প্রমত্ত তমসায় আমার সলজ্জ আক্ষেপ। তুচ্ছ খেয়ালে নিরুচ্চারিত কিছু দুরন্ত ইচ্ছুক। দ্বিগুণ বেগে উদ্ধত হয় আগামী অন্বেষার রাগিণী। আর অভাবের সরোদিয়া বাজায়, অন্নবস্ত্রের সিল্করুট।
দৃঢ় ধারণায় মোড়ানো কচি অসভ্যতার সন্ধি, পেটের পাপ না নিস্পাপ শিশুকে জন্ম দেয়া যোনি; সৌরধুলার অনিবার্য আশ্লেষ তারা বুঝে নি। তাই নেতির দর্শনে প্রতিজ্ঞ প্রীতি, কৌটোবন্দি দরোজায় পুষে রাখেন, একঝাঁক ফাঁকি। আঁকেন প্রচ্ছদ উঠে নিভৃতচারী—মগডালে লুকিয়েছেন কতো স্বপ্নের ত্রেতা-ঘুড়ি।
বৌদ্ধিক রণনে থাকে যা, পাথরের ভাষা। ভেঙে, ভেঙে, ভাবগুলো চুমে দেয় আধা। এবং! আমি ও তিনিকে খুঁড়ে সুদিনের বেকুব। বলাই যায় না-হয়তো, আছে ওরও ইস্পাতের রুমাল পকেটে সমা মিত্রের চিবুক।
অন্যচেহারা কী ঝাপসা মানুষের শ্বাসে, আলাদিন প্রদীপটা ঘষে ঘষে বাঁচে। সস্তাচালাকি মোদের হুবুহ একই, জং ধরা আঁকশিতে পিছু নেয় জীনি। তেমনি ছাই চেখে নিরাপদ হ’তে বাঈজির খোয়াব, ফিনকি দিয়ে উল্টে গিয়ে থামে মাতালের ভ্রান্তি রেকাব। কিন্তু যে দুঃখ সাহস করে মেলতে নেই কভু, তারই দেবগৃহে কেনো—উড়ো বাতাসেরা হানে উচ্চকল্পের সামেস্থেটিক পাখোয়াজ!!
অনতিদূরে মথুরার সাইনবোর্ড কহে, কাকাবাবু সেলাম, বলেন কি আছে ব্যারাম। উচিত মূল্য দেবো এবার।
ধ্যত্, কে শুনে ওদের কথা হায়। ইন্দ্রিয় পিপাসায় মন্থনের পথে পথে অজস্র পদছাপ। ভিড়ের ধাক্কা ঠেলে, পায়েলের মত বাজে টুকিটাকি সংসারের আতেঁলীয় হাঁকডাক, ভাত-তরকারি, অসংখ্য অবিরাম, কপালের ঘাম। গরিবের বউর নোংরা আঁচলই জানে ওসবের ন্যায্য দাম।
বাতিল ঠিকানায় খুইয়ে জোড়া তরবারি, আমার ঠিকানায় লিখছি আলেখ্য, গৌণ জীবনের রহস্য খেয়ে খোঁয়াড়ির ঘেউ ঘেউ যত। এ-তে সৎ জিহ্বারও কোলবদল হয়েছে বকতে; স্বরচিত নিরক্ষরতার অতিবর্ধিত রেণু-চিৎকার। যদিও, ঘাটে দুই-আনা বাকি রেখে ফিরতে দেখেছি সব শোধনের লেকচার। টাঙানো মৃৎকুম্ভের মোহ ও প্রত্নতাত্ত্বিক ব্যয়-অধ্যাস, অনায়াসে শূন্যের পাশে বসে করুক বিচার! লুকবো না। লুকানোর নেই, কোথায়ই-বা লুকোই বলো ঊণমানুষের কাঞ্চন। জড়িয়ে কাচের কায়ায়, সে-তো দস্যুর পাথুরে বন। আর তিলোত্তমা শহরের আনাচে-কানাচে কতো, শততিপ্পান্নটি ধারা খেয়ে ঘুম যাবে আজও মিত্রচন্দ্রের দোকান।
সেসব কী লুকনো গিয়েছে কখনো! আমি লিখে রাখলাম।
০৩ মাঘ ১৪২৩
অন্ধবিন্দু | সামহোয়্যার ইন...ব্লগ
© চিত্রকর: রোন থ্রুপ