্রকার পেছনে না তাকিয়ে ভেতরে চলে গেল । আমি রিক্সা ঘুরাতে বললাম । কেন জানি মন খারাপ শুরু হল আমার ।


আমি আগেও থেকেই জানতাম মীমের সাথে আমার কোন দিন সহজ একটা সম্পর্ক তৈরি হবে না । সেদিন যখন বাসর ঘরে ঢুকেছিলাম সেদিনই আমার ঠিক ঠিক বুঝতে পেরেছিলাম মীম আমাকে মোটেই মেনে নিতে পারে নি । একটা মেয়ের পক্ষে সেটা মেনে নেওয়া অনেকটাই কষ্টের । আমি নিজেও কি সেরকম অবস্থায় ছিলাম সেদিন ! সারাটা রাত আমি বারান্দা বসে কাটিয়ে দিলাম । তখনও আমার ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না যে আসলেই আমার সাথে যা হল তা সত্যিই হচ্ছে নাকি আমি স্বপ্ন দেখছি । আমার তখনই ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিলো না ।
ভাইয়া পালিয়ে যাওয়ার পরপর বাবার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো । সবাই রাস্তার পাশে গাড়ি বহর দাড় করিয়ে চুপ করে দাড়িয়ে রইলো । কি করবে কিছুই বুঝতে পারছিলেন না । শেষে আর না পেরে বাবা মীমের বাবাকে ফোন দিল । এখানে কি ঘটে গেছে সব জানালো । আমরা কোথায় আছি সেটাও বলল !

দেখলাম আধা ঘন্টার ভেতরেই মেয়ের বাপ এসে হাজির । আমার বাবার সাথে উচ্চ স্বরে কি যেন কথা বলতে লাগলো । আমি তখনও ঠিক বুঝতে পারি নি আমার উপর কি বিপদ এসে পড়তে যাচ্ছে । আব্বার সাথে কথা বলতে বলতেই মীমের আব্বা আমার দিকে তাকালো ! তারপর আমার কাছে এসে বলল
-তুমি কোথায় পড় ?
বললাম কোথায় পড়ি !
-কোন ইয়ার ?
তখনই মনে হল এক ইয়ার কমিয়ে বলি । আমার কেন জানি তখনই সন্দেহ হয়ে গিয়েছিল । পরক্ষনেই উড়িয়ে দিলাম । ভাবলাম এমন কখনও হয় নাকি ! সত্যি বলে দিলাম । তিনি আবারও বাবার কাছে চলে গেল । বাবাকে এক পাশে নিয়ে গিয়ে কি যেন বলল । বাবাকে দেখলাম চমকে উঠতে । প্রথমে মাথা এদিক ওদিক করে মানা করার ভঙ্গি করলেও এক সময় দেখলাম ঠিক ঠিক মেনে নিল । দুজনেই আমার কাছে যে বলল আমি তা শুনার পরে মনে আমারও ভাইয়ার সাথে সাথে পালানো দরকার ছিল । অন্তত এই ঝামেলায় পড়তে হত না ।

বাবাকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে আমি মাত্রই পড়ালেখা করি, আমি কিভাবে এখন বিয়ে করতে পারি । বাবা বলল
-সমস্যা কোথায় ? বউকে এখনই তোমাকে খাওয়াতে হবে না । সেটা আমি দেখবো !
-আব্বা খাওয়ার ব্যাপার না ?
-তাহলে ? বিয়ে তো করবাই । দু বছর আগে পরে ।
-কিন্তু আব্বা !
-কোন কিন্তু না । তোমার বড় ভাই কি করেছে দেখো নি ! তুমিও সেই পথে যাবে ? তবে একটা কথা মনে রেখো আজকে বউ ছাড়া আমাদের গাড়ি ফিরে যায় তাহলে আমি ভুলে যাবো আমর কোন ছেলে আছে ।
এবার মেয়ের বাবা এগিয়ে এল । আমার বাবা তো আমার কঠিন ভাবে ভয় দেখালো আর মেয়ের বাবা আমাকে ইমোশনালী ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করলো । দুজনের সামনে নিজেকে কেমন অস হায় মনে হল । বারবার ইচ্ছে হল ভাইয়ার মত আমিও পালিয়ে যাই । কিন্তু পালানোর পথ সব বন্ধ !




জীবন স্বাভাবিক হয়ে এল কিছু দিন পরেই । আমার যে বিয়ে হয়েছে এটা বন্ধুদের কাউকে বললাম না । মাঝে মাঝে মীমের সাথে দেখা হয়ে যেত । কোন দিন আমার ডিপার্টমেন্টের সামনে । ওর ডিপার্টমেন্ট টা আমার ডিপার্টমেন্ট পার হয়েই তারপর যাওয়া লাগতো । তাই হয়তো দেখা হত মাঝে । আমি দাড়িয়ে পড়তাম । আশা করতাম যে ও হয়তো দাড়াবো । ও দাড়াতো না ! তবে আগে যেমন মুখ কঠিন করে চলে যেত আস্তে আস্তে সেটা কমে এল । আমি হাসলে ও হাসতো না, দাড়াতোও না । চুপ করে চলে যেত !

আমি প্রায়ই যেতাম ওদের ডিপার্টমেন্টে । ওকে দেখতাম লুকিয়ে । কোন কোন দিন চোখাচোখী হয়ে যেত । আমি এমন একটা ভাব করতাম যে আমার কোন বন্ধুর খোজে এসেছি ।
কি একটা অদ্ভুদ মায়া জন্মানো শুরু করলো মেয়েটার জন্য । মাঝে মাঝে মনে হত মীমের এরকম কিছুই মনে হত না ?
যদি হয় তাহলে কেন প্রকাশ করতো না ?
নাকি ও তেমন কোন কিছু অনুভবই করতো না !


ভাইয়া কদিনের ভেতরেই বিয়ে করে ফেলল সুচি আপুকে । তবে সেই নিষেধাজ্ঞা তখনও বহালই রইলো । আমি আর মীম দুজনকেই যেতে বলেছিল । মীম যায় নি । তবে দ্বিতীয় বারের মত আমি ভাইয়ার বিয়েতে হাজির হলাম । এবার অবশ্য আমার আর ভয়ের কোন কারন ছিল না !
মীম খুব একটা যোগাযোগ করতো না । আমি মাঝে মাঝে ফোন দিলে ও ফোন ধরতো । কথার জবাব দিতো এর বেশি কিছু না । আমার সত্যি সত্যিই মনে হল যে মীমের সাথে আমার আসলেই কোন কিছু হবে না আর । বাদ দেওয়াই ভাল মনে হয় । কিন্তু মন চাইলো না । দুর্ঘটনা হলেও সে তো বউই আমার !
তবে একদিন ১১টার দিকে ফোন এসে হাজির মীমের । আমার সেদিন ক্লাস ছিল না বলে আমি ক্যাম্পাসে যায় নি ! ফোন পেয়ে একটু অবাক হলাম বটে । একটু খুশিও ।
-হ্যা ! বল !
-তুমি কোথায় ? ক্যাম্পাসে আসো নি ?
-নাহ ! ক্লাস নাই তো আজকে ।
মীমের কন্ঠ কেমন যেন একটু অন্য রকম লাগলো । ও কি ভয় পেয়েছে কোন করনে ? কোন সমস্যা হয়েছে !
আমি বললাম
-কি হয়েছে ?
-না কিছু না !
-আমাকে বল কি হয়েছে ? বল আমাকে ? কী হয়েছে ?


চার

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি মাত্র এক মিনিট পার হয়েছে অথচ আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আমি যেন অনন্ত কাল ধরে এই বাসের ভেতরেই বসে আছি । আমি বাস থেকে নেমে পড়লাম । এই অস্থিরটা নিয়ে বাসের ভেতরে বসে থাকা সম্ভব না ।
বাইরে তাকিয়ে দেখি লম্বা গাড়ির লাইন ।
আজকে কেন জানি এই জ্যামটা খুব বেশি অসহ্য মনে হল । অথচ এর আগে এরকম কোন দিন মনে হয় নি, বরং বলা চলে আমি সব সময় জ্যাম টা এনজয় করেছি । আজকে মীম জড়িত এই জন্য ?

আমার বারবারই মনে হচ্ছে এখন আমার মীমের পাশে থাকা উচিৎ । ওর উদ্দিগ্ন কন্ঠস্বর শোনার পর থেকে নিজের ভেতরে কেমন একটা অস্থিরতা বোধ করছি । শুভকে ফোন দিয়ে শুনলাম ক্যাম্পাসে নাকি আসলেই ঝামেলা শুরু হয়েছে । অনেকেই নাকি ক্যাম্পাসে আটকা পরেছে ।
আমি আরেকবার জ্যামের দিকে তাকালাম । নাহ, এই জ্যাম সহজে ছাড়বে না । আমি সামনে পা বাড়ালাম । আমার কেবলই মনে হচ্ছিলো যেন যে কোন ভাবেই আমাকে মীমের কাছে পৌছাতেই হবেই হবে । কখন যে আমি দৌড়াতে শুরু করেছি আমি নিজেই জানি না ।
দৌড়ানোর সময়ই আমার কত কথা মনে হতে লাগলো মীম কে নিয়ে । যদিও এমন খুব একটা ঘটনা নেই আমাদের এক সাথে তবুও ঘুরে ফিরে সেই কথা গুলো মনে হচ্ছে ।


সপ্তাহ খানেক আগের কথাই । সকাল বেলা ঘুমিয়ে ছিলাম তখনই একটা আননোন নাম্বার থেকে ফোন এসে হাজির । রিসিভ করতেই বুঝতে পারলাম মীমের বাবা । উনি ঢাকায় এসেছেন কাজে । আমার সাথে দেখা করতে চান । ঘুম-টুম ফেলে রেডি হয়ে গেলাম । ভেবেছিলাম মীম হয়তো আগে থেকেই সেখানে থাকবে কিন্তু উনি একাই ছিলেন ।
আমাকে বিভিন্ন জায়গায় গেলেন । প্রথম প্রথম একটু কেমন কেমন লাগছিল পরে অবশ্য সেটা কেটে গেল । দুপুরের দিকে মীমের হলের সামনে গিয়ে ওকে নিচে আসতে বললাম ।

মীম যখন নিচে আসলো তার বাবাকে দেখে একটু অবাক হল । বিশেষ করে তার বাবা ঢাকায় এসে তার আগে আমার কাছে গেছে এটাই মনে হয় মীমের বিশ্ময়ের কারন ছিল । এটা অবশ্য আমার নিজের কাছেও বিশ্ময়ের কারন ছিল ।
আসলে মেয়েরা বাবাদের কাছে মনে হয় এমনি ভাবেই তাদের মেয়ের জামাইয়েরা গুরুত্বপূর্ন হয়ে ওঠে । তার আদরের মেয়েকে যে মানুষটা দেখে রাখবে সেই মানুষটা বাবাদের কাছে এমনিতেই গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠবে স্বাভাবিক । প্রিয় থেকে একটা ভরশার স্থান হয় । বাবারা কেবল এটাই ভাবে যে তার অবর্তমানে তার মেয়ে কে এই ছেলেটা ঠিকঠিক দেখে রাখবে, মেয়ের বিপদে তাকে আগলে রাখবে, ঠিক যেমন টা এতোদিন বাবারা রেখেছিলেন ।

আমাদেরকে নিয়ে উনি এরপর বসুন্ধরা নিয়েই গেলেন । উনি আগে আগে হাটছিলেন আমি আর মীম পেছন পেছন হাটছিলাম । আমাদের কেবল পেছনে রেখেই উনি নন স্টপ কথা বলেই যাচ্ছিলো । আমরা কেবল দুজন চুপ করে শুনছিলাম । আমার কেন জানি ভালই লাগছিল । মীমের মুখ দেখে অবশ্য কিছু বোঝা যাচ্ছিলো না । মীম মনে হয় একটু দ্বিধায় পরে গিয়েছিল কি করবে ? বাবার সামনে আমার সাথে কি রকম ব্যব হার করা উচিৎ ঠিক মত বুঝতে পারছিলো না ।

খাওয়া দাওয়ার পরে আমাদের দুজনের জন্য কেনাকটা করে দিলেন । শত মানা করা সত্ত্বেও শুনলেন না । আমারও কেন জানি মনে হল আমারো কিছু কিনে দেওয়া উচিৎ । বাড়ির জামাইয়েরা শ্বশুরের জন্য উপহার কিনে নিয়ে যায় তো । যদি সেটা স্বভাবিক পরিস্থিতিতে । কিন্তু তবুও মনে হল কিছু কিনে দেওয়া উচিৎ । একটা পাঞ্জাবী দেখলাম কিন্তু সেটা কেনার মত টাকা পকেটে নেই ।
মীমের কাছে চাইবো ?
একবার মনে হল দরকার নেই । আরেকটু কমের ভেতরে দেখি । পরে মনে হল দেখিই বলে ।
মীমের কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম
-হাজার খানেক টাকা হবে তোমার কাছে ?
একটু বিশ্ময় নিয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল
-কেন ?
-আব্বার জন্য একটা পাঞ্জাবী দেখেছি । আমার পকেটে এতো টাকা নিয়ে বের হয় নি । তোমার কাছে থাকলে আপাতত ধার দাও । কাল ক্যাম্পাসে দিয়ে দেব ।
মীমের মুখের ভাব টা একটু পরিবর্তিত হতে দেখলাম । তারপর ব্যাগ থেকে একটা নোট বের করে দিয়ে বলল
-ফেরৎ দেওয়া লাগবে না !
আমি যখন মীমের আব্বাকে নিয়ে গেলাম পাঞ্জাবীর কাছে উনি তো কিছুতেই নেবেন না । বারবার বলতে লাগলেন যে তুমি মাত্র পড়াশুনা কর তুমি টাকা পাবে কোথায় ?
এক পর্যায়ে মীম আমাদের কাছে এসে বলল
-আব্বু, নাও ও যখন দিতে চাচ্ছে !
মীমের চেহারার দিকে তাকিয়ে কেন জানি অন্য রকম লাগলো । আনন্দময় অনুভুতি ! মীমের আব্বা খুবই খুশি হলেন । সেই সাথে মীমও নিশ্চয়ই খুশী হয়েছে ।


আমি যখন ক্যাম্পাসে পৌছালাম তখন কেবলই মনে হচ্ছিলো আমি এখনই হার্ট ফেইল করে মারা যাবো । এর আগে এতো লম্বা সময় আমি একটানা দৌড়ানই নাই কোন দিন । আধা মিনিট মুখ হা করে দম নিলাম কেবল । তারপর আবার দৌড়াতে শুরু করলাম ওর ডিপার্টমেন্টের দিকে । তখনও আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে গন্ডগোলের । ওদের ডিপার্মেন্টের সামনে অনেক পুলিশ দাড়িয়ে ছিল । আমাকে দেখেই আটকালো ।
-আপনি এখন ভেতরে যেতে পারবেন না !
-দেখুন আমার স্ত্রী ভেতরে আছে । আমাকে ভেতরে যেতেই হবে !
-আপনার স্ত্রী !
-জি !
পুলিশ সাহবে কিছু সময় আমার দিকে তাকিয়ে রইলো সরু চোখে । কথাটা ঠিক যেন বিশ্বাস হচ্ছিলো না তার ! অনেকেরই অবশ্য বিশ্বাস হবে না, হওয়ার কথাও না । পুলিশের পেছনে দিয়ে ডিপার্টমেন্টের গ্রিলের দিকে তাকিয়ে দেখি সেখানে মীম এসে দাড়িয়ে । আমি হাত দিয়ে মীম কে দেখালাম । পুলিশ দেখে কি যেন ভাবলো তারপর আমাকে ভেতরে যেতে দিল ! আমি যখন বারান্দায় এদে দাড়ালাম তখন মীম এসে বললাম
-তুমি এরকম হাপাচ্ছো কেন ?
আমি কোন কথা না বলে কেবল দম নিতে লাগলাম !
মীম আবার বলল
-শাহবাগ থেকে দৌড়ে এসেছো ?
কিছু বললাম না । হা করে তখনই দম নিচ্ছি ! কয়েক মুহুর্ত পরে মীমের চোখে একটা বিশ্ময় দেখলাম । ও অবাক হয়ে বলল
-তুমি মোহাম্মাদপুর থেকে দৌড়ে এসেছো ?
নীচু স্বরে বললাম
-জ্যাম ছিল রাস্তায় খুব !

তখনই আমি মীমের চোখে কিছু একটা দেখলাম । কি দেখলাম আমি নিজেই জানি না ! ও আমাকে টেনে নিয়ে গেল একটা ক্লাস রুমের ভেতরে । ফ্যানের নিচে বসালো !
-এরকম পাগলামো কেউ করে ! যদি কোন দর্ঘটনা ঘটতো ?
-কি ঘটবে !
-আশ্চর্য ! মানুষ টানা এতো লম্বা সময় দৌড়াতে পারে অভ্যাস না থাকলে !
কপট রাগের চোখে সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । তবে এই রাগটা কেন জানি আমি ঠিক অন্য রাগের সাথে মেলাতে পারলাম না ! এর রাগের সংঙ্গা ভিন্ন !

আরও ঘন্টা খানেক পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে ওকে নিয়ে বের হলাম । হলে পৌছে দিয়েই যখন রিক্সা নিয়ে রওনা দিয়েছি তখন যতবার পেছন ফিরে তাকালাম দেখি ও গেটের কাছেই দাড়িয়ে আছে । কেন জানি ভাল লাগলো । মনে হচ্ছিলো যে কিছু একটা পরিবর্তন হচ্ছে । ওর ভেতরেও আমার নিজের ভেতরেও ।
সন্ধ্যার দিকে মীম আবার নিজেই আমাকে ফোন দিল ।
-একটা ঝামেলা হয়ে গেছে !
-কি ?
-ক্যাম্পাসের ঝামের জন্য কর্তৃপক্ষ হল ভ্যাকেন্ট করার নির্দেশ দিয়েছে । নয়টার ভেতরে !
-ও ! আচ্ছা ! সমস্যা নেই তুমি ব্যাগ গুছিয়ে নাও । আমি তোমাকে বাসস্ট্যান্ডে দিয়ে আসতেছি । সমস্যা নেই ।
-এই রাতের বেলা !
-চাইলে আমি তোমার সাথে যেতে পারি !
-আমার পক্ষে এখন ঢাকা ছাড়া সম্ভব না ! তুমি জানো না আমি একটা টিউশনী করি !
-ও ! তাহলে ?
কি বলবো বুঝতে পারলাম না ! নিজের মনের ভেতরে একটা কথা বলার ইচ্ছে করছিলো কিন্তু বলতে সংকোচ হচ্ছিলো ! আমি বললাম
-তোমার না একটা মামার বাসায় কোথায় ? ওখানে দিয়ে আসবো ?
-ওখানে আমি যাই না !
-কোন বন্ধুর বাসা !
-না !
একবার মনে হল বলেই ফেলি ! তারপর মনে হল না থাক দরকার নেই । কোন দরকার নেই কি না কি মনে করে বসবে ! এমনিতেই একটু আশার আলো দেখা যাচ্ছে এর ভেতরে আবার ঝামেলা বাধানোর দরকার নেই ! আরেকবার মনে হল না একটা বার বলেই দেখা যাক না কি হয় !
আমি ক্ষীন কন্ঠে বললাম
-আমি এখানে একাই থাকি ! রুমটা যদিও একটু ছোট তবে দুজনের থাকতে কষ্ট হবে না ! আমার এখানে আসবা ?
ওপাশ থেকে কোন উত্তর এল না ! আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম ।
একবার মনে হল বলে কি ভুলই করলাম ! ও যদি আবার রেগে যায় !!



পাঁচ

কেমন যেন অদ্ভুদ লাগছিলো নিজের কাছেই যে মীম আসলেই আমার সাথে যাচ্ছে, একই রিক্সায় করে আমার বাসায় থাকার জন্য । হলের গেট দিয়ে যখন বেরিয়ে এল তখনও ওর দৃষ্টিটা নিচের দিকে ছিল । একটু যেন লজ্জা পাচ্ছিলো আমার সাথে যাওয়ার জন্য কিংবা অন্য কিছু হবে হয়তো । আমাকে দেখে একটু হাসলো । প্রতি উত্তরে আমিও হাসলাম । ব্যাগটা হাতে নিয়ে যখন রিক্সায় উঠলাম মীম প্রথমেই বলল
-আব্বু ফোন দিয়েছিল ?

সন্ধ্যার দিকে দিয়েছিল । আমি তখন কেবল বাইরে বের হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি । তখই ফোন টা এসে হাজির ! আমি নাম্বারটা দেখেই তাড়াতাড়ি রিসিভ করে সালাম দিলাম ।
-শুনলাম ওদের নাকি হল ভ্যাকেন্টের নির্দেশ দিয়েছে ?
-জি !
-তুমি কি ওকে বাসায় রাখতে আসবে ?
-না মানে ও ঢাকা ছাড়তে চাইছে না । ওর নাকি কি কাজ আছে ঢাকায় !
-তাহলে ?

কয়েক মুহুর্ত কি বলবো ঠিক খুজে পেলাম না । একবার মনে হল বলি আরেকবার মনে হল না বলি ! একটু যেন সংকোচও লাগছিল বলতে । তারপর ভাবলাম বলেই ফেলি ! বললাম
-আসলে ও আমার এখানে আসতে চাইছে । আমি ওকে নিয়ে আসতে যাচ্ছি ।
-ও ! আচ্ছা আচ্ছা ! তাহলে তো সমস্যা নেই । তোমার সমস্যা হবে না তো ?
-না ! সমস্যা হবে না ! কি যে বলেন আপনি ? আপনি চিন্তা করবেন না !
-আরে আমার আর চিন্তা কি তুমি আছো না ওর পাশে ।

তারপর কয়েক মুহুর্ত চুপ করে থেকে আবার বলল
-তুমি ওকে দেখা শুনা কর কেমন ? করবে না ?
-আমি তো আছি ! আপনি চিন্তা করবেন না ।

একটু বাতাস দিচ্ছিলো । আমি চুপ করেই বসে আছি রিক্সায় । মীমের ব্যাগটা আমাদের পায়ের কাছে রাখা । আমি মনে মনে বাক্য সাজাচ্ছি মীম কে বলার জন্য কিন্তু কেন জানি বাক্য গুলো আর বলতে পারছি না । শেষে মীম নিজেই আগে বলল
-তোমার আসলেই সমস্যা হবে না তো ?
-আরে বাবা না রে ! সমস্যা কেন হবে ?
-ঠিক তো ? না মানে হুট করেই একজন ঘরের ভেতরে চলে আসাটা ........
-তুমি তো সেই কবেই চলে এসেছো আমার জীবনে । হুট করে অবশ্য তবে এখন এটাই কি স্বাভাবিক না ? বরং তুমি না থাকলেই ....
-না থাকলে কি ?

মীম তখনও আমার দিকে তাকায় নি । রাস্তায় দিকে তাকিয়ে আছে ।
-না থাকলে মনে হয় জানি নাই ।
এবার মীম আমার দিকে তাকালো ।
-কেন মনে হয় এমন টা ?
-আমি জানি না । ঐ দিনের পর থেকেই এরকম মনে হয় । আমি জানি আমাদের শুরু টা ভাল ভাবে হয় নি, কিছু হওয়ার কথা ছিল অন্য রকম ভাবে হয়েছে । হয়তো আমাদের ভাগ্যেই এমন টা হওয়ার কথা ছিল । আমি আসলে .....

মীম চুপ করে থাকলো আরও কয়েক মুহুর্ত । তারপর বলল
-ঐ দিন রাতের তোমার সাথে ..... আসলে তোমার সাথে ...... আসলে তোমার তো দোষ ছিল না । কিন্তু আমি ....
-ইউ মিন আমাদের বাসর রাত ?
-হুম !

বাসর !! কি অদ্ভুদ একটা শব্দ ছিল আমার জন্য ।
কত কিছুই না ভাবতাম একটা সময় এই রাতের কথা ভেবে । কিন্তু সব কিছু কি ইচ্ছে মত হয় ।

মীম আর কোন কথা না বলে চুপ করে রইলো । আমিও কি বলবো ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না ! কিংবা কি বলা উচিৎ । ঝিগাতলায় আসার পরেই হঠাৎই মীম বলল
-এই একটু দাড়াও তো !
তারপর রিক্সাওয়ালাকে বলল
-এই মামা দাড়ান ! দাড়ান !
-কেন ?
মীম হাত বাড়িয়ে ট্রাস্ট ব্যাংকের পাশের ফুলের দোকান টা দেখালো ।
-কি ?
-আসো । এই বলে আমাকে টেনেই নিয়ে গেল ওখানে গেল ।
আমি তখনও ঠিক বুঝতে পারছি না আসলেও ও কি বলতে চাইছে । এতো রাতে ফুলের দোকান দিয়ে কি করবে ?

মীমকে অনেক গুলো গাঁদা ফুল কিনতে দেখলাম । গাঁদার ফুলের মালা । আর বেশ কিছু গোলাপ ফুল । রাতের বেলা বলেই হয়তো ফুল গুলো বেশ সস্তাতেই পাওয়া গেল ! হাত ভর্তি ফুল নিয়ে আমরা আবারো রিক্সায় উঠলাম । আমি তখনও ঠিক বুঝতে পারছি না যে ঠিক কি কারনে মীম এতো গুলো ফুল কিনলো । অবশ্য আমি ওকে আর কিছু জিজ্ঞেস করলাম না । ওর যা ভাল লাগে করুক । আমার কেবল ওকে ভাল লাগছিল । ও যে আমার পাশে পাশে আমার কাছে যাচ্ছে এটার থেকে আনন্দের আর কিছু মনে হচ্ছিলো না ।


ছয়

যখন মীমকে নিয়ে আমার চিলেকোঠার ঘরে ঢুকলাম তখনও আমার ঠিক মত সব কিছু বিশ্বাস হচ্ছিলো না ! বিয়ের পর থেকে কতবার কল্পনা করেছি ওকে এখানে নিয়ে আসবো । এই ছোট্ট ঘরে আমার দুজনের জীবন টা একসাথে শুরু হবে । তারপর পড়া লেখা শেষ করে আমরা যখন দুজনেই চাকরী করবো তখন একটা বড় বাসা নিবো । এতো দিন সেটা কেবল কল্পনাই ছিল এমন কি আমি কোন দিন ভাবই নাই যে মীম কোন দিন আমার এই ঘরে আসবে !

মীম ঘরে ঢুকতেই কিছু সময় চারিদিকে তাকালো । আমি অবশ্য যাওয়ার আগেই যথেষ্ট পরিমান গুছিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলাম । কিন্তু কত টুকু হয়েছে কে জানে । মীম বলল
-বাহ ! বেশ গোছালো তো তুমি !
-এই আর কি !
-ঘোড়ার ডিম ! আমি আসার আগে গুছিয়েছো তাই না ?
আমি হাসলাম । মীম ঠিক ঠিক বুঝে ফেলেছে । ফুল গুলো বিছানার উপরে রেখে বসলো বিছানার উপরেই । আমি ব্যাগটা নামিয়ে রেখে চেয়ারের উপর বসলাম । বললাম
-পছন্দ হয়েতো ঘর ?
-বলা যায় !
-যাক এখন আপাতত চললেই হবে । পরে দেখা যাবে ।
-শুনো রাতে কি খাবো ? রান্না হবে নাকি বাইরে থেকে ?
-তুমি যা বল । বাইরে থেকে চাইলে বাইরে থেকে রান্না করতে চাইলে সেটারও ব্যবস্থা আছে !
-আজকে রান্নার সময় নেই । ঠিক আছে । অনেক কাজ বাকি আছে । তুমি বাইরে থেকে কিছু নিয়ে আসো ! আমি ততক্ষনে দেখি তোমার ঘরের কি করা যায় !

আমি বাইরে চলে গেলাম । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি তখন সবে মাত্র ১০ টার মত বাজে । মীম আরও কিছু কিনতে দিলো আমার কাছে । যখন ফিরে আসলাম তখন আমার জন্য আসলেই অন্য কিছু একটা অপেক্ষা করছিল । তাকিয়ে দেখি এরই ভেতরে মীম অনেকটাই ঘরের চেহারা টা পাল্টে ফেলেছে । বিছানার চাদরটা পাল্টানো হয়েছে । সেই সাথে এদিক ওদিকে কিনে আনা ফুল গুলো দিয়ে সাজানো হয়েছে । এরই ভেতরে মীম এতো সব কিভাবে করলো ঠিক বুঝলাম না ।

আমাকে দেখে মীম বলল
-কই ? মোম বাতি নিয়ে এসেছো ?
-হুম !
আমি মোম গুলো ওর হাতে দিলাম । ও সেগুলো নিয়ে বিছানার সামনের ঠিক সামনে রাখলো !
আমি ওকে বললাম
-কি করছো ?
-কেন ? পছন্দ হচ্ছে না ?
-না মানে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না ।
মীম আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-সেদিনের ভুলটা শুদ্ধি করার চেষ্টা করছি ! আমাদের বিয়ে তো হয়েছে ঠিকই কিন্তু একটা চমৎকার বাসর রাত আসে নি । হোপ আজকে কিছুটা হলেও সেটা পুর্ণ হবে ।
-মানে ?
আমি কেবল অবাক বিশ্ময়ে তাকিয়ে রইলাম মেয়েটার দিকে । এই মেয়েটা একটু আগে কি বলল ?
বাসর ?
সত্যি !

মীম এবার আমার কাছে এল চলে । একেবারে কাছে । এতো দিনে এতো কাছে সে আসে নাই কখনও ।
-ঐ দিন আব্বুর সাথে তোমাকে দেখে আমার কেন জানি অন্য রকম লাগলো ! আমার বাবা তোমাকে পেয়ে কেমন জানি নিশ্চিন্ত হয়ে তাকিয়েছিল । বিশেষ করে তুমি যখন আব্বুর জন্য পাঞ্জাবীটা কিনছিলে আব্বুর চোখে অদ্ভুদ একটা আনন্দ দেখতে পেয়েছিলাম ! আমি ঠিক জানি না এটা আমি কিভাবে তোমাকে ব্যাখ্যা করবো । এতো ভাল লাগলো দৃশ্যটা দেখে । ঐদিনই তোমাকে কেন জানি পছন্দ হয়ে গেল খুব !
কিছুটা সময় নিরবতা ! তারপর মীম আবারও বলতে শুরু করলো

-আমি তোমার সাথে শুরু থেকেই খারাপ ব্যবহার করেছি কিন্তু বোঝার চেষ্টা করি নি যে যা হয়েছে তাতে তোমার কোন দোষ নেই । এতো খারাপ লাগা শুরু করলো নিজের কাছে । তারপর আজকে তোমাকে এভাবে দৌড়ে আসতে দেখে আমার যত রাগ যট অভিমান ছিল সব কিছু ...... দুপুরেই ঐ তখনই তোমাকে খুব করে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছিলো !
-ওকেই !!
আমি আর কি বলবো ঠিক বুঝলাম না ! আর কি বলা উচিৎ তাও ঠিক বুঝতে পারলাম না !
তারপর নিজের ব্যাগ থেকে একটা প্যাকেট বের করে আমার দিকে বাড়িয়ে দিল ।
-কি এটা ?
-পাঞ্জাবী !
-আমার জন্য ?

কি গাধার মত প্রশ্ন ? আমার জন্যই অবশ্যই ।
-হম ! বাসর ঘর যখন হতে যাচ্ছে বরকে তো পাঞ্জাবী পরেই আসতে হবে । তাই না ?
-তাহলে বউ হয়ে যে বাসর ঘরে অপেক্ষা করবে তাকেও বেনারশী পরতে হয় !
-হুম ! বাটর আমারটা তো বাসায় । নিয়ে আসি নি !

আমি একটু হাসলাম কেবল । জানি না এটাকে ঠিক কাকতালীয় বলবো কি না কে জানে ! আমি কদিন আগেই ওর জন্য লাল রংয়ের একটা শাড়ি কিনেছিলাম । এমনিতেই কিনেছিলাম কিন্তু দেওয়ার সময় পাই নি । কিংবা দেওয়া হয়ে ওঠে নি ।

আমি শাড়িটা বের করে দিতেই মীম কেবল অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ।
-কেবল শাড়ীই আছে অন্য কিছু কেনা হয় নি । যদিও এটা বেনারসী না চলবে এতে ?

মীম আমার হাত থেকে শাড়িটা নিল । তারপর কি মনে হতেই মীম এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলে । বেশ শক্ত করেই ।
ওর শরীরের কাঁপন টা আমি ঠিক ঠিক অনুভব করছিলাম । ও কি কাঁদছে ?
আচ্ছা আমার চোখেও কি পানি আসলো একটু ?
আনন্দের ?
কিংবা খুব প্রিয় কাউকে কাছে পাবার আনন্দ !!


পরিশিষ্টঃ

এতো দিনের পরিচিত ঘরটা হঠাৎ করেই কেমন অপরিচিত লাগছে আমার কাছে । ঘরের লাইট অফ করে দেওয়া হয়েছে । সেখানে একটা ডিম লাইট জলছে । দুই পাশের দুই জানালা খোলা । যদিও এখন শীত কাল না তবে আসবে আসবে করছে । একটু ঠান্ডা বাতাস আসছে ঘরে । খাট থেকে একটু দুরে মেঝেতে বেশ কয়েকটা মোমবাতি জ্বালানো হয়েছে । বাতাসে সেগুলো কাঁপছে আর পুরো ঘরের চেহারা ক্ষনে ক্ষনেই বদলাচ্ছে । মিউজিক প্লেয়ারে মৃদু স্বরে গান বাজছে । এক কথায় সব মিলিয়ে এর থেকে চমৎকার আর কিছু হতে পারে না ।

আমি দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকতেই বিছানার দিকে চোখ গেল বিছানার দিকে । আবছায়া আলোতেই মীমকে দেখলাম ঘোমটা মাথায় দিয়ে বসে আছে । বাসর ঘরটা বলবো না আহামরি খুব সুন্দর হয়েছে কিন্তু দুজন মিলে ফুল গুলো দিয়ে যা পেরেছি তা যথেষ্ট এই রাতের জন্য । আমার কাছে কেবল মনে হল এর থেকে চমৎকার আসলেই এই রাতের বেলা আর কিছু হতে পারে না ।

আমি ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম খাটের দিকে ।
একটু নার্ভাস ?
হয়তো ?
আনন্দময় দ্বিধা নিশ্চয়ই মীমের ভেতরেও কাজ করছে । আমি খাটের উপর বসতেই মীম একটু নড়ে উঠলো । আস্তে করে ওর ঘোমটা টা উঠালাম উপরে ।

মোম আর ডিম লাইটের আলোতে মীমের লজ্জা মিশ্রিত চেহারা দেখে মনে হল এতো দিন ধরে যে দিনটার অপেক্ষা করছিলাম সেটা চলে এসেছে । একদম আমার সামনে এসে হাজির । আর কিছুই হয়তো দরকার নেই ।
মীম একটু হাসলো । তারপর বলল
-বউ পছন্দ হয়েছে তো ?

আমি কেবল তাকিয়েই রইলাম । প্রথমবার যখন আমি বাসর ঘরে ঢুকেছিলাম তখন কি ভেবেছিলাম আমার জীবনে আসলেই এমন একটা দিন আবারও ঘুরে আসবে । সেদিন যে মেয়েটা আমার থেকে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে ছিল অন্য দিকে আজকে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ভালবাসার চোখে, সামনের দিন গুলোর স্বপ্ন নিয়ে !

আমি মীমের হাত ধরলাম । তারপর বললাম
-আমাদের শুরু টা হয়তো ভাল ভাবে হয় নি কিন্তু শেষ টা সব থেকে সুন্দর হবে । সুন্দর হবে এর মাঝের এক সাথে পথ চলা টা ! আই ক্যান গ্যারান্টি !

মীম কেবলই হাসলো ! সেই হাসিতেই বলে দিচ্ছে যে আমার কথা তার বিশ্বাস হয়েছে । আসলেই আমাদের সমানের দিন গুলো সব থেকে সুন্দর হতে যাচ্ছে যার সুচনা আজকে এখান থেকেই !!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪
৪২টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×