•
ব্লাক সোয়ান
আস্তিনের মর্মস্থলে ধারনককৃত হৃদপিন্ডে স্বয়ংপ্রভ সংবেদনগুলো
কথা বলে উঠলে অদৃশ্য মখমল ডানায় অনুভূত অহমের শিহরন,
বাতাসের কক্ষপথে অন্তর্গত ত্রাসের আয়োজন, মঞ্চের কৃষ্ণত্ব
দুরন্ত ব্যালেরিনার মাসকারঘন নয়নে বিলীয়মান ।
বৃত্তচাপগুলো সিফনকাপড়ে মলাটবন্দী, দুপায়ের মুদ্রায়
পৃথিবীকে ছুঁয়ে নির্ভুল উদ্বাহু বলাকার কালোভ্রমরের গুঞ্জনে
ছায়ালোকের আঁধারভ্রমন, যেন প্রলয়ঙ্করী সরোদের মৌনসুরে
জলের সমতলে ভাষমান ব্লাক সোয়ান ।
গ্রীবার উচ্চতায় ব্যক্তিগত ধ্বংসের কুজন, কাঁপানো কণ্ঠস্বরে
অন্তিম সংগীত ছড়িয়ে যায় ছাড়িয়ে তৃণাঙ্গন, ঝিলের ওপাড়ে
সাঁঝের মায়ায় নার্সিসাসের হলুদ হৃদয়ে বাজে ধ্বংসের নিনাদ ।
আকাশবিস্তীর্ণ শূন্যতা নিয়ে ঝিমিয়ে পড়া লাটিমের মত
নৃত্যনাট্যের অন্তিম যবনিকায় নেমে আসে মৃত্যুর পুর্নতা,
প্রসারিত বাহুলতার ক্রিস্টাল মূহুর্ত থমকে যায় কাঁচের বুদবুদে ।
[অনুপ্রেরনা ব্লাক সোয়ান(২০১১) মুভি]
•
নীলিমাকে
ধুঁয়াধারে মিশে থাকা চোখের পাতায় ঘনঘোর অবসাদ,
করোটিতে আসন পেতে বসে আছে দুধসরে বোনা উদার বনেট,
যেন ভ্যানিলা ফ্লেভারের হিমসরে গাঁথা; বায়ুকোষে এক চিলতে রোদের ঘ্রান ।
দৃশ্যদিগন্তের বুকের মাঝে মখমল পয়োধর, ভেজা ভেজা পেঁজাতুলা,
যুবতী নীলিমার কপালে রংধনুর টিপ, সিথিতে সিঁদুর-সন্ধা ।
•
মৃত্যু-২
রৌরব পুঁজারী ঘন্টা বাজায় বিধায়কের নির্দেশে,
অশ্বক্ষুরের ক্ষীপ্রতায় বার্তাবাহী দূত প্রবলবেগে ছুটে আসে
জীবনের সবুজ প্রান্তরে, কার্নিশে ঝিমাতে থাকা
কালো বেড়ালের অনুভবে হিমশীতল স্পর্ষ ।
অন্ধকার করিডোরের পথ ধরে আসে
দীর্ঘ হাতলের কাস্তেধারী ঘোড়াসওয়ারী,
রাত বিলাসী বাদুরের ডানার ঝাপটায় অশনি সংকেত ।
মৃতালয়ের ডাক শুনে পূর্ণিমার চাঁদের গ্রাসে
ঘনায় ঘনঘোর অমাবস্যা ।
রক্তফেনামাখা কাস্তের ধারে নিশ্বাষ ফেলে করোটি,
সোনালি বরণ হলুদিয়া পাখি নিড়ে ফিরে গেলে
গোধুলি সন্ধ্যায় রচিত হয় অন্তহীনের উপাখ্যান,
শুয়োপোকা শরীরে কালো পাখনা ধারন করে
জন্ম নেয় কাল প্রজাপতি ।
মৃতমরুর নৈঃশব্দে বালুকনাগুলোর বাঁকাচিত্তের ভাজে ভাজে
লুকিয়ে আছে জীবনের অবসাদ, তার বুকের জমীনে
স্তব্ধতার চাষবাদ ।
•
একটি প্রবাহ চিত্রকল্প দর্শন
তুষারসফেদ গোরস্থানের সুনসান নিরবতায়
সদর্প পদক্ষেপে সরীসৃপের বেগে
বিষন্নতায় ভোগা কচুরিপানার বিচ্ছিন্নতাবোধে
আলোকলতার আকর্ষির মত বুকে হেঁটে আসে;
কিংবা,
দুপায়ের শীর্ষে নৈঃশব্দ্যের পাঠশালায়
দুরন্ত ব্যালেরিনার মত নির্বিঘ্ন পৃথিবী শাষন ।
অতপর,
বিষাদগ্রস্থ মেঘের কাফনে ঢাকা পড়ে
সাড়ে তিনহাত সুর্যাস্তের জমীন ।
•
মাশরুম মেঘ
সূর্যাস্তের কাছাকাছি কোন এক রেস্তোরাঁয়
আততায়ীর অতিসুখাবিষ্টতায় গোলাপি মাশরুম পরিবেশিত হলে
অদ্ভুত পাঁপড়ি মেলে বেড়ে উঠে গগনচারী মেঘের প্যারাসুট;
কান্ড বেয়ে নেমে আসে অবাধ্য শর্করা-আমিষ,
অবধারিত ধ্বংসের বীজ ।
মাশরুমের অবগুণ্ঠন উন্মোচন হলে
ল্যাণ্ডস্কেপ জুড়ে বিচরন করে ক্ষীণকায় চতুর্থ ঘোড়ার সওয়ারী,
লম্বা হাতলের কাস্তেধারী সে আততায়ীর প্রজাপতিহনন শেষে
থেমে যায় নর্তকীর ঘুঙ্গু্র;
মুহুর্তেই বর্তুলাকার রক্তমেঘে ছেয়ে যায় আকাশ,
মেঘগুলো ক্রমশ কালো হয়ে এলে নেমে আসে হিমসন্ধ্যা ।
বনসাই পরমানু্র নির্মম রসায়নের বিকিরন ছড়িয়ে পড়লে
স্মোকস্ক্রিনের ক্যামোফ্লেজে কাতরাতে থাকে মানবতা,
পুড়ে যাওয়া দগ্ধদেহ আর মানবিক চোখগুলোতে
ভয়বিহ্বল অবিশ্বাসী আলো,
স্তম্ভিত অনুভুতি;
মৃত্যুর অন্ধকূপে ভুমিস্পর্ষী কান্ডের নিচে
শান্তিকামী গিনিপিগগুলোর
শরীরের সব হাড়ের জ্বলন্ত অঙ্গারে নৃশংস পোড়াগন্ধ ।
মাশরুম আজকাল প্রচন্ড অমানবিক ।
==========
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৪