আজ ২০১২ ইং অব্দের জুলাই মাসের ৬ তারিখ মঙ্গলবার পবিত্র শবই বরাত এর দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি স্বর্ণালী দিন। এই দিন বাংলাদেশের এক মহান নেত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী একটি অমূল্য বাণী প্রদান করেছেন । তিনি বলেছেন "বিশ্বব্যাংক টাকা দেয় নাই, তাতে কী হয়েছে? আমরা আমাদের নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করব। দরকার হলে এক বেলা বাজার করব না।’

তার এই বাণী শুনে হতাশা অপমানে জর্জরিত জাতি ফুসে উঠেছে। চারিদিক হাহাকারে মূর্ত হয়ে উঠা জাতি এখন মুখের ভাষা খুজে পেয়েছ। কৃষক, শ্রমিক, ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, ব্যাবসায়ী, সেনাবাহিনী চোর, গুন্ডা, বদমাশ, পকেটমার, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামীলীগ, বিএনপি মানে পুরো জাতি সবাই আজ এক কাতারে শামিল হয়ে গেছে - তারা সবাই একবেলা কিছু না করে পদ্মা সেতু তৈরী করতে চাচ্ছে। এতদিন জাতির সাথে বেঈমানী করতে থাকা ড: ইউনুস পর্যন্ত তার নোবেল বিজয়ের প্রাইজমানী দান করতে রাজি হয়েছেন পদ্মা সেতু বানানোর এই বিশাল কর্মযজ্ঞে। ইতিমধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ সততার সার্টিফিকেটধারী সৈয়দ আবুল হোসেন সেনাপতিত্ব গ্রহণ করেছেন এই নয়া যুদ্ধের। তিনি বলেছেন, বিশ্বব্যাংক তার এবং তার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিতে যে কলঙ্ক লেপন করেছে তা সে চেছে তুলে ফেলবেন। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনী মাওয়া পয়েন্টে রওনা হয়ে গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে তারা পূর্ন রণসজ্জায় সজ্জিত ।
তবে অপমানিত, লজ্জিত এই জাতি যে কতটা ক্ষুব্ধ তা বুঝা যাচ্ছে আজকে তাদের আচরণে। এমনিতেই মন্ত্রী সাজেদা চৌধুরীর ডাকে সব সাধারণ মানুষ একবেলা বাজার করেনি। কিন্তু তাতে কি!! বাজারে এর জন্য কোন তরিতরকারী বা মাছ বিক্রেতাকে আফসোস করতে দেখা যায়নি, কোন মুদি দোকানদারকে হতাশ হয়ে দোকানে বসে থাকতে দেখা যায়নি। কারণ তারা নিজেরাই আজকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে আজ তারা কোন বিকিকিনি করবেননা। ভাগ্য ভাল জণতা আজ বাজারে যায়নি! বাজারে গেলে নির্ঘাত তারা ডজ খেয়ে বাসায় ফিরতেন


ওদিকে ইন্জিনিয়াররা ঠিক করেছিলেন আজকে তারা সাইডে যাবেননা। এবং একইভাবে ঠিকাদাররাও আগেই ঠিক করেছিলেন তারা কোন মাল সাপ্লাই দিবেননা। তো কি হয়েছে!! রাজমিস্ত্রিরাও আজ বাসায় বসে থেকে তাদের ইনকাম পদ্মা সেতু ফান্ডে দিয়েছেন। শোনা গেছে নির্মাণ সেক্টরে এর ফলে কোন অস্থিরতা দেখা দেয়নি।
এদিকে ডাক্তাররা ঠিক করেছিলেন যে আজকে কোন রোগী দেখবেননা এবং অবশ্যই নার্সরাও তাদের ফলো করেছিলেন। তো হয়েছে কি!!! রোগীদের কিন্তু হাসপাতালে ভীড় করতে দেখা যায়নি। তারা একদিন চিকিৎসাসেবা না নিয়ে তা পদ্মা সেতু ফান্ডে দিয়েছেন। ভাবা যায়!! কতটা ঐক্যবদ্ধ জাতি আজ আমরা!!



ঐদিকে দেশের কোথাও আজ কোন ফুলিশ দেখা যাচ্ছেনা। তো কি হয়েছে!!! কোন চোর-ডাকাতও কিন্তু বাইরে নেই। সবাই আজ একবেলা কর্মবিরতি পালন করে পদ্মা সেতুর নির্মাণ তহ্বিলে কন্ট্রিবিউট করছেন। এর ফলে একটা চুরির ঘটনাও ঘটেনি বাংলাদেশে।


পুরো দেশ আজ একবেলা কিছু না কিছু করে পদ্মা সেতুতে অবদান রেখে চলছে। দেশের মানুষের এই ইউনিটি সত্যিই অবাক করার মত কিন্তু কোনভাবেই অবাস্তব কোন জিনিস নয়। আমরা জানতাম জাতি একদিন এমনভাবে ঠিকই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের সম্মান রক্ষার্থে ইস্পাতদৃঢ় মনোবল নিয়ে এগিয়ে আসবে। সত্যিই এই দেশে জন্মে আজ আমি গর্বিত বোধ করছি। জন্ম আজ আমার স্বার্থক হল।



খবর এক মাস পর:
আজকে একটা ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গেছে বাংলাদেশে। দেশের সব বিবাহিত সন্তান ধারণে সক্ষম নারী প্রেগনেন্সি টেস্টে পজিটিভ




নিজের কথা:
এই লেখাটা লিখতে গিয়ে আমার খুব খারাপ লাগলেও করার আসলে কিছুই ছিলনা। এখানে সবার প্রেগনেন্ট হয়ে যাওয়াটা আসলে একটা রূপকের আড়ালে একটা ভয়ঙ্কর সত্য। আমরা আসলে এভাবেই আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের হাতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সমস্যা গর্ভধারণ করে যাচ্ছি - নারী-পুরুষ নির্বিশেষে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩১