somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অন্ধবিন্দু
বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৯ (১) ও ৩৯ (২)(ক) এবং মানবাধিকার সনদ(UDHR) এর অনুচ্ছেদ-১৯ ও অনুচ্ছেদ-২৭ বিশেষভাবে উল্লেখপূর্বক; “অন্ধবিন্দু”- ব্লগ পাতাটির লেখককর্তৃক গৃহীত ও ব্যবহৃত একটি ছদ্মনাম মাত্র।

এন্টিক্রাইস্ট (২০০৯): নারীতে নর, নাড়ীর সম্পর্ক জড় !

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


স্প্যানিশ দার্শনিক-লেখক হোসে ওর্তেগা গ্যাসেট ১৯২৫ সালে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে লিখেছেন- “The new art obviously addresses itself not to everybody...but to a specially gifted minority. Hence the indignation it arouses in the masses. When a man dislikes a work of art, but understands it, he feels superior to it...But when his dislike is due to his failure to understand, he feels vaguely humiliated...Through its mere presence, the art of the young compels the average citizen to realize that he is just this–the average citizen…Accustomed to ruling supreme, the masses feel that the new art, which is the art of a privileged aristocracy of finer senses, endangers their rights as men. Whenever the new Muses present themselves, the masses bristle.” (The Dehumanization of Art)

তার কথার হাত মিলিয়ে আমিও মনে করে থাকি, অজ্ঞতা অভিজ্ঞতা জনিত কারণে অর্থোদ্ধার করতে না-পারার ব্যক্তি অক্ষমতা কখনই শিল্প-সাহিত্য-সিনেমায়; শিল্পী বা স্রষ্টার সৃষ্টিশীলতার/স্বকীয়তার গুণমান বিচারে সহায়ক নয়। বরং এই ব্যর্থতাকে প্রশ্রয় দেওয়া আরও বড় ধরনের নির্বুদ্ধিতা। কিন্তু তাই বলে উচ্চমার্গীয় সাহিত্যকর্ম, আর্ট সিনেমার সমজদার দর্শক-মিথ, শাশ্বত সত্য অগ্রাহ্য করে অর্থহীন-বিমূর্ত উপস্থাপনের নামে নৈতিক মূল্যবোধ পুরোমাত্রায় লঘুজ্ঞান করে ঘোলাজলে মৎস শিকারিদের দ্বারা শিল্পের আধুনিকীকরণ(প্রগতি) হবে; তাতে সম্মতি দিতে-তো পারিনে। কারণ, নান্দনিক শিল্পকর্ম মানব মনের বিশুদ্ধ-অনিন্দ্য সৌন্দর্যচেতনারই উপায়ন মাত্র।

দুষ্টু লেখক-পরিচালক লারস ভন ট্রাইয়ার –এর এন্টিক্রাইস্ট সিনেমাখানা দেখার পর দর্শকের প্রাথমিক উপলব্ধি; এমনই নিন্দাবাক্যে অবান্তর করে দিতে পারে এই নির্মাণটিকে। যদি ফ্রয়েডীয় তত্ত্ব, মধ্যযুগে ইউরোপ-জুড়ে প্যাগান নারীদের বিরুদ্ধে খ্রিস্টধর্মবিরোধী-চর্চার অভিযোগ এবং তার শাস্তিস্বরুপ লক্ষাধিক নারী নির্যাতন ও গণহত্যার ইতিহাস সম্পর্কে নুন্যতম ধারনা দর্শকের থেকে থাকে; তবে সিনেমায় প্রতিবিম্বিত সংকীর্ণতা আমাদের মারাত্মকভাবে বিস্ময়াহত করতে ফলপ্রদ …

এমতাবস্থায় পাঠক বুঝতে পারছেন, সিনেমাটি বিশেষ শ্রেণীর জন্য নির্মিত। ওতের্গা যেটিকে স্পেশালি গিফ্টেড মাইনোরিটি বলতে চাইছিলেন হয়তো। সিনেমায় ট্রাইয়ারের নারীবাদ এবং নারীবিদ্বেষের উৎস খুঁজতে গিয়ে দর্শক পরিচালকের আত্মদমন-দর্শন দৃষ্টিটি কার্যত অদৃশ্য ও উহ্য রেখে যান তবে “এন্টিক্রাইস্ট” ৯৯ ভাগই ব্যর্থ একটি আর্ট-ফিল্ম। অপরদিকে সাধারণ দর্শক সিনেমাটিতে স্ত্রী-চরিত্রটির নৃশংস যৌনাচারণ ও প্রগাঢ়তর দেহতৃপ্তির রসায়নে আকৃষ্ট হলে “এন্টিক্রাইস্ট” ব্যবসায়িকভাবে ও পরিচালকের বিশ্রুতিবর্ধনে শতভাগ সফল। যেমনটা আমরা তার সাম্প্রতিক মুভি নিম্ফোম্যানিয়াক-১,২ এ দেখতে পাচ্ছি।

বাস্তব পরাবাস্তবতার পর্যায়ক্রমিক মোচড়ে শৈল্পিক বিচারে “এন্টিক্রাইস্ট” একটি ন-সাধারণ চলচ্চিত্র। এলেয়াস মাহারগে’র বিগটেন(১৯৯০)এর মতোই সিনেমার পর্দায়, লেন্সের পিছনে সাইকো/মনোবিশারদীয় হরর-টোন অথবা কুবরিকের নিঃশঙ্ক-চিত্ত ছায়ায় ছাঁচে মুভিটি লারস ভন ট্রাইয়ার’স মাস্টারস্ট্রোক নিশ্চিতই ! বিষয়বস্তুর নির্বাচন ও গল্পবুনট দর্শকদের দ্বিতীয়বার ভাবতে বাধ্য করলেও পুরো নির্মাণটি ক্রিটিক-সেন্স থেকে অনেকটা্ অসম্পূর্ণ জগাখিচুড়ি বলেই আখ্যায়িত করবো।


ট্রাইয়ার তার থিমটি নিয়ে গভীর ও সূক্ষ্ণ অধ্যয়নে খুব একটা আন্তরিক ছিলেন না। প্রকৃতিগতভাবেই নারীর পাপ-স্পৃহা প্রবল, মন্দের ধারক নারী, হিংস্র জীব বৈচিত্র্য ও সৃষ্টির সকল অমঙ্গলে নারীর আদি অবস্থান রয়েছে; এতসব বর্বর কলঙ্কময় আখ্যানগুলোর মূলোৎপাটন(স্যাটায়ারের ) করতে চাইছিলেন নাকি রঙচঙ মেখে পুরো বিষয়টিকে আরও কলঙ্কলিপ্ত করতে চেয়েছেন ! নারীর দেহজ এবং মানসিক খিন্নতা চিরকালই কি অনাদৃত থেকেছে ! ভীরু ব্যক্তিসত্তা সমাজসত্তায় পরিণত হওয়ার দ্বায় কার ! অপরাধ-বোধ ও সংশয়ে, ধর্মীয় বিশ্বাসের চিত্রণে দুর্বোধ্যতম চিত্রকল্প আর অন্তঃসারশূন্যতায় যেনও নিজেই হারিয়ে গেছেন তার উদ্দিষ্ট প্রচ্ছদ-বিন্দু থেকে। নামহীন দুটি চরিত্রে উইলিয়াম ডাফো এবং চার্লোত্তে গেইন্সবূর্গের অভিনয়-নিপুণতার পাশাপাশি বৈদগ্ধ্য সিনেমাটোগ্রাফি, মিউজিকের ব্যবহার গ্রাহ্য-মাত্রা যোগ করেছে।




অন্ধবিন্দু | সামহোয়‍্যার ইন...ব্লগ
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০০
১৪টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×