কুরআন মজীদের কয়েকটি সূরায় পর্দা-সংক্রান্ত বিধান দেওয়া হয়েছে। পর্দার বিষয়ে আল্লাহ তাআলা সকল শ্রেণীর ঈমানদার নারী-পুরুষকে সম্বোধন করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদেশ করেছেন তিনি যেন তাঁর স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে এবং মুমিনদের নারীদেরকে চাদর দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত রাখার আদেশ দেন। কিছু আয়াতে উম্মুল মুমিনীনদেরকেও সম্বোধন করেছেন, কোনো কোনো আয়াতে সাহাবায়ে কেরামকেও সম্বোধন করা হয়েছে। মোটকথা, কুরআন মজীদ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে মুসলিম নারী ও পুরুষের জন্য পর্দার বিধান দান করেছে। এটি শরীয়তের একটি ফরয বিধান। পর্দার উপকারিতা সম্পর্কে একটি নীতি কথার গণ্প উপস্থাপন করা হলো শিক্ষামূলক গল্প সিরিজের গল্পে শিক্ষামূলক গল্প-৩। নিম্নে শিক্ষামূলক গল্পের আগের লিংক সংযোজন করা হলো।
পর্দার উপকারিতাঃ শিক্ষামূলক গল্প-৩
"যুবতী ছাত্রী তার একজন শিক্ষক কে প্রশ্ন করলো ----!!!
ছত্রীঃ সৌন্দর্য যদি লুকিয়েই রাখতে হবে, তবে কেন নারীকে স্রষ্টা এতো সৌন্দর্য দিলেন ??
শিক্ষকঃ জবাবে বললেন তুমি কি কোন লোহার দোকানে গিয়েছো? ছাত্রীঃ জি, গিয়েছি।।
শিক্ষকঃ সেখানে লোহা কিভাবে রাখা হয়? ছাত্রী বললো সেখানে লোহাকে খোলা মেলা ভাবে রাখা হয়।
শিক্ষক আবার তাকে জিজ্ঞাস করলেন তুমি কি কোন রুপার দোকানে গিয়েছো? ছাত্রীর উত্তর হ্যাঁ গিয়েছি।
শিক্ষকঃ সেখানে রুপার গহনা কিভাবে রাখা হয়? ছাত্রীঃ যতনের সাথে রুপা সংরক্ষণ করে রাখা হয়।
শিক্ষক আবার বললেন তুমি কি কােন স্বর্ণের দোকানে গিয়েছো? ছাত্রীর জবাব জি হ্যাঁ গিয়েছি।
শিক্ষকঃ স্বর্ণের দোকানে স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহন কিভাবে রাখা হয়? ছাত্রীর উত্তর তা রুপার চেয়েও বেশী যত্নে সংরক্ষণ করে রাখা হয়।
শিক্ষক তাকে আবার প্রশ্ন করলেন তুমি কি কোন হীরার দোকানে গিয়েছো? ছাত্রীর উত্তর. :হ্যাঁ গিয়েছি।
শিক্ষকঃ হীরার দোকানে তা কেমনে রাখা হয়? ছাত্রীঃ তা স্বর্ণের চেয়েও বেশী গুরুত্ব সহকারে ঢেকে রাখা হয়।
শিক্ষকের প্রশ্ন কেন হীরাকে স্বার্ণের চেয়েও বেশী গুরুত্ব সহকারে রাখা হয় জান?
ছাত্রী :কেননা তার দাম অত্যন্ত বেশী তাই।যেন তাতে ময়লা না লাগে।
শিক্ষক মুচকি হেঁসে বললেন: ইসলামে মহিলাদের মান ও সম্মান হীরার চেয়েও অনেক অনেক বেশী। তাই তুমি পর্দায় থাকবে।
ছাত্রী তার শিক্ষককে আবার প্রশ্ন করলো তা হলে মেয়েদের সর্ট ড্রেসে সমস্যা কি স্যার?! আমাকেতো অনেকে সর্ট ড্রেস পড়তে বলে।
শিক্ষক বলনেন যারা তোমাকে সর্ট ড্রেস পরতে বলছে, তারা তোমাকে লোহার মত ব্যবহার করতে চাচ্ছে। তারা তোমার শরীরে দাগ দেবে, ময়লা লাগাবে, মরিচা ফেলবে। তারপর ছুড়ে ফেলে দেবে ডাস্টবিনে। ওরা কোনদিন তোমাকে সৌন্দর্যময় হীরা ভাববে না, বরং ভাববে লোহা। যা সাময়িক ব্যবহারের পর ফেলে দেবে। তাই একটু বিবেক বুদ্ধি দিয়ে ভেবে দেখ, তোমার মান সম্মান ও ভবিষ্যৎ এর কথা । মনে রাখবে এই দুনিয়াই কিন্তু শেষ নয়, আখিরাত বলেও কিছু একটা আছে যেখানে সব কিছুর হিসাব হবে। কেননা পর্দার বিধানটি ইসলামের একটি অকাট্য বিধান। কুরআন মজীদের অনেকগুলো আয়াতে এই বিধান দেওয়া হয়েছে। তবে পর্দা শুধু নারীর জন্য নয়, পুরুষের জন্যও প্রযোজ্য। নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই পর্দা পালন করা ফরজ। ইসলামে উভয়কেই পর্দা পালনের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। পর্দা পালন করা মুসলিম নারীর অনন্য রুচিবোধ ও সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ। পর্দা পুরুষের উন্নত চরিত্র গঠনের মাধ্যম; পাশাপাশি নারীর মান-সম্মান, ইজ্জত-আবরুর রক্ষাকবচও বটে। সুতরাং কোনো ঈমানদারের পক্ষে এই বিধানকে হালকা মনে করার সুযোগ নেই। আমরা যদি আমাদের পরিবারিক শান্তি ফিরে পেতে চাই তাহলে নারী-পুরুষ সকলকে পর্দা-বিধানের অনুসারী হতে হবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পর্দার পালনে কুরআন ও হাদিসের ওপর আমল করে পরকালীন জীবনের সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।।
১। মা-বাবাকে ভালো বাসুনঃ শিক্ষনীয় গল্প-১
২। মিথ্যার কাছে পরাভূত সত্য (শিক্ষণীয় গল্প-২)
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৭