somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাকে ভালবাসি বাবাকে ইচ্ছে করে না

২৮ শে জুন, ২০০৭ দুপুর ২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোন এক শুক্রবারে আমার জন্ম, তাই বোধ করি শুক্রবারে নামাজ পড়তে যাবার ব্যাপারে আমার সব সময় অনীহা, কারন হচ্ছে এই দিন আমি যেন কোন কিছুই ঠিক মিলাতে পারি না। সবাই বলে শনিবার দিন খারাপ, কিন্তু আমার তো জন্মদিনটাই খারাপ। হয়ত আমার পিতা দায়ী। কারন উনি আমার জন্মদাতা।

আমার বাবা রাগী, উনি নিজে যা ভালো বোঝেন তাই করেন। কখনো দেখিনি আমার পড়ালেখার ব্যাপারে খবর নিতে,কখনো দেখিনি আমাকে স্কুলে নিয়ে যেতে, কখনো তার পিঠে চড়তে পারিনি। কোন খেলনা পাইনি ছোটবেলায়, আর সবাইকে দেখতাম ৫ টাকার খেলনা হলেও হাতে থাকতো। স্কুলের গন্ডি পেরুতেই আমার মাঝে ক্রমশ পরিবর্তন আসলো, আমি আর উনাকে তোয়াক্কা করলাম না, তখন আমার মাকে সবচাইতে বেশি ভালবাসতাম, মা ছিলেন আমার সব। বাবাকে ক্রমশ দুরে ঠেলে দিচ্ছি এটা উনি বুঝতেই পারতেন না। আমি ও অতো মাথা ঘামাইনি। অস্টম শ্রেণীতে এসে একবার স্কুল পালিয়ে বাসায় চলে এসেছিলাম, ধরা খাওয়ার পর মাস্টার বললো তোমার অভিভাবকের বন্ড সই লাগবে(কারন সেটাই ছিল আমার শেষ সুযোগ ছাড়া পাবার)। বল্লাম আমার মাকে আনলে হবে, উনি বললেন না। পরে বল্লাম যদি কারো বাবা মৃত হন, তবে? আমার ক্লাসের বন্ধুরা সবাই থ হয়ে গিয়েছিল।

মাধ্যমিক পরীক্ষা দেব। মা খুবই টেনশনে আছেন। আমি বল্লাম আমি ভাল পরীক্ষা দেব, তুমি চিন্তা করো না। পরীক্ষা হলে গিয়ে দেখলাম সবার বাবা রা এসে সবাই কে সাহস দিচ্ছে, আর আমার বাবা তখন কোথাও কোন দেশে হয়ত পড়ে আছেন, হয়ত কোন ক্লায়েন্ট কে বোঝাচ্ছে কোম্পানীর পণ্যর গুণাবলী। পরীক্ষা দিলাম। ভাল পাশ ও করলাম। একদিন মায়ের মুখে শুনলাম আমার বাবা নাকি আমার এই পাশে খুশি হয়ে আমাকে ১০০০০ টাকা দিয়েছেন। থিক্কার এমন টাকায়। বাবার মমতা পাইনি পাশ করার পর টাকা দিয়ে কি হবে।

কলেজের গন্ডিতে আসলাম। নতুন সব কিছু নতুন বন্ধু। গাড়ী করে কলেজে যাবার জন্য মা সব সময় চাপ দিত, কিন্তু আমি কখনোই তা ব্যবহার করি নি। সেই বন্ধুদের সাথে রিক্সায় করে ভাড়া শেয়ার করে গিয়েছি। গাড়ী ব্যবহার না করাতে বাবা খুবই রাগ হলেন। মাকে যা ইচ্ছে তা বল্লেন। রাগে দু:খে ঘর ছাড়লাম। অনেকদিন যাইনি, বাবাও আমাকে খোজেন নি। আমার মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে আবার ফিরে এলাম। কলেজ শেষ আমি যেন আস্তে আস্তে নিজের পরিধিকে ছাড়িয়ে যাচ্ছি।

কখনো খাবার টেবিলে এক সাথ হয়নি। কখনো তার সাথে বাইরে যাইনি। তাকে বাবা বলে কবে ডেকেছি ভুলে গেছি। অনেকটা সময় পার করেছি এখনো পড়ালেখা করছি, তবু তার সাথের আগের সর্ম্পকটা রয়ে গেছে।

মাকে প্রচন্ড ভালবাসি। তাকে আমার সকল দু:খ রাগ, অভিমান, সুখ সবি বলি, আমার মা আমাকে লুকিয়েও বাবার সাথে আমার মিল রাখতে চায়, ফোন করলেই বলে এই তো সেদিন তোর বাবা তোর কথা বলছিল। আমি মনে মনে বলি আহারে পাগলি, তোমার ছোট্ট ছেলেটা অনেক বড় হয়েছে এখন সে তোমার মন ভোলানো কথার সবই বুঝে।

চলছে এমনি। বাবার দীত্বিয় সংসারের খবর জানলাম কিছুদিন আগে। তেমন কোন অবাক হইনি। যে ভয়টা অনেক বছর ধরে ছিল তাই সত্যতে প্রকাশ পেয়েছে। আমার মা মেনে নিয়েছে, বাবাকে বেশি ভালবাসে তো তাই মেনে নিয়েছে সকল অন্যায়। আমিও তেমন কষ্ট পাইনি। শুধুই বলতে চেয়েছিলাম এমন কাপুরুষ কেন বাবা তুমি? সত্যটুকু আরো অগেই বলতে, তা হলে দু:খটা বোধ করি এতদিনে সয়ে যেত।

তাই তো মাকে ভালবাসি, বাবাকে ভালবাসা নয় ধিক্কার দিতেও ইচ্ছে হয়না....
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০০৭ দুপুর ২:১৯
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

১. ২৮ শে জুন, ২০০৭ দুপুর ২:৩৯

মদন বলেছেন: কি মন্তব্য লিখবো?

আল্লাহ আপনাকে আরো ধৈর্য্য দিন এবং ভাল রাখুন।

২. ২৮ শে জুন, ২০০৭ দুপুর ২:৪৪

অবরজ বলেছেন: আল্লাহ পাক আমাকে ধৈর্য্য দিয়েছেন, তাদের জন্য ও দোয়া করুন যাদের পরিস্থিতিটা আসলেই এরকম

৩. ২৮ শে জুন, ২০০৭ বিকাল ৫:০৭

তেলাপোকা বলেছেন: হুমমম

আমার বাবাটা অবশ্য উল্টো। বরাবর মনে হয়েছে আপনার বাবার মত উনি যদি রাগী হতেন তাহলে ভালো হতো বুঝি।



বাবাকে ঘৃনা করিনা, হয়তো ভালোও বাসিনা, যদিও উনি সন্তানদের জন্য অনেক কিছুই করেছেন। তবে, মা'কে আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসি।

৪. ২৮ শে জুন, ২০০৭ বিকাল ৫:২০

শাওন বলেছেন: কষ্ট টা কাটিয়ে উঠুন। আর কিছুই বলার নেই ।

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

১৯৭২-এর স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র ২০২৪-এর অর্জন না

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৩৯


৭২-এর রক্তস্নাত সংবিধান বাতিল করে । নিজেদের আদর্শের সংবিধান রচনা করতে চায় এরা‼️বাংলাদেশের পতাকা বদলে দিতে চায়! বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ভালো লাগেনা এদের!জাতিয় শ্লোগানে গায়ে ফোস্কা পরা প্রজন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০০

প্রতিযোগিতার এই দুনিয়ায় এখন আর কেউ নিজের মতো হতে চাই না, হতে চাই বিশ্ববরেণ্যদের মতো। শিশুকাল থেকেই শুরু হয় প্রতিযোগিতা। সব ছাত্রদের মাথায় জিপিএ ৫, গোল্ডেন পেতে হবে! সবাইকেই ডাক্তার,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। এইচএমপিভি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৩




করোনা মহামারির ৫ বছরের মাথায় নতুন একটি ভাইরাসের উত্থান ঘটেছে চীনে। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভি নামের নতুন এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে দেশটিতে।চীনের সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাকিস্তান, আমেরিকা, জামাত-শিবির আমাদেরকে "ব্যর্থ জাতিতে" পরিণত করেছে।

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৭



আজকে সময় হয়েছে, আমেরিকান দুতাবাসের সামনে গিয়ে বলার, "তোরা চলে যা, ট্রাম্পের অধীনে ভালো থাক, আমরা যেভাবে পারি নিজের দেশ নিজেরা গড়বো। চলে যাবার আগে তোদের পাকী... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হয়তো কখনো আমরা প্রেমে পড়বো=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:০০


পোস্ট দিছি ২২/১২/২১

©কাজী ফাতেমা ছবি

কোন এক সময় হয়তো প্রেমে পড়বো আমরা
তখন সময় আমাদের নিয়ে যাবে বুড়ো বেলা,
শরীরের জোর হারিয়ে একে অন্যের প্রেমে না পড়েই বা কী;
তখন সময় আমাদের শেখাবে বিষণ্ণতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×