অনেক দিন আগে এই আগন্তুক সিরিজটা শুরু করেছিলাম । প্রথম কয়েক পর্ব লিখলেও সেটা একটু ছাড়া ছাড়া ভাব করা ছিল । অবশেষে সেটা সম্পূর্ন গল্পে লিখে ফেললাম ! যদিও পর্বগুলো আগেই দেওয়া হয়েছিল তবে সেগুলো আবার রিরাইট করা হয়েছে । কিছু বাদ দেওয়া হয়েছে এবং অনেক কিছু সংযোজন করা হয়েছে । তাই আবার প্রথম থেকে পড়ার জন্য অনুরোধ করা গেল ! ধন্যবাদ ।
প্রথম পর্ব
আগের পর্ব
দশ
নিকিতা আরেকবার পেছন ফিরে চাইলো । তাকিয়েই মনে হয় ভুল করে ফেলল । একটু আগের দেখা মানুষের মত জন্তু গুলো এখন আরও স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাচ্ছে । আরও কাছে চলে এসেছে । দেখেই মনে হল না তাকানোই বোধহয় ভাল ছিল । বুকের ভেতর একটা তীব্র ভয় অনুভব করলো । মুখ দিয়ে একটা চিৎকার বের হতে গিয়েও হল না । জানে চিৎকার দিয়েও লাভ নেই । বেঁচে থাকার জন্য এখন তাকে সামনে দৌড়াতে হবে । সামনের দিকে তাকিয়ে আবারও দৌড়াতে লাগলো প্রানপনে ।
নিকিতা তাকাবে না তাকাবে করেও আরেকবার তাকালো । আরও পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে এখন ! জন্তুটা দেখতে মানুষের মত লম্বা হলেও তার তিন টা পা রয়েছে । সেই তিনটা পা দিয়েই চমৎকার ভাবে লাফাতে লাফাতে চলে আসছে আরও কাছে । মুখে রয়েছে এক বন্য আদিমতা । যেন নিকিতাকে কাছে পেলেই ছিড়ে খেয়ে ফেলবে । নিকিতা আরও জোরে দৌড়াতে লাগলো ।
আরও একটু দুরে বিপরীত দিকে তাকিয়ে আগন্তুক কে দেখতে পেল । ঠিক ওর দিকে দৌড়ে আসছে । নিকিতার মনে হল এই যাত্রায় মনে হয় সে বেঁচেই গেল । আর কোন সমস্যা নেই । যে কোন ভাবেই হোক আগন্তুক ওকে বাঁচিয়েই ফেলবে ! কিন্তু আগন্তুক যখন তার থেকে ১০০ গজের মত দুরে তখন হঠাৎ করেই সামনে থেকে মাটি সরে গেল । একটা গভীর খাঁদের মত সৃষ্টি হল মুহুর্তেই । কালো কাপড় পরা সেই আগন্তুক মুহুর্তেই হারিয়ে গেল সেখান । একটা চিৎকার দেওয়ার সময় পর্যন্ত পেল না । তবে চিৎকার টা নিকিতার মুখ থেকে বের হয়ে হয়ে এল । চিৎকার দিতে দিতেই নিকিতার ঘুম ভেঙ্গে গেল ।
যখন বুঝলো যে স্বপ্ন দেখছিল তখনও একটু শান্ত হওয়ার চেষ্টা করলো । তখন ওর বুকটা লাফাচ্ছে । তারপরেই ও চারিপাশে তাকিয়ে দেখলো আসলে সে তার নিজের ঘরে নেই । পরক্ষনেই তার মনে পরে গেল সে কোথায় আছে !
তার শেষ যা মনে আছে সেটা হচ্ছে তাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে । একটা রুমাল মুখে চেপে ধরার আগে কেউ একজনের সাথে তার কথা হচ্ছিলো । সে গাড়ি থেকে নামার তাগিত দিয়েছিল কেবল । কিন্তু সেই সুযোগ আর সে পায় নি ।
নিকিতার কান্না আসতে চাইলো । তবে জোর করে নিজের মনের সাহস সঞ্চয় করলো । সে এই দেশের একজন অকুতভয় মানুষ মেয়ে । তার এভাবে কান্না করা মোটেই মানায় না ! মোটেই না ! আগন্তুক থাকলেও নিশ্চয়ই তাকে ঠিক এই কথাটাই বলতো !
আচ্ছা যদি সে আর আগন্তুক এখন এই ঘরে বন্দী থাকতো তাহলে ?
কেমন হত ?
নিশ্চয়ই বেশ মজা হত !
নিকিতার মনে একটু আগে যে ভয়টা ছিল সেটা একটু কমে গেল । আগন্তুকের কথা চিন্তা করতে লাগলো !
সে এখন থাকলে কি করতো ?
চারিদিকে তাকিয়ে দেখলো ঘরটার । কাঠের তৈরি । তবে বেশ মজবুত কাঠের তৈরি মনে হচ্ছে । কোন প্রকার ফাঁক ফোকড় দেখা যাচ্ছে না ! ওর মুখ বেঁধে রাখা হয় নি । হাত পা কিছুই আটকে রাখা হয় নি । এর অর্থ হচ্ছে ও যেখানে আছে সেখান থেকে ও সহজে পালাতে পারবে না । ওর চিৎকারও কেউ শুনতে পাবে না ! বিছানা থেকে নেমে ও দরজা লক ধরে একটা খুলতে চেষ্টা করলো ! ভেবেছিল এটা হয়তো খোলা থাকবে কিন্তু সেটা বাইরে থেকে বন্ধ ! চারিদিকের সব কিছু পরীক্ষা করে দেখলো । এক মাত্র দরজা ছাড়া বের হওয়ার কোন উপায় নেই । কোন জানলা নেই ঘরটাতে । কেবল একটা ১০০ পাওয়ারের লাইট জ্বলছে । সেটা পুরো ঘরটাকে আলোকিত করে রেখেছে !
নিকিতা কি করবে কিছুই বুঝতে পারলো না ! এখান বের হওয়ার কি কোন উপায় নেই ? তাকে নিয়ে কিডন্যাপারদের কি পরিকল্পনা তার কিছু বুঝতে পারলো না !
মেরে ফেলবে ?
নাকি অন্য কিছু ?
এর থেকেও খারাপ কিছু ! আর কিছু ভাবতে পারলো না ! আবারও বিছানার উপর শুয়ে পড়লো । আগন্তুকের কথা খুব মনে পড়লো । কোথায় সে ?
কি করছে ?
আসছে না কেন এখনও ?
###
আজকে অনেক দিন পর তার মন টা বেশ ভাল । বের ফুরফুরে মেজাজে আছেন । একটু আগেই তার কাছে খবর এসেছে যে সব কিছু ঠিক মত হয়েছে । এখন আর মাত্র কয়েকটা ধাপ । তারপর তার কাঙ্খিত আসনটা । আর মনে হয় কেউ সেটা আটকাতে পারছে না । আপন মনেই মিটিমিটি হাসতে লাগলো ।
হাসলে তাকে ভাল দেখায় !
কখন যে নার্স এসে ঘরের ভেতরে ঢুকেছে তিনি লক্ষ্যই করলেন না । নার্স এসে বলল
-স্যার ?
একটু চমকালেন ! মেয়েটা এমন করে না বলে ঘরে ঢুকে পড়ে কেন ?
যদিও মেয়েটা সম্ভবত অনেক আগেই ততার পছন্দের ব্যাপার টা ধরতে পেরেছেন । মেয়েদের এরকম একটা সহজাত ক্ষমতা থাকে । মানুষের চোখের দিকে তাকিয়ে তারা স হজেই বুঝে ফেলে কে তাদের কে কোন নজরে দেখছে । এবং মেয়েটা যথেষ্ঠ বুদ্ধিমান মনে হচ্ছে । ভাব ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে মেয়েটার তাতে সম্মতি আছে । যদিও স্ত্রীর সাথে ছাড়া ছাড়ি হয়েছে অনেক আগেই আর বয়স টা তার মেয়েটা থেকে একটু যেন বেশিই তাতে কি হয়েছে । তিনি দেশের ভবিষ্যৎ রাস্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন । আর দেখতে তাকে কিন্তু একেবারে বুড়ো মনে হয় না ! ঠিক মত পোষাক পড়লে আজও তাকে সুদর্শনই লাগে !
-স্যার !
-হুম । বল !
-প্রেসিডেন্ট স্যার এসেছেন !
যেন ধাক্কার মত লাগলো তার বুকে ! এতো জলদি তো তার আসার কথা না ! তাহলে কি বুঝে ফেলল ।
নাহ ! কোন ভাবেই বোঝা সম্ভব না ! এতো গোপন ভাবে সব কিছু করা হয়েছে । তাহলে এমন হুট করে চলে আসার মানে কি ! কোন বিশেষ কারন কি আছে ?
অবশ্য এতো চিন্তার কোন কারন নেি । তিনি ভাবলেন !
তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট ! তার কাছে বিনা নোটিসে প্রেসিডেন্ট আসতেই পারেন । তিনি চাইলে যে কারো কাছেই বিনা নোটিশে আসতে পারেন ।
###
ফারিয়া এক টানা গাড়ি চালাচ্ছে ! সোজা প্লেন করে সীমান্তবর্তী জেলা ভুবেনগড়ে ল্যান্ড করেছে । তারপর সেখান থেকে গাড়িতে করে একটানা চলছে তো চলছেই ! এক টানা জার্নি করে সে খানিকটা ক্লান্ত ! মন চাইছে একটু বিশ্রাম নিতে কিন্তু উপায় নেই । তার পিঠের ঠিক মাঝ বরাবর একটা ডেটোনেরট লাগানো আছে টেপ দিয়ে । সেটা থেকে লাল নীল তার বেরিয়ে পুরো পিঠের এদিক ওদিক দিয়ে ওকে জড়িয়ে রেখেছে । যেটার রিমোর্ট আগন্তুতের হাতে । প্লেন জার্নি থেকে শুরু করে পুরো জার্নিতে সে ফারিয়ার সাথেই ছিল !
সে এখন শুয়ে আছে এই গাড়ির পেছনের ডিক্কিতে । গাড়িটা ছুটে চলেছে বনের রাস্তা ধরে । খুব বেশি জোরে ছুটতে পারছে না । কারন রাস্তার অবস্থা বেশ খারাপ । ডিক্কির ভেতরে শুয়ে থাকা আগন্তুকের অবস্থা কি হচ্ছে কে জানে ! নিশ্চয়ই তার ঝাকিতে তার অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে যাচ্ছে । ফারিয়া একটু শান্তি পেল ।
গত রাতের পর থেকে ফারিয়া একটু জন্য শান্তি পায় নি । আগন্তুকের চেহারা দেখার পর এবং তার হাতে চড় খাওয়ার পর থেকে ফারিয়া মনে ভয় ঢুকে গেছে । সে নিজেকে যথেষ্ঠ শক্ত মনে করতো কিন্তু এর আগে এমন কারো সাথে তার মোকাবেল হয় নি, বলা চলে এর আগে এমন কেউ তার পর্যন্ত আসতেই পারে নি । সে এতো সহজে ভেঙ্গে পরবে নিজেও ভাবে নি ।
তাছাড়া ফারিয়ার আর কিছু করারও নেই । তার শরীরে যে ডেটোনেটর টা লাগানো আছে তার ভেতরে নির্দিষ্ট পরিমান বিস্ফোরক দ্রব্য রাখা আছে । আগন্তুক তাকে কেবল বলে সে যেকোন ভাবেই মেজর হাবিবের কাছে পৌছে যাবে । ফারিয়াকে তার খুব বেশি প্রয়োজনও নেই । যদি সে কোন চালাকী করার চেষ্টা করে তাহলে সে কেবল রিমোর্টের বাটনটা চেপে দিবে ! তবে ফারিয়া যদি তাকে নিকিতাকে বাঁচাতে সাহায্য করে তাহলে হয়তো তাকে প্রাণে মারবে না !
গাড়ি একেবারে সীমান্তের কাছে চলে এসেছে । বন জঙ্গল গুলো যেন আরও একটু ঘন হয়ে এসেছে । গাড়ি চালানো এখানে আরও কষ্টের তবুও ফারিয়া আস্তে আস্তে গাড়ি চালাতে লাগলো ! একটু দুরে যেতেই হঠাৎ করেই চার জন কালো কাপড় পরা মানুষ এসে হাজির হল ওর গাড়ির সামনে ! ফারিয়া ব্রেক করে অপেক্ষা করতে লাগলো !
###
মেজর হাবিব কেবল অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ফারিয়ার দিকে । তার মনে একটা কূ ডেকে উঠলো । মনে হল কিছু যেন একটা ঠিক নেই ! এই সময়ে কোন ভাবেই ফারিয়ার এখানে আসার কথা না । এমন কোন কথাও ছিল না কিংবা থাকলেও তাকে এমন কোন কিছু বলা হয় নি । এমন কি ফারিয়া এখানে আসার আগে তাকে কিছু বলেও আসে নি !
-তুমি এখানে ?
-আঙ্কেল ধরা পরেছে ।
-তাতে কি হয়েছে ? তোমার এখানে আসার কথা না ! আমাদের ডিল ঐ পর্যন্তই ছিল । এর পরে তোমাদের ব্যাপারে আমাদের কোন কনসার্ন নেই ।
ফারিয়া কোন কথা বলল না ! আসলেও তাই । তাদের ভেতরে কথাও ঠিক সেরকম হয়েছিল !
-তুমি এখানে কেন এসেছো ? সত্যি করে বল !
-আমার ওখানে থাকা নিরাপদ মনে হয় নি ! আমি ......।
ঠিক তখনই কাছেই তীব্র শব্দে কোথাও কিছু ব্লাস্ট হল ! পুরো ঘরটা যেন কেঁপে উঠলো ! মেজর হাবিরের আর বুঝতে বাকি রইলো না কিছু ! সরাসরি ফারিয়ার চুলের মুঠি ধরলো । তারপর বলল
-কাকে নিয়ে এসেছো ? বল কাকে নিয়ে এসেছো ?
ঠিক তখনই দ্বিতীয় বিস্ফোরন টা ঘটলো । এবারেরটা আরও জোরে ! ঘর গুলোর কাঠের থাম গুলো যেন নড়ে উঠলো ! মেজর হাবির ফারিয়কে ছেড়ে দিয়ে পকেট থেকে ওয়াকিটয়াকি বের করে কারো সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলো ।
-পিন্টু ! রিপোর্ট ! পিন্টু !
ওপাশ থেকে কোন আওয়াজ পাওয়া গেল না !
রাগের মুখ থেকে একটা গালি বের হয়ে এল । পিস্তল বের করে সরাসরি ফারিয়ার দিকে তাক করে বলল
-এর জন্য তুমি দায়ী ! বল কাকে নিয়ে এসেছো ?
ফারিয়া একে বারে ভয়ে ফ্রিজ হয়ে গেল । কি করবে ঠিক বুঝতে পারলো না ! নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে তাকিয়ে রইলো কেবল চুপ করে !
###
নিকিতার তখন সম্পূর্ন উঠে বসেছে । কয়েকবার চেষ্টা করেও দরজাও খুলতে পারলো না । বার কয়েক দরজায় লাথি মারলো কেবল । কোন লাভ হল না ! দরজাটা বেশ মজবুত ! কেবল পায়ে ব্যাথাই পেল ।
বাইরে থেকে চিৎকার চেঁচামিচির আওয়াজ আসছে । ক্ষনে ক্ষনে বিস্ফোরিত হচ্ছে সেই ষাথে কিছু মানুষের আর্তনাদ ভেসে আসছে ।
নিকিতার মনে একটু আগেও যে ভয় টা ছিল সেই ভয়টা এখন আর নেই । তার বদলে এখন কেবল রয়েছে একটা উত্তেজনা কাজ করছে । নিশ্চই আগন্তুক চলে এসেছে । নিকিতা জানতো সে আসবেই ।
কিছু সময় পরেই দরজায় ধাক্কা পরলো ! তারপর লক খোলার আওয়াজ হল ! নিকিতা এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু পেল না যেটা দিয়ে দিয়ে যে ঢুকবে তার উপর হামলা করবে কিংবা ঝাপিয়ে পড়বে । তবুও সে প্রস্তুতি নিয়ে রাখলো নিজের সর্ব শক্তি দিয়ে তার উপর ঝাপিয়ে পরবে । আগন্তুক আসার আগ পর্যন্ত তাকে এখন টিকে থাকতেই হবে !
দরজা খুলে গেল ! কালো পোষাক পরা মানুষটার উপর ঝাঁপিয়ে পরতে যাবে ঠিক তখনই নিজেকে সামলে নিল ! সেই পরিচিত চোখ ! সেই পরিচিত মানুষ । চোখে দুষ্টামীর হাসি যেন লেগেই আছে ! নিকিতা কেবল সোজা গিয়ে আগন্তুক কে জড়িয়ে ধড়লো !
-এতো দেরি করলে কেন ? আমার বুঝি ভয় করে নি ! করে নি ! তুমি বলেছিলে তুমি চলে আসবে আসবে সময় মত ! ২য় বারের মত তুমি আমাকে একা ফেলে চলে গেছো !
-২য় বার কোথায় ?
তখনও নিকিতা আগন্তুককে ছাড়ে নি । আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে ! বাইরে থেকে তখনই ক্ষনে ক্ষনে বোমার বিস্ফোরনের আওয়াজ ভেসে আসছে !
এবার নিকিতা আগন্তুক কে ছেড়ে দিয়ে বলল
-বারে ঐ শপিং মলে ! ওখানে তোমার আসার কথা ছিল ! তুমি আসো নি !
-আসি নি !! হাহাহাহাহা !
যেন খুব মজার কোন কথা বলে ফেলেছে । তারপর আগন্তুক নিকিতার সামনে নিজের কালো কাপড় খুলে ফেলল !
নিকিতা কেবল অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো সেদিকে । যাকেই হোক সামনের মানুষটাকে কিছুতেই সে আশা করে নি !
-তুমি মানে আপনি ?
মাশরুফ বলল
-আমি ! এখন এসো ! সময় নেই বিশেষ । আমাদের কে যেতে হবে !
-আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না !
-দরকার নেই । বিশ্বাস করা থেকেও এখন বেঁচে থাকাটাই বেশি জরুরী !
নিকিতার আসলেই ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না যে আসলে পুলিশ অফিসার মাশরুফই হচ্ছে আগন্তুক ! ওর আসেপাশে থেকেছে অথচ একটুর জন্যও ওকে বুঝতে দেয় নি ! কিভাবে সম্ভব হল !
###
দুজেই কাঠের করিডোর দিয়ে দৌড়ে চলেছে । তখনও চারিপাশ থেকে বিস্ফোরনের আওয়াজ আসছে । নিকিতা ভাবলো মাশরুফ এতো লোক জন নিয়ে এসেছে কিভাবে ?
-এতো বোমা মারছে কে ?
-কেউ না ?
-তাহলে ?
-তোমার কি মনে হয় এতোক্ষন আমি এখানে কি করছিলাম ? শুনি আমাদের দ্রুত এখন থেকে সরে পরতে হবে । ঠিক মিনিট পাঁচেকের মধ্য এটাও উড়তে শুরু করবে । আমরা যদি এর ভেতরে থাকি তাহলে আমরাও উড়ে যাবো !
-তাই নাকি ! ভাল তো !
-বাহ ! তোমার মনে হচ্ছে বেশ মজা লাগছে !
-হুম ! সেদিনের মত !
-শুনুন ম্যাডাম সেদিন আর আজকের পরিস্থিতি অনেক টা অন্য রকম !
-তবুও ! মজাই লাগছে !
-উপরওয়ালা তোমাকে কি দিয়ে বানিয়েছে কে জানে !
শেষ মাথায় এসেই মাশরুফ দেখলো তিন জন কালো পোষাক পরা মানুষ ওদের দিকে দৌড়ে আসছে । একটুও দেরি না করে পকেট থেকে একটা গ্রেনেড বের করে ওদের দিকে ছুড়ে দিল ! তারপর ডান দিকে ছুটতে শুরুর করলো । একটু পরেই আবার পুরো কাঠের করিডোর টা কেঁপে উঠলো ! ছুটতে ছুটতে আবারও ডান দিকে বাঁক নিতে হল ওদের । সামনে থেকে বের হওয়ার পথ নেই । ঠিক যেই ও আবারও ডান দিকে বাঁক নিতে যাবে তখনই একজন যেন দেওয়াল ফুড়ে বেরিয়ে আসলো ! একেবারে ঝপিয়ে পরলো মাশরুফে উপর । এমন করে কারো আসাটা ঠিক আশা করে করে নি !
দুজনেই মাটিতে পড়ে রইলো কয়েক মুহুর্ত ! তারপর উপরের মানুষ টা উঠে দাড়ালো !
মেজর হাবিব !
-তাহলে আমাদের আবার দেখা হল !
মেজর হাবিবের হাতে একটা পিস্তল । সেটা তাক করা সোজা মাশরুফের দিকে । নিকিতা একটু দুরে দাড়িয়ে আছে স্থির হয়ে । মাশরুফ তখনও উঠে দাড়াতে পারে নি ! পিস্তলের মুখে স্থির হয়ে তাকিয়ে রইলো মেজর হাবিবের দিকে !
মাশরুফ বলল
-তাই তো মনে হচ্ছে ! আগের বার ঠিক মত কথাবার্তা হয় নি ! তার আগেই ঘুমিয়ে পড়েছিলে তুমি !
কেমন করে যেন হালো মেজর হাবিব । মুখ একটু বিকৃত করলো । তারপর বলল
-এবার ঘুমানোর পালা তোমার !
মেজর হাবির পিস্তল টা সোজা নিয়ে গুলি করতে উদ্ধত হল । মাশরুফ এখনও স্থির হয়ে তাকিয়ে রয়েছে মেজর হাবিবের দিকে । এতো কাছ থেকে গুলি করলে সেটা এড়ানো একটু অসম্ভবই বটে । তবে আশার কথা হচ্ছে ওর গায়ে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট রয়েছে । তবুও এতো কাছ থেকে গুলি করা হলে সেটা ধাক্কা সামলানো একটু কষ্ট করই হবে ! আর গুলি যদি মাথা বরাবর আসে তাহলে তো আর কোন কিছু ভেবে লাভ নেই । মাশরুফ একটা সুযোগ খুজতে লাগলো ! এক মাত্র সুযোগ !
ট্রিগার টেপার ঠিক কয়েক সেকেন্ড আগে নিকিতা একটা কান্ড করে ফেলল । সে এতোক্ষন পাশেই দাড়িয়ে ছিল ধাক্কা খাওয়ার পরে সে পাশে ছিটকে পড়েছিল ! নিজের গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে ঝাপিয়ে পড়লো মেজর হাবিবের উপর ! মেজর হাবিবের সম্পূর্ন মনযোগ ছিল মাশরুফের দিকে । নিকিতার দিক থেকে কোন আক্রমন আসবে সেটা সে ভাবে নি । তাই একটু জন্য হলেও মেজর হাবির চমকে উঠলো । নড়ে উঠলো হাতের পিস্তল টা । নিশানা টা একটু সরে গেল !
ব্যাস ! এই টুকুই দরকার ছিল মাশরুফের জন্য !
আরেকবার গুলি করার আগেই মাশরুফ বলা চলে গুলির বেগে উঠে দাড়ালো । ততক্ষনে ওর পা চলে গেছে হাবিবের মাথার কাছ । লাথিটা লাগলো হাবিবের ঠিক কান আর গলার মাঝ ! যদিও আর একটু উপরে লাগার কথা ছিল ! একেবারে টলে উঠলো মেজর হাবির !
তাকে সামলে ওঠার সুযোগ দিলো না মাশরুফ ! আরেকটা লাথি চলে ফেল তল পেট বরাবর ! মাটিতে শুয়ে মেজর হাবি তখন দম নিচ্ছে । এরপর শেষ লাথিটা পড়লো ঠিক বুকের সেই খানে সেখানে কদিন আগেই মাশরুফের গুলো খেয়েছিল সে ! ব্যাস ! আর কোন কিছু করার রইলো না তার ! মাটিতে পরে গেল সে !
-চল !
নিকিতাকে মেজফ হাবিবের ধাক্কায় নিকিতা পরে গিয়েছিল । কনুইয়ের কাছে একটু ব্যাথাও পেয়েছিল কিন্তু মাশরুফের মারপিট করা দেখে সে সেটার দিকে কেবল তাকিয়ে ছিল এক ভাবে । ওর কাছে যেন মনে হচ্ছিলো যেন ও মুভির দৃশ্য দেখছে ! বাস্তবেও তাহলে এমনটা সম্ভব ! নিকিতা না দেখলে হয়তো বিশ্বাস করতে পারতো না !
-দাড়াও !
-কি হল আবার !
মাশরুফ এবার মেজর হাবির সেখান থেকে এসেছিল অর্থাৎ যে দরজা দিয়ে বেরিয়ে এসেছিল হঠাৎ করে সেই দরজার কাছে এগিয়ে গেল ! ভেতরে উকি দিয়ে যেটা আশা করে নি তাই দেখতে পেলো !
ফারিয়ে মেঝেতে পরে আছে । ওর পেটের কাছে শাদা শার্টের কিছু অংশ রক্তে ভেসে যাচ্ছে । চট জলদি ফারিয়ার কাছে এগিয়ে গেল । নাকের কাছে আঙ্গুল নিয়ে দেখলো এখনও বেঁচে আছে !
নিকিতা পেছনেই ছিল ! মাশরুফকে বলল
-এ কে ?
-এই হচ্ছে সেই তোমাকে এখানে নিয়ে আসার জন্য পরিকল্পনা করেছিল !
-কি ! তাহলে এর এমন অবস্থা কেন ?
-জানি না ! তবে একটা কথা হচ্ছে ফারিয়ার সাহায্য ছাড়া আমি এখানে এতো সহজে ঢুকতে পারতাম না ! এখনও বেঁচে আছে !
-এখন ?
-একেও নিয়ে যেতে হবে ! এইভাবে একে এখানে ফেলে যেতে মন বলছে না !
মাশরুফ নিজের গায়ের শার্ট টা খুলে ফারিয়ার ক্ষত স্থানে বেঁধে দিল । ওর ওর উন্মুক্ত পেশি বহুল বডি দেখে এই বিপদের মাঝেও নিকির মাঝে কেমন অদ্ভুদ অনুভুতি হল ! যেন চোখ সরাতে পারছে না ! মনে মনে বলল আল্লাহ কি সব চিন্তা আছে । চিন্তার কোন সময় জ্ঞান নেই !
যখন আবার ওরা ফারিয়ার গাড়ির কাছে পৌছালো তখন পুরো ক্যাম্পের কোন কিছু আর অবশিষ্ট নেই । যারা প্রানে বেঁচে গেছে তারা আর এখানে থাকার মত সাহায্য করে নি । মাশরুফ ঠিক ওদের মত পোষাক পরে থাকার কারনে ওরা ঠিক মত বুঝতে পারে নি । ও বলতে গেলে পুরো ক্যাম্পের সব জায়গা বিস্ফোরক সেট করে রেখেছিল টাইমার দিয়ে । কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই !
ওর যখন গাড়িতে উঠলো নিকিতা অবাক হয়ে দেখলো ব্যাক সিটের নিচে একজন লুকিয়ে আছে ।
চিৎকার করে উঠলো
-এটা কে ?
-আমি !
কেবল একটা আওয়াজ এল । আস্তে করে মাথা তুলে তাকালো ! ততক্ষনে মাশরুফ আবারও নিজের মুখ ঢেকে ফেলেছে ।
নিকিতা অবাক হয়ে দেখলো এই লুকিয়ে থাকা আর কেউ নয় রাফায়েল চৌধুরী !
মাশরুফ বলল
-তোমাকে ধরার জন্য এরা রাফায়েল কে ব্যবহার করেচিল । মনে আছে এর ফোন তোমার কাছে এসেছিল । ও তখন এদের হাতে বন্দী ! আমি প্রথমে ভেবেছিলাম রাফায়েলও এদের সাথে যুক্ত কিন্তু এখানে তোমাকে খুজে পাওয়ার আগে একটা ঘরে ওকে পাই । ওকে তারপর গাড়িতে লুকিয়ে থাকতে বলি !
-উঠে পড় ! রাফায়ে তুমি সামনে এসো ! নিকিতে ফারিয়ে কে নিয়ে পেছনে বস !
নিকিতা কেবল রাফায়েলের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো । সেই অবাক চোখ বিরক্তিতে রূপান্তরিত হতে সময় লাগলো ! এই ছেলেকে কি ভেবেছিল আর আর কি বের হল !
রাফায়েল বলল
-বিশ্বাস করুন আমার কিছু করার ছিল না !
-বুঝলাম !
মাশরুফ বলল
-ঠিক আছে । অনেক হয়েছে । কার কি করার ছিল, ছিল না এসব পরে ভাবলেও চলবে ! এবার আমাদের যেতে হবে ! এখানে আর দেরি করা যাবে না ! কোন দিক দিয়ে কি চলে আসে বলা মুশকিল ! বর্ডার ক্রস করে যে কেউ চলে আসতে পারে !
মাশরুফ গাড়ি স্টার্ট দিল !
###
-কেমন আছো আজিজ ?
প্রেসিডেন্ট হলেও আজিজুর রহমান খান জামসের আহমেদের জুনিয়র । তার নিজের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা থাকলেও আজিজুর রহমানের ক্লিন ইমেজের কারনে পার্টি হাই কমান্ড তার বদলে আজিজুর রহমানকে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনয়ন দেন ।
অপমান টা সহ্য করে নিজেও তার নিজের মনের ভেতর একটা রাগ সেই তখন থেকেই ছিল । অনেক দিন থেকে তিনি এই পরিকল্পনা করছিল । আজকে তার অনেক টাই সফল হয়েছে । এবার আজিজুর র হমান কে তিনি বাগে আনতে পেরেছেন !
দুজনেই জামসের আহমেদের ড্রয়িং রুমে বসে আছে । একটু দুরে সোজা হয়ে আহমেদ আসাদ দাড়িয়ে আছে কঠিন মুখে !
-আপনার শরীরটা এখন কেমন ?
-ভাল !
রুমের ভেতর হঠাৎ করেই নিরবতা নেমে এল । কেউ যেন কোন কথা বলছে না কিংবা কোন কথা বলার খুজে পাচ্ছে না ! তার পর কোন প্রকার ভুমিকা না করেই প্রেসিডেন্ট আজিজুর রহমান খান বললেন
-দ্বন্দ্ব টা আপনার আর আমার ভেতরে ছিল ! সেটা আমার মেয়ে পর্যন্ত না আনলেই কি হত না ?
জামসের আহমেদ একেবারে এরকম সরাসরি কথা আশা করেন নি । তিনি ভেবেছিলেন কথা হয়তো অন্য দিকে থেকে আসবে !
-তুমি ঠিক কি বলছো আমি বুঝতে পারছি না !
-ও কামান, জাসমের ভাই ! ভনিতা রাখেন ! শামীম জাফর এখন আমার হেপাজতে ! সব কিছু বাদ দিন । আসুন সরসরি কথা বলি ! আপনি কি চান আমি জানতে চাই !
পুরো একটা মিনিট জামসের আহমেদ তাকিয়ে রইলো আজিজুর রহমান খানের দিকে ! তারপর শান্ত কন্ঠে বলল
-তুমি জানো আমি কি চাই !
-হুম ! তা কেবল আমি কেন সবাই জানে ! কিন্তু এই ভাবে আপনি সেটা পেতে চাইবেন আমি ভাবি নি ! আমি ঠিক সেদিনই বুঝতে পেরেছিলাম যেদিন আপনার উপর হামলা হয় ! তারপর যখনই আমার উপর হামলা এতো এতো কড়া সিকিউরিটির পরেই আমার বুঝতে বাকি রইলো বা যে এর পেছনে খুব শক্ট কেউ আছে ! আর সেই শক্ত কেউ টা যে আপনি সেটা বুঝতে আমার খুব বেশি কষ্ট হয় নি ! খুব সিম্পল একটা প্লান ! ভাইস প্রেসিডেন্টের উপর সন্ত্রাসী হামলা ! সব সিম্প্যাথি তার দিকে । এবার প্রেসিডেন্টের কিছু হলে কিংবা তিনি পদত্যাগ করলেই পুরো পার্টি তো বটেই দেশের মানুষ চাইবে এমন কাউকে প্রেসিডেন্ট করতে যে নিজের দেশের জন্য রক্ত ঝড়িয়েছে । তাই তখন থেকেই আমি ব্যবস্থা নিয়েছিলাম !
এবার একটু ভুরু কুচকে উঠলো জামসের আহমেদের ! তিনি ঠিক বুঝতে পারলেন না আসলে আজিজুর রহমান খান কি বোঝাতে চাইছে !
-আপনি যে এর পেছনে ছিলেন আমি সেটা আগে থেকেই জানতাম ! কেবল ভুল টা আমার ছিল যে আমি কেবল নিজের উপর বেশি জোর দিয়েছিলাম । আপনার চোখ যে আমার মেয়ের উপরে থাকবে সে আমি একটু বুঝতে পারি নি !
আবারও কিছুটা সময়ের জন্য পুরো ঘরে নিরবতা নেমে এল । নিরবতা এবারও ভাঙ্গলো প্রেসিডেন্ট আজিজুর রহমান খান নিজেই !
-এতো দিন আমার হাতে কোন প্রমান ছিল না কিন্তু এখন আমার হাতে প্রমান এসেছে । কেবল এই টুকুই বলতে এসেছিলাম আমি !
এই বলে আজিজুর রহমান খান উঠে দাড়ালো !
দাড়ায়েই জোরে ডাক দিল
-লিলি !
লিলি অর্থাৎ জামসের আহমেদের নার্স দরজার পাশেই দাড়িয়ে ছিল ! ডাকার সাথে সাথে ঘরের ভেতরে ঢুকে পরলো ! জামসের আহমেদ কেবল অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো মেয়েটার দিকে ! আজিজুর রহমান খান বললেন
-তোমার কাজ এখানে শেষ ?
-জি স্যার !
-চল যাওয়া যাক ! এখানে আর থাকার কোন মানে নেই !
যাওয়ার আগে জামসের আহমেদের দিকে তাকিয়ে বলল
-আপনি আমার শক্ত প্রতিপক্ষ ছিলেন পার্টিতে । হয়তো সামনের বার আপনিই হতেন প্রেসিডেন্ট ! কিন্তু নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেড়েছেন । আর আমার মেয়ের কথা চিন্তা করবেন না ! সে আমার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দিয়েছে !! আর আপনার সেই মেজর হাবিব..... এখন ইতিহাস....
আর দাড়ালেন না কেউ । প্রথমে আহমেদ আসাদ, তারপর প্রেসিডেন্ট নিজে এর পর নার্স বেরিয়ে গেল ! সবাই বের হওয়ার পরে জামসের আহমেদ কেবল একা একা দারিয়ে রইলো । বুকের ভেতর একটা ব্যাথা অনুভব করতে লাগলেন তিনি !
পরিশিষ্টঃ
পরডিন সংবাদ পত্রের প্রধান শিরোনাম টা ছিল এরকম "ভাইস প্রেসিডেন্টের আত্মহত্যা" । অনেকের মতে তিনি আত্মহত্যা করেন নি । তাকে হয়তো কেউ হত্যা করেছে । তবে বিশেষজ্ঞদের মতে তিনি আত্মহত্যাই করেছে ।
অন্য আরেকটা শিরোনামে জানা গেল ঠিক দুই দিন আগে প্রেসিডেন্টের কন্যা যেভাবে অপহৃত হয়েছিল তাকে উদ্ধার করা হয়েছে । কিন্তু কিভাবে উদ্ধার করা হয়েছে সে বিষয়ে কেউ কোন কথা বলতে পারে না ।
দেশের একটা নাম করা হাসপাতালে একটা কেবিনে ফারিয়া শুয়ে আছে । তার সামনে আকিব আরিয়ান বসে আছে চুপ করে । বেচারার এখন ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না মাত্র দুই দিনের ব্যাবধানে কি থেকে কি হয়ে গেল ! ফারিয়া তখনও ভেবে চলেছে ও এখানে কিভাবে এল । কোন উত্তর পাচ্ছে না !
(সমাপ্ত)
সম্পুর্ণ গল্পের পিডিএফ লিংক
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৫ রাত ৮:৩২