আমি যখন স্কুলে পড়ি তখন থেকেই আমি লক্ষ্য করেছি যে আমার মতের সাথে বেশির ভাগ মানুষের মতের সাথে মিলে না। তো এই সমস্যার কারনে আমি বেশির ভাগ সময় আমার চিন্তু ভাবনা গুলো শেয়ার করি না। তারপরে-ও মাঝে মাঝে না করে পারি না। যেমন প্রত্যেক বছর যখন রেজাল্ট প্রকাশ হয় আমি আতঙ্কিত অনুভব করি। সে ঘটনা-ই আজ বলতে চাই।
সে অনেক অনেক দিন আগের কথা, জানুয়ারি মাসের ১ম সপ্তাহ ২০১১ সাল। আমাকে বলা হল ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার ভাইভা তে থাকতে। যাই হোক আমার ভাইভা নিতে ভালো-ই লাগে।বলা হলো আমি ওদের মার্ক সিট দেখে মন্তব্য করব ঠিক আছে কিনা। তো এক ছেলে রুমে ঢুকল:
আমি: বোস।
ছাত্র : বসল।
আমি: তোমার রেজাল্ট তো ভালো। ৪.৭৫ (সম্ভবত) ম্যাথ এবং কেমিস্ট্রিতে ৫.০।
হেড স্যার: Translate "আমি ইন্জিনিয়ার হতে চাই"
ছাত্র: I .......... I............ I .
হেড স্যার: আচ্ছা এই ইংরেজি পত্রিকাটা পড়।
ছাত্র: (অনেক চেষ্টা করে ১ লাইন পড়ার পর) স্যার লেখা অনেক ছোট।
আমি : আচ্ছা তোমাকে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করব তুমি বল।
ছাত্র: (চুপ) ................................
আমি: আচ্ছা তুমি যেহেতু ম্যাথ এ খুব ভাল তাহলে ম্যাথ নিয়েই প্রশ্ন করি। একটা বৃত্তের সমীকরন বল।
ছাত্র: (চুপ) ................................
আমি: তুমি তো ম্যাথ এ ৫.০ পেয়েছো। এটা পারছো না কেন? ম্যাথ এর কোন চ্যাপ্টার থেকে প্রশ্ন করলে পারবে?
ছাত্র: (চুপ) ................................
আমি: আচ্ছা যে অধ্যায় গুলো পরেছো সেখান থেকে কয়েকটা অধ্যায়ের নাম বল।
ছাত্র: (চুপ) ................................
আমি: খুবই অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম ম্যাথ বই কয়েকটার নাম বলতে পারবা।
ছাত্র: (অনেকক্ষন পর) ................................... এস. ইউ. আহাম্মদ।
আমি: আচ্ছা তুমি ৫. কিভাবে পেয়েছো ম্যাথ - এ। তোমার পরীক্ষা কি অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছে?
ছাত্র: (চুপ) ................................স্যার আমি আজ-কে একটু অসুস্থ তাই প্রিপারেশন নিতে পারি নাই।
আমি: আচ্ছা তুমিতো কেমিস্ট্রি-তে ভাল গ্রেড পেয়েছো তাহলে কয়েকটি এসিডের নাম বল।
ছাত্র: (চুপ) ................................
আমি: আচ্ছা কয়েকটি লবনের নাম বল?
ছাত্র: (চুপ) ................................
আমি: আচ্ছা হাইড্রোক্লোরিক এসিড কি এসিড নাকি লবণ?
ছাত্র: (চুপ) ................................
আমি: স্যার আমার আর কিছু জিজ্ঞাসা করার নাই।
হেড স্যার: আচ্ছা তুমি যাও।
ছাত্র চলে যাবার পর:
হেড স্যার: কি করব একে রাখব নাকি বাদ দিব।
আমি: স্যার একে বাদ না দেয়ার কি কারন আছে?
হেড স্যার: রেজাল্ট তো ভালই।
আমি: স্যার আমি বাদ দেয়ার পক্ষে, আপনি যেটা ভালো মনে করেন সেটা করতে পারেন।
এরকম আরও অনেক মজার অভিজ্ঞতা হল:
যেমন একজনকে জিজ্ঞাসা করা হল: কয়েকটি লবনের নাম বল
ছাত্র: মোল্লা, পূবালি, এ.সি.আই.
আরেকজনকে সরলরেখার ঢাল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করায় সে যা বলল তাতে আমি বাকরুদ্ধ। এরকম আরো অনেক আছে। আমি আর এখন ভাইভার সময় হলেই পালায়ে থাকি।
যাই হোক এ থেকে আমি যা বলতে চাই আগে রেজাল্ট থেকে অনেক কিছু প্রেডিক্ট করা যেত। আর এখন অনেক ভাল একটা স্টুডেন্ট আর অনেক নিম্নমানের স্টুডেন্ট একই গ্রেড পাচ্ছে।
তো লাভ কি এই রকম গ্রেড পেয়ে বা দিয়ে।
গ্রেডিং দিয়ে যদি ভালো আর খারাপ আলাদা -ই না করা যায় তাহলে এটা কেমন গ্রেডিং হইল?
যার ফল হিসেবে সেদিন যা হল একটা সেকশন -এ ঐকিক নিয়ম নতুন করে বোঝাতে হল। আমি যে কোথায় পালাব সেটাই ভাবছি !!!!!!!!!!!!