somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং আমার লেখক হওয়ার গল্প

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



২০০৬ সালে এই ব্লগে প্রথম আসা। একজন জনপ্রিয় ব্লগারের সিআরপি এর ভেলোরী টেলরের জন্য ন্যায্য অধিকারের দাবী নিয়ে জানানো একটি প্রতিবাদী পোস্ট তখন বেশ সাড়া ফেলেছিলো। আজকাল ফেসবুক ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে ভাইরাল শব্দটা খুব বিখ্যাত। এখনকার যুগের সব ভাইরালের বাবা ছিলো সেই পোস্টটি। লেখাটি পড়ে মনে হয়েছিলো আমিও এমন পোস্ট লিখতে পারি। তারপর ২০০৮ সালে সম্ভবত আমার প্রথম ব্লগটি লিখেছিলাম। সেসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, তাই নিজের ছাত্রজীবন নিয়েও মাঝে মাঝে পোস্ট করতাম। দুর্ভাগ্যবশত যেহেতু আমার সেসময়ের বিশ্ববিদ্যালয়টি মিলিটারী শাসিত ছিলো এটা নিয়ে টিপিক্যাল অনেক দেশী মানুষজন বেশ ছোট করে কথা বলতো। বয়স কম, তাই খারাপ লাগতো। আজকে প্রায় ১৫ বছর পরে আমি যখন জার্মানীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকের চেয়ারে বসে এই ব্লগটি লিখছি, তখন তাদেরকে আমি মন থেকেই শুভকামনা জানাতে চাই। তারপর বিডি আর হত্যাকান্ডের সময় আর্মিতে চাকরী করা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভাই খুব হৃদয়বিদারক একটা পোস্ট দিয়েছিলেন যেটা আমি এই ব্লগে শেয়ার করেছিলাম। পোস্টটা পরবর্তীতে পিনড হয়েছিলো। এবং সেখানে আমি আমাদের স্বরুপটা আরো চমৎকারভাবে দেখতে পাই। ক্ষণে ক্ষণে কিভাবে মানুষের অনুভূতি, বিচার করার ক্ষমতা বদলে যেতে পারে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ছিলো সেই পোস্টটি।

তার অনেক অনেকদিন পর আমি আমার প্রথম গল্পটি এখানে লিখাছিলাম - আধ ঘন্টার প্রেম, অতঃপর বিয়ে। আমার আসলে এরপর ব্লগের প্রতি ধারণাটা অনেক বদলে গেলো। সেসময় মাসে, দুমাসে একটা হলেও আমার লেখা প্রকাশ করতাম। এবং পাঠক হিসেবে যাদেরকে পেয়েছি, এরা বাংলাদেশের সবচেয়ে এলিট এবং সুন্দর মনের পাঠক। আমার আগের ব্লগপোস্টগুলোতে যে নিম্ন রুচির পরিচয় পেয়েছিলাম, লেখালিখি প্রকাশের পর তার আর দেখা পায়নি। এখন তো অনেকেই ফেসবুকে যা মনে আসে, রুচিকর অরুচিকর যা খুশি লিখে বেড়ায়। কিন্তু সেসময় এই ব্লগটা ছিলো একটা এলিট প্ল্যাটফর্ম এবং যারা এখানে লেখালিখি করতো তারা কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা ভাইরাল হওয়ার ধান্দায় লিখতোনা। সেই মানুষগুলোর জন্য শ্রদ্ধা। সাথে কৃতজ্ঞতা এই ব্লগের প্রতি এমন একটা প্ল্যাটফর্ম আমার মত এমন উঠতি লেখকদের দেয়ার জন্য।

আজকে এতোকিছু লিখলাম, এর কারণ আমার প্রথম বই "দেখা অদেখা" এবার উপকথা প্রকাশন থেকে বইমেলায় এসেছে। এতো বছরে প্রকাশক থেকে শুরু করে অনেক সুপ্রিয় পাঠক আমাকে জিজ্ঞেসা করেছেন, বই প্রকাশ করছিনা কেন? তাদের প্রতি প্রথমত কৃতজ্ঞতা। আসলে গবেষণা এবং উচ্চশিক্ষার ফাকে সময় বের করাটা খুব কঠিন। আমার মতো যারা এই পেশায় আছেন তারা হয়তো বুঝবেন। তাছাড়া ব্যক্তিগত জীবনের ব্যস্ততা তো ছিলোই। তবুও নতুন পুরনো কিছু লেখার সম্মিলনে বইটি প্রকাশ করেই ফেললাম। সেইসময়ের যে পাঠকেরা আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন, বই এর কথা জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য এই বইটি।

বহু বছর হলো বাংলাদেশে যাইনা, এক প্রকার ক্ষোভ থেকেই যাইনা। দেশেও কেউ নেই তেমন। আমি জানি দেশের মানুষ আরো বদলে গেছে। এখন টিকটক, ফেসবুক রীল, ভ্লগ আরো কি কি যেন এসেছে। আমি সেগুলো ওভাবে বুঝিনা, বা বোঝার সময়ও পাইনা। কিন্তু একটা ব্যাপার বেশ ভালোই বুঝি। যেই সুন্দর মনের পাঠকেরা আমাদের মত অধম লেখকদের লেখাকে ভালোবাসতেন তারা হয়তো এখানেই কোথাও না কোথাও আছেন। আমার প্রকাশিত বইটি কিনতে হবেনা, শুধু একবার ধরে কয়েকটা লাইন পড়লেই আমি কৃতজ্ঞ থাকবো। একজীবনে আপনার ভালোবাসা শোধ করা সম্ভব বলে আমি মনে করিনা।


ভালো থাকুন, শুভকামনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৌলবাদ: ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যর্থ প্রযুক্তি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫১




মজার বিষয়—

আজকের মৌলবাদীরা রোকেয়া বেগমকে মুরতাদ ঘোষণা করে বুক ফুলিয়ে হাঁটে, অথচ নিজেদের অস্তিত্ব টিকেই আছে যাদের ঘৃণা করে— সেই “কাফেরদের” বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে। ইতিহাস পড়লে এদের বুকফুলা হাওয়া বের... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতী এখন পুরোপুরিভাবে নেতৃত্বহীন ও বিশৃংখল।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩



শেরে বাংলার নিজস্ব দল ছিলো, কৃষক প্রজা পার্টি; তিনি সেই দলের নেতা ছিলেন। একই সময়ে, তিনি পুরো বাংগালী জাতির নেতা ছিলেন, সব দলের মানুষ উনাকে সন্মান করতেন। মওলানাও জাতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট

লিখেছেন আরোগ্য, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৬



ওসমান হাদী অন্যতম জুলাই যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, স্পষ্টবাদী কণ্ঠ, প্রতিবাদী চেতনা লালনকারী, ঢাকা ৮ নং আসনের নির্বাচন প্রার্থী আজ জুমুআর নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর গুলিবিদ্ধ হয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×