আপডেট ১৭ মে সোমবার
‘তাওকতে’ আঘাত হেনেছে ভারতে। কর্নাটক ও গোয়া রাজ্যে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড়টি। মারা গেছেন ৪ জন। আজ রোববার দেশটির সম্প্রচার মাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাওকতে আঘাত হানার পর কর্নাটকে প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাতে রাজ্যের তিন উপকূলীয় জেলাসহ ছয় জেলা ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে গত ২৪ ঘণ্টা ধরে। ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, শনিবার রাত আড়াইটা নাগাদ এই ঝড়টি ছিল গোয়া থেকে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার, মুম্বাই থেকে ৪৯০ কিলোমিটার ও গুজরাট উপকূল থেকে ৭৩০ কিলোমিটার দূরে। মঙ্গলবার সকালে গুজরাটের উপকূল, পোরবন্দর ও ভাবনগর জেলার মহুভা এলাকায় তাওকতে আছড়ে পড়তে পারে বলেও জানানো হয়েছিল পূর্বাভাসে।
-------------------------------------------------------------------------------------------------
দ্বিতীয় আপডেট ১৭ মে সোমবার
ঘূর্ণিঝড় ‘তাওকতে’ আঘাত হেনেছে মুম্বাইয়ে
ঘূর্ণিঝড় তাওকতে’ আঘাত হেনেছে ভারতের মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সেখানে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। মুম্বাইয়ে প্রতি ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ১৮৫ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড় টাউটি মুম্বাইতে এসে রুদ্রমূর্তি ধারণ করায় মুম্বাই, থানে, রায়গড়, সিন্ধুদুর্গ, পালঘর সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সোমবার বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত মুম্বাই বিমানবন্দর বন্ধ ছিল। এছাড়া উচ্চ জোয়ারের সম্ভাবনা আছে। তাই মুম্বাই-ওয়ার্লি সি-লিংক বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজ্যের তিনটি জেলার উপকূলবর্তী অঞ্চলের ৬ হাজার ৫০০ জনকে সুরক্ষিত স্থানে রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে মহারাষ্ট্রের রত্নাগিরির উপকূলবর্তী অঞ্চলের ৪০টি বাড়ির প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনটি বিদ্যালয় পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পুনের নিকটবর্তী অঞ্চলের ৭০টি বাড়ির ক্ষতি হয়েছে।
==========================================================================
মার্চের শুরু থেকেই কাউন্ডটাউন চলছে, কবে আসবে ২০২১-এর প্রথম ঘূর্ণিঝড়। মাঝে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় আবহাওয়া সংস্থা আভাস দিয়েছিল, এ বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের মতোই ভয়াবহ রূপ নিয়ে বঙ্গোপসাগর দিয়ে ধেয়ে আসবে। কিন্তু ভারতীয় আবহাওয়া দফতর সেই পূর্বাভাসকে আমল দেয়নি। এবার তারাই জানাল, পুরোদমে বর্ষা ঢোকার আগেই বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড় (Cyclone) আসতে চলেছে। ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে তা মারাত্মক রূপ ধারণ করে গুজরাট উপকূলে ভয়ঙ্কর রূপে আছড়ে পড়তে পারে এই ঝড়। আবহাওয়া দফতরের আধিকারিরা জানিয়েছেন, এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে ওমান উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। কেউ কেউ আবার মনে করছেন, দক্ষিণ পাকিস্তান অভিমুখে ধেয়ে যেতে পারে ঘূর্ণিঝড়। অর্থাৎ গুজরাটের কিছু অংশ সেক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে মনে করছে ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষজ্ঞরা। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘তাওকতে’। এই তাওকতে বা তাউটে শব্দের অর্থ জেকো। এবার এই ঝড়ের নামকরণ করেছে মায়ানমার । চলতি সপ্তাহেই ভারতের দিক থেকে একুশের প্রথম ঘূর্ণিঝড় তাওকতে আছড়ে পড়বে বলে পূর্বাভাস জারি করল ভারতের আবহাওয়া দফতর। আগামী রোববারের,মধ্যে আরব সাগরে তৈরি হওয়া এই নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ের আকার নেবে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর। এরই মধ্যে মৎস্যজীবীদের আরব সাগরে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বলে জানা যায়। এদিকে, ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ, বিমান, হেলিকপ্টার, ছোট নৌকা এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি রাখা হয়েছে। আরব সাগরে ইতিমধ্যেই নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়েছে। রবিবারের মধ্যেই নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গোয়া ও দক্ষিণ কঙ্কন উপকূলে প্রবল বৃষ্টি হতে পারে। এরই মধ্যে ভারতের মহারাষ্ট্র, কেরালা ও গুজরাটে ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আজ শুক্রবার তাওকতে’র কারণে লাল সতর্কতা (রেড সিগন্যাল) জারি করা হয়েছে কেরালার পাঁচ জেলায়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে লাক্ষাদ্বীপসহ কিছু এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আবহবিদরা জানাচ্ছেন, আরব সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটির প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকেই সমুদ্র উত্তাল হবে। বিশেষত ১৪ থেকে ১৬ মে সমুদ্রের জলস্তর বাড়বে এবং জলোচ্ছ্বাস হবে বলেও সতর্কবার্তা জারি করেছে মৌসম ভবন। লাক্ষাদ্বীপ কেরল, কর্নাটক, তামিলনাড়ু উপকূলের পাশাপাশি ১৫ মে গোয়া এবং মহারাষ্ট্র উপকূলেও সমুদ্র উত্তাল হবে বলে পূর্বাভাস আবহবিদদের। লাক্ষাদ্বীপে সমুদ্রের ঢেউ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ কিলোমিটার পর্যন্ত উপরে উঠতে পারে বলেও সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর।
ভারতীয় আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, শনিবার সকালের মধ্যে নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। দক্ষিণ পূর্ব আরব সাগর ও লাক্ষাদ্বীপ সংলগ্ন এলাকায় নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। ১৫ তারিখের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।' শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড় উত্তর উত্তরপশ্চিম দিকে এগিয়ে গুজরাট ও সংলগ্ন পাক উপকূলের দিকে এগোবে। তীব্র জলোচ্ছ্বাসের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার থেকে লাক্ষাদ্বীপ এবং মালদ্বীপে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বইবে। হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত থাকবে বলেও সতর্কবার্তা জারি করেছে মৌসম ভবন। কেরল, গোয়া, কর্নাটক এবং মহারাষ্ট্রের উপকূলবর্তী এলাকাতেও রবিবার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া বইবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তাই মৎস্যজীবীদের বৃহস্পতিবার থেকে সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যাঁরা ইতিমধ্যে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছেন, তাঁদের বুধবারের মধ্যে ফিরে আসার আবেদনও জানিয়েছে মৌসম ভবন। আজ ১৪ মে থেকে থেকে ১৭ মে তারিখ পর্যন্ত লাক্ষাদ্বীপ, কেরল, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, দক্ষিণ কঙ্কন ও গোয়ায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ১৫ মে সকাল থেকে একই অঞ্চলে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে শুরু করবে। পূর্ব-মধ্য আরব সাগর, পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ-পূর্ব আরব সাগর এবং লাক্ষাদ্বীপ অঞ্চলে ১৬ মে সকাল থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে। কেরালা পর্যন্ত পশ্চিম উপকূলে উত্তরোত্তর বাড়বে ঝড়ের প্রকোপ। গুজরাটে বৃষ্টি শুরু হতে পারে ১৭ মে থেকে। এরপর আগামী দু'দিন বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। ১৮ মে সৌরাষ্ট্র, কচ্ছে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ৫৩টি দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি দলকে ইতোমধ্যেই এলাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকি দলগুলো স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
সূত্রঃ The Indian Express
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম ফেসবুক-১ ফেসবুক-২
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৪