হঠাৎ খবরের পাতায় চলে এল ছেলেটা! জীবনকে ধারন করতে হয়, ধারন করা যায়, সেটা জানার আগেই চলে এল। কারণ, সে ছোটবেলা থেকেই শিখে এসেছে, কাঁধে ঝোলানো কালাশনিকভের নল ধরে বেরিয়ে যাওয়া সীসার টুকরো দিয়ে জীবন কেড়ে নেবার বিদ্যে। সেও নাহয় সয়েই নিলাম! তাই বলে স্বপ্নহীন আত্মঘাতি হবে সে? নিজেকে ঠিক কতটা অপ্রয়োজনীয় ভাবতে শেখে একজন স্বাভাবিক মানুষ? কতটা অপ্রয়োজনীয় ভাবলে নিজের স্বপ্নগুলোকে একবারো যাচাই না করেই হতাশ নিজকে সঁপেদেয় কতগুলো আধুনিক নপুংসকের হাতে? যে মানুষ কখনোই পরাজিত হবার সুযোগ পায়নি, সে কি করে মৃত্যুতে বিজয় খোঁজে? মূর্খের মত কাগজে মুখগুঁজে নিরর্থক অক্ষরের কালির গন্ধ নিতে থাকি, হয়তো কোন অনাকাঙ্খিত অর্থ বয়ে আনবে সেই আশায়!
হঠাৎ পেছনে ফাস্টফুডের দোকানের কাঁচে টক টক শব্দে ফিরে তাকাই। একটা ছেলে! বোঝার জন্য দোকানের ভেতরে তাকাই। দোকানির কাছে একটা আধ খাওয়া রোলের জন্য আবদার! বোধহয় মূল্যহীন বলেই রোলটা চলে এল ছেলেটার হাতে। বাইরে রোলে ভাগ বসানোর ছেলে মেয়ের অভাব নেই। সুতরাং কাড়া কাড়ি! অবশেষে ড্রেনের পানিতে পতন। ভাবলাম, এবার হয়তো একটা রোলের স্বপ্ন পানিতেই বিকোবে! আবারো মূর্খের মত তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম, নতুন করে শিখলাম, স্বপ্নের কোন সীমা থাকতে পারে না! রোলটা উঠে এল আবার ছেলেটার হাতে! এইতো শ্রেণী সংগ্রাম! এইতো লড়াই! এইতো পাল্টে দেবার বীজ! বেঁচে থাকার স্বপ্ন তো এভাবেই বেঁচে থাকে! এই পুঞ্জীভূত ক্ষোভেরই তো একদিন বিষ্ফোরণ ঘটানোর কথা! বয়ে আনার কথা মুক্তির স্রোত! তবে খবরের কাগজে এ কি দেখলাম?
আবার তাকালাম খবরের কাগজের ছেলেটার দিকে। জন্মথেকেই সে শিখে এসেছে মৃত্যুকে! পাখি, ফুল, নীল আকাশকে ঢেকে রাখা সাদা মেঘ, মাটিকে বেঁধেরাখা সবুজের সমারোহ যে সুন্দরকে ধরে রাখে, তা বোঝার অনুভূতিকেও তোরা নপুংসকেরা কেড়ে নিলি?
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:০৬