আমাদের সামুতে অনেকেই নিজের আসল নামে না লিখে অন্য নামে লিখে ! ঠিক কি কারনে কিংবা কিসের উপর ভিত্তি করে তারা তাদের সেই নামটি নির্বাচন করে তা আজও রহস্যই রয়ে গেছে ! বেশ কয়েকদিন আগেএরকরম কয়েকটা রহস্য বের করেছিলাম । যারা যারা পড়েন নাই, এখানে গুতা দিলেই জেনে যাবেন সেই রহস্য ! ঠিক সেই রকম আরও কিছু অজানা রহস্য নিয়ে আজকের পোস্ট ! সেই সকল নিক ধারনের পেছনে লুকিয়ে আছে কি করুন ইতিহাস ! আসুন আজ দেখে নিই নিকের পেছনের তেমন কিছু হাহাকার সমৃদ্ধ ইতিহাস !
০১
দুর দেশে বসবাস করতো এক পরী ! তার সেই পরী রাজ্যের ছোট সবাইকে সে খুব আদর করতো ! সেই রাজ্যের সবাই তাকে পছন্দ করতো । ছোট বাচ্চাদের অবিবাহিত আঙ্কেলরা একটু আধটু লাইনও মারার চেষ্টা করতো ! এভাবেই হেসে খেলে সবাই সাথে গল্প করে তার দিন চলে যেত । তারপর একদিন সেই পরীটার মনে হল নতুন করা দরকার । নতুন ভাবে নতুন দেশের মানুষের সাথে মেশা দরকার । যেই ভাবা সেই কাজ ! সে বেরিয়ে পড়লো । দেশে দেশে আপন মনে ঘুরতে লাগলো আর নিজের ভালবাসার ঝুলি থেকে বের করতে লাগলো নানান জাদুর খেলা ! এভাবেই সেই পরী সবার কাছে প্রিয় হয়ে উঠলো । কিন্তু সমস্যা হয়ে দাড়ালো যে একই সাথে সব জায়গায় থাকতে পারতো না । এক দেশে থাকার সময় তার অন্য দেশের প্রিয় মানুষের কথা তার মনে পড়তো । তখন তার মন খারাপ হত । কিভাবে সবার পাশে পাশে থাকা যায় সেই বুদ্ধি বের করতে লাগলো । তখন সেই পরীটা ব্লগে একটা একাউন্ট খুলে ফেলল । এর থেকে সহজ উপায় আর জানা ছিল না তার সেই পরীটাই এখন সামুতে ব্লগ লিখে অপ্সরা নামে !
০২
ছেলেটি কোকোলা চকলেট জেমস খেতে খুব পছন্দ করতো । সারাদিন মুখের এই জেমস চকলেট থাকতোই । তার আব্বা যদি একদিন এই চকলেট না আনতো তাহলে কেঁদে কেটে অস্থির হয়ে যেত । একদিন তার আব্বা অনেক বাজারের সাথে প্যাকেটে করে জেমস চকলেট আনলো । দোকানী সবকিছুর সাথে চকলেট টা ভাল করে বেঁধে দিল । এখন বাসায় এসে ছেলেটির বাবা প্যাকেট রেখেই গোসলে ঢুকে পড়ল । এদিকে ছেলেটি কিছুতেই অন্যান্য জিনিস পত্রের সাথে বাঁধা জেমস চকলেটের প্যাকেট টা আর খুলতে পারে না । কত চেষ্টা করল কিন্তু পারলো না । তার পছন্দের জেমস চকলেট বাঁধা (বন্ড) ছিল এই মনের দুঃখে ছেলেটি সামু ব্লগে একাউন্ট খুলল "জেমস বন্ড" নামে ।
০৩
সে কবিতা আবৃতি খুব পছন্দ করতো । বিভিন্ন দিনে বিভিন্ন কবিতা মুখস্ত করতো আর কবিতা আবৃতি করতো । একবার তার গুরু মশাই তাকে কবি নজরুলের "বিদ্রোহী" কবিতাটা মুখস্ত করতে দিল ! তারপর বলল ভাল করে মুখস্ত করতে । সামনে আবৃতি অনুষ্ঠানে তাকে এটা আবৃতি করতে হবে । সে লেগে গেল আপন মনে মুখস্ত করার জন্য । সেই সাথে চলল আবৃতি চর্চা ! দেখতে দেখতে চলে এল অনুষ্ঠান । সে শুরু করলো আবৃতি ।
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারী' আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রীর!
বল বীর-
.....
বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত
আমি আমি সেই দিন হব শান্ত!
আমি .....।
আমি আমি.....
সে আটকে গেল ! আর কিছুতেই মনে করতে পারলো ঠিক এর পরেই কোন শব্দ টা আছে ।
স্টেজ থেকে নেমে গেল । পুরষ্কার হাত ছাড়া হয়ে গেল । বাসায় এসে দেখলো সেই পরের শব্দ টা কি । শব্দটা ছিল "আমি বিদ্রোহী ভৃগু"
আর কোন দিন যাতে সে এই শব্দ দুটো না ভোলে তাই সে সামুতে নিজের নিক খুলল "বিদ্রোহী ভৃগু" নামে !
০৪
ছেলেটি এবং তার বন্ধুটি তাদের ক্লাসের একটা মেয়েকে খুব পছন্দ করতো । তাদের ভিতর কথা ছিল যে, মেয়েটি যাকে পছন্দ করবে ওপর জন খুশি খুশি মনে সেইটা মেনে নিবে । দুজনেই লাজুক প্রকৃতির ছিল তাই মেয়েটিকে কিছু বলতে পারতো না । তবে মেয়ে জানতো যে দুজনই তাকে পছন্দ করে । এভাবে দিন যায়, মাস যায়, এমন কি বছর চলে যায় কিন্তু কেউ আর কিছু বলতে পারে না !
এই দিকে ছেলেটি কলেজের পড়ার পাঠ চুকিয়ে বুয়েটে চাণ্স পেয়ে গেল । একদিনের কথা । ছেলেটি বুয়েটে পড়তে চলে যাওয়ার আগের দিন । মাঠে বসে আছে চুপচাপ । এমন সময় সেই মেয়েটি এসে হাজির । মেয়েটির হাতে একটা খাতা আর কলম ।
মেয়েটি ছেলেটির সামনে বসে বলল
-এই বলতো "আমরা" কে ভাঙ্গলে কি হয় ? এই খাতায় লিখো তো ।
ছেলেটি বাংলা গ্রামার ভাল পারতো !
ছেলেটি খাতায় লিখলো
"আমি তুমি সে"
মেয়েটি তখন ছেলেটির হাত থেকে কলম টা নিয়ে নিয়ে "সে" টা কেটে দিল ! তারপর একটু লাজুক হাসি দিয়ে বলল
-"আমি" "তুমি" মিলে "আমরা" হতে চাই । "সে" বাদ ! ঠিক আছে ?
ছেলেতো মহা খুশি ! "সে" বাদ মানে তার বন্ধুকে মেয়েটিকে পছন্দ করে নি । তাকে পছন্দ করেছে ।
বুয়েটে তার দিন ভালই কাটতে লাগলো ! পড়ালেখা আর মেয়েটি । একদিন ছেলেটি বুয়েট নিয়ে একটা লেখার লিংক ধরে সামু ব্লগের খোজ পেল ! কিছু ব্লগ পড়েই মনে হল এখানে একটা নিক খুলে ফেলা যায় ! কিন্তু কি নাম দিবে প্রথমে খুজে পেল না ! ঠিক তখনই মেয়েটার ফোন এসে হাজির !
সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটির মাথায় নামটি চলে এল "আমি তুমি আমরা" ।
০৫
আপন মনেই খেয়ালী ছেলেটা । আর ছিল খুব লাজুক ! মনে মনে ক্লাসের শতাব্দী রায় নামের একটা মেয়েকে খুব পছন্দ করতো । কিন্তু কিছুতেই বলতে পারতো না । খুব লজ্জা পেত । এদিকে তার কথা না ভেবে সে কিছুতেই শান্তি পেত না । পাছে লোকজন জেনে ফেলে সমস্যা করে তাই সেই মেয়েটির নাম কিঞ্চিত বদলে সে রাখলো "শতদ্রু" নিজের মনেই শতদ্রুকে নিয়ে কত কথা বলতো কবিতা লিখতো ! গল্প লিখতো । সবাইকে সেটা পড়িয়ে শুনাতো ! কেউ বুঝতে পারতো না ! সবাই মনে করতো শতদ্রু মানে হবে হয়তো কোন কিছু । কিন্তু সেই মেয়েটি ঠিকই বুঝতে পারতো । মেয়েটিও কিছু বলতো না !
একদিন তার বন্ধুরা তাকে চেপে ধরলো । আজ তাকে বলতেই হবে কি এই শতদ্রু আর কে এই শতদ্রু ! ছেলেটি কিছুতেই বলবে না ! তার বন্ধুরা তাকে ছাড়বেও না, না বলা পর্যন্ত । তখনই ছেলেটির চোখ গেল মেয়েটির দিকে । মেয়েটি তাকে হাতের ইশারায় কিছু একটা বলতে বলছে । প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও পরে বুঝলো সে মেয়েটি তাকে নদী বলার চেষ্টা করছে তখনই ছেলেটি বলল আচ্ছা বলছি এর মানে কি !
বন্ধুরা বলল কি
সে বলল
-একটি নদী !
বন্ধুরা বলল
-কি ?
সে আবার বলল
-একটি নদী !
-কি !
-শতদ্রু একটি নদী ...। আমার নিজের নদী ।
তারপর মেয়েটির দিকে তাকিয়ে দেখে মেয়েটি মিষ্টি মিষ্টি হাসছে !
এইভাবেই জন্ম হল, শতদ্রু একটি নদী..." নামের নিকের !
০৬
ছেলেটি ডোরেমোন দেখতে খুব ভালবাসতো । সারাদিন কেবল ডোরেমোন আর ডোরেমোন ! তার ডোরেমোন দেখার জ্বালায় পরিবারের লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে যেত । ছেলে এতো বড় হয়ে গেল অথচ এখনও ডোরেমোন দেখে, এটা বাইরে জানাজানি হয়ে গেলে সবাই লজ্জায় পড়ে যাবে । তাই সবাই কিছু বলতো না । চুপচাপ দেখতে দিত । তবে কথা গোপন রইলো না । তার এই ডোরেমোন প্রীতির জন্য লোকে তাকে রিয়েল ডোরেমোন ফ্যান উপাধীতে ভূষিত করলো ।
কিন্তু একদিন ছেলেটা পড়ালেখা করার জন্য ফ্রান্সে চলে গেল । সেখানে গিয়ে তার বাংলাদেশের কথা মনে পড়তো খুব । বাংলাদেশের মানুষ গুলোর সাথে যোগাযোগ করার জন্যই সে সামু ব্লগে একটা নিক খুলতে চাইলো । এখানে অনেক বাংলা ভাষাভাষি লোকেরা ব্লগিং করে ।
এখন কি নামে খুলবে এই নিয়ে খানিকক্ষন চিন্তা করলো সে । সে যেহেতু ডোরেমোনের ফ্যান এবং দেশে থাকতে লোকে তাকে রিয়েল ডোরেমোন ফ্যান উাপধী দিয়েছে তাই সে এই নামেই সামু ব্লগে একটা নিক খুলতে চাইলো । কিন্তু দুঃখের বিষয় বেখালে রিয়েল ডোরেমোন লিখতে গিয়ে ছেলেটি বানান ভুল করে লিখলো "রিয়েল ডেমোন" । সামুতে নাম বদলানো যায় না বিধায় সেই রিয়েল ডোরেমোনের ফ্যান ছেলেটির নাম এখনও "রিয়েল ডেমোন" ই রয়ে গেছে ।
০৭
গ্রামের মাঠে ছেলেটি প্রতিদিন খেলতে যেত । তার ছিল সব খেলার সামগ্রী ! ব্যাট, ক্রিকেট বল, ফুটবল, ভলিবল ইত্যাদি ! গ্রামে প্রতিদিন বিভিন্ন রকমের খেলা হত । সবাই মিলে নানান খেলা করতো । কোন দিন ফুটবল কোন কাবাডি আবার কোন দিন ক্রিকেট ! বিকেলে খেলার আগের প্রতিদিন আলোচনা হত আজকে কি খেলা হবে । সেই মোতাবেক সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসতো ! কিন্তু মাঝখানে ঝামেলা করতো ছেলেটি ! যেদিন সবাই মিলে ঠিক করতো যে বিকেলে ফুটবল খেলা হবে সেদিন ছেলে ঠিক অন্য খেলার সামগ্রী নিয়ে হাজির হত ! যেই দিন যে খেলার কথা ঠিক হত সে নিয়ে হাজির হত অন্য খেলার জিনিস পত্র । যেহেতু সব খেলার জিনিস তার নিজের ছিল তাই তাকে কিছু বলার সাহস করতো না ! এই ভাবে প্রতিদিন নির্ধারিত খেলা বদলে দেওয়ার জন্য ছেলেটির নাম হয়ে গেল "গেম চেঞ্জার"
০৮
চাঁদের বুড়ির আসলে একটা নাতি ছিল । সারা দিন বুড়ি চরকা কাটতো আর তার নাতি এদিক ওদিক খেলা ধুলা করতো ! কিন্তু বুড়ি চিন্তা করে দেখলো এভাবে করে কেবল খেলা করতে থাকলে তো তার নাতি কিছুতেই বড় হতে পারবে না, মানুষের মত মানুষ হতে পারবে না । বড় হয়ে তাকেও তার মত সুতা কাটতে হবে । তাই ঠিক করলো তার নাতিকে সে পৃথিবীতে পাঠাবে । মানুষের মত মানুষ করবে । লম্বা একটা মই বানিয়ে তাকে পাঠিয়ে দিল পৃথিবী তে । সেই নাতি পৃথিবীতে এসে শুরু করলো পড়া লেখা । মন দিয়ে পড়া লেখা করতো আর সারা দিন চাঁদের দিকের তাকিয়ে দাদীকে মনে করতো । একদিন তার মনে হল কেবল পড়া লেখা করলেই হবে দেশ ও সমাজ নিয়েও ভাবতে হবে । নিজের চিন্তা ভাবনা সবার মাঝে বিলিয়ে দিতে হবে ! তাই সে ঠিক করলো ব্লগে একাউন্ট খুলবে । কিন্তু ব্লগের নাম কি দেব । তখনই তার উপরে দাদীর কথা মনে হল । তাই সে চাঁদের বুড়ি দাদীর কথা চিন্তা করে, তাকে মনে রাখার জন্য নিকের নাম দিল "ডি মুন"
০৯
একটি ছোট নদী ছিল । বাংলাদেশের খুলনায় নদী অবস্থিত । একটা ছেলে সেই নদীর পাড়ে বসে থাকতো সারা দিন । কি যেন খুজতো ! কিংবা কাকে যেন খুজতো কেউ বলতে পারে না । সারাদিন নদীতে কত ট্রলার চলতো, কত লঞ্চ চলতো । ছেলেটি সেগুলো "নির্লিপ্ত" ভাবে দেখতো ! কিন্তু কিছু বলতো না !
এভাবে দিন কেটে যাচ্ছিল । একদিন হঠাৎ ছেলেটি দেখলো একদল মেয়ে লঞ্চে করে সেই নদীতে ঘুরে বেড়াচ্ছে । মেয়েগুলোর ভেতরে একটি মেয়েকে দেখে ছেলেটির মনের ভিতর একটু আনন্দের সঞ্চালন হল ! শুরু হল এক অচেনা তোলপাড় ! তারপর থেকে ছেলেটি সারাদিন কি এক "স্বপ্ন" এর ভিতর ডুবে থাকতো কেউ বলতে পারে না । দিন নাই রাত নাই সারা দিন কেবল স্বপ্ন দেখতো ! কেউ না জানলেও ছেলেটি জানতো যে সে কিসের স্বপ্ন দেখতো !
কিন্তু একদিন তো সব কিছু ওলট পাটল হয়ে গেল । ছেলেটি নির্লিপ্ত ভাবে নদীর পাড়ে বসে সেই মেয়েটির স্বপ্ন দেখছিল, এমন সময় ঝড় উঠলো নদীতে । ঠিক সেই গাছের নিচের বসে ছিল ছেলেটি সেই গাছের উপরই "বাজ" পড়লো হঠাৎ করেই । আরেকটু হলেই ছেলেটি মারা পড়তো । কিন্তু সেই যাত্রায় ছেলেটি বেঁচে গেল ! কিন্তু তার পছন্দের গাছটি মারা পড়লো । তারপর থেকে ছেলেটি আর কোন দিন সেই নদীর পাড়ে যায় নি !
সেই নদীটির নাম ছিল আড়িয়াল খাঁ ! আর ছেলেটির নাম ?
আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ে নির্লিপ্ত ভাবে বসে বসে স্বপ্ন দেখার সময় আকাশ থেকে বাজ পড়ার কারনে সেই ছেলেটি নিজের ব্লগীয় নাম রাখলো "নির্লিপ্ত স্বপ্নবাজ" । এখানে উল্লেখ্য তার ফেইসবুকীও নাম আড়িয়াল খাঁ ।
১০
এলাকায় তখন খুবই ভুতের ভয় । সন্ধ্যা হলেই মানুষ ঘর থেকে বের হতে ভয় পেত । সন্ধ্যা হলেই সবাই দরজা জানালা বন্ধ করে বসে থাকতো ঘরের ভেতরে । কেউ বাইরে যেত না । কিন্তু একদিন একটা সমস্যা হয়ে গেল । হঠাৎ করেই এক পরিবারের একজন অসুস্থ হয়ে গেল । তার জন্য জরুরী ভিত্তিতে কিছু ঔষধ দরকার কিন্তু সেটা ছিল শহরের অপর প্রান্তে । এই রাতের বেলা কে যাবে ?
কেউ সাহস পেল না ! বাড়িতে কান্নার রোল উঠলো । পাশের বাড়ি থেকে একজন শুনতে পেল সেই কান্না । যদিও তার নিজেরও বেশ ভয় করছিল সে বেড়িয়ে এল বাসা থেকে । সব শুনে তার সাইকেল নিয়ে সেই রাতের বেলা রওনা দিল ঔষধ নিয়ে আসার জন্য । পুরো রাস্তা সে চলল এক টানা ! তারপর ঔষধ নিয়ে আবারও ফিরে এল । বেঁচে সেই মানুষটার প্রান !
সকাল বেলা এই ঘটনা পুরো এলাকা ছড়ি গেল । তার সাহসের কাজের জন্য সবাই তাকে খুব প্রসংসা করতে লাগলো । পাড়ার মেয়েরা তার জন্য পাগল হতে শুরু করলো । যখন সে পাড়ার রাস্তা দিয়ে হেটে যেত তখনই সবাই তার নামে হেইল করতে শুরু করলো ! সেই থেকে তার নাম হয়ে গেল পাড়ার সাহসী সন্তান !
১১
এক দেশে এক রাজা ছিল । তার ছিল একটা ছেলে । সেই রাজ পুত্রের ঘোড় সাওয়ারের খুব সখ ছিল । সারা দিন সে ঘোড়ায় করে ঘুরে বেড়াতো ! এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যেত । রাজ পুত্র বলে কথা । রাজ্যের সকল মেয়ে সেই রাজপুত্রের জন্য লাগল ছিল কিন্তু সেই রাজপুত্র কাউকে পাত্তা দিতো না ।
একদিন রাজপুত্র ঘোড়ার করে বনের ভেতরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল । হঠাৎই তার সামনে একটা মেয়ে এসে হাজির । সেই মেয়ের রূপ দেখে রাজপুত্রের তো মাথা খারাপ ! বারবার ভাবতে লাগলো এতো সুন্দর মেয়েও আছে । সে এক ভাবে তাকিয়েই রইলো । আসলেই সেই মেয়ে কোন মেয়ে ছিল না । সে ছিল বনের এক পেত্নী । সে চোখের যাদুতেই রাজপুত্রের মাথা খারাপ করিয়ে দিল । তারপর সেই রাজপুত্র বনে বনে ঘুরতে লাগলো ! কোন ভাবেই আর বনের ভেতর থেকে বের হতে পারলো না ! কোন দিক দিয়ে বের হয়ে বাড়ির দিকে সেটার কোন দিশে পেল না ! তাই তার নাম হয়ে গেল দিশেহারা রাজপুত্র ।
১২
ছোট বেলা থেকেই ছেলেটির খুব পড়ার সখ ছিল । ক্লাসের বই বাদ দিয়েও সে আরও অনেক ধরনের বউ পড়তো ! পাড়ার লিখিল বাবু পাঠক সঙ্ঘের সে ছিল একজন নিয়মিত পাঠক । কিন্তু কেবল তো বই পড়লেই চলবে না জীবনে বেঁচে থাকার জন্য আরও অনেক কিছু করা লাগবে । কাজের সন্ধানে সে চলে গেল বিদেশ । কিন্তু তবুও সেখানে গিয়েও তার বই পড়ার অভ্যাস টা গেল না কিছুতেই । প্রবাসে বসে বই পাঠের অভ্যাস টা তার যেন আরও গাঢ় হল । সেই ছেলেটাই আজকে সামুতে পোস্ট লেখে প্রবাসী পাঠক নামে !
১৩
সেই মানুষটি আগে থাকতো গ্রামে । একদিন চলে এল ঢাকা শহরে । ঢাকাতে এসেই তার ঢাকা শহরটা খুব পছন্দ করে ফেলল । সেখানেই যেত সব জায়গায় সে ঢাকায় থাকা মানুষদের কে খুব পছন্দ করতো ! তাদেরকে আলাদা খাতির করতো ! দেশের বাইরে গেলেও চেষ্টা করতো এমন জায়গা থাকার যেখানে ঢাকায় থাকতো এমন লোকজনের আশেপাশে থাকতে । সেই মানুষটির নামই "ঢাকাবাসী"
১৪
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরণ্যক বইটা সেই রাখাল ছেলেটির খুব পছন্দের ছিল ! যেখানেই যেত সাথে করে সেই বইটি নিয়ে যেন । যখন মাঠে যেত কাজ করার জন্য তখনই বইটা তার সাথেই থাকতো ! সব সময় আরণ্যক বইটা সাথে থাকার জন্য সেই ছেলেটিকে সবাই ডাকতো আরণ্যক রাখাল ।
১৫
একজন ছিল খুবই সচেতন । সকল বিষয়েই তার ব্যাপক সচেতনতা । এবং সেই সচেতনা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতো চাইতো । এভাবেই হ্যাপি বোধ করতো । তাই তো তার নাম হয়ে গেল সচেতনহ্যাপী
১৬
অনেক দিন আগের কথা । সুন্দরবনের গহীনে এক ইয়া অতিকায় স্পেশশীপ এসে থামলো ! অনেক ভিন গ্রহ থেকে কিছু প্রানী, আমরা যাকে এলিয়েন বলি, সেই এলিয়েন এসে নিচে নামলো । তাদের প্রধান লক্ষ্য এই এলাকা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে আদের প্লানেট হেড এর কাছে রিপোর্ট করা । সবাই সবার কাছে লেগে গেল । তাদের ছিল অত্যাধিনুক ট্রান্সলেটর যার সাহায্যে তারা সব কিছু সাথে কথা বলতে পারছিল ! তাছাড়া সেই ভিন গ্রহয়ের জাতির নাম ছিল স্বর্ন্ । তাদের একটা আলাদা ক্ষমতা ছিল যে তারা সামনে যা দেখতে পেত সেই জিনিসের আকৃতি ধারন করতে পারতো ! কিন্তু সমস্যা ছিল যে যদি একজন স্বর্ণ ৫ মিনিটের বেশি সেই রূপ ধরে থাকে তাহলে সে আর আসল রুপে ফিরতে পারে না ! এই ভাবে তারা বনের ভিতর যা দেখে তারই রূপ ধারন করে ফেলছিল মজা করার জন্য । এভাবে তথ্য সংখ্যা করতে করতে একজন স্বর্ণ্ চলে গেলো কাছে একটা গ্রামে । গ্রামের ভিতর গিয়েই সে অদ্ভুদ আকৃতির এক প্রানী(মানুষ) দেখলো । কিন্তু কাল বিলম্ব না করে সেই এলিয়েন মানুষের আকৃতি ধারন করে ফেলল ! তার এই নতুন রূপ সে নিজেই খুব পছন্দ করে ফেলল । কিন্তু এই রূপে তো আর সারা জীবন থাকা যাবে না তাই সে যেই অন্য রূপে বদলাতে যাবে তখন গ্রামের এক ছোট্ট শিশু কে দেখলো তার দিকে এগিয়ে আসতে । এগিয়ে এসে তার দিকে তাকিয়ে বাচ্চাটি ভ্যা করে কেঁদে দিল ! সেই স্বর্ণ্ টি ভয় পেয়ে গেল ! এখন কি করবে সে বুঝতে পারলো না ! এগিয়ে গিয়ে ছেলেটির কান্না থামানোর চেষ্টা করলো ! কান্না শুনে গ্রামের ভিতর থেকে বাচ্চার মা এগিয়ে এসে দেখে এক সুন্দরী মেয়ে তার বাচ্চার কান্না থামানোর চেষ্টা করছে । মা টি কাছে গিয়ে বলল
-আফা ! ঐ এমতেই কান্দে ! আপনে আপনের হাত নষ্ট কইরেন না !
তারপর সেই স্বর্ণ্ কে নিয়ে গেল গ্রামের ভিতরে । তারা সবাই সেই স্বর্ণ্ কে দেখে খুব খুশি ! এখানে বাইরে থেকে কোন মানুষ আসে না ! আর এই মানুষ রূপী স্বর্ণ্ এর বেশ ভুশাও অন্য রকম ! বেশ ভাল ! সেই স্বর্ণ্ও খুব খুশি এদের আতিথিয়তা দেখে ।
এদিকে ৫ মিনিটের বেশি কখন যে পার হয়ে গেছে সেই ভীন গ্রহের স্বর্ণ্ টেরই পায় নি । যখন টের পেল তখন আর কিছু করার ছিল না ! তাকে এখন সারা জীবন এই রূপেই থাকতে হবে ! সে এখনও এই পৃথিবীতে আছে । তাকে ছেড়ে তার স্পেস শীপ চলে গেছে কিন্তু সে থেকে গেছে এই পৃথিবীতে
সেই স্বর্ণ্ই এখন সামুতে ব্লগিং করে স্বর্ণা নামে ! Extraterrestrial স্বর্ণা ! এক্সট্রাটেরিস্টায়াল স্বর্ণা
(Extraterrestrial মানে হল a hypothetical or fictional being from outer space, especially an intelligent one)
নিতান্তই ফান পোস্ট এটা । এর আগেও এরকম একটা পোস্ট দিয়েছিলাম সামুতে অনেক দিন আগে । সেই সময়ে সবাই পোস্ট টা সবাই পছন্দ করেছিল । আশা করি এবারও পছন্দই করবে । আর যাদের নিয়ে লিখলাম তাদের সবাইকে কাছের মানুষ মনে করেই লিখেছি ! টারা নিয়মিত আমার পোস্ট পরে আমি নিজেও তাদের পোস্ট পড়ি । তারপরেও যদি কারো মনে হয় যে এই পোস্টে তার নাম টা রেখে আমি ঠিক করি নি সে যেন নির্ধিধায় আমাকে বলে ফেলে । আমি সাথে সাথেই পোস্ট এডিট করে ফেলবো ! ধন্যবাদ সবাই কে !
বিঃ দ্রঃ আরও কেউ নিজের নামের রহস্য জানতে আগ্রহী হলে পরবর্তি পোস্টে তার নামের রহস্যও বের করা হবে !
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৩