somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিমায়িত ভ্রূণ থেকে জন্ম নিল অপ্সরা

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভ্রূণ অবস্থায় তার প্রথম চারটি মাস কেটেছে তরল নাইট্রোজেনের আধারে, হিমরাজ্যে। এরপর ৩৭ সপ্তাহ মায়ের গর্ভে কাটিয়ে শুক্রবার পৃথিবীর আলো দেখল অপ্সরা। বাংলাদেশে হিমায়িত ভ্রূণ থেকে জন্ম নেয়া এই প্রথম শিশুর মা সালমা বেগম (৩৬) একজন গৃহিণী, বাবা আফজাল হোসেন ব্যাংকার।

রাজধানীর মডার্ন হাসপাতালে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপ্সরার জন্ম হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের স্ত্রী রোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাশিদা বেগমের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি চিকিৎসক এ অস্ত্রোপচারে অংশ নেন।

সফল অস্ত্রোপচার শেষে ডা. রাশিদা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিয়ের ৫ বছরের মাথায় সালমা-আফজাল দম্পতি গতবছর টেস্ট টিউব পদ্ধতিতে সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু প্রথমবারের চেষ্টা বিফল হয়। এরপর সংরক্ষিত ভ্রুণ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে সন্তানের মুখ দেখলেন তারা।

ডা. রাশিদা জানান, অপ্সরা সুস্থ আছে। জন্মের সময় তার ওজন ছিল ৩ দশমিক ২ কিলোগ্রাম।

তিনি বলেন, "প্রথমে টেস্টটিউব পদ্ধতিতে ১৪টি ভ্রুণ তৈরি করা হয়। গত বছর সেপ্টেম্বরে সালমা বেগমের জরায়ুতে ৩টি ভ্রুণ প্রতিস্থাপন করা হয়। তবে সাফল্য পাওয়া যায়নি। বাকি ১১টি ভ্রুণ ৪ মাস হিমায়িত অবস্থায় সংরক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে শেষ পর্যন্ত ৪টি জীবিত থাকে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সালমার জরায়ুতে স্থাপন করা হয় হিমায়িত ভ্রুণ।"

প্রতিস্থাপন থেকে শুরু করে অপ্সরার জন্ম পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কোনো জটিলতার সৃষ্টি হয়নি বলে ডা. রাশিদা জানান।

এর আগেও ৫ বার হিমায়িত ভ্রুণ থেকে শিশু জন্ম দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন ডা. রাশিদা। তবে সফল হননি। ষষ্ঠবারে এসে সাফল্য পেলেন তিনি।

টেস্টটিউব পদ্ধতিতে চিকিৎসা থেকে শুরু করে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সালমা-আফজাল দম্পতির ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। প্রথম দফায় টেস্টটিউট পদ্ধতির জন্য ২ লাখ টাকা। পরবর্তীতে হিমায়িত ভ্রুণ সংরক্ষণ ও প্রতিস্থাপনে ব্যয় হয়েছে ৬৫ হাজার টাকা।

হিমায়িত পদ্ধতিতে ভ্রুণ সংরক্ষণ ও শিশুর জন্ম পদ্ধতি সম্পর্কে ডা. রাশিদা বলেন, টেস্ট টিউব চিকিৎসায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভ্রুণগুলোকে একটি বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে পানিশূন্য করে বিশেষ পাত্রে শূন্যের নিচে ১৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার তরল নাইট্রোজেনে ডুবিয়ে রাখা হয়। পরবর্তীতে জীবিত হিমায়িত ভ্রুণ সরাসরি জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা হয়।

১৯৮৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার কুইন ভিক্টোরিয়া মেডিকেল সেন্টারে হিমায়িত ভ্রুণ থেকে বিশ্বের প্রথম শিশুটির জন্ম হয়। এশিয়ায় এ ধরনের প্রচেষ্টায় প্রথমবারের মতো সফল হন সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সেন্টারের চিকিৎসকরা। এটি ১৯৮৭ সালের ঘটনা।

ডা. রাশিদা জানালেন, সর্বাধিক ১৩ বছর সংরক্ষিত থাকার পর হিমায়িত ভ্রুণ থেকে শিশু জন্ম নেয়ার রেকর্ড রয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমআরএফ/জেকে/এমএইচবি/১৮১৫ ঘ.


আমার কথা:

আসলে এই সাফল্যের পেছনের বিজ্ঞান কিন্তু খুব সহজ। অনেক সময় দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী উভয়ের কোন প্রকার সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও, বছরের পর বছর সন্তান হয় না। কারন, স্বামীর শুক্রানু কোন অজানা কারনে স্ত্রীর ডিম্বানুকে নিষিক্ত করতে পারছে না। এটা বেশি দেখা যায় স্ত্রীর বয়স বেশি হলে তখন। বিজ্ঞানীরা এই নিষিক্তকরণের (Fertilization) কাজটুকুই করে দেন। স্বামীর শুক্রানু ও স্ত্রীর ডিম্বানু টেস্টটিউবে নিষিক্ত করা হয় অথবা বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে স্ত্রী ডিম্বানুতে স্বামীর শুক্রানুর ক্রোমজোম দিয়ে দেওয়া হয়। তারপর নিষিক্ত ডিম্বানুকে (ভ্রুন) স্ত্রীর জরায়ুতে বসিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে একদম সাধারন উপায়েই সেটি ধিরে ধিরে পূর্ণাঙ্গ মানুষে পরিনত হয়। চাইলে সাথে সাথেই নিষিক্ত ডিম্বানু জরায়ুতে রাখা যায়, অথবা একে তরল নাইট্রোজ়েনে -১৯৬ ডিগি তাপমাত্রায় হিমায়িত করে রাখা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৪:১০
২৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×