ব্যস্ততার মাঝে অনেকেই দিন গুজার করিয়া অন্য কোন কাজ করিবার সময়ক্ষেপন করিতে পারেন না, তবে আমি কিন্চিৎ আলস্যের মাঝে দিন গুজার করিতেছিলাম।

হা হতোস্মি !! ভুল ডিভিডি কি প্রবেশ করাইলাম !! চলচ্চি্ত্রের সকল চরিত্র দেখি কামানের গোলার মত আংরেজী ভাষায় বান বিনিময় করিতেছে !! ( তবে কেউই -উই আর লুকিং ফর শত্রুজ জাতীয় আংরেজী না বলায় কিন্চিৎ হতাশ হইলাম ) ,অনেককাল সংবাদপত্রের সাথে যোগাযোগ নাই,তাই আংরেজী কি ভারতের জাতীয় ভাষা হইয়া গেল কিনা,এই দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন হইয়া গ্যাট মারিয়া ছবি দেখিতে থাকিলাম ।।
কাহিনি হইল এই

১৪ বছর উনি বিছানায় পড়িয়া অতিকষ্টে দিনাতিপাত করিতেছেন আর বিশালাকায় প্রাসাদ তুল্য গৃহে তাহাকে বিশেষ সেবা প্রদান করিতে একখানা সেবিকা মওজুদ রহিয়াছেন , উনি হইলেন জেনেলিয়া ডি সুজা থুক্কু সুফিয়া খাতুন ডাবল থুক্কু সোফিয়া ডি-সুজা (ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ) ।জুতা সেলাই হইতে চন্ডিপাঠ,হেন সেবা নাই যে উনি প্রদান করেন না , তবে একজন সেবিকার পরিধানের পোষাক যদি রানী ভিক্টোরিয়া আমলের অথবা য়ুরোপদেশীয় সাদৃশ্যপুর্ন হয়,তবে কস্টিউম ডিজাইনারের কান্ডজ্ঞান নিয়া চিন্তার অবকাশ আছে


জাদুকর সাহেবের খায়েশ হইল,তিনি ''এই জেবন আর রাখপেন না '' !! মার্সি কিলিং/ ইউথানেশিয়া !! এই হইলো তার গুজারিশ( ব্যাটা দূর্যোধন,এই হিন্দ ভাষার ভান্ডার নিয়া রিভিউ লিখিতে বসিয়াছো !! গুজারিশ মানে খায়েশ...দিন গুজার না

কিন্তু সুফিয়া বানু ওরফে ঐশ্বরিয়া ১২ বছরের সার্ভিস দিয়া আসিতেছেন,হিন্দি সিনেমার নিয়মানুযায়ী তাহাকে মনে মনে প্রেম ধারন করিতে হইবেই হইবে....তিনি তাহা করিলেনও!! তাই স্বামীকে বিবাহ-বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠাইয়া চাতক-পক্ষীর মত বসিয়া আছেন,''মেরা নাম্বার কাব আয়েগা ''!! তিনি চান না জাদুকর সাহেব মরুক,তাই সেবিকা হইয়াও সবাইর সাথে ছেনালি-স্বরুপ আচরন করেন,কেন তারা জাদুকর সাহেবের এই খায়েশের পক্ষে (মায়ের চাইতে মাসীর দরদ আর কি ) ।
এরই মাঝে হঠাৎ কোকিলের বাসায় কাকের ছা , ঢাকা শহরের যাবতীয় জট -সদৃশ কেশ লইয়া এক তরুনের আবির্ভাব ।এমনই তার জটা,যে উকুনজাতীয় যাবতীয় কীট ঐ কেশ-জঙ্গলে চলিবার সময় নেভিগেশন /'জিপিএস ব্যবহার করিতে বাধ্য !! কোথায় ইহাকে যেন দেখিয়াছি ....হুমম অ্যাকশন রিপ্লে। তরুনের নাম ওমর সিদ্দিকি (আদিত্য রায় কাপুর ) ....উনার ''গুজারিশ'' ,উনি হৃত্তিকের কাছে জাদু শিখিয়া মস্ত জাদুকর হইবেন । কয়েকটা দৃশ্য দেখিয়া বড়ই তাজ্জব হইলাম , এই মেষ-সদৃস বালককে দেখা গেলো হৃত্তিক কে তুলিতে এমন বেগ পাইতে হইতেছে,যে আরেকটু হইলে পশ্চাৎদেশ হইতে বায়ু-গমন নিশ্চিত!! কিন্তু সেবিকা ঐশ্বরিয়া নাকি ১২ বছর ধরিয়া হৃত্তিক মশাইকে আছড়াইয়া-পিছড়াইয়া মানুষ করিতেছেন ( নির্ঘাত কোন একজন্মে ঐশ্বরিয়া এফডিসির নায়ক ছিলেন ....ময়ুরী উত্তোলনে বিশেষজ্ঞ ) । আর জাদুকর সাহেবেরও বলিহারি ..... যৌনতা ব্যতীত অন্য কিছু দ্বারা তিনি রসিকতা করিতে পারেন না ... ( তাইতো বলি,সেবিকার বক্ষদেশ কেন উন্মোচিত

আদালত বলিলেন,না,মার্সি কিলিং হইবে না ,তাই তিনি রেডিওতে ভোটের আয়োজন করিলেন ( বাহ !! গনতান্ত্রিক পন্থা !!


ইহার মাঝে প্রায়শই-স্বেচ্ছা-উন্মুক্ত-বক্ষা , অস্তগামী যৌবনাধিকারীনি,দেশ ও আন্তর্জাতিকভাবে ফ্লপাসুন্দরী ঐশ্বরিয়ার ততোধিক বানরসদৃশ কৃশকায় আমাজন-সোমালিয়াবাসী স্বামী দেবতা হাজির হইয়া ঐশ্বরিয়াকে কুক্কুরীন্যায় প্রহারপূর্বক নিজ আবাসস্থলে লইয়া গেলেন , প্যারালাইজড হৃত্তিক বসিয়া বসিয়া আবার দিন গুজরান করিতে থাকিলেন .......... !!!
অত্যাশ্চর্য হইলাম , যখন দেখিলাম....... বিশালাকায় ভিক্টোরিয়া-আমল সদৃশ ,হাজার কামরা বিশিষ্ট , লক্ষ পাওয়ারের ঝাড়বাতি সমৃদ্ধ (ডিজুসীয় ভাষায় চরম মাম্মা চরম !! ) গৃহের ছাদ ফুটা হইয়া টপাটপ করিয়া হৃত্তিকের মুখমন্ডলে বারিধারা পড়িতে শুরু করিয়াছে( বাইরে দিয়া ফিটফাট,ভিতর দিয়া গরুর হাট ),মোছার কেহই নাই.......কিন্ত না , ইহা হইতে পারেনা, কোথা হইতে ঐশ্বরিয়া তাহার স্বামীদেবতার কারামুক্ত হইয়া ছুটিয়া আসিয়া হৃত্তিকের চক্ষুনিমিদীত জল মোছাইয়া দিতে শুরু করিলেন ..... আর আবেগাপ্লুত হইয়া হৃত্তিককে বলিলেন , ''মহামহোদয়,আসেন আপনাকে মারি হাডাইলাই '' ......হৃত্তিকও বলিলেন, '' তথাস্তু, সোনাবন্ধু তুই আমারে ভোতা দা দিয়া কাইট্টা লা ......♪♪♫♪ থুক্কু, আমাকে মার্সি কিলিং করো,'' .....এই বলিয়া তাহার প্রেমনিবেদন পুর্বক বিবাহের খায়েশ প্রকাশ করিলেন । ( ম'লো ম'লো ...... মৃত্যুশয্যাও দন্ড উত্থিত কিভাবে হয় !! )

তারপর যা হইবার তাই ..... জাদুকর হৃতিক বিশাল পার্টির আয়োজন করিলেন , পানীয়র ফোয়ারা ছুটিল,বাদ্য বাজিল , আত্মীয়স্বজন হাস্যমুখে নর্তন প্রতিভা দেখাইলেন , মরিবার পূর্বে হৃত্তিক সবাইকে বিভিন্নভাবে ইন্ট্রোডিউস করাইলেন .....এমনকি কৌতুক বলিবার বিফল চেষ্টাও করিলেন



বি.দ্র. সন্জয় লীলা বনশালী'র পরিচালিত ছবির তুলনায় নাচে-গানে-অন্তরঙ্গ অ্যাকশন সীনে ভরপুর '' দূর্ধর্ষ পামেলা''র পরিচালক অনেক বিজ্ঞ , তার ছবির ডায়ালগ দেশের অশিক্ষিতরাও বুঝে





এই ব্যাডার এখন এফডিসিতে আইস্যা মানতাজুর রহমান আকবর+এফ আই মানিকের কাছে ছবি পরিচালনা শিখা উচিত , আর ঐশ্বরিয়ার একটা বাচ্চা পয়দা কইরা ঘরসংসারে মন দেওয়া দরকার..... বেচারা অভিষেক আর কত সংসার সামলাইবো !! আর হৃত্তিক....বাবা অনেক হইছে,এখন তুমি তোমার গোঁফ -দাড়ি পরিষ্কার করতে যাও,অভিনয় করতে কইলে আরেকটু কম অভিনয় কইরো ,আর ছবি সাইন করার আগে দেইখা নিয়ো.....হিন্দি না মেক্সিকান/ইংরেজী ছবি অভিনয় করতে যাইতাছো !!!
সতর্কীকরন : ছবি দেখা শুরুর পূর্বে আইইএলটিএস করা বাধ্যতা মূলক ।

