আমার ইমিডিয়েট বস একজন মেয়ে !
ফেসবুকে আমি সারা জীবন নারীতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলেছি ! নারীদের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি আর কপালের কি খেল, আমার বস একজন মেয়ে ! উপরওয়ালা মনে মনে হেসেছে আর বলেছে "দাড়া তোকে মজা দেখাই" !
যদিও বস মানে এই না যে সে আমাকে হুকুম করবে আর আমাকে সেইটা করতে হবে ! আমার ডিপার্টমেন্ট আমার কাছে ! এভাবে প্রত্যেকের কাজ আলাদা ! তবুও মেয়েটার পজিশন আমার থেকে একটু উপরে ! বেতনও আমার থেকে একটু বেশি !
প্রথম প্রথম মনে হত চাকরি ছেড়ে দেই । কিন্তু এমন চাকরী ছাড়তে বুকের পাজড়ের হাড় বেশ বড় হওয়া লাগে । আমার এখনও সেই হাড় তত বড় হয় নাই ।
যাক তবুও চেষ্টা চলছে । চাকরি ছেড়ে দিব একদিন !
তবে মেয়েটার সম্পর্কে আর যাই বলি না কেন, মানে ঈশিতার সম্পর্কে আর যাই বলি না কেন, মেয়েটা কিন্তু আসলেই এই পদটার জন্য যোগ্য ! এমআইটি থেকে পড়ে এসেছে । তার যেনতেন রেজাল্ট নিয়ে না । এমন মেয়েগুলো সত্যি আমাদের দেশে আরও কিছু থাকে তাহলে দেশে মেয়েদের চেহারা বদলে যাবে ! কিন্তু সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ । অর্ধেক নারী । সেই অর্ধেক নারীর ভেতরে এই ঈশিতার মত ক'জন থাকে ?
হাতে গোনা কয়েকজন !
আমার ফেসবুকে নারী বিরোধী পোস্ট গুলো আমার অফিসে বেশ জনপ্রিয় ! আমি একেক দিন একেকটা পোস্ট দেই আর সেগুলো নিয়ে অফিসের ফাঁকে ফাঁকে গছিপ হয় ! কেউ কেউ কেবল মজা করে আবার কেউ কেউ খুব সিরিয়াস হয়ে যায় ! বিশেষ করে দু তিন জন মেয়ে আছে তারা ! আমি অবশ্য এসব কিছু মনে করি না ! আমার তর্ক করতে মজাই লাগে ! আর আমার মনে হয় ঈশিতাও ঠিক ঠিক আমার ফেসবুকের কথাবার্তা লক্ষ্য করে ! তার আচরনে তাই মনে হয় ! একটু যেন আমার প্রতি শত্রু ভাবাপান্ন ! অবশ্য আমি তাতে কিছু মনে করি না ! নারী বিরোধী লেখার কারনে সেটা অনেকেই মনে করে । তবে অনেকে মেয়ে কিন্তু সেটা পছন্দও করে ! যাই হোক !
ঈশিতার সব কিছুতেই আমাকে একটা ঝাড়ি মারার চেষ্টা থাকে । কিন্তু সেই সুযোগ আমি তাকে খুব কম দেই ! আমার কাজ আমি খুব ভাল করেই বুঝি ! বিনা করনে অবশ্য সে আমার উপর ভাব নেয় না ! তবে মাঝে মাঝে আমিও সুযোগ খুজি ! একদিন সুযোগ পেলে আমিও তাকে দেখে নেব ! একদিন সেই সুযোগ এসে হাজির !
ঈশিতা আমার বস হলেও তার উপরেও বস আছে । তাকে বিভিন্ন এসাইনমেন্ট দিয়ে থাকে । একদিন ঈশিতা আমাকে তার ডেস্কে ডেকে আমাদের কোম্পানীর কিছু প্রোজেক্টাল কাজ করতে দিল ! আসলে এটা আমার ডিপার্টমেন্টেরই কাজ ! বিশেষ করে আমার কাজ !
ঈশিতা আমাকে বলল
-এটা কাজ টা করে দিতে হবে !
আমি খানিকটা অবাক হয়ে লক্ষ্য করে দেখলাম যে ঈশিতার কন্ঠে সেই আগের মত মনভাব নেই । সেখানে একটা অনুরোধে সুর রয়েছে ! আমি বললাম
-সমস্যা নেই । এটা তো আমারই কাজ ! কবে দিতে হবে ?
-কাল সকালে !
-কি !!!!!
আমি কিছু সময় ঈশিতার দিকে তাকিয়ে রইলাম !
-কাল সকালে ? এক সপ্তাহের আগে এই কাজ করা সম্ভব না ! কোন ভাবেই না ! এটা আপনি যেমন জানেন আমি জানি !
-দেখুন এটা জরুরী !
-জরূরী বললেই তো আর হবে না ! এক সপ্তাহ সময় দিন তাহলে আমি সানন্দে কাজটা করে দিচ্ছি ! কালকে হলে আমি নাই !
আমি ভেবেছিলাম ঈশিতার আমার উপর চিৎকার চেঁচামিচি করবে ! বসের কাছে রিপোর্ট করবে ! কিন্তু সে রকম কিছু হল না ! একটু অবাকই হলাম ! এমন তো হওয়ার কথা না ! নিশ্চয়ই এর ভেতরে কোন কিন্তু আছে !
খোজ নিতে গিয়ে আসল রহস্য বের হয়ে এল ! আসলে কাজটা আমারই করার কথা ছিল ! আমার সবার যে বস, সে আমাকে দেওয়ার কথাই বলেছিল কিন্তু ঈশিতা নাকি নিজে আগ্রহ নিয়ে কাজটা নিয়েছে । বলেছে সে পারবে ! কারনটা বুঝতে আমার মনেই কষ্ট হল না !
কিন্তু আসল ব্যাপার কি, একজন মানুষ যতই যোগ্য হোক না কেন, কিছু ব্যাপার এমন আছে যে সেই লাইনের লোক ছাড়া অন্য কেউ সেটা পারে না ! যেমন আমি হাজার হাজার টাকা আয় করতে পারি, অন্য যে কোন কিছু রান্না করতে পারি কিন্তু আমার মায়ের মত চমৎকার ভাবে ডাল রান্না করতে আমি কোন দিন পারবো না ! আমার উচিৎ যে ডালটা কিনে এনে মায়ের হাতে দেওয়া যেন তিনিই রান্না করেন ! নিজে যদি মাতব্বারী করে ডাল রান্না করতে যাই তাহলে ফলাফল টা কিছুতেই ভাল হবে না ।
কিন্তু কিছু কিছু মানুষ এটা বুঝে না ! বুঝে ভাল, এবার ঝামেলা সামলাও !
সন্ধ্যায় অফিস থেকে বের হতে গিয়ে একবার ঈশিতার কেবিনে উকি দিলাম ! সে তখনও কেবিনে । জানি আজকে সে বাসায় যেতে পারবে না ! কি যে হল ঠিক বুঝলাম না ! আমি ঈশিতার কেবিনে ঢুকলাম ! হাতের ব্যাগটা এক পাশে রেখে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম
-রাতে আমি বিরানী খাবো ! সাথে কোকাকোলা ! আর যদি একটা আইসক্রিম থাকে তাহলে একটু ভাল হয় !
আমার কথা বুঝতে ঈশিতার খুব একটা কষ্ট হল না ! একটু অবাক হলেও নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালো !
-আমি ব্যবস্থা করছি !
-থ্যাঙ্কিউ ! আপনার চেয়ারে বসলে সমস্যা হবে না তো ? নাকি আমি আরেকটা চেয়ার এনে বসবো !
ঈশিতা বসতে ইংগিত করলো !
ঐদিন যখন সব কাজ শেষ করলাম তখন প্রায় ভোর হয়ে গেছে । ওকে সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে সকাল বেলা বাসায় চলে গেলাম ! পরদিন অফিসে এসে বুঝলাম অবস্থা একটু পরিবর্তন হয়েছে । অন্তত ওর মনভাব একটু পরিবর্তন হয়েছে । দুপুরে আমাকে সে লাঞ্চ করালো ! এক পর্যায়ে বলল
-আপনি তো খুব নারী বিরোধী ! তা আমাকে সাহায্য করলেন কেন ?
-তাই কি উচিৎ না ? পুরুষেরা তো তাই করে !
আমার কথায় কিছু ছিল দেখলাম ওর মুখ কালো হয়ে গেল ! আর কথা বলল না !
পরের দুই দিন ফেসবুকে আমি সামনে দিতে থাকলাম আমার পছন্দমত পোস্ট ! তৃতীয় দিন ঈশিতা এসে হাজির ! আমার দিকে রাগত স্বরে বলল
-আপনি মেয়েদের ভেবেছেন কি ? পেয়েছেন কি ?
-আমি কি পাবো ?
-আপনার মনভাব এমন কেন শুনি ?
-কেমন ?
-কেমন মানে আপনি জানেন না ? আপনার কি মেয়েদের পেছনে লাগা ছাড়া আর কোন কাজ নেই ?
-আরে আজিব ! আমি তো আমার কাজই করই কি ! আপনাদের পেছনে লাগলাম কিভাবে ? এখন আমার কথার মাঝেখানে যদি আপনারা চলে আসেন তাহলে আমার কি করার আছে বলুন !
ঈশিতা আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল
-চলুন আমার সাথে !
-কোথায় ?
-কাজী অফিসে ?
-কেন ? সেকি !
-আপনি যে ধারনা গুলো পেষন করে আজকে সেগুলো ভুল প্রমানিত করবো ! আপনি সেদিন কি বলেছিলেন যে একজন মেয়ে সব সময় তার থেকে উচু লেভেলের কারো সাথে বিয়ে করে ! সংসারে স্বামী অবদান বেশি থাকে ! দেনমোহর ! এন্ড অল দ্যাট বুল শিট ইউ টক এবাউট ! আসুন ! আজকে আপনার সব ধারনা ভুল প্রমানিত করে দিবো !
তার মানে এই ঈশিতা ঠিকই আমার ফেসবুক ফলো করে ! আমি যা যা করি কিংবা বলি সব কিছু মাথায় রাখে ! ভাল তো ! আমি খানিকটা হেসে বললাম
-আপনি পাগল হয়ে গেছেন ! রাইট !
-না পাগল হয় নি ! সেদিন বিয়ে নিয়ে মেয়েদের সম্পর্কে আপনার মনভাব পড়ে আমার মেজা গরম হয়ে গেছে ! আপনি নিজেকে ভাবে কি ?
-এটার মানে এই নয় যে আমাকে আপনার বিয়ে করতে হবে ! তাই না ?
-নাকি ভয় পাচ্ছেন ? ভয় ! আসলে জানি তো আপনাদেরকে ! এরপর থেকে এই রকম পোস্ট দেওয়ার আগে কে ভয় পেয়েছিল মনে রাখবেন !
এর আর চুপ করে থাকা যায় না ! মেয়েদের কে ভয় !
উঠে বললাম
-চলেন !
যদিও জানি কাজটা মোটেই ভাল হচ্ছে না তবুও মেয়েদের কে ভয় !! অসম্ভব !
সত্যি সত্যি ঈশিতার সাথে বিয়ে করে ফেললাম !
১ টাকা দেনমোহরে !
আমাদের সংসারও শুরু হল অন্য ভাবে ।
আমাদের বাসর রাতেই ঠিক হল পরিবারের কোন কর্তা থাকবে না ! সব দায়িত্ব হবে সমান ভাবে ! অধিকারও ঠিক হবে একেবারে সমান সমান !
আমাদের সব কিছু সংসার খরচ থেকে শুরু করে বাজার করা পর্যন্ত একেবারে সমান ভাবে হতে লাগলো ! আমি যা করি ঈশিতাও তাই করে । মাস খানেক যাওয়ার পরে মনে হতে লাগলো আমি কি আসলেই সংসার করছি ! নাকি কোন কম্পিটিশনে আছি ! জেদের বসে কি করে বসলাম ! আসলে মানুষ রাগ কিংবা জেদ করে যে কাজ গুলো করে তার কোন টাই ঠিক হয় না ! ইশিতা নিজে জেদ করে কাজ টা করেছে আমি নিজেও সেরকম টাই করেছি !
তবে একটা কথা বলতেই হবে যে ঈশিতা রান্না খুব চমৎকার করতো ! যদিও প্রতিদিন রান্না করার সময় ছিল না তার তবে রান্নার হাত ছিল চমৎকার ! ছুটির দিন গুলোতে সে রান্না করতো ! আমি ওর রান্না খেয়ে মুগ্ধ সত্যি বলতে কি !
এভাবের দিন যেতে লাগলো ! অফিস করি ! বাসায় আসি ! খাওয়া দাওয়া করে ঘুম ! বিয়ের আগে আর বিয়ের পরের জীবন খুব একটা পরিবর্তন হল না ! কিন্তু একদিন ছন্দ পরিবর্তন হল !
আমার মাঝে মাঝে শরীর কাঁপিয়ে জ্বর আসতো ! একদিন থাকতো ! তারপর আবার ঠিক ! অন্য কোন সময় মনে না হলেই এই সময়ে আমার কেন জানি নিজেকে খুব বেশি অসহায় লাগলো ! বাসায় যাওয়ার উপায় ছিল না কারন এক দিনের জন্য এতো দুরে যাওয়া যায় না ! কিন্তু মায়ের কথা মনে হত খুব ! একা একা ঘরে পড়ে থাকতাম !
এবভার যখন জ্বর এল আমার বেহুসের মত পরে রইলাম ! বিকেলের দিকে যখন একটু হুস আসলো দেখি ঈশিতা আমার মাথায় পানি ঢাকছে ! আমার মাথা মুছে দিচ্ছে ! সন্ধ্যার দিকে আমাকে জোর করে স্যুপ খাওয়ালো ! আমি কিছুতেই খাবো না, সে আমাকে না খাইয়ে ছাড়বেই না ! শেষে আমাকে খেতেই হল !
বিয়ের পর এই প্রথম বারের মত ওকে সেদিন রাতে জড়িয়ে ঘুমালাম ! ও আপত্তি করলো না ! ওর শরীর নরম গন্ধেই যেন আমার শরীর আরও একটু দ্রুত ভাল হতে লাগলো ! অন্যান্য বার জ্বরের সময় আমার নিজের কাছে যেমন অসহায় লাগতো এবার তেমন লাগলো না ! মোটেই লাগলো না !
পরদিন সকালেই আমি মোটামুটি সুস্থ্য হয়ে গেলাম ! তবুও শুয়েই ছিলাম !
ঈশিতাকে দেখলাম তৈরি হচ্ছে অফিসে যাওয়ার জন্য ! আমি বললাম
-কোথাও যাও ?
-অফিস ।
-যেতে হবে না !
-কেন ?
-আমি বললাম এই জন্য !
-শুনো আমি তোমার বস ! তোমার কথা শুনবো কেন ? আর আজকে তোমার শরীর বেশ ভাল !
-বস ! তাই ?
ওর হাত ধরে ওকে খাটের উপর বসালাম ! তারপর ওর কোলের উপর মাথা রেখে বলল
-আজকে যেতে হবে না অফিসে !
-এমন কেন করছো ? এমনিই ককালকে না ছুটি নিয়েই অফসি যায় নি ! আর .....
-বলেছি না, যেতে হবে না !
ঈশিতা হেসে বলল
-কি ব্যাপার আমার নারী বিদ্বেষী স্বামীর আজকে যেন খুব নারী প্রেম জেগে উঠেছে ! শুনো ! দ্য কন্ডিশনস ইস্টিল রিমেইন !
-কি !
আমি উঠে গিয়েই ওকে বলতে গেলে চেপে ধরলাম ! বালিশের সাথে ওর দুহাত দুদিকে চেপে ধরে বলল
-কি বললে ?
-বললাম দ্য কন্ডিশা.........
ওকে আর কথা বলতেই দিলাম না ! তবে এতে খুব একটা আপত্তি করলোও না !
তারপর থেকেই আমাদের সম্পর্ক আশ্চর্যজনক ভাবে বদলাতে শুরু করলো ! আমি যদি ফেসবুকে আমার কাজ করা বন্ধ করলাম না, কিন্তু আমাদের বাস্তব জীবনটা অন্য রকম ছিল ! আমি একেক বার পোস্ট লিখতাম ঈশিতা সেটা পড়তো আর হাসতো ! তখন ও আর অবাক হত না ! বিশেষ করে ও নিজেই মাঝে মাঝে অনেক আইডিয়া দিত ! অবশ্য সম্পর্কটা আরও কাছের হয়েছিলো আরও একটা কারনে !
অফিসের একটা কনফারেন্সই ঈশিতাকে চট্টগ্রামে যেতে হয়েছিল ! আমি ওকে যেতে দিবো না কিছুতেই । অবশ্য সে আমার কথা শুনবে কেন ? এই নিয়ে বেশ কয়েকবার কথা কাটাকাটি হয়ে গেল নিজেদের ভেতরে ! আমাকে কয়েকবার জিজ্ঞস করলো আমি কেন রাজী হচ্ছি না ! আমি অবশ্য বললাম না কেন ! কোথায় যেন একটু বিব্রত লাগছিল কারনটা বলতে ! ও আমাকে রেখেই চলে গেল !
যাওয়ার পর থেকেই ওকে বেশ কয়েকবার ফোন দিলাম । ও কোথায় ? কেমন আছে কোন হোটেলে থাকছে ! আমাকে বারবার বলল যে সে ভাল আছে চিন্তার কোন কারন নেই ! কন্ফারেন্সে ঢুকার আছে বলল যে ফোন বন্ধ থাকবে ! বেরিয়ে ও ফোন দিবে ! ওকে বললাম যে বেরুনোর সাথে সাথে যেন ফোন দেয় !
কাজ শেষ করেই ফোন দিল !
-সব ঠিক ছিল ?
-হুম ! সবই ঠিকই ছিল ! তুমি ? আচ্ছা বলতো তুমি এতো চিন্তা কেন করছো ?
-করছি কারন ......
-হুম ! কি কারন ?
-কারন টা এখনই বলতে হবে ?
-হুম ! নাকি ঢাকায় আসলে তারপর বলবা ?
-না মানে আমি ফোনে বলতে চাচ্ছি না !
-তাহলে ......
তাহলে বলেই ঈশিতা আটকে গেল ! আমি ঠিক তখন ওর সামনেই দাড়ানো ! আসলে সত্যি বলতে কি ঐ দিন রাতে কিছুতেই আমার ঘুম আসে নি ! পরদিন সকালেই প্রথম ফ্লাইট ধরে চলে এসেছি !
ঈশিতা ফোন রেখে কিছুটা সময় আমার দিকে তাকিয়ে রইলো ! ওর মুখে আনন্দমাখা হাসি দেখে আমার নিজের কাছে অদ্ভুদ রকম ভাল লাগলো ! এমন সময় ঈশিতা আরেকটু পাগলামো করলো ! আমার দিকে একটু দৌড়ে এসেছি আমাকে জড়িয়ে ধরলো ! এতো গুলো মাঝে ছিল আসে পাশে সেদিকে আমাদের কারো খেয়াল নেই ! আমাকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় ঈশিতা বলল
-নারীবিরোধী স্বামীর জন্য এতো স্ত্রী প্রেম কিন্তু ভাল না ! বুঝছো ! দ্য কন্ডিশনস .....
-স্টিল রিমেইন ?
কন্ডিশন তো অনেক আগেই ভেঙ্গে গেছে ! ঈশিতা বলল
-আর যদি সত্যি মুখ ফুটে বলতে এখানে আমাকে কেন আসতে দিতে চাও নাই আমি কিন্তু আসতাম না ! কিন্তু তুমি তো বল নাই ! আর শেষে এখানে এসে হাজির ! তা জনাব হারটা কার হল শুনি ?
-হুম ! পুরুষতন্ত্র আর নারীতন্ত্র আপাতত এক পাশে সরিয়ে রাখি !
ঈশিতা কিছু না বলে হাসলো । তারপর বলল
-কেন এতো চিন্তা কর শুনি ? আমি ছোট খুকি না ।
-আই নো ! কিন্তু চিন্তা করি এই জন্য না যে তুমি সব কিছু ঠিক মত সামলাতে পারবে না । চিন্তা করি বিকজ আই কেয়ার ! উই কেয়ার ! যদি তোমার কোন বিপদ হয় আর সেখানে আমি না থাকি তাহলে আমি সারাজীবন নিজের কাছে নিজে অপরাধি হয়ে থাকবো ! আমার কেবল মনে হবে তোমার পাশে আমার থাকার দরকার ছিল কিন্তু আমি ছিলাম না ! আমি.......
আমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে হাত দিয়ে আমাকে চুপ করে দিল !
-দ্য কন্ডিশনস স্টিল রিমেইন ?
-উহু !
তারপর থেকে ..... যদিও এখনও আমার বউ আমার নিজের বস হয়ে আছে কিন্তু .......
থাক কিছু না কথা থাক না গুফুনে.....
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১২