বুমেরাং হলো একধরণের শিকার করার অস্ত্র! যা অস্ট্রেলিয়ার আদি অধিবাসী যারা অ্যাবোরোজিন নামে পরিচিত, তারা শিকার করার কাজে ব্যবহার করতো। এই অস্ত্রটি দেখতে অর্ধ চন্দ্রাকৃতির! "(", গরুর চোয়ালের দাঁতবিহীন হাড়ের মত খানিকটা! এর বিশেষ্যত্ব হলো, এই অস্ত্র লক্ষ্য বস্তুর দিকে ছুড়ে দিলে তা আবার ক্ষেপন কারীর বা শিকারীর হাতে ফিরে আসে। ব্লগে এতদিন আমাদের সর্ব বিষয়ে জ্ঞানী ও জ্ঞানদানকারী মহাজ্ঞানী গাজীমশাই বুমেরাং অস্ত্রে কুপেকাত হয়েছেন। তাকে কে বা কারা নাস্তিক, মাস্তিক, ফোবিক, মোবিক বিশেষণে জর্জরিত করে ফেলেছেন তার জন্য তিনি যারপরনাই মরমে (শরমে নয়!!) মরিয়া আছেন। তিনি তার সেই পোস্টে আমার মন্তব্যের জবাবে বলেছেনঃ দেখছেন, আপনার জ্বালায় আমার ত্রাহি অবস্হা; তাহার উপর, এখন কোন এক মহামতি আমাকে কিসব ফোবিক, মোবিক ডাকছেন! চাদু এবার বোঝেন বুমেরাং এর ঠেলা !! আপনার আজকের লেখার এই অংশটি বোধ হয় জোক অব দ্যা সেঞ্চুরির মর্যদা লাভ করবে। "আমি আপনাদের নিকের সামনে কোন বিশেষণ ব্যবহার করি না, আপনারাও আমার মতো সাদাসিদা ব্লগার, আপনারা নিশ্চয় কোন ধরণের অপরাধী নন।" হা হা হা । এতদিন আপনি মানুষকে পিগমী, ডোডোপাখী, আরবের বেদুইন, প্রশ্নফঁস জেনারেশন ইত্যাদি বিশেষণে ভূষিত করতেন তখন কি একবারও মনে হয়নি যে অস্ত্র আজ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছেন তা একদিন আপনার দিকে ফিরে আসতে পারে !! বুমেরাং এর অর্ধবৃত্তাকার আকৃতির জন্য তা পুনরায় নিক্ষিপ্তকারীর দিকে ফিরে আসে। আর বাস্তব জীবনে বুমেরাং হলো কারো ক্ষতি করতে কিছু করলে বললে তা দিয়ে উল্টে নিজের ক্ষতি হয়।
আপনি কোন ব্লগারের লেখাকেই মানসম্পন্ন বা সম্মানজনক মন্তব্য না করে তাকে গরুর রচনায় আখ্যায়িত করেন। এ কথা অনস্বীকার্য যে আপনি অনেক বিজ্ঞ ও জ্ঞানী ব্লগার। সমসাময়িক ও ইতিহাস সম্পর্কে আপনার বিশাল জ্ঞানের আড়ৎ আছে। তাই বলে মানুষকে অসম্মান করে বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে কথা বলা কি শালীনতা? শালীনতা শুধু বেশ-ভূষা, আচার-আচরণ, চলাফেরায় নম্র, ভদ্র ও মার্জিত হওয়া নয়; কথাবার্তায়ও শালীনতা থাকা আবশ্যক। শালীনতা একটি মহৎ গুণ। এ গুণ মানুষের মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়। আপনি এতদিন আপনার মন্তব্যে জিংজিং খেলার আমদানী করে হাসির খোরাক জুগিয়েছ্নে। আজ কিছু কঠিন বাস্তব সত্য যা আপনি জীবনে উপলব্ধি করেছেন তার সম্মূথীন হয়েছেন। তাই নিরুপায় হয়ে আপনি সহব্লগারদের অনুরোধ করেছেন আপনাকে নাস্তিক, মাস্তিক, ফোবিক, মোবিক না ডাকার জন্য।
মানুষের দিন সব সময়ে একরকম যায় না। জীবনে ভালো ও সফল সময় যেমন আসে, তেমনি আসে ব্যর্থতা পূর্ণ সময়। আপনি বলেছেন আজকের সকালটা আরম্ভ হয়েছে খারাপভাবে, পুরোদিন গেছে খারাপভাবে; মগজের এমআরআই করার দরকার ছিলো আরো ৪ সপ্তাহ আগে, ডাক্তারের অফিসের এক স্পেনিশ মেয়ের অজ্ঞতার কারণে উহা ভয়ংকরভাবে পিছিয়ে গেছে। তার মানে আপনি খুবই অসুস্থ্য। স্বাস্থ্য নিয়ে আপনি চিন্তিুত। এই বয়সে চিন্তা হবারই কথা। অনেক সময়ই কোন খারাপ মুহূর্তে আমরা ভাবি আমাদের কবর হয়ে গেছে, বা আমরা ডুবেছি। কিন্তু সেটা অন্যভাবে ভাবা যায়, যেমন আমরা ভাবতে পারি নতুন কোন কিছুর বীজ বোনা হয়েছে। আমরা আপনার দ্রুত রোগ মুক্তির জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি। দীর্ঘদিন আপনি থাকুন আমাদের মাঝে। সম্বভব হলেও জিংজিংও খেলুন। সমস্যা নাই। সমস্যা হলো আপনার নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা। সবসময় নেতিবাচক চিন্তা করলে সমস্যার সমাধান হয়না। তাই নিজে কথায় ও কাজে এনার্জিতে ভরপুর থাকুন এবং অন্যকে উৎসাহ দিন। মনে রাখবেন "যারা মনমরা থাকে বা অহমপূর্ণ আচরণ করে মানুষ তাদের থেকে দূরে থাকে।"
আপনার বিপক্ষে আজ যারা বলছে এতদিন আপনি তাদেরকেও একসময় নানা ভাবে হ্যানেস্তা করেছেন। তিক্ত বিরক্ত হয়ে তাই হয়তো আজ আপনার বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলছে। কারণ যারা খারাপ মানুষের খারাপ কর্ম দেখেও কিছু করেনা তাদের জন্যই পৃথিবী ধ্বংস হবে॥ এই কথাগুলো শুনএত আপনার খারাপ লাগারই কথা। কারন কোন মানুষই নিজ সম্বর্কে খারাপ মন্তব্য প্রত্যাশা করেনা। চোরও মনে মনে চায় তাকে মানুষ সাধু বলুক। রাতে কোনো এক সময়ে নির্জনে একাকী হয়ে দেখেন প্রতিদিনের কাজগুলো। খারাপ কাজগুলোর জন্য নিজের ভেতরে একধরনের অনুশোচনা আসবেই। আজ যদি আপনার অনুশোচনা জাগ্রত হয়ে থাকে আর আপনার অনুরোধটি যদি আন্তরিক হয় তবে আমার বিশ্বাস যারা আপনার বিরুদ্ধে কলম তুলছে তারাও অনুতপ্ত হবে। কেননা অনুশোচনা, উদ্বেগ ও আশা মানুষের তিনটি মনস্তাত্ত্বিক ক্রিয়া। মানুষের অস্তিত্বের সাথে এরা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে।
আপনি আমার এক মন্তব্যের জবাবে বলেছেনঃ আপনি তো স্বরচিত ঈশপের গল্প ছাড়েন মাঝে মাঝে, পুকুরে ঢিল মারলে ব্যাং'এর কি অবস্হা হয়, উহার খবর তো রাখেন না। ব্যাঙ এতদিন নিজেকে হাতির মতো ভেবেছে আজ ব্স্তবতায় ফিরেছে তাই ঢিলের আঘাতে তার ত্রাহি অবস্থা বুঝতে পেরেছে। it is a good lesson for frogs. আশা করি এ শিক্ষা ব্যাঙ মনে রাখবে অনেক দিন। আপনি আমাকে দেওয়া আপমার ১ম পন্তব্যের প্রতিমন্তব্যে বলেছিলেন "আপনার কথা শুনবে" যা আপনি পরে এডিট করেছেন। যা হোক আমি আমার সহব্লগারদের অনুরোধ করবো তারা যেন আপনাকে নাস্তিক, মাস্তিক, ফোবিক, মোবিক না ডাকে। চাইলে গালিও দিতে পারি !! তেবে সে গালিও আপনার জন্য বুমেরাং হতে পারে !! একটা বাস্তব ঘটনার কথা বলিঃ আমাদের পাশের গ্রামে এক ব্রাহ্মণ পরিবার বাস করতো। তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাবার সময় ছাতি ও পায়ের জুতা খুলে যেতে হতো। এমন প্রতিত্তি ছিলো তাদের। স্বাধীনতার পরে তাদের সেই হাক ডাক কমে যায়, কেউ কেউ অত্যাচার নিপীড়ন সহ্য না করতে পেরে দেশ ছাড়ে। শেষ অবধি সেই পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে চেয়েও পারেন নি। সে যা হোক তাদের বাড়িতে ছিলো বিভিন্ন ধরনের কলা গাছ। বেশ কলা হতো। কিন্তু চোরেরা পাকার আগেই হাপুস করে দিতো। কিন্তু ভদ্রতা ও শালীনতার ডিব্বা ব্রাহ্মণ মশাই প্রতিবাদ করার সাহস ও যোগ্যতা না থাকায় এক মজুর ঠিক করলেন চোরদের উদ্দেশ্যে গালি দেবার জন্য। প্রতি গালির জন্য ১ টাকা। তো মজুর মহা উৎসাহে গালি শুরু করলো " ওই বান্দির পুতরা, তোরা কলা চুরি করিস কেন? বাবু মশাই ভাত খাবে কি তোর বাপের ল্যাড় (আমাদের গ্রামে মনুষ্য বিষ্ঠাকে ল্যাড় বলে!) দিয়া !! বাবু মশাই কানে আঙ্গুল দিলেন !! প্রতি গালিতে ১ টাকা নয় ৫ টাকা দিয়ে তার গালি বন্ধ করে সে যাত্রায় মান ও কাঁন বাঁচােলেন !! সুতরাং আমাকে দিয়ে গালি দেবার আগে অন্তত বিশ বার ভাবুন !! (সমস্ত লেখায় এটুকুই রম্য)
ব্লগের থম থমে পরিবেশকে একটু বিনোদন দেবার এ ক্ষু;দ্র প্রয়াসকে কেউ ক্যাচাল ভেবে বিড়ালের ঝগড়ায় পানির ছিটা দিবেন না !! বিনোদিত হোন আপত্তি নাই, তবে বিষফেঁড়া হবেন না। সবাই ভালো থাকুন। গাজীসাব আমার পরম সুহৃদ তার রোগ মুক্তির জন্য সবাই দোয়া করবেন।
আপডেটঃ যাকে নিয়ে লেখাটি প্রকশ করা হয়েছে তিনি এটাকে রম্য হিসেবেই গ্রহণ করেছেন। তবে যারা এটাকে রম্য হিসেবে নিতে পারেন নি তাদের জন্য সমবেদনা !!
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম ফেসবুক-১ ফেসবুক-২
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:১৫