তারেক মাসুদ বাংলাদেশের বিকল্প ধারা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে আলোচিত নাম। ১৯৫৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গায় জন্ম নেওয়া তারেক মাসুদের শিক্ষা জীবনের শুরুটা ছিল স্থানীয় একটি মাদ্রাসায়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার মাদ্রাসা শিক্ষার সমাপ্তি ঘটে। যুদ্ধের পর তিনি সাধারণ শিক্ষার জগতে প্রবেশ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্দোলনের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকেছেন এবং দেশে-বিদেশে চলচ্চিত্র বিষয়ক অসংখ্য কর্মশালা এবং কোর্সে অংশ নিয়েছিলেন। তারেক মাসুদ ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসেন ‘মাটির ময়না’ (২০০২) এবং ‘মুক্তির গান’ (১৯৯৫) চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। বিশেষ করে, মাটির ময়নার জন্য তিনি অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার পান। এগুলোর মধ্যে ২০০২ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিটিকস অ্যাওয়ার্ড ও পরিচালনার জন্য তিনি পুরস্কার পান।
তিনি ইউনিসন, সে, ইন দ্য নেইম অফ সেফ্টি, ভয়েসেস অফ চিলড্রেন, আ কাইন্ড অফ চাইল্ডহুড, নারীর কথাসহ বেশ কয়েকটি ডকুমেন্টারি নির্মাণ করে মুভি বোদ্ধাদের শ্রদ্ধার আসনে স্থান করে নিয়েছেন। এছাড়াও তার নির্মাণ করা প্রামাণ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে সোনার বেড়ি (১৯৮৫) আদম সুরত (১৯৮৯), মুক্তির গান (১৯৯৫), মুক্তির কথা (১৯৯৬), মাটির ময়না (২০০২) অন্তর্যাত্রা (২০০৬) রানওয়ে (২০১০) ও নরসুন্দর।
মাটির ময়না প্রথম বাংলাদেশি সিনেমা হিসেবে অস্কার প্রতিযোগিতায় বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এডিবনার্গ, মন্ট্রিল, কায়রো উৎসবে মাটির ময়না প্রদর্শিত হয়। পাশাপাশি ২০০২ সালে মারাকেশ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা চিত্রনাট্যের পুরস্কার লাভ করে। ২০০৩ সালে করাচি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও সেরা ছবির পুরস্কার লাভ করে। ২০০৪ সালে ছবিটি ব্রিটেনের ডিরেক্টরস গিল্ড পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়। তারেক মাসুদ বাংলাদেশের বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সংগঠন বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৮৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসবের কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব পালন করেন।
সম্প্রতি কাজ করছিলেন তার নতুন চলচিত্র ‘কাগজের ফুল’ নিয়ে। ডেস্ক ওয়ার্ক শেষ করার পর এ বছরই শুরু হওয়ার কথা ছিল এর শুটিং। ১৩ আগস্ট সকালে নতুন ছবি 'কাগজের ফুল' এর শুটিং স্পট দেখার জন্য মানিকগঞ্জের ইছামতি নদীর তীরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঘিওর নামক এলাকায় মর্মান্তিক এক সড়ক দূর্ঘটনায় তিনি নিহত হন। একই দুর্ঘটনায় বুদ্ধিজীবি সাংবাদিক ও প্রখ্যাত চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীর নিহত হন ও তার স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ গুরুতর আহত হন। তারেক মাসুদ সম্পর্কে আরও তথ্য আছে এখানে ।
উইকিপিডিয়া-তে তারেক মাসুদ : বাংলা । ইংরেজী ।
নারীর কথা প্রামান্যচিত্র নিয়ে তারেক মাসুদ’র একটি সাক্ষাতকার আছে এখানে।
তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ’র একটি একান্ত সাক্ষাতকার আছে এখানে।
তারেক মাসুদ নির্মিত চলচ্চিত্র ও ডকুমেন্টারিঃ
তারেক মাসুদ তার পরিচালনা জীবনে প্রথম নির্মাণ করেন ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র আদম সুরত। এই ডকুমেন্টারিটি ছিল প্রখ্যাত বাংলাদেশী শিল্পী এস এম সুলতানের জীবনের উপর। এই প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মিত হয় দীর্ঘ সাত বছর ধরে। ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত সময় লেগে যায় প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণে। ‘আদম সুরত’ আলোর মুখ দেখে ১৯৮৯ সালে। অবশ্য এরই মাঝখানে ১৯৮৫ সালে তিনি ‘সোনার বেড়ি’ নামে আরেকটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। আদম সুরত সম্পর্কে তারেক মাসুদ নিজেই বলেছেন, ‘অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, আদম সুরত নির্মাণে যতটা সময় সুলতানকে কেন্দ্র করে শুটিং করেছিলাম, এর চেয়ে ঢের বেশি শুটিং করেছিলাম বিচিত্র মেলা পার্বণ। শুটিং করেছিলাম চৈত্র-সংক্রান্তির মেলা, রথযাত্রা, বিশ্বকর্মার নৌকাবাইচসহ বহু বাউল মেলা। মনে মনে স্বপ্ন ছিল, লোকজ উৎসব নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করব। কিন্তু আদম সুরত নির্মাণে প্রাণান্ত অবস্থা হয়ে যাওয়ায় ‘লোকজ উৎসব’ লোকচক্ষুর অন্তরালেই রয়ে গেল। আমার মনে পড়ে, ক্যামেরা, যন্ত্রপাতি পড়ে আছে...দিনের পর দিন চলে যাচ্ছে... সুলতানের ভাঙা-পোড়ো বাড়িতে আমরা দলবল নিয়ে পড়ে আছি। সুলতান ভাই একদিন নিয়ে যাচ্ছেন সাঁওতাল পাড়ায় তাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখাতে, আরেক দিন নিয়ে যাচ্ছেন জেলে পাড়ায় সারা রাত কীর্তন শোনাতে।’
তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘মুক্তির গান’ দেখেননি এমন মানুষ খুব কমই আছেন। মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা লিয়ার লেভিন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধের উপর একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণের অভিপ্রায়ে এদেশের একদল সাংস্কৃতিক কর্মীর সঙ্গ নেন। 'বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা' নামের দলের এই সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে মুক্তিযোদ্ধা ও শরনার্থীদের দেশাত্মবোধক ও সংগ্রামী গান শুনিয়ে উজ্জীবিত করতেন। এই শিল্পীদের সাথে থেকে লেভিন প্রায় ২০ ঘণ্টার ফুটেজ সংগ্রহ করেন। যুদ্ধের শেষ দিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান। আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তিনি ডকুমেন্টারি তৈরি করতে পারেননি।
দীর্ঘ দুই দশক পর ১৯৯০ সালে তারেক ও ক্যাথরিন মাসুদ নিউইয়র্কে লেভিনের কাছ থেকে এই ফুটেজ সংগ্রহ করেন। এ থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য তারা সারা বংলাদেশ ঘুরে বিভিন্ন উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের নানা সংরক্ষিত উপাদান সংগ্রহ করেন, বিশ বছর আগের সেই শিল্পীদের সাথে যোগাযোগ করেন। লেভিনের কাছ থেকে প্রাপ্ত ফুটেজের সাথে সংগৃহীত অন্যান্য উপাদান যোগ করে নির্মান করেন মুক্তির গান।
। সম্পূর্ন মুক্তির গান : আয়োজন.কম । ইউটিউবে মুক্তির গান । মিডিয়া ফায়ার ডাউনলোড ।
মাটির ময়না ছবিটি ২০০২ সালে মুক্তি পায়। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে পূর্ব পাকিস্তানের উদ্বেগের পটভূমিতে তারেক মাসুদের মাদ্রাসায় জীবনের অভিজ্ঞতা ফুটে উঠেছে। পুরো চলচ্চিত্র জুড়ে ঐতিহাসিক ঘটনার উদ্ধৃতি থাকলেও সেগুলো একটি কিশোরের মানবিক অভিজ্ঞতায় প্রকাশিত হয়েছে। মাদ্রাসায় তার শিক্ষক, সহপাঠীদের আচরণ আর পরিবারের সদস্যদের সাথে তার সম্পর্কের ভিতর দিয়ে চলচ্চিত্রটির কাহিনী এগিয়ে গিয়েছে। ছবিটি আন্তর্জাতিকভাবে পুরষ্কুত হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিল। বহিষ্কারাদেশ বাতিল হবার পর ২০০৫ সালের ১৬ই এপ্রিল ডিভিডি ভার্সন প্রকাশিত হয়। মাটির ময়না চলচ্চিত্রটি প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে "শ্রেষ্ঠ বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র" বিভাগে একাডেমি পুরস্কার প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য বাংলাদেশের মনোনয়ন লাভ করে।
ষাটের দশকের উত্তাল সময়ের প্রেক্ষাপট হতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঠিক আগের সময়ের একটি পরিবার কিভাবে যুদ্ধ ও ধর্মের কারণে ভেঙে চুরমার হয়ে যায় তার গল্প নিয়ে তৈরি এ চলচ্চিত্র। পরিচালকের নিজের ছোটবেলার কাহিনীর জীবনের উপর ভিত্তি করে এ ছবির কাহিনী গড়ে উঠেছে। অত্যন্ত ধার্মিক বাবা কাজী সাহেব তাঁর ছোট্ট ছেলে আনুকে পড়াশোনার জন্য মাদ্রাসায় পাঠিয়ে দেন। দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের পাশাপাশি আনুর মাদ্রাসাতেও চরম ও মধ্যপন্থী মতবাদের বিকাশ ঘটতে থাকে। বিভক্তির এই একই চিত্র দেখা যায় গোঁড়া ধার্মিক কাজী ও তাঁর স্বাধীনচেতা স্ত্রী আয়েশার মধ্যে । ধর্মীয় উদারতা, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র এবং ইসলামের দুর্বোধ্যতা এ সব কিছু মিলিয়ে মাটির ময়না জাগতিক দ্বন্দ্বের একটি দৃশ্যমান প্রতিকৃতি।
ইউটিউবে মাটির ময়না । মিডিয়া ফায়ার ডাউনলোড ।
তারেক মাসুদ ও ক্যাথেরিন মাসুদের অন্তর্যাত্রা আত্মিক সংকটের ভেতর দিয়ে আত্মআবিস্কার ও নিজের কাছে ফেরার ছবি। ছবিটি শুরু হয় লন্ডন প্রবাসী শিরিন ও তার ছেলে সোহেলের আকস্মিকভাবে দেশে ফেরার ঘটনা দিয়ে। প্রাক্তন স্বামীর মৃত্যু সংবাদ শিরিন ও তার পুত্রকে দেশে ফিরিয়ে আনে। পনের বছর পর দেশে ফিরে শিরিন তার স্মৃতির শহরকে খোঁজে। পুরানো বান্ধবী ও অন্যান্য মানুষজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ, সম্পর্কের জটিল ও খানিকটা বিব্রতকর পরিবেশে স্বামীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ, সন্তানের সঙ্গে গভীর বোঝাপড়া এসবের মধ্য দিয়ে শিরিনের ভেতরের সঙ্কটগুলো স্পষ্ট হয়। অন্যদিকে, সোহেল-- লন্ডনের মিশ্র সংস্কৃতিতে যার বেড়ে ওঠা, মাতৃভূমির কোনো স্মৃতিই যার নেই, দেশে ফিরলে কল্পনার মাতৃভূমিটি জীবন্ত হয়ে ওঠে তার ভেতর। মৃত বাবাকে মনে হয় ফ্রেমে বাঁধানো ছবিটার চেয়ে বেশি কিছু। স্মৃতিহীন মাতৃভূমি, পিতামহ, মৃত বাবা, নিজের মানুষজন ও তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের ভেতর সে নিজেকে খোঁজে। সে বুঝতে পারে, এখানে এমন কিছু রয়ে গেছে যার জন্য বার বার ফিরে আসতে হবে তাকে। দেশত্যাগ, উদ্বাস্তু দশা আর ঘরে ফেরা’র অনুভূতিকেই সূচারুভাবে এ ছবিতে তুলে এনেছেন তারেক মাসুদ।
ইউটিউবে অন্তর্যাত্রা-র কিছু অংশ : অন্তর্যাত্রা-১ । অন্তর্যাত্রা-২ । অন্তর্যাত্রা-৩ ।অন্তর্যাত্রা-৪ । মিডিয়াফায়ার থেকে ডাউনলোড করুন : সম্পূর্ন অন্তর্যাত্রা ।
তারেক মাসুদ রানওয়ে ছবিটির কাজ শুরু করেন ২০০৮ সালের অক্টোবরে, আর তা শেষ হয় ২০০৯ সালের এপ্রিলে। ২০০৮-০৯ সালে চিত্রায়িত এই কাহিনীচিত্রটির পটভূমি হিসেবে এসেছে ২০০৫-০৬ সালে জাতীয় পর্যায়ে সংঘটিত কিছু ঘটনা। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে সংলগ্ন একচালা ঘরে রুহুল ও তার পরিবার বসবাস করে। তার মা রহিমা ক্ষুদ্র ঋণ সমিতির মাধ্যমে একটি গাভী কিনে দুধ বিক্রি করে সংসার চালায়। রুহুলের বোন ফাতেমা পোশাক রপ্তানি কারখানায় কাজ করে। এক মাস হলো তার বাবা মধ্যপ্রাচ্যে চাকরির সন্ধানে গিয়ে নিরুদ্দেশ। বেকার, কিছুটা হতাশ অথচ আদর্শবাদী রুহুল চাকরি খোঁজার ব্যর্থ চেষ্টা করে এবং উড়োজাহাজের ছায়ায় দিন কাটায়। মাঝেমধ্যে সে মামাকে সাইবার ক্যাফের ব্যবসায় সাহায্য করে এবং ইন্টারনেট শেখার চেষ্টা করে। সেখানে দৃঢ় অথচ শান্ত মেজাজের কম্পিউটার দক্ষ আরিফের সঙ্গে তার ক্রমশ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আরিফ উগ্র ধর্মীয় রাজনীতির মধ্যে জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে রুহুলকে উদ্বুদ্ধ করে। নতুন আদর্শে উজ্জীবিত রুহুল বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে অবশেষে জীবনের গভীরতর অভিজ্ঞতা উপলব্ধির দিকে এগিয়ে যায়।
ইউটিউবে রানওয়ে-র ট্রেইলার।
মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে বানানো তারেক ও ক্যাথরিন মাসুদের স্বল্পদৈর্ঘ্যের থ্রিলার ছবি ‘নরসুন্দর’। পাক- হানাদার বাহিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য একটি সেলুনে একজন মুক্তিযোদ্ধার আশ্রয় নেওয়া ও তার পরের নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে ১৫ মিনিট দৈর্ঘ্যের উর্দু ভাষায় বানানো নরসুন্দর’র কাহিনী।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০১২ ভোর ৫:২০