এবং তারপরও তুমি বলবে, কেন ওভাবে আমি তাকিয়ে থাকি?
তুমি যেটাকে ভালোবাসা বল, আমার কাছে তা কিন্তু
মোটেও ভালোবাসা নয়। ওটা ভালোলাগা। তোমাকে ভালো লাগে,
তাই তাকিয়ে থাকি। অপলক চোখে তাকিয়ে থাকি।
হেমন্তের শুরুতে, দিগন্তের আঁচলে আধো-শৈশব নিয়ে চাঁদ যখন উঁকি দেয়,
আমি তাকিয়ে থাকি। আমার ভালো লাগে, তাই তাকিয়ে থাকি।
এই থাকিয়ে থাকা মোটেও ভালোবাসা নয়।
নগ্ন দেহে উর্বশী ঝর্ণা প্রকৃতির গা’ বেয়ে যখন চলে যায় দূরে- বহু দূরে,
আমি ছুঁয়ে দেখি। আমি আমার উষ্ণ দুটো হাত বুলিয়ে দেই উন্মুক্ত ঝর্ণার বুকে।
তুমি কি বলবে এটা ভালোবাসা? অথবা সঙ্গম?
না! এটা পবিত্র এক আলিঙ্গন। এটাকে বলে ভালোলাগা।
নাক লুকিয়ে প্রাণভরে যখন শ্বাস নেই তোমার বুকে, অথবা
নিজের অজান্তেই খুঁজে ফিরি বেঁচে থাকার সুবাস তোমার এলো চুলে,
তুমি বলো, এটা ভালোবাসা। আমি বলি, না!
এটা নিতান্তই ভালোলাগা।
গাংচিলগুলো দূর থেকে যখন গান করে, আমি কান পেতে রাখি;
তুমি যখন গান করো, দূর থেকে, অথবা অনেক অনেক কাছ থেকে,
আমি কান পেতে রাখি তখনও।
তুমি বলো, এটা আমার ভালোবাসা, আমার প্রেম তোমার জন্য।
আমি বলি, না, এটা ভালোবাসা না।
আমি ভালোবাসতে পারিনা। আমার যে কোনো অস্তিত্বই নেই,
তুমি সেটা জানো না? তবে জেনে নাও আজ হে আমার প্রিয়তমা:
তুমি আমার গাঙচিল, তুমি আমার উর্বশী ঝর্ণা,
তুমি আমার হেমন্তের সুবাস বেঁচে থাকার। যদি আমাকে চাও,
যদি আমাকে পেতে চাও নিজের করে; অথবা ভালোবাসতে চাও বেঁচে থাকার জন্য,
তাহলে এক্ষুনি বেরিয়ে এসো বাইরে, এই ভরা জোছনায়, হে আমার প্রিয়তমা।
দেখো ওই চাঁদ জেগে আছে তোমার জন্য। আমার বেঁচে থাকা ওখানেই।
১৩ অক্টোবর ২০১৭
লন্ডন
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:০৪