somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রঙ্গরসিকতা

৩১ শে আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একবার রবীন্দ্রনাথ গুনগুন করে সুর বাঁধছিলেন , কথা বসাচ্ছিলেন এবং এমনিভাবে পায়চারী করতে করতে গান রচনা করছিলেন । গান শেষ হতেই ডাক পড়েছিল অমলা দাশের -"অমলা ও অমলা , শিগগির সে শিখে নাও , এক্ষুনি ভুলে যাব কিন্তু ।"

মৃনালিনী দেবী হেসে বললেন , "এমন মানুষ আর কখনো দেখেছ অমলা , নিজের দেওয়া সুর নিজে ভুলে যায় ।"

তৎক্ষণাৎ রবীন্দ্রনাথের সপ্রতিভ জবাব , "অসাধারণ মানুষদের সবই অসাধারণ হয় । ছোট বৌ চিনলে না তো ।"

*******************************************

সুধাকান্ত রায় চৌধুরী একবার নতুন চশমা পরে কবিগুরুকে দেখাতে এলেন । চশমার কাচটা একটু নিলাভ ছিল । তাই সুধাকান্ত বাবু বললেন , "সাদা কাঁচের চেয়ে রঙ্গিন কাঁচই নাকি আমার চোখের পক্ষে উপকারী " ।
সব শুনে গুরুদেব গম্ভীরভাবে বললেন -"যাক , এতদিনে নিশ্চিন্ত হওয়া গেল । স্বয়ং ভগবান তোমাকে যে জিনিস দিতে পারেননি , এখন দেখছি ডাক্তারই তোমাকে সেটা দিলেন । "

******************************************
শরৎ চন্দ্র চট্রোপাধ্যায় জুতা চুরির ভয়ে কবিগুরুর সাহিত্য সভায় আসার সময় তার জুতা জুড়া কাগজে মুড়ে কোলে রাখতেন । প্রায়ই এ ঘটনা ঘটত । একদিন জনৈক সাহিত্য সভার সদস্য কবিগুরুকে চুপেচুপে ব্যাপারটি বলে দিলেন ।

কবিগুরু তখন জিজ্ঞেস করলেন , "শরৎ , তোমার কোলে কি পাদুকাপুরাণ " ।

*******************************************
এক সভা শেষে ফিরবার পথে কবিগুরু চারুচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়কে বললেন -"দেখলে চারু আমার প্রায়শ্চিত্য । আমি না হয় গোটা কয়েক গান কবিতা লিখে অপরাধ করেছি । তাই বলে আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে এরকম যন্ত্রণা দেয়া কি ভদ্রতা সম্মত । গান হল কিন্তু দুজনে প্রাণপন শক্তিতে পাল্লা দিতে লাগলেন যে , কে কত বেতালা বাজাতে পারেন আর বেসুরা গাইতে পারেন । গান যায় যদি এ পথে তো বাজনা চলে তার উলটো পথে । গায়ক বাদকের এমন স্বাতন্ত্র্য রক্ষার চেষ্টা আমি আর কস্মিনকালেও দেখিনি । তারপর ঐ একরত্তি মেয়ে , তাকে দিয়ে নাকিসুরে আমাকে শুনিয়ে না দিলেও আমার জানা ছিল যে , তঁবু মঁরিতে হঁবে । " উল্লেখ্য , গানের প্রথম লাইন ছিল 'তবু মরিতে হবে '।

******************************************
আলাপনি সমিতির 'শ্রেয়সী'র জন্য গল্প লিখছেন কবিগুরুর নাতবৌ কমলা । কবিগুরুর সে কি উৎসাহ!

কেমন গল্প? গল্পের মধ্যে ক'টা বিয়ে আছে ? নেই ? বিয়ে ভাঙ্গাও নেই ?

কমলাকে বললেন , 'তুমি কোনো কর্মের না , একটা বিয়ে দিতে পারলে না ?'

********************************************
একবার ভান্ডারে নামে একটি ছেলে এল শান্তি নিকেতনে । সে রবীন্দ্রনাথকে চেনে না । রবীন্দ্রনাথকে দেখেই তার কাছে ছুটে গেল এবং জোর করে তার হাতে কি যেন একটা গুজে দিল ।

একটু দুরে সৈয়দ মুজতবা আলী সমস্ত ব্যাপারটিই লক্ষ করলেন । কাছে আসতেই তিনি ভান্ডারেকে জিজ্ঞেস করলেন ' গুরুদেবকে কি দিলি ?'

ভান্ডারে বিস্ময়ের সঙ্গে উত্তর দিল -'গুরুদেব আবার কে ? তিনি তো একজন ফকির । আমি ওকে একটা আধুলি দিয়েছি । মা বলেছেন সাধু সন্যাসীদের দান করতে ।"

ভান্ডারে দানশীল কিন্তু শান্ত স্বভাবের নয় । সবাই অতিষ্ঠ এমনকি হেডমাষ্টার পর্যন্ত । এক সময় ব্যাপারটি রবীন্দ্রনাথের নজরে আনা হল তিনি তো ভাল করেই জানতেন ভান্ডারেকে । তাই তিনি কৌতুক মিশিয়ে বললেন , "ভান্ডারে তুই সবচেয়ে ভাল ছেলে । তোর এই কান্ড । তুই একবার আমাকে একটা আধুলি পর্যন্ত দিয়েছিলি । অন্য কোন ছাত্র আমাকে কোনদিন একটা পয়সা পর্যন্ত দেয় না । সেই তুই কিনা গোলমাল করিস ।"

******************************************

একবার কালিদাস নাগ সস্ত্রীক বেড়াতে এলেন । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রশ্ন করলেন :"শিশু নাগদের কোথায় রেখে এলে ।"

******************************************

কবিগুরুর প্রিয় চাকর বনমালি একদিন গল্প করে বলল , তাদের দেশে মনিবাবা নামে এক সাধু আছেন । তার নাম তিনবার নিলে সাপে কাটা মানুষও ভাল হয়ে যায় ।

কবিগুরু অনিল চন্দ্রকে ডেকে বললেন , "অনিল , একটা কেউটে সাপ এনে বনমালিকে কাটা , দেখা যাক মনিবাবুর মাহাত্ম্য । বনমালি বুঝল এটা রসিকতা । সেও হাসল ।"

******************************************
একদিন সন্ধেবেলা রবীন্দ্রনাথ 'হে মাধবী দ্বিধা কেন ' গানটি শেখাচ্ছিলেন । এমন সময় ভৃত্য বনমালি আইসক্রিমের প্লেট নিয়ে ইতস্তত করছিল -আসবে কি আসবে না ?

রবীন্দ্রনাথ বনমালিকে দেখেই আবার গেয়ে উঠলেন : ' হে মাধবী দ্বিধা কেন ?'

*****************************************
শান্তিনিকেতনে খুব মশা ছিল । তাই কবি হাতে পায়ে একবার তেল ব্যবহার করতেন । কখনও কোন আগন্তক উপস্থিত হলে মজা করে বলতেন "ভেব না যে আমি বুড়ো মানুষ , বাত হয়েছে বলে পায়ে তেল মালিষ করছি । এ মশার ভয়ে । শান্তিনিকেতনের মশারা ভারি নম্র । তারা সারক্ষণই পদসেবা করে । "

******************************************

শান্তিনিকেতনেএকবার পরিচিত এক ভদ্রমহিলা কবির সাথে সাক্ষাৎ করতে এলেন । তাও দীর্ঘদিন পর । এসেই কবিকে জিজ্ঞেস করলেন -"আমাকে চিনতে পারছেন তো !"

কবি আগন্তক মহিলাকে চিনলেও তার স্বভাবসুলভ পরিহাসের সুরে বললেন-"আয়তনেই চিনেছি "।

********************************************
কবিগুরু কথা প্রসঙ্গে দিনবাবুকে (তার নাতি দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ) একবার বলেছিলেন , বুঝলি দিনু, সেদিন অমুক লোকটা আমার কাছ থেকে দশ টাকা ধার নিয়ে গদ গদ কণ্ঠে বললেন -'আপনার কাছে আমি চিরঋণী হয়ে রইলুম '। দিনবাবু আতকে উঠে বলল-তুমি দিলে ওকে টাকাটা ? ও তো একটা জোচ্চোর !

তা' মানি , কিন্তু লোকটার শত দোষ থাকলেও একটা গুণ ওর ছিল -কবিগুরু শান্তস্বরে বললেন । লোকটা সত্যভাষী । কথা রেখেছিল -চিরঋণী হয়েই রইল !

******************************************

একবার কবিগুরু -গান্ধিজী প্রাতঃরাশ খাচ্ছেন । গান্ধী লুচি পছন্দ করতেন না । তাই তাকে অন্য খাবার দেয়া হল । কবিগুরু খাচ্ছেন গরম গরম লুচি । তা দেখে গান্ধীজী বললেন -"গুরুদেব , তুমি জানো না, তুমি বিষ খাচ্ছ ।"

উত্তরে রবীন্দ্রনাথ বললেন -"বিষই হবে । তবে এর কাজ খুব ধীরে । কারণ আমি গত ষাট বছর ধরে এই বিষ খাচ্ছি ।"

******************************************
সাহিত্যিক বলাইচাদ মুখোপাধ্যায়ের(বনফুল) ছোট ভাই প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করে বিশ্বভারতীতে পড়ার জন্য একদিন শান্তিনিকেতনে এলেন ।শান্তিনিকেতনে এসে তিনি জানলেন কবিগুরু কানে কম শুনেন (!) । কথা বলার সময় যেন একটু জোরে বলেন ।

কবিগুরুর সাথে সাক্ষাতের সময় তার বড় ভাই (বনফুল) এর দেয়া পরিচয়পত্র দেখালেন । কবিগুরু জিজ্ঞেস করলেন -"কি হে তুমি কি বলাই এর ভাই কানাই নাকি ?"

উত্তরে বলাই এর ভাই চেচিয়ে জবাব দিলেন , " না, আমি অরবিন্দ।"

কবি হেসে হেসে বললেন -"না, কানাই নয় , এ যে দেখছি একেবারে সানাই ।"

******************************************
কবিগুরু একবার বিধু শেখর শাস্ত্রীকে ডেকে বললেন ,"মশাই , আপনাকে আমি দন্ড দিব ।"

গুরুদেবের এহেন কথায় শাস্ত্রী মশাই তো একেবারে অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন । এমন কি অন্যায় তিনি করেছেন যার জন্য তার দন্ডপ্রাপ্য ?

তখন কবিগুরু একখানি লাঠি তাকে দিয়ে বললেন-"এই নিন দন্ড , ফেলে গিয়েছিলেন ।"

*******************************************

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কবিগুরু সক্রিয় ছিলেন। ঐ সময়ে একদিন নাটোরের মহারাজার মেয়ের বিয়েতে নিমন্ত্রিত হয়েছিলেন কবিগুরু। বিয়ের দিন সন্ধ্যায় দ্বারদেশে দাড়িয়ে নিমন্ত্রিতদের অভ্যর্থনা করছেন মহারাজা । হন্তদন্ত হয়ে কবিগুরু এসে উপস্থিত হলেন । আসতে দেরি হয়ে গেছে । মহারাজা অনুযোগ করে বললেন-"কবি -আমার কন্যাদায় , কোথায় আপনি সকাল সকাল আসবেন , তা' না , এলেন দেরিতে ।"

অপ্রতিভ কবি উত্তরে বললেন -"রাজন , আমারও মাতৃদায় , দু'জায়গায় সভা করে আসতে হলো ।

*******************************************
মংপুতে মৈত্রেয়ী দেবী কবিগুরুকে বেশ কয়েকদিন ধরে নিরামিষ খাওয়াচ্ছিলেন । তো একদিন মৈত্রেয়ী দেবী কিছু খাবার নিয়ে এসে বললেন -"এটা একটু খাবেন ?রোজ রোজ আপনাকে কি নিরামিষ খাওয়াবো ভেবে পাইনা ।"
কবিগুরু বললেন -"ও পদার্থটা কি?"
মৈত্রেয়ী দেবীর উত্তর-ব্রেইন ।
তখন কবিগুরু বললেন-"এই দেখ কান্ড , এ তো প্রায় অপমানের শামিল । কি করে ধরে নিলে যে, ঐ পদার্থটার আমার প্রয়োজন আছে? আজকাল কি আর আমি ভাল লিখতে পারছিনে ?"
*******************************************

কবিগুরু এক সভায় হঠাত্ গম্ভীরভাবে বলে উঠলেন -"এই ঘরে একটা বাদর আছে ।"

সভাস্থ সকলে দারুন অস্বস্তিভরে যখন একে অন্যের দিকে তাকাচ্ছেন ,তখন গুরুদেব মৃদু হেসে বললেন ,"ডানদিকে যেমন একটি দোর আছে , বা দিকেরও সেরকম আরেকটি দোর আছে ।" সকলে নিঃশ্বাস ছেড়ে বাচলেন।

*******************************************
একবার শান্তিনিকেতনে বৈশাখ মাসে বহু সাহিত্যিক জড়ো হয়েছিলেন । সকলকে নানারকম ফল ও মিষ্টান্ন পরিবেশন করা হয়েছিল। সুকুমার রায় একেবারেই ফল খাচ্ছেন না দেখে রবীন্দ্রনাথ ঈষৎ তরল কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলেন -'সুকুমার তুমি কি গীতার অনুশাসন পুরোপুরি মেনে চলছ ?'

সুকুমার রায় প্রশ্ন শুনে অবাক হয়ে গেলেন । তখন রবীন্দ্রনাথ গীতা উদ্ধৃত করে বললেন ,'মা , ফলেষু , কদাচন ।'

গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ফলের আশা না করে কর্ম করা উচিত ।

*******************************************
সুধাকান্ত রায় চৌধুরীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ একবার বেড়াচ্ছিলেন । হঠাত্ গুরুদেবের গুরুদেবের অস্ফুট কাতরোক্তি শুনে সুধাকান্ত বাবু তার দিকে তাকাতেই রবীন্দ্রনাথ নিজেকে সামলে নিয়ে শান্ত সুরে বললেন , 'পা কে চরন কমল বা পাদ পদ্ম কেন বলে জানো ? '

প্রশ্ন শুনে সুধাকান্ত বাবুর চোখে বিস্ময় দেখে রবীন্দ্রনাথ পায়ের মোজা খুলতে খুলতে বললেন , 'তাই যদি না হয় , তাহলে শরীরের এত জায়গা থাকতে মোজা ভেদ করে মৌমাছিটা পায়ের একেবারে তলায় হুলটা বিধাল কেন ?

*******************************************
কবিগুরু নাকি বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে গিয়ে মেয়ের মা'কে পছন্দ করে এসেছিলেন । স্বয়ং কবির মুখেই শোনা যাক সেই কাহিনী :

"মেয়ের বাবা অনেক পয়সা কড়ির মালিক। বাসায় যাবার পর, দুটো অল্প বয়সী মেয়ে এসে উপস্থিত হলো । একটি মেয়ে নেহাত্ সাধাসিধে , জড়ভরতের মত এক কোনে বসে রইল এবং অন্যটি যেমন সুন্দরী তেমনি স্মার্ট । কোন জড়তা নেই । শুদ্ধ উচ্চারনে ইংরেজিতে কথা বলছে। ওর সঙ্গে কথা হল। আমাদের পিয়ানো বাজিয়ে শোনালো । আমি মুগ্ধ , বিস্মিত । মনে মনে ভাবছি , সত্যিই কি আমি ওকে পাবো । ভাবনায় ছেদ পরলো । বাড়ির কর্তা তখন ঘরে ঢুকলেন । ঘরে ঢুকেই তিনি মেয়েদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন । সুন্দরী, স্মার্ট মেয়েটিকে দেখিয়ে তিনি বললেন , হেয়ার ইজ মাই ওয়াইফ । আর জড়ভরতটিকে দেখিয়ে বওলেন, হেয়ার ইজ মাই ডটার ।

আমি তো শুনে থ হয়ে গেলাম । যা হোক, বিয়ে হলে মন্দ হতো না। সাত লাখ টাকা পাওয়া যেতো । বিশ্বভারতীর কাজে ব্যয় করতে পারতাম। তবে শুনেছি, মেয়েটি নাকি বিয়ের দু'বছর পরই বিধবা হয় । যাক, বাঁচা গেছে । কারণ স্ত্রী বিধবা হলে আমার প্রাণ রাখা শক্ত হতো ।

*******************************************
একবার মৈত্রেয়ী দেবী কবিগুরুকে জিজ্ঞেস
করলেন ,'আপনার বিয়ের গল্প বলুন ।'

কবি জবাব দিলেন ," আমার কোনো বিয়ের গল্প নেই । বৌঠানরা বিয়ের জন্য জোরাজোরি শুরু করলে আমি বললাম ,তোমাদের যা ইচ্ছা কর । আমার কোন মতামত নেই । তারপর বোঠানরাই যশোরে গিয়েছিলেন । আমি বলেছি ' আমি কোথাও যেতে পারবো না। আমার বিয়ে জোড়াসাকোতেই হবে । '

মৈত্রেয়ী দেবী বললেন ," কেন আপনি বিয়ে করতেও যান নি ?"

কেন যাবো? আমার একটা মান সম্মান আছে না ? -রবীন্দ্রনাথের সাফ জবাব ।

*******************************************
একবার রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে চীন ভ্রমনে গিয়েছিলেন শাস্ত্রী মশাই (ক্ষিতিমোহন সেন শাস্ত্রী )। সেটা আমের মরশুম । কবিগুরু আম ভালবাসেন যেনে চীন কর্তৃপক্ষ আম আনালেন বাংলাদেশ থেকে । তখন তো আর দ্রুত যাতায়াত ব্যবস্থা ছিল না । আম যেন না পচে তাই রাসায়নিক মিশানো হয়েছিল । কিন্তু আম যখন চীনে পৌছল তখন সেগুলি শুকিয়ে চুপসে গিয়ে রপান্তরিত হয়েছিল এক অদ্ভুত বস্তুতে । খাবার টেবিলে দেয়া হলো রবীন্দ্রনাথ , তার ভাগ পেলেন শাস্ত্রী মশাইও। চীনের লোক তো আর আম চেনে না , কবিকে তার প্রিয় খাদ্য দিতে পেরে ভারি খুশি । তাদের মনোরঞ্জনের জন্য এত কষ্ট করে আনা আম গলধঃকরণ করলেন দু'জনেই মুখ বুজে ।

কবিকে শাস্ত্রী মশাই জিজ্ঞেস করলেন -"কেমন আম খেলেন গুরুদেব ? "

মৃদু হেসে জবাব দিলেন কবি-"আম খেতে খেতে মনে হচ্ছিল এক রবীন্দ্রনাথ আর এক রবীন্দ্রনাথের দাড়িতে তেতুল গুড় মেখে চুষছে ।"

*****************************************

একবার শান্তিনিকেতনে ওজনের একটি মেশিন ক্রয় করা হয় এবং এতে ছেলেমেয়েদের একে একে ওজন নেয়া হচ্ছিল । রবীন্দ্রনাথ দাড়িয়ে দাড়িয়ে তা লক্ষ করছিলেন ।

এক একজনের ওজন শেষ হলেই কবি তাকে জিজ্ঞাসা করছিলেন -কিরে তুই কত হলি !

এর মধ্যে একটি স্থুলাঙ্গী মেয়ে বলল -দু'মন ।

এই মেয়েটির সে সময় বিয়ের আলাপ চলছিল এবং কবি তা জানতেন । তাই তিনি পরিহাস করে বললেন -"তুই এখনও দু'মন , এখনও এক মন হলি নে ?"

*******************************************

কবিগুরুকে এক ভদ্রলোক লেখেন -আপনি কি ভুতে বিশ্বাস করেন ?

কবি উত্তরে লিখলেন-বিশ্বাস করি বা না করি -তবে তাদের দৌরাত্ব মাঝে মাঝে টের পাই -সাহিত্যে , পলিটিক্সে সর্বত্রই একেক সময় তুমুল দাপাদাপি জুড়ে দেয় এরা । দেখেছি -দেখতে ঠিক মানুষের মত ।

দোহাই :

১। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় , রবীন্দ্র জীবন ও রবীন্দ্র সাহিত্য প্রবেশক
২। প্রমথনাথ বিশী , রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন
৩। মৈত্রেয়ী দেবী , মংপুতে রবীন্দ্রনাথ
৪। সত্য প্রসাদ সেনগুপ্ত , রবীন্দ্রনাথের গল্প
৫।মনোরমা, মে ১৯৯৪ , হিমানীষ গোস্বামীর ’রবীন্দ্রনাথের রস পত্রাবলী ’ দ্রষ্টব্য
৬। রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরী, রবীন্দ্র ত্রু মুলে
৭। নিতাই বসু , অনন্য রবীন্দ্রনাথ
৮। উজ্জলকুমার মজুমদার , ঠাকুরবাড়ীর চোখে রবীন্দ্রনাথ
৯। চিত্রাদেব , ঠাকুর বাড়ীর অন্দর মহল
১০। রানী চন্দ , আলাপচারী রবীন্দ্রনাথ
১১। নন্দ গোপাল সেনগুপ , কাছের মানুষ রবীন্দ্রনাথ
১২। সীতাদেবী , পুন্যষ্মৃতি
১৩। প্রতিমা ঠাকুর , নির্বাণ
১৪। শ্রী গোপাল চন্দ্র রায় , রবীন্দ্রনাথের হাস্য পরিহাস
১৫। তিতাস চৌধুরী ,রবীন্দ্রনাথের রঙ্গ ও হাস্যরস
১৬। নুরুজ্জামান মানিক , কবিগুরুর রসিকতা , দৈনিক জনকণ্ঠ , ৬ মে ২০০৫
১৭। নুরুজ্জামান মানিক , কবিগুরুর রসিকতা , দৈনিক জনকণ্ঠ , ৫ মে ২০০৬
১৮। অবসর ডট নেট



সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ১:০৬
১৮টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×