somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ শেষ রাতের বিয়ে :D

১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-এতো রাইতে এই খানে কি করেন ?

আমি এক মনেই একটা দিকে তাকিয়ে ছিলাম । ঘড়িতে রাত একটার কিছু বেশি বাজবে হয়তো । পকেটে মোবাইল রয়েছে, বের করতে ইচ্ছে করছে না । প্রশ্ন কর্তার দিকে ফিরে চাইলাম । ফিরে তাকিয়ে দেখি প্রশ্ন কর্তা একা নন । তার সাথে আরও একজন আছে । পরনে খাকি পোষাক তবে পুলিশের না, নাইট গার্ডের । সাথের জনের এক হাতে বড় একটা চায়ের ফ্লাক্স অন্য হাতে একটা বালতি ! যে হাতে ফ্লাক্স ধরা সেই হাতেই একটা পলিথিনের প্যাকেকে সিগারেটের অনেক গুলো প্যাকেট !

আমার পরনে অনামিকার দেওয়া কালো রংয়ের একটা পাঞ্জাবী ! মোটামুটি বেশ ভাল দামী ! এই পোশাকে আমাকে মোটামুটি নিরীহ আর ভদ্র মনে হয় ! আমি মোটামুটি মুখটা নীরিহ করে বললাম
-কিছু না বসে আছি !
-এইখানে কি !
-দেখছেন না বসে আছি ! হাটছিলাম । হাটতে হাটতে ক্লান্ত হয়ে গেছি তাই বসে জিরিয়ে নিচ্ছি !

আমার কথা শুনে মনে হল না নাইটগার্ড সাহেব খুব একটা বিশ্বাস করলেন ! আমার দিকে সন্দেহের দিকে তাকাতে লাগলেন । নিশ্চয়ই আমাকে নেশা খোর মনে করছে । যদিও তা মনে করার কথা না !
-কতক্ষন বইবেন !
-সেই তো বলা মুশকিল ! যতক্ষন ভাল লাগে !
ভ্রাম্যমান চাওয়ালার সাথে কি যেন আলোচনা করে নিল সে । মনে হয় আমার দিকে তাকিয়ে একটু দ্বিধায় পরে গেছে । তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-এইটা ভদ্দোর লোকের এলাকা !
-আপনার কি মনে হয় ? আমি কি অভদ্রলোক ?
-ভদ্দোর লোকেরা এতো রাতে বাইরে থাকে না ! যান যান !
এইকথা বলেই নাইট গার্ড হাটা দিতে উদ্ধত হলেই আমি বললাম
-আচ্ছা ! যাচ্ছি ! আগে এক কাপ চা খেয়ে নেই তারপর যাই ! !
তারপর চাও্য়ালার দিকে তাকিয়ে বললাম
-চা সাহেব, তিন কাপ চা বানান ! ভাল করে !

তিন কাপ শুনে দুজনেই আবারও আমার দিকে তাকিয়ে একটু অবাক হয়ে ! সোডিয়াম লাইটে আমি সেই চেহারা দেখতে পাচ্ছি স্পষ্ট ! চা ওয়ালার মনে স্পষ্ট দ্বিধা ! আমি মানুষ একজন চা বানাতে বললাম তিন কাপ ! ঘটনা কি !
আমি বললাম
-আরে আমি এক কাপই খাবো !
-তাহলে বাকি দুইকাপ ?
চাওয়ালার প্রশ্ন !
-একটা এই গার্ড সাহেবের জন্য ! সারা রাত এতো কষ্ট করে মানুষ কে পাহারা দেয় ! আমি কি তাকে এক কাপ চা খাওয়া তে পারি না ! আর অন্য কাপ আপনার জন্য চা সাহেব !

চা চলে এল আধা মিনিটের ভেতরেই ! দেখলাম দুজনেই এক সাথে বসে চা খেতে শুরু করেছে । বসেছে আমার থেকে একটু দুরে ! আসলে অনেকের সাথেই নাইট গার্ডের নিশ্চই দেখা হয় ! কেউ মনে হয় এতো রাতে এদের কে এমন ভাবে চা খাওয়াই নাই !
আমি নাইট গার্ডের দিকে তাকিয়ে বললাম
-দেশ কোথায় গার্ড সাহেব ?
-বিক্রমপুর !
-আরে সর্বনাশ ! তাই নাকি ! আপনি দেখি দেশি লোক ! আসেন পাশে এসে বসে ! নাম কি আপনের ?
-সোলাইমান ইসলাম !
-আরে সোলাইমান ভাই ! এই ইট কাঠের শহরে বিশেষ করে এই রাতের বেলা নিজ লোক পাওয়া তো ভাগ্যের ব্যাপার ! আসেন আসেন !

আমার দেশ বিক্রমপুর, এই জন্যই মনে হয় গার্ড সাহেব আমার পাশে এসে বসল ! আমি বললাম
-আপনে দেশী লোক তাই আপনেরে বলি কথাটা ! মনটা বিশেষ খারাপ !
-ক্যান ?
-আজকে আমার বিয়ে ছিল !
-বিয়া !
-হুম! বিয়ে ! একটা মেয়ে কে বিয়ে করার কথা ছিল !
-হয় নাই ?
-নাহ !
-বাইচ্চা গেছেন ! বিয়া বড় ঝামেলার কাজ ! যারা করছে তারা বড়ই ঝামেলায় আছে !
বোঝা গেল গার্ড সাহেবের বিয়ে বিষয়ক খুব ভাল অভিজ্ঞতা নেই । আমি চাওয়ালার দিকে তাকিয়ে বলল
-আপনারও কি তাই মনে হয় চা সাহেব ?
চাওয়ালা কিছু বলল না ! তবে কেমন মিষ্টি করে হেসে দিল ! যেন জবাব দিতে লজ্জা পাচ্ছে !
গার্ড সোলাইমান বলল
-ওর কথা কইয়েন না ! আস্তা বউ পাগলা ! বউ যা কয় তাই শুনে ! বউয়ের কথায় নাচে ! নতুন বিয়া করছে না এইজন্য এতো মজে আছে । কদিন কাজ না, তারপর টের পাইবো !
চাওয়ালা প্রতিবাদ করে বলল
-মোটেই টা না ! আমি মেলা দিন বিয়া করছি । ভাইজান কন আমার বিয়ে হইছে সেই ভাদ্র মাসে ! আরেক ভাদ্রমাস আইলো বইলা ! এইডা কি নতুন হইলো কন !
--না মোটেই না !
-তাইলে !!
গার্ড সাহেব কিছু না বলে চায়ে চুমুক দিতে লাগলো ! আমি গার্ডকে বলল
-সিগারেট চলে নাকি !
মুখে কিছু না বললেও মনে হল সে সিগারেট খায় ! আমি চাওয়ালার দিকে তাকিয়ে বলল
-গার্ড সাহেব কে একটা সিগারেট দেন ! আপনেও একটা নেন ! আজকে আমার বিয়ে হয়নি তো এই খুশিটা সেলিব্রেট করা যাক কি বলেন !
সিগারেট মুখে নিয়েই সোলাইমান মিয়া বলল
-বিয়া ক্যান হইলো না ? মইয়া বাইকা বসছে ?
-নাহ ! মাইয়া সোজাই ছিল !
-তাইলে ?
-আমি বাইকা বসলাম !
-মানে কি ? ক্যান ?
-আরে কি বলেন ? একটু আগেই না আপনে কইলেন বাইচ্চা গেছি এখন আবার ক্যান কন ক্যান ?
-আরে আমি কইবার চাইছি আপনে মানা করলেন ক্যান ?
কিছুটা সময় চুপ করে রইলাম !
-কোন কারন নেই । বিয়ে করতে ইচ্ছে করে নি তাই ! একবার না । এই নিয়া ৬ বার মানা করছি । ভাবতে পারেন একটা মেয়ে ছয় ছয়বার আপনাকে বিয়ে করার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে এসেছে এবং আবার ফিরে গেছে শূন্য হাতে ।

আমি কথাটা বলে শূন্য দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকালাম । আমাশে যেন আজকে খুব বেশি ঝলমল করছ । চারিদিকে তারার মেলা ! একটা ব্যাপার আমি বেশ ভাল করে দেখেছি প্রতিবার অনামিকা আমাকে যকন বিয়ে করতে আসে আর ফিরে যায় সেদিন রাতে খুব ভাল জ্যোঁছনা থাকে । যেন জ্যোঁছনার বন্যা বয়ে যায় ! এমন কি ঘন বর্ষার সময়ও অনামিকা একবার আমাকে বিয়ে করার জন্য বাসা থেকে চলে এসেছিল । সেদিন রাতেও আকাশে উজ্জল জ্যোঁছনা ছিল । আর ছিল হাজারও তারার মেলা !


কিছু সময় কেউ কোন কথা বলল না ! সামনের রাস্তা দিয়ে ভুস করে একটা গাড়ি চলে গেল । সোলাইমান মিয়া বলল
-আপনেই সেই মাইয়া কি এই এলাকায় থাকে ?
আমি জবাব না দিয়ে অনামিকাদের বাড়ির দিকে তাকালাম ! বেশ রাত হয়েছে অথচ এখন ওদের বাসার সব গুলো লাইট জ্বলছে । এমন সাধারনত হয় না ! অনামিকা রাত জাগলেও ওর বাবা জলদি জলদিই ঘুমিয়ে পড়ে । আজকে কি সবাই জেগে রয়েছে !
কেন ?

এমন কথা ভাবতে ভাবতেই ফোন বেজে উঠলো । রিংটোন শুনে বুঝে গেলাম অনামিকা ফোন করেছে ।
অনামিকা সাধারনত এতো জলদি রাগ ফেলে আমাকে ফোন করে না ! আমি তো ভেবেছিলাম ও অন্তত দুই তিন দিনের আগে ফোন করবে না !
-হ্যালো !
-হুম !
-এখনও ঘুমাও নাই ?
-দেখতে পাচ্ছো না ?
-আচ্ছা । আচ্ছা ! রাগ কর না প্লিজ ! আমি আসলে তোমাকে এখন আশা করি নি ! আমি তো ভেবেছিলাম যে তুমি হয়তো আমাকে আর ফোনই দিবে না !
-আমিও তাই চাইছিলাম ! আজকে বিকেল বেলা যখন চলে এলাম আমি ভেবেছিলাম তোমাকে আর ফোন দিবো না !
-এতো জলদি দিলে ?
-খুব মজা লাগছে তোমার ?
-না না কি বল !
তারপরই কিছু সময় কোন কথা না ! কিছু সময়ে পরেই আনামিকা বলল
-তোমার মন ভাল ?
-আমার মনের কথা থাক ! তোমার মন ভাল ? আসলে আমি তোমাকে কিভাবে বলব ! তুমি তো আমার অবস্থা জানো তো ? আমি কিভাবে.....
-আচ্ছা বাদ দাও ! কই তুমি ? বাইরে না বাসায় ?
-আরে এতো রাতে কি কেউ ভদ্রলোকের ছেলেরা বাইরে থাকে ? বল ?
-হুম । বুঝলাম । তা তোমার পাশের ঐ দুজন কে ? খুব তো দেখি গল্প জুড়ে দিয়েছো !
আমি কি বলব ঠিক খুজে পেলাম না ! আনামিকা কে বারান্দায় দেখলাম ! আমার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়লো !
সোলাইমান মিয়া আমার পাশেই ছিল ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-এই বাড়ির আফা ?
-হুম !
-আপনে করছেন কি ?
-কেন ?
-হায় হায় ! আপনে জানেন এই বাড়িয়ে কেডা থাকে ? এই বাড়ির মালিকের কত টেকা ? আর আপনে কি করছেন ?
আমি হাসলাম কেবল ! অনামিকা তখনও বারান্দায় দাড়িয়ে ! ফোনে বলল
-কি বলে তোমার পাশে জন !
-তোমার আব্বার অনেক টাকা তাই ! আমি তোমাকে বিয়ে না করে ভুল করেছি সেটা !
-কেন ? তোমার মনে হচ্ছে না যে তুমি ভুল করেছো ?
-হুম মনে হচ্ছে !
-তাহলে ? করবে বিয়ে আমাকে ?
-করবো তো ! তোমাকে ছাড়া আর কাকে বিয়ে করবো বল ?
-সত্যি তো ! একদম সত্যি !
-আচ্ছা আমি এখন আসবো তোমার এখানে !
-আরে মাথা খারাপ নাকি ? তোমার বাবা জানলে উপায় আছে !
-সেটা তোমার চিন্তা করা লাগবে না ! আমি এখন তোমার ওখানে আসবো ফুটপাতে বসে চা তোমার সাথে ! ঠিক আছে ! আমি আসছি !
-আরে শুনো ...... আরে..
-বল !
-হাতে করে ১০০ টাকা নিয়ে এসে তো ! পকেটে টাকা নেই চা সিগারেট খেয়ে ফেলেছি ! এখন বিল দিতে পারছি না !
অনামিকা ফোন রেখে দিল !

আমি ফোন রেখে সেলিম মিয়ার দিকে তাকালম !
-কি ? আফা আইতাছে ?
-হুম !
ঠিক মিনিট সাতেকের মাথায় অনামিকা গেট দিয়ে বেরিয়ে এল । সোলাইমান মিয়া আমার পাশ থেকে দুরে সরে গিয়ে বসলো ! চাওয়ালা বলল
-চা দিতাম ?
-হুম ! আরও চার কাপ হয়ে যাক !




অনামিকা আমার পাশে বসে বসে চায়ে চুমুক দিচ্ছে আর ওদের বাসার দিকে তাকিয়ে আছে । এখনও আমার হাত ধরে নি তবে খুব শীঘ্রই আমার হাট ধরবে বলে আমি আশা করছি ! আমাদের থেকে একটু দুরে সোলাইমান মিয়া আর চাওয়ালা বসে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে । মাঝে মাঝে নিজেদের মাঝে কি যেন কথা বলছে ! মুখের ভাব দেখে মনে হচ্ছে কোন একটা বিষয় নিয়ে তারা খুব চিন্তিত ! অনামিকা চা রেখে আমার হাত ধরলো !

সোডিয়াম আলোতেও ওর হাতের মেহেদীর রংটা বোঝা যাচ্ছে বেশ ভাল করেই । প্রত্যেকবার বিয়ের করার ভুত মাথায় আসলেই ওখুব যত্ন করে হাতে মেহেদী দেয় ! আমি মেহেদী রাঙ্গা হাত পছন্দ করি তাই !
আমি উল্টে পাল্টে ওর হাত টা দেখতে লাগলাম ! অনামিকা বলল
-একটা কথা বলবে ?
-হুম !
-তুমি প্রত্যেকবারই এখানে আসতে তাই না ? আমাকে মানা করার পর এখানে এসে আমার জানলার দিকে তাকিয়ে থাকতে ! যতক্ষন আমার ঘরের লাইট অফ না হয় ?
আমি কথার জবাব না দিয়ে ওর হাতের দিকেই তাকিয়ে রইলাম ! মেহেদীর ডিজাইন টা বেশ চমৎকার হয়েছে । নিশ্চয় ইউটিউব দেখে দেখে শিখেছে !
অনামিকা বলল
-লাইট বন্ধ করার পরে তুমি চলে যেতে । কোথায় যেতে ? মেসে ?
-না !
-তাহলে !
-হাটাহাটি করতাম ! বিসন্ন সময়ে রাতে ঘুম আসতো না ! তোমার মুখটা কেন জানি বারবার মনে পড়তো বেশি ! শুয়ে থাকলে সেই অস্তিরতা বাড়তো বেশি ! মাঝে মাঝে আমার কি মনে হয় জানো ?
-কি ?

কিছু বলতে গিয়েও বললাম না ! চুপ করে রইলাম । তাকিয়ে দেখি অনামিকার চোখে পানি টলমল করছে । চাদের আলোতে মনে হচ্ছে যেন কোন অপ্সরী দীঘির মত চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । সেই চোখে এক রাশ ভালবাসা আমার জন্য ! এখনই টুপ করে হল গড়িয়ে পড়বে ! হঠাৎই ইচ্ছে হল সব বাস্তবতার শিকল ছিড়ে ফেলে ওকে বলি চল এখনই তোমাকে বিয়ে করবো ! আজকে কেউ আমাকে আটকাতে পারবে না ! আমি কালকের কথা চিন্তা করবো না ! চিন্তা করবো কাল কোথায় নিয়ে তোমাকে উঠবো কি খায়াবো ! কেবল আজকের কথা চিন্তা করবো ! আজকে আমাদের সংসার হবে !
অনামিকা বলল
-কি ভাবছো ? বিয়ে করবো আমাকে ?
-করবো !
-সত্যি তো !
-হুম !
-সোলাইমান সাহেব !
সোলাইমান মিয়া বলে উঠলো
-জে আফা !
-শুনলেন তো ! কি বলল !
-জে ! আপনারা সাক্ষী থাকলেন !
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আজকে আমাদের বাসার সব গুলো লাইট এখনও জ্বলছে । তোমার কৌতুহল হচ্ছে না ?
-আরে হ্যা তো ! আমি সেই কখন থেকে ভাবছি ! কেন বল তো !
অনামিকা হাসলো ! চোখের পানি ততক্ষনে মুছে ফেলেছে । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-এতোক্ষন আমি বাবার সাথে আর্গিউ করছিলাম !
-কি বিষয়ে ?
-তোমার আমার বিয়ে বিষয়ে !
-কি !
-হুম !

তারপর আমার দিকে রহস্যময় চোখে তাকিয়ে থেকে তারপর বলল
-এখনই তোমার সাথে আমার বিয়ে হবে ! বাবা কাজীকে খবর দিয়েছে । অল্প কিছু ক্ষনের ভেতরেই তিনি চলে আসবে !
-মানে কি ! কি বলছো এসব ! দেখো এরকম ভাবে হয় না তো !
-আজকে হবে ! আজকে তুমি আমাকে মানা করতে পারবে না ! কেন বল তো ?
-কেন ?
-ঠিক যে করনে বাবা রাজি হয়েছে তুমি হবে !
আমি অনামিকার কন্ঠের দৃঢ়তা দেখে সত্যি একটু সংকিত বোধ করলাম ! এই মেয়ে তার বাবাকে এমন কি বলেছে !
অনামিকা জামার পকেট থেকে একটা সিসি বের করলো ! আমাকে দেখিয়ে বলল
-এটা কি জানো ?
-কি !
-পটাশিয়াম সায়ানাইড !
খাইছে আমারে ! এই মেয়ে করছে কি !
-বাবা এটা দেখে আর কিছু বলে নি । সোজা কাজীকে ফোন করেছে । কাজী আসলে তুমি আমার সাথে আমাদের বাড়িতে ঢুকবে ! যদি না ঢুকো তাহলে .....।

তাহলে কি হবে সেটা আমার বলে দিতে হল না ! তাকিয়ে দেখি সোলাইমান সাহেব আর চাওয়ালা আমাদের দিকে গভীর মনযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছে । কি হবে সেটার অপেক্ষায় আছে তারা !
আমি বললাম
-বিয়ে তো সাক্ষী লাগে ! আমার সাথে তো কেউ নেই !
-সাক্ষী লাগবে না !
-আরে তা কি করে হয় ! একবারই তো বিয়ে হয় !
আমি আরও কিছু বলতে যাবো সোলাইমান মিয়া বলল
-আফা আমি ভাইজানের দেশের লোক ! আমি সাক্ষী হমু !
অনামিকা বলল
-সি ! প্রব্লেম সলভ !

আমি তখনও অনামিকার হাত ধরে রেখেছি ! এবার সত্যি সত্যিই মনে হচ্ছে বিয়েটা হয়ে যাবে ! কোন ভাবেই আটকানো যাবে না !
মিনিট পাঁচেক পরেই দেখলাম একটা কালো রংয়ের গাড়ী ঢুকছে অনামিকাদের বাড়িতে ! অনামিকা উঠে দাড়াতে দাড়াতে বলল
-আমি ভেতরে যাচ্ছি ! ঠিক ৩০ মিনিট পরে তুমি আসবে ! ঠিক আছে ! আর যদি না আসো তাহলে ৪০ মিনিট পার হওয়ার সাথে সাথে আমি ......।
-ঠিক আছে বাবা আমি আসছি ! আর বলতে হবে না !


অনামিকা চলে গেল ! চাওয়ালা আমাকে আরও এক কাপ চা দিল । আমি চায়ে চুমুক দিতে দিতে সোলাইমান মিয়া বলল
-ভাইজান আপনে এইখানে বসেন ! আমি যামু আর আমু !
-কোথায় যাচ্ছেন !
-আরে বিয়াতে যাইতেছি । একটা প্রস্তুতির ব্যাপার আছে না ! এই গার্ডের পোষাক পরে কি বিয়াতে যাওন যায় নাকি ! জামাডা বদলাইয়া আসি !
-আচ্ছা আসেন !
চাওয়ালাও বলল
-তাইলে আমিও যাই ! বদলাইয়া আসি কি বলেন ! জিনিস পাত্তি এইখানেি থাকলো ! আমি যামু আর আমু !
-যান !
দুজনেই বলতে গেলে দৌড়ে চলে গেল ! আমি চায়ে চুমুক দিতে লাগলাম ! সত্যি সত্যি তাহলে বিয়ে হতে যাচ্ছে আজকে !!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৩
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×