somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি..........

২৬ শে মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমাদের জাতীয় সংগীতটি কি অসাধারণ! তাই না? পৃথিবীর তাবৎ প্রেমিকের অন্তরের যে গহীন বানী "আমি তোমায় ভালবাসি "সেই কথাটাই সোজা সাপ্টা ঢুকে গেছে আমাদের জাতীয় সংগীতের বানীতে। কি অদ্ভুত! আর দেখুন সন্তানকে ভালবেসে যেরকম সোনা যাদু বলি,প্রেমিকাকে সোনামনি, মাকে সোনা মা......... তেমন করেই বলা আছে আমার সোনার বাংলা। একদম অকৃত্রিম অভিব্যক্তি।

অনলাইনে বেশ কয়েকটি দেশের জাতীয় সংগীতের লিরিক পড়লাম। খুব অবাক হলাম, প্রায় সব দেশের জাতীয় সংগীতের মূল ভাব প্রায় একই রকম। একধরনের জাতীয়তাবাদী সংগীত। কারো কারো বানীতে আছে উগ্র জাতীয়তাবাদের উস্কানি। একটি প্রতিবেশি দেশের জাতীয় সংগীত শুনলে আমার অবাক লাগে। শুনলেই মনে হয় একজন ঔপনিবেশিক শাসক বা রাজকীয় অতিথিকে স্তব কীর্তন করে লেখা গান। আমি নিশ্চিত, যিনি সেটি লিখেছিলেন তিনি জাতীয় সংগীত ভেবে লিখেন নি। হয়ত ঐতিহাসিক কোন প্রয়োজনে লিখেছিলেন।

আমি যতদুর জানি এত সুন্দর প্রকৃতি প্রেম আর কোন জাতীয় সংগীতে ফুটে উঠেনি। "ফাগুনের আমের বনের ঘ্রান " আর কেউ এমন করে অনুভব করেন নি। "কি শোভা কি ছায়া গো, কি স্নেহ কি মায়া গো "........এই অকৃত্রিম মায়ায় নিজের মায়ের মুখটিই চোখে ভাসে। কোথায় পাবেন আর? দেশকে ভাগ্য বিধাতা, হলি ল্যান্ড, পবিত্র ভুমি বলা হয়েছে,মান ইজ্জতের চিহ্ন বলা হয়েছে কিন্তু মায়ের সাথে তুলনা করা হয়নি। অস্তিত্বের এমন সর্বব্যাপী টান আর কোন গানের বানীতে নেই।

"মা তোর বদন খানি মলিন হলে আমি নয়ন, ও মা আমি নয়ন জলে ভাসি ".........কি চিরন্তন এক মর্মবেদনা। কমা দিয়ে দ্বিতীয় বার যখন গেয়ে উঠি " ওমা আমি নয়ন জলে ভাসি " তখন নাড়ির বিপুল টানটাই ফুটে ওঠে মায়ের জন্য আটপৌরে ভালবাসায়। এটা স্রেফ ছন্দ মেলানোর খাতিরে লেখা নয়। "মা ' ডাকের পর অকারনেই 'ও মা ' ডেকে ওঠার শিশু সুলভ সরল আনন্দ আছে এখানে।

সবচেয়ে অন্যরকম লাগে যেটা, এই গানের উত্তম পুরুষ আমি নিজে আর মধ্যম পুরুষ দেশ মা। মাকে উদ্দেশ্য করে গাইছি। ধন্য কবি গুরু।

আর সুর? ফাগুনের উদাস হাওয়ার টান আছে এর সুরে,আহা। খাটি বংগীয় মেঠো সুর। বাউল সুর, তবে হহক্কারি টান নেই। মৃদু, প্রেম জাগানিয়া। শুদ্ধ স্বরের সরলতার সাথে কড়ি ও কোমলের স্বার্থক মেল বন্ধন। মীড় আর স্পর্শ সুরের মাধুর্যও আছে। অন্তরায় গিয়ে গলাটাকে পুরো ছেড়ে দেওয়া যায়। একটা সুন্দর সঞ্চারীও আছে। প্রিয় গগন হরকরা, তুমি সত্যি অসাধারণ।

আমরা লাখো কন্ঠে গাইতে পারি, এটাই আমাদের বিশেষত্ব না। ওটা অন্যকেউও হয়তো গেয়ে ফেলতে পারবে। আমাদের জাতীয় সংগীতটাই আমাদের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব। এটা একান্তই আমাদের।

নিজের দেশকে, দেশের প্রতি ভালবাসাকে এমন করে গানের ভেতর দিয়ে আর কেউ প্রকাশ করতে পারবেনা..........আমি নিশ্চিত।

সেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় রেকর্ড, সব চেয়ে বড় গৌরব।
৩২৩ বার পঠিত
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

১. ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:৪৯

অলওয়েজ এ্যান্টি গর্ভণমেন্ট বলেছেন: আপনার বণর্না দিয়ে আরেকবার মিলিয়ে দেখলাম অতীতে অনেকবার গাওয়া প্রাণটি (গানটি নয়),

তাইতো, এতো সরল এতো গভ‍ীর !

অন্যান্য দেশের গানে পৌরুষ আছে, জজবা আছে, তেজ আছে;

আমাদের আছে প্রাণের কাছে যাওয়ার প্রকৃতির কাছে যাওয়ার গীতিময়তা।

এতো সুন্দর লেখেন কিভাবে?

অন্নদা শংকর রায় যেনো ভর করেছে আপনার উপর অথবা বিভূতি ভূষণ।

হ্যাটস্ অফ।

২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:২৩

লেখক বলেছেন: কি যে বলেন ভাই! লজ্জায় ফেলে দেন

২. ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:০৯

মিমা বলেছেন: দ্বিতীয় অন্তরায় এসে আমার চোখ ভিজে ওঠেনি এমন খুব কমই হয়েছে! কি অসাধারণ প্রতিটি চরন, কি মোহনীয় তাঁর সুর। আর হৃদয়ের কোন গভীরে পৌঁছাবার সাধ্য তাঁর!

আমাদের জাতীয় সঙ্গীত শুধু একটি গান নয়, লক্ষ কোটি বাঙ্গালীর প্রাণ, আমাদের আবেগ, দেশপ্রেম, উষ্ণ অনুভূতি আর ভালোবাসা সব এসে এক লয়ে গেঁথে যায়, এক সুরে সমস্বরে আমরা আদ্র চোখে গাই আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।

বাংলাদেশ, আমাদের গর্ব, আমাদের মা। :)

একজন বাংলাদেশী রবীন্দ্র-প্রেমিকা হিসেবে আজ আমার পা মাটিতে পড়তেই রাজি নয়! ;)



লেখায় একরাশ মুগ্ধতা অমিয় উজ্জ্বল'দা।

শুভকামনা!

২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:২৪

লেখক বলেছেন: আপনাকে ও ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্টের ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প(তারাম) !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১:৩০



বাইবেল ছুঁয়ে ট্রাম্প শপথ নিয়েই বলেছেন, "ঠিক এ মুহূর্ত থেকে শুরু হল যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণযুগ শুরু হলো"। ওয়াশিংটন ডিসিতে দুপুর বারোটার সময় দুইটি বাইবেল স্পর্শ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের সাইকেল!! :B#

লিখেছেন গেছো দাদা, ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৫৮

সাইকেল চালানো বাংলাদেশ সহ যেকোনও দেশের অর্থব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকারক।

এটা হাস্যকর মনে হলেও কিন্তু চিরসত্য যে
সাইকেল চালানো ব্যক্তি দেশের জন্য একটি বিপদ।
কারণ -
■ সে গাড়ি কেনে না।
■ সে লোন নেয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যেতে নির্বাহী আদেশে ট্রাম্পের সই

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৫০





মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবারের (২০ জানুয়ারি) এই শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদে দেশটির রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসলেন তিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ বালিকা

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:১৮



বৃষ্টি এলে মেঘ বালিকা ভিজতে থাক তুমি
জ্বর না উঠে সেই দিকেতে খানিক খেয়াল রাখ
আকাশ তলে নদীর জলে আনন্দ ঢেউ খেলে
তারাও ভিজে তোমার মত সুখের ভেলায় ভেসে।

প্রসারিত দু’হাত দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গতকাল বিকেল থেকে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমার শুরু করেছে।

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৯



গতকাল ট্রাম্পের শপথের অনুষ্ঠানে ২ লাখ মানুষকে আমন্ত্রণ করে টিকিট দেয়া হয়েছিলো; প্রচন্ড শীতের কারণে বাহিরে শপথ নেয়া সম্ভব হয়নি। পার্লামেন্ট ভবনের ভেতরে শপথ হয়েছিলো, সেখানে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টগণ, বিচারপতিরা,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×