somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ্যান্টি-ম্যাটার এবং এ্যান্টি-ইউনিভার্স-২

২১ শে মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই সিরিজের অন্যান্য পোষ্টগুলো ( , , )

মূল :মিশিও কাকু

বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকের কথা , যখন পদার্থবিদরা অনুধাবন করতে লাগল যে পরমাণু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দিয়ে গঠিত । এই কণা গুলোর মধ্যে ঋণাত্মক চার্জ বিশিষ্ট ইলেকট্রন যা কিনা নিউক্লিয়াস কে কেন্দ্র করে ঘুরে , আর নিউক্লিয়াসে আছে মূলত ধণাত্মক চার্জ বিশিষ্ট প্রোটন এবং চার্জবিহীন নিউট্রন ।
১৯৩০ সালে (পল ডিরাক সর্ব প্রথম ইলেকট্রনের প্রতিকণা পজিট্রনের কথা ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন এবং যা ১৯৩২ সালে অ্যান্ডারসনের পরীক্ষায় আবিষ্কৃত হয় ) বিজ্ঞানীরা খুবই অবাক হয়েছিল যখন তাঁরা জানতে পারল যে প্রতিটি কণাই যমজ শুধু এদের মধ্যে চার্জ বিপরিতমুখী । আর তাই এদের বলা হয় প্রতিকণা (Anti-Particle) ।

সর্ব প্রথম ইলেকট্রনের প্রতিকণা পজিট্রন আবিস্কার হয় যার চার্জ ধণাত্মক । শুধু চার্জ ছাড়া (কণা ও প্রতিকণার মাঝে শুধু একটি মাত্রায় ( Dimension ) পার্থক্য । আর তা হল চতুর্থ মাত্রা সময় । আমরা কণার জগতে যা কিছু দেখছি তারা , অর্থাৎ আমরা সবাই সময়ের যেই দিকে যাচ্ছি প্রতিকণা তার উল্টোদিকে যাচ্ছে ) পজিট্রনের ধর্ম ইলেকট্রনের মত । পজিট্রনের আলোকচিত্র সর্ব প্রথম cloud chamber এ মহা জাগতিক রশ্মি (Cosmic ray) হতে নেওয়া হয় ।

(Cloud chamber এ পজিট্রনের চলাচলের পথ খুব সহজেই দেখা যায় , যখন একটি শক্তিশালী চুম্বক ক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে গামা রশ্মি পাঠানো হয় তখন ইলেকট্রন ও প্রতিকণা পজিট্রনের চলার পথ পরস্পর হতে বিপরীত দিকে বেকে যায় ) ।
১৯৫৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের Particle Accelerator Bevatron (Emilio Segrè ও Owen Chamberlain প্রতিপ্রোটন আবিষ্কার করেন এবং এর জন্য তাঁরা ১৯৫৯ সালে নোবেল পুরস্কার পান ) এর মাধ্যমে সর্ব প্রথম প্রতিপ্রোটন কণা আবিস্কার হয় , আর এই কণার চার্জ (ঋণাত্মক চার্জবাহী) ব্যতিত সব ধর্মই প্রোটনের মত । তাই তাত্ত্বিক ভাবে বলা যায় যে প্রতিপরমাণু বা anti-atom (পজিট্রন , প্রতিপ্রোটন কে কেন্দ্র করে ঘুরবে ) বলে কিছু থাকা সম্ভব । আসলে তাত্ত্বিকভাবে Anti-elements , Anti-Chemistry , Anti-People , Anti-Earth এমনকি Anti-Universe ও থাকা সম্ভব ।
বর্তমানে CERN এবং Farmilab এর বিজ্ঞানীরা বড় বড় দানবীয় Particle Accelerator এর মাধ্যমে প্রতিহাইড্রোজেন (Anti-Hydrogen) সৃষ্টি করতে সমর্থন হয়েছেন । (প্রতিহাইড্রোজেন সৃষ্টির এই পরীক্ষাটি করা হয় উচ্চ শক্তিসম্পন্ন প্রোটনের রশ্মি কে Particle Accelerator এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট লক্ষে আঘাত করা হয় , যার ফলে এক ঝাঁক Sub-atomic particle এর ধ্বংসাবশেষ সৃষ্টি হয় । এরপর শক্তিশালী চুম্বকের সাহায্যে প্রতিপ্রোটন কে আলাদা করে এর বেগ কমানো হয় । আর প্রাকৃতিক ভাবে সোডিয়াম-২২ পরমাণু হতে পজিট্রন বা প্রতিইলেকট্রন নির্গত হয় । এই পজিট্রন যখন প্রতিপ্রোটন কে কেন্দ্র করে ঘুরে তখন প্রতিহাইড্রোজেন বা Anti-Hydrogen এর সৃষ্টি হয় কেননা আমরা জানি যে একটি ইলেকট্রন ও একটি প্রোটন এর মাধ্যমে হাইড্রোজেন পরমানুর সৃষ্টি ) ।
শুদ্ধ বায়ু শূন্যস্থানে এই পরমাণু গুলো চিরস্থায়ী , কিন্তু ঐ স্থানে যদি অল্প কিছু পরিমানও বায়ু থেকে থাকে তাহলে এদের (পরমাণু ও প্রতিপরমানু ) মধ্যে সংঘর্ষ হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে এবং পরে শক্তিতে রুপান্তর হবে ।
১৯৯৫ সালে CERN ইতিহাস রচনা করে , তাঁরা ঘোষণা করে যে ৯ টি প্রতিহাইড্রোজেন বানাতে সক্ষম হয়েছেন । Fermilab এর বিজ্ঞানীরাও বসে ছিলোনা , তাঁরা ১০০ টি প্রতিহাইড্রোজেন বানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল । একমাত্র উৎপাদনের ব্যয় ছাড়া এমন কোন বাধা নাই যা উচ্চতর প্রতিপরমানু ( অর্থাৎ উচ্চতর পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট প্রতিপরমানু ) সৃষ্টিতে বিজ্ঞানীদের দমিয়ে রাখে ।


চলবে…………
.......................................................................................................
মিশিও কাকুর Physics of the impossible বইয়ের ১০ম অধ্যায়টি নিজের ভাষায় লিখার চেষ্টা করেছি ।

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১২ রাত ১২:৩৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অদৃশ্য দোলনায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:৩৮



ভোরের রোদ্র এসে ঘাসের শিশিরে মেঘের দেশে চলে যেতে বলে
শিশির মেঘের দেশে গিয়ে বৃষ্টি হয়ে ঘাসের মাঝে ফিরে আসে-
বৃষ্টি হাসে শিশিরের কথায়। তাহলে আমরা দু’জন কেন প্রিয়?
এক জুটিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লায় দেছে!

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:০৯



আল্লায় দেছে। কথাটার মানে হচ্ছে- আল্লাহ দিয়েছেন।
হ্যা আল্লাহ আমাদের সব দেন। এই দুনিয়ার মালিক আল্লাহ। আল্লাহ আমাদের দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন শুধু মাত্র তার ইবাদত করার জন্য। কিন্তু মানুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪

ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান....

বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। শনিবার (২৯ মার্চ) এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্রঋণ ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনুস: এক নতুন স্টেটসম্যানের উত্থান

লিখেছেন মুনতাসির রাসেল, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ড. মুহাম্মদ ইউনুস ধীরে ধীরে রাজনীতির এক নতুন স্তরে পদার্পণ করছেন—একজন স্টেটসম্যান হিসেবে। তার রাজনৈতিক যাত্রা হয়তো এখনও পূর্ণতা পায়নি, তবে গতিপথ অত্যন্ত সুস্পষ্ট। তার প্রতিটি পদক্ষেপ মেপে মেপে নেয়া,... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর কেমন হলো ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪৮


প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এখনো চীন সফরে রয়েছেন। চীন সফর কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে এক শ্রেনীর মানুষের মধ্যে ব্যাপক হাইপ দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন সাসেক্সফুল সফর আর কোনো দলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×