কখনো কখনো খুব একা সময়ে মনেপড়ে যায় পুরোনো কোন অলস দুপুরের অখন্ড অবসর। বিছানায় শুয়ে লাকী আলীর গান...... হঠাৎ ঠেলে বাইরে পাঠিয়ে দেয় আমাকে। কিন্তু সময়ের আবর্তে পণ্যটি পুরোনো হয়ে যাওয়ায় খুঁজে পাইনা হারিয়ে ফেলা লাকী আলীকে। সময় এখন অন্য সুরে মোহিত করতে চায়, আবেশিত করতে চায়। আমি মোহিত হইনা, আবেশিত হইনা। এখনো তিন গোয়েন্দা পড়ি। পড়ে ভাল লাগে তা নয়। পড়ে পুরোনো ভাল লাগারা জেগে ওঠে বলে পড়ি। পুরোনো আবেগের এসব অনুভূতিকে ফিরে পেতে চেয়ে অবাক বিস্ময়ে দেখি, অনেক অনেক পেছনে পড়ে আছে পুরোনো সময়টার শেষ সীমানা! নির্মম সময় আমাকে নতুন আবেগের বশবর্তী করতে চায়, কিন্তু আমার আবেগ শুধু স্মৃতি কাতর হয়ে পড়ে।
পুরোনো চেনা রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে সেই আগের আমেজটা পাই না। পুরোনো আড্ডার জায়গাটা আর পুরোনো নেই। সব নতুন হয়ে গেছে, খালি আমি নতুন হতে পারলাম না! দুপুরের রোদে কখনো কখনো হাঁটতে বেরিয়ে চেনা গন্ধ খুঁজে পাই। পরে বুঝি, সবই ধোঁকা। পথে-পথে, মোড়ে-মোড়ে মানুষের মুখে-মুখে কোন পুরোনো মুখের অবয়ব মেলাতে চাই। মানুষের মুখও কি বদলে গেছে?
তবু রাস্তায় কেমন যেন একটা স্বস্তি বোধ কাজ করে। অচেনা মানুষের মুখ আসলে পুরোনো হয়ে হারিয়ে যায় না। সময়ের আবর্তে কখনো স্মৃতি কাতরতায় ভোগায় না। সেই জন্যেই বোধহয়! কিন্তু আবারো চেনা মুখের খোঁজ চলে, আবারো ঘরে ফেরা হয়।
ব্লগে একটা বছর পার করে আবার এখন একটা মাসও পার করে ফেলেছি। শুরুতে নামটা, পরে প্রোফাইল পিকটা ব্লগার তালিকায় নিচের দিকে ঘোরাঘুরি করত। এখন মাঝামাঝিরও ওপরে। কখনো কখনো প্রথম তিন সারিতেও আমাকে দেখা যায়! সময় আমাকে আরও এক বছরের পুরোনো করে দিল! যখন তালিকার নিচের দিকে থাকতাম, ভাবতাম ওপরেতো কোনদিনও ওঠা হবে না আমাদের! এখন মনে হয় একটু বোধহয় বেশিই উপরে চলে এসেছি! এখন অনেক সহব্লগারই আর ব্লগে নেই। অনেকেই আর নিয়মিত নেই। আর অনেকেই আবার যাই যাই করছেন। অনেক সহব্লগারের ভীড়েও তাই হঠাৎই কেন যেন নিজেকে একা একা মনে হয়। তাই আমিও বোধহয় অনিয়মিত হয়ে পড়ছি দিনে দিনে।
এক বছর এক-দুই মাস করে করে আবারো এগিয়ে চলেছি দুই বছরের দিকে। আরো পুরোনো হয়ে যাচ্ছি। আমার পুরোনো হতে ভাল লাগছে না! মাত্র এক বছরেই আমরা কত বুড়িয়ে যাই!