এর আগের পোষ্ট গুলোতে আমার প্রিয় কিছু নন হলিউডি ম্যুভির কথা আলোচনা করেছিলাম। এবারের পোষ্ট কিছু ভিন্নধর্মী হলিউডি ও নন-হলিউডি ম্যুভি নিয়ে কথা বলব।
১। ম্যালকম এক্স (১৯৯২): ম্যালকম এক্স বা এল হাজ মালিক এল শাবাজ ছিলেন মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ মানবাধিকার কর্মী ও আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গদের সংগঠন নেশন অফ ইসলামের শীর্ষস্থানীয় নেতা। মার্টিন লুথার কিং বা নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে তার নামঅ আজ সমস্বরে উচ্চারিত হত যদি তিনি আর কিছুটা দিন বেঁচে থাকতেন, বা তাকে যদি বাঁচতে দেয়া হত। প্রথম আধঘন্টা দেখার পর ম্যুভিটা বিশেষ কিছু মনে হয়নি আমার কাছে, কিন্তু এর পরে রদ্ধশ্বাসে শুধু চেয়েছিলাম স্ক্রিনের দিকে। একজন ছিচকে চোর, ড্রাগডিলার থেকে কিভাবে একটি যুবক তার গন্তব্য বুঝতে পারে ও একটি জাতিকে নেতৃত্ব দেয়ার গুণাবলী অর্জন করে, সেটা তাকে না দেখলে বলে বুঝানো মুশকিল। তাকে শুধু আমার এক নেতাই মনে হয়নি, তাকে মনে হয়েছে নতুন যুগের সুচনার এক অগ্রগামী পুরুষ হিসেবে, আর ম্যালকম এক্স এর ভূমিকায় ড্যানজেল ওয়াশিংটনের মন ভূলানো অভিনয়ের কথাও কখনোই ভোলার মতন নয়। শেষে এক অন্তঃকোন্দলে তাকে বুলেট বিদ্ধ করে জনসম্মুখে তাকে হত্যা করা হয়, ধারনা করা হয় তার মৃত্যুর পেছানে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা সি.আই.এ-র হাত রয়েছে। ৯০% পজিটিভ রিভিউ সহ এই আত্মজীবনী মূলক ম্যুভি লরেন্স অফ এরাবিয়া বা গান্ধির সমকাতারে উচ্চারিত হয়। তার লেখা একটা কবিতার উধৃতি দিচ্ছিঃ
When I was born, I was black.
When I grow up, I'm black.
When I'm ill, I'm black.
When I go out in the sun, I'm black.
When I'm cold, I'm black.
When I die, I'm black.
But you -
When you're born, you're pink.
When you grow up, you're white.
When you're ill, you're green.
When you go out in the sun, you go red.
When you're cold, you go blue.
When you die, you're purple.
And you have the nerve to call me coloured?
টরেন্ট লিঙ্ক
ইউটিউব লিঙ্ক
২। কুন্দুন (১৯৯৭): তিব্বতে র নির্বাসিত ধর্মীয় নেতা দালাই-লামাকে ঘিরে যতগুলো ম্যুভি হয়েছে, তার মধ্যে সবথেকে ভালো লেগেছে এই ম্যুভিটি, কুন্দুন। চায়নায় নিষিদ্ধ এই ম্যুভিটিতে ১৪-তম দালাই-লামার জীবন কাহিনীর আবর্তন দেখানো হয়েছে সুচারুরূপে। তার ছোটবেলা থেকে গড়ে ওঠা, আশ্রমের নিষ্কলুষ অহিংস পরিবেশ, লামাকে কখনও ভাবায়নি যে তাকে এত বড় একটা প্রতিকূল পরিস্থিতি-তে পড়তে হবে। যৌবনে উপনিত হবার পরপর-ই পার্শ্ববর্তী কম্যুনিস্ট চায়না থেকে সৈন্যরা এসে যখন স্বাধীন তিব্বত দখল করে নিলো, তখনও তিনি বুঝে উঠতে পারেননি তার কি করা উচিৎ। শেষে ভারতে আশ্রয় নেয়ার মধ্য দিয়ে ম্যুভিটির পরিসমাপ্তি ঘটে।
টরেন্ট লিঙ্ক
৩বাইসেন্টেনিয়্যাল ম্যান (১৯৯৯) : আইজ্যাক অ্যাসিমভের 'দ্যা পজিট্রনিক ম্যান' গল্পটির নাম শুনেছেন? 'বাইসেন্টেনিয়্যাল ম্যান' ম্যুভিটি এর ছায়াতেই নির্মিত হয়েছে যার প্রধান চরিত্রে আছে রবিন উইলিয়ামস।
এন্ড্রু (রবিন উইলিয়ামস ) একটি এন্ড্রয়েড রবোট ২০০৫ সাল থেকে একটি বসত-বাড়িতে কাজ শুরু করে। ক্রমে ক্রমে সে বাড়ির একজন সদস্য রূপেই গণ্য হতে শুরু করে। ম্যুভিটিতে একটি রবোটের মানবিক আকাংক্ষা-বুদ্ধিমত্তা, স্বাধিনতা, যৌনতা, প্রেম আবেগ ও মৃত্যু সবগুলো দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। নিজেকে শাররিক ভাবে পরিবর্তন করতে করতে শেষ পর্যন্ত মানুষ হিসেবে স্বীকৃতির দাবীদার হয় এন্ড্রু আর সবই তার 'লিটল মিস' ও তার মেয়ের ভালোবাসার প্রতিদান।
টরেন্ট ডাউনলোড
৪। আইজ ওয়াইড শাট (১৯৯৯): স্ট্যানলি কুবরিকের ম্যুভির ধরন ও ঢং এর সাথে পাঠকদের আমার আর নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই। আর সাথে যদি থাকে অভিনেতা/অভিনেত্রী হিসেবে টম ক্রুজ ও নিকোল কিডম্যান , তাহলে তো সোনায় সোহাগা। এক রাতের একটা পার্টিতে কিছু বিচ্ছিন্ন ক্ষুদ্র ঘটনা থেকে মোড় নেয় ভয়ঙ্কর কিছু ঘটনা আর সুখের সংসারে সন্দেহের তীব্র বিষ ছড়িয়ে পড়ে দুজনেরই মাঝে।
টরেন্ট লিঙ্ক
৫। গুড উইল হান্টিং (১৯৯৭): হলিউডি ম্যুভিগুলোর মাঝে আমার পছন্দের ম্যুভি গুলোর বেশীরভাগ-ই মিরাম্যাক্স বন্টন করে, এটাও তার ব্যাতিক্রম নয়। ম্যাট ডেমন আর বেন এফ্লেক সহ আরও কিছু বন্ধু এম.আই.টি র আশ-পাশে থাকে, এর মাঝে ম্যাট ডেমন একটু অন্যরকম আর পার্ট টাইম চাকুরী করে এম.আই.টি-তে। আনুষ্ঠানিক ডিগ্রী কম হলেও প্রতিটি বিষয়ে তুখোড় জ্ঞান তার। স্কার্সগার্ড এম.আই.টি-র গণিতের অধ্যাপক ও গণিতের জাদুকর বলা যায় তাকে। তিনি ম্যাট ডেমনের গণিতে অসাধারন প্রতিভা আবিস্কার করে তা নিজের কাজে ব্যাবহার করার চেষ্টা করেন, এর মাঝে নার্ভাস ব্রেক -ডাউনের জন্য থেরাপিস্ট রবিন উইলিয়ামসের সাথে দেখা হয় ম্যাট ডেমনের, মাঝে এক বান্ধবীও জুটে যায় তার। ঘটনা এভাবে চলতে থাকে, মাঝে অনেক সুযোগ পেলেও, এক পর্যায়ে সবকিছু ছেড়ে ছুড়ে তার বান্ধবীর কাছে চলে যায় ম্যাট ডেমন। সব মিলিয়ে ভালো লাগবে ছবিটি আশা করি।
টরেন্ট লিঙ্ক
আজ তাহলে এপর্যন্ত-ই থাক ... আগামীতে আরও কিছু ম্যুভি নিয়ে কথা হবে ... ।