somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রূপালী পর্দার তারকাদের আত্মহননঃ দ্বিতীয় পর্ব, বলিউড

২২ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রূপালী পর্দার তারকাদের আত্মহননঃ ১ম পর্ব, ঢালিউড
রিল আর রিয়েল লাইফের আকাশ-পাতাল ফারাক। ফলে সিলভার স্ক্রিনের ওপারের দৃশ্যগুলো অধরাই থেকেই যায় দর্শকদের কাছে। সেখানে অনেক কিছু ঘটে যাচ্ছে যা ঘুণাক্ষরেও টের পাওয়া যায় না। সম্পর্কের টানাপড়েন, কাজের চাপ থেকে শুরু করে নানা রকম সমস্যা, যা শুধু ব্যাকগ্রাউন্ডেই ঘটে চলেছে। ফলে মানসিক অবসাদ, আত্মহত্যার মতো ঘটনা বার বার দেখেছে বলিউড। পর্দার সামনে যে মানুষগুলো হাসি খুশি আর সুখী মানুষ হিসেবে থাকে অনেক সময়ই দেখা যায় পর্দার আড়ালে তারা সম্পর্কের টানাপোড়েন, কাজের চাপ থেকে শুরু করে নানা রকম সমস্যায় জর্জরিত। এর থেকে জন্ম নেয় মানসিক অবসাদ এবং যার শেষ ফল অত্মহত্যার মতো ঘটনা। এরকম বহু ঘটনার সাক্ষী হয়েছে বলিউড। বলিউডের এমন অনেক অভিনেতা রয়েছে যারা আত্মহনন করে নিজের জীবন শেষ করেছে। বাস্তবিক জীবন আসলেই অনেক কঠিন। এমন ঘটনা ঘটে যা অভাবনীয়। মানষিক চাপ, কাজের চাপ, জীবনের বর্থ্যতার গ্লানী, সম্পর্কের টানাহেঁচড়া যার সমাধান হিসেবে অনেক এই মৃত্যুর পথ বেঁচে নেন। এ তালিকায় নতুন করে যুক্ত হলেন সুশান্ত সিংহ রাজপুত। সুশান্ত সিং রাজপুতের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর থেকেই একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে যাচ্ছে। মানসিক অবসাদ, নাকি অন্য কোনও কারণে এমন অকালে প্রাণ ঝরে যাচ্ছে, তাই ভাবাচ্ছে সাধারণ মানুষকে।


সুশান্ত সিংহ রাজপুতের আগের ও পরের যেসব বলিউড তারকাদের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে, তাদের নিয়ে আজ থাকছে রূপালী পর্দার তারকাদের আত্মহনঃ পর্ব-২, বলিউড


প্রত্যুষা ব্যানার্জিঃ
জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল ‘বালিকা বধূ’ অভিনেত্রী প্রত্যুষা ব্যানার্জি ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল নিজের বাসার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। প্রেমিক রাহুল রাজ সিংয়ের সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি ও অন্য মেয়ের সঙ্গে প্রাক্তন প্রেমিকের সম্পর্ক গড়ার বিষয়টিকে আত্মহত্যার মূল কারণ হিসেবে ধরে নেয় পুলিশ। অনেক বন্ধুবান্ধব ও মা-বাবার দাবি, প্রত্যুষা আত্মহত্যা করেননি, রাহুলই তাকে খুন করেছেন। যদিও ময়নাতদন্তে জানা গেছে, দম বন্ধ হয়েই মৃত্যু হয়েছে তার। এতে আত্মহত্যার ইঙ্গিতই মিলেছে। তবে প্রত্যুষার আত্মহত্যার ঘটনার পেছনে প্রেমিক রাহুলকেই দায়ী করা হয়। মৃত্যুর আগে সন্তানসম্ভবা ছিলেন প্রত্যুষা। তবে তার মৃত্যু রহস্য আজও উন্মোচিত হয়নি।


শ্রীদেবীঃ
‘হাওয়া হাওয়াইকন্যা’ শ্রীদেবী। ২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ের এক সাততারা হোটেলের বাথটাব থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শ্রীদেবীকে। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে লেখা ছিল, ‘জলে ডুবে মৃত্যু।’ যদিও খুনের অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু বনি কাপুর পরিবার এটি মানতে নারাজ ছিলেন। বাথটবের জলে তিনি কীভাবে মারা গেলেন তা আজও রহস্যময় ও অস্পষ্ট! প্রসঙ্গত, মোহিত মারওয়ার বিয়েতে কাপূর পরিবারের সবাই উড়ে গিয়েছিলেন দুবাই। অনুষ্ঠান শেষে অন্যান্যরা ফিরে এলেও বনি কাপূর, শ্রীদেবী ও ছোট মেয়ে খুশি সেখানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কয়েকদিন কাছেপিঠে কোথাও থেকে বেরিয়ে আসার কথা ছিল। কে জানত, শ্রীদেবী সেই রাতেই পড়বেন এক অনিঃশেষ যাত্রায়, যেখানে একাই যেতে হয়!


দিব্যা ভারতীঃ
এক বছরে এক ডজন ছবির রেকর্ড করা অভিনেত্রী দিব্যা ভারতীর মৃত্যু হয় মাত্র ১৯ বছর বয়সে। ১৯৯৩ সালের ৭ এপ্রিল নিজের ভারসোভার ফ্ল্যাটের ব্যালকনি থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় তার। দিব্যা বিয়ে করেছিলেন বিখ্যাত প্রযোজক সাজিদ নাদিয়াওয়ালাকে। ওই দিন তাঁদের ফ্ল্যাটে ফ্যাশন ডিজাইনার নীতা লুল্লাসহ আরও বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব এসেছিলেন। চলছিল রাত-পার্টি। এমন সময়ে বাড়ির ব্যালকনি থেকে পড়ে মারা যান তিনি। পরিবার থেকে বলা হয়েছিল, টাল সামলাতে না পেরেই পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে শোনা গিয়েছিল দুর্ঘটনা নয়। পরিকল্পিত খুন। কিন্তু প্রমাণ মেলেনি। তাই কিছু বছর পর দিব্যার মৃত্যুর তদন্তও পুলিশ বন্ধ করে দেয়। তার আত্মহত্যা নিয়ে রহস্যের জট এখনো খুলেনি। সেটা এখনো রহস্যাবৃত। মৃত্যুর ২৭ বছর পরেও দিব্যা ভারতীর মৃত্যুও আজও এক অজানা রহস্য। শুধুই কী দুর্ঘটনা নাকি এর পিছনে ছিল কোনও ষড়যন্ত্র? উত্তর মেলেনি। পুলিশ ফাইল বলছে, দিব্যা ভারতীর মৃত্যু ছিল দুর্ঘটনা। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে মদ্যপ অবস্থায় পাঁচতলা অ্যাপার্টমেন্টের ব্যালকনির রেলিং ধরে হাঁটছিলেন দিব্যা, পা পিছলে পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে,মাথায় গভীর চোটের চিহ্ন ছিল দিব্যার। যদিও দুর্ঘটনার এই তত্ত্বকে আজও মেনে নিতে পারেনি ভক্তরা। দিব্যা ভারতীর মৃত্যু নিয়ে বলিউডের অন্দরেও অনেক গল্প শোনা যায়। কারুর মতে এটা ছিল ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে খুন, কারুর মতে আত্মহত্যা করেছিলেন অভিনেত্রী।


পারভিন ববিঃ
বলিউড কাঁপানো অভিনেত্রী পারভিন ববি। পারভীন গুজরাটের জুনাগাড়ে একটি পাঠান মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন। প্রথমে তিনি আহমেদাবাদের মাউন্ট ক্যারমেল হাই স্কুলে পড়েন, এরপর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ পাশ করেন। পারভীনের পিতার নাম ছিলো বালি মহাম্মাদ খান ববি যিনি ১৯৫৯ সালে মারা যান এবং পারভীনের মা জেমা বখতে বিবি ২০০১ সালে মারা যান। পারভীন আজীবন অবিবাহিত ছিলেন। ১৯৮০-র দশকে বলিউড কাঁপানো অভিনেত্রী পারভিন ববির শেষ জীবন কেটেছে খুবই কষ্টে। অত্যধিক মদ্যপান, সম্পর্কে ভাঙন তাকে ব্যক্তিগত জীবনে সুখী হতে দেয়নি। তার মৃত্যুদিন সম্পর্কে কারোরই কিছু জানা নেই। তার মুম্বাইয়ের তার মৃত্যু হয়। তার ফ্ল্যাটের দরজার সামনে খবরের কাগজ আর দুধের প্যাকেট জমতে দেখে প্রতিবেশিরা খবর দেয় পুলিশে। এরপর পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে তার। ধারনা করা হয় ২০০৫ সালের ২০ জানুয়ারি (বয়স ৫৫) তিনি মুম্বাইতে মৃত্যুবরণ করেন।


নাফিসা জোসেফঃ
ঠাকুরবাড়ির নতুন বৌঠান কাদম্বরী দেবীর মতো সুইসাইডকেই বেছে নিয়েছিলেন নাফিসা। ১৯৯৭ সালে মিস ইন্ডিয়া হয়েছিলেন তিনি। সে বছর মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় চূড়ান্ত পর্বেও পৌঁছেছিলেন নাফিসা। ছোট্ট কৌতুক ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সুভাষ ঘাইয়ের ‘তাল’ ছবিতে। তার পরে নাফিসার আলাপ হয় গৌতম খান্দুজার সঙ্গে। নাইট ক্লাবে আলাপ থেকে ক্রমে প্রেম। ২০০৪ সালে বিয়ে। বিয়ের কয়েক সপ্তাহ পরেই মুম্বইয়ের ফ্ল্যাট থেকে নাফিসার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। নাফিসা জোসেফ ২০০৪-এর ২৯ জুলাই মুম্বাইয়ে নিজের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয় ‘বিউটি কুইন’ নাফিসা জোসেফের। জানা যায়, ব্যবসায়ী গৌতম খান্ডুজার সঙ্গে তার বিয়ে হওয়ার কথা পাকাপাকি হয়েও ভেঙ্গে যায়। যার পরপরই অবসাদে চলে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছিলেন নাফিসা।


সিল্ক স্মিতাঃ
আইটেম গার্ল থেকে অভিনেত্রী হয়ে উঠতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল অভিনেত্রী সিল্ক স্মিতাকে। কিন্তু মুম্বইয়ের নিজের আবাসনে আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি। স্মিতা যেন বহু পুরুষের চোখের কামনার উৎস হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু শরীরি এই নারীদের মনের খবর ক’জন রাখে? তিনি যেন শরীরি বিভঙ্গে ঢেকেছিলেন অভাবের জ্বালা। শ্বশুরবাড়িতে স্বামী ও অন্যান্যদের অকথ্য অত্যাচার সহ্য করতে পারেননি | চেন্নাই এসে বিউটিশিয়ান থেকে হয়ে গেলেন ‘পর্নস্টার’। শেষমেশ স্মিতা বেছে নেন আত্মহত্যা। ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ১৯৯৬ শাড়ি দিয়ে পাখা থেকে নিজেকে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেন স্মিতা। তাঁর শরীরে প্রচুর পরিমাণে অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছিল। ছবি প্রযোজনা করতে গিয়ে তিনি ঋণের জালে ফেঁসেছিলেন বলে জানা যায়। তাঁর জীবনী নিয়েই বিদ্যা বালান অভিনীত ‘ডার্টি পিকচার’ ছবিটি হিট করেছিল। কেন করেছিলেন আত্মহত্যা? হতাশা, বিচ্ছেদের যন্ত্রণা নাকি অন্য কিছু, জানা যায়নি আজও।


গুরু দত্তঃ
১৯৫৩ সালে গুরুর সঙ্গে নেপথ্য গায়িকা গীতা দত্তের বিয়ে হয়। সুখের হয়নি দাম্পত্য। গুরু কাজের ব্যাপারে চরম নিষ্ঠাবান হলেও ব্যক্তিগত জীবনে শৃঙ্খলার অভাব ছিল। অত্যধিক ধূমপান এবং মদ্যপান করতেন। অভিনেত্রী ওয়াইদা রহমানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গীতা-গুরুর সম্পর্কে ভাঙন ধরায়। গীতা ছেলেমেয়েদের নিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করেন পেডার রোডের ফ্ল্যাটে। একাই থাকতেন গুরু। গুরুর মৃত্যুর আগের দিন তিনি গিয়েছিলেন গীতার কাছে, কারণ তিনি তাঁর দুই ছেলের সঙ্গে ছুটি কাটাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গীতা ছেলেদের পাঠাতে চাননি। কারণ গীতার কেরিয়ারে কাজ কমে যায় গুরু-ওয়াদিহার কারণে। ১৯৬৪ সালের ১০ অক্টোবর। সেই রাতেই গুরু দত্ত নিজের বেডরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন৷ তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে সফল হন তিনি। পাওয়া যায় স্লিপিং পিলস। গুরুকে মৃত অবস্থায় সেখানে পাওয়া যায়। গীতার জীবনও ভাল ছিল না। মদ্যপানে আসক্ত হয়ে সিরোসিস অফ লিভার হয় তাঁর। কিছু বছর পরে মারা যান। মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মারা যান গুরু দত্ত । তার মৃত্যু আজও রহস্যাবৃত। মদের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করার কারণে নাকি মৃত্যু হয়েছিল 'কাগজ কে ফুল' খ্যাত এই অভিনেতা-পরিচালকের। তার ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, মৃত্যুর আগের দিনও বেশ হাসিখুশি ছিলেন গুরু। আত্মহত্যা, নাকি ভুলবশত ওভারডোজ? আজও জানা যায়নি।


জিয়া খানঃ
মাত্র ২৫ বছর বয়সে এই বলিউড সুন্দরী জুহুর ফ্ল্যাটে আত্মহত্যা করেছিলেন জিয়া খান। সময়টা ছিল ২০১৩ সালের ৩ জুন। অভিযোগ উঠেছিল তার সেই সময়ের বয়ফ্রেন্ড সুরুজ পাঞ্চোলির বিরুদ্ধে। জিয়া যখন আত্মহত্যা করেন, তখন তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। জিয়ার মা দাবি করেছিলেন, পরিস্থিতির চাপে পড়ে জিয়া বাধ্য হয়েছিলেন এমন একটা চরম সিদ্ধান্ত নিতে। জিয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল সুইসাইড নোট।অভিযোগ উঠেছিল তার সেই সময়ের বয়ফ্রেন্ড সূরজ পাঞ্চোলির বিরুদ্ধে। জিয়া যখন আত্মহত্যা করেন, তখন তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। জিয়ার মা দাবি করেছিলেন, পরিস্থিতির চাপে পড়ে জিয়া বাধ্য হয়েছিলেন এমন একটা চরম সিদ্ধান্ত নিতে। জিয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল সুইসাইড নোট। এবার সামনে এল জিয়া খানের মৃত্যুরহস্যে নয়া মোড়। মৃত্যুর পর জিয়ার মুখ ও গলায় যে দাগ পাওয়া গেছে, তা থেকে ব্রিটেনের এক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মৃত্যু নিছক আত্মহত্যা নয়। বিষয়টি নিয়ে তিনি তাঁদের একজন রিপোর্টও পেশ করেছেন। জিয়ার মা রাবিয়া, সেই সময়ের ফরেন্সিক রিপোর্টে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাই তিনি ব্রিটেনের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ পায়েন-জেমসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি জিয়ার মেডিক্যাল রিপোর্ট, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, যাবতীয় ছবি ও CCTV ফুটেজ খতিয়ে দেখেন। তারপর রিপোর্ট প্রকাশ করেন তাঁরা। জিয়ার নিচের ঠোঁটে একটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল। আগে যখন এদেশের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা জিয়ার দেহ পরীক্ষা করেন, তাঁরা জানান আত্মহত্যার সময় দাঁতের ঘষা লেগে ঠোঁটে ওই দাগ হয়। কিন্তু পায়েন-জেমসের মতে, আত্মহত্যার সময় নয়। ওই দাগ আগেই হয়। জিয়ার মুখে কোনও শক্ত জিনিস দিয়ে আঘাত করার ফলেই ওই দাগ হয় বলে তাঁর মত। হাতে পারে জিয়ার ঠোঁটে ঘুষি মারা বা মুখের উপর হাত দিয়ে জোরে চেপে ধরার কারণে ওই দাগের উৎপত্তি। তবে দাঁতের চাপের দাগ কিছুতেই নয়।


অর্চনা পাণ্ডেঃ
২০১৪-র ২৯ সেপ্টেম্বর মুম্বইের ভারসোভাতে নিজের ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় মডেল অর্চনা পাণ্ডের। তার ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়। তাতে বয়ফ্রেন্ড ওমর পাঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন অর্চনা। এই নোটে তার এই দুর্ভাগ্যজনক পরিণতির জন্য পাঠানকে দায়ী করে গিয়েছেন ২৬ বছর বয়সী এই মডেল। পাঠান তাকে শারীরিকভাবে ব্যবহার করেছে এবং প্রয়োজন ফুরিয়ে যাওয়ার পরে অন্য এক নারীর কাছে চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অর্চনা। মৃত্যুর আগের এই জবানবন্দীর ভিত্তিতেই দীর্ঘ জেরার পরে গত বুধবার অর্চনা পাণ্ডের প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড ওমর আসিফ পাঠানকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার পুলিশের তরফে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।


কুলজিৎ রণধাওয়াঃ
প্রাক্তন মডেল কুলজিৎ রণধাওয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ২০০৬-এর ৮ সেপ্টেম্বর। জুহুতে তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে দেহ উদ্ধার হয়। হিপ হিপ হুররে, কোহিনূর-এর মতো জনপ্রিয় শো-এ ছিলেন তিনি। সুইসাইড নোটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে মানসিক চাপের কথা উল্লেখ করেছিলেন কুলজিৎ।


বিবেকা বাবাজিঃ
ভারতের অন্যতম সেরা মডেল বিবেকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তার ঘর থেকে পাওয়া একটি ডায়েরিতে লেখা ছিল- আই কিল। সন্দেহ করা হয়, বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে মনোমালিন্যই তার এই পথ বেছে নেওয়ার কারণ।


কুনাল সিংহঃ
‘দিল হি দিল ম্যায়’ ছবির অভিনেতা কুনাল সিংহ। ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রাক্তন গ্ল্যাডর্যা গস এই মডেলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ২০০৬-এর ৮ সেপ্টেম্বর। অভিনেতার বাবার দাবি, কুনালকে খুন করা হয়েছে।


মনমোহন দেশাইঃ অমর আকবর অ্যান্টনি, কুলি, ধরমবীর-এর মতো সুপারহিট হিন্দি ছবির পরিচালক মনমোহন দেশাই বাড়ির ব্যালকনি থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। তার ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, ফিল্মি কেরিয়ারে অসাফল্যের জন্যই আত্মহত্যা করেছেন পরিচালক। আবার এই তথ্যও উঠে এসেছে যে, পিঠের অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি। কিন্তু তার আত্মহত্যার আসল কারণ আজও রহস্য ঘেরা।


সুশান্ত সিংহ রাজপুতঃ
গত ১৪ জুন ২০২০ মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় নিজ ফ্ল্যাটে আত্মহত্যা করেন বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুত। মুম্বইয়ের বান্দ্রার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় অভিনেতার ঝুলন্ত দেহ। ১৪ জুন, ২০২০ রবিবার দুপুরে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো তার আত্মহত্যার খবর প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, লকডাউনের সময়টায় একাই বাসায় অবস্থান করছিলেন ৩৪ বছর বয়সী অভিনেতা সুশান্ত। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছে এটি আত্মহত্যা। মুম্বই পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে এক বার নয় আসলে দু'বার আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন অভিনেতা। প্রথমবার ব্যর্থ হন, কিন্তু দ্বিতীয় বার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। জনপ্রিয় এ অভিনেতা টেলিভিশন থেকে বলিউডে পা রেখেছিলেন ‘কাই পো চে’-র মাধ্যমে। বাণিজ্যিকভাবে যে ছবি সফলতাও পেয়েছিলো। এর পর মহেন্দ্র সিংহ ধোনির বায়োপিক ‘ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’, ‘রাবতা’, ‘কেদারনাথ’, ‘পিকে’, ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’, ‘ছিঁচোড়ে’র মতো একের পর এক হিট মুভিতে অভিনয় করেছেন তিনি।


সিয়া কক্করঃ
গত ২৬ জুন মাত্র ১৬ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন টিকটক স্টার সিয়া কক্কর। তবে কী কারণে সিয়া আত্মহত্যা করেছেন, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। তবে ব্যক্তিগত কারণেই ওই টিকটক স্টার আত্যহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ম্যানেজার অর্জুন সারিন। টিকটকে ১ মিলিয়ন ফলোয়ার সিয়ার। অন্যদিকে ইনস্টাগ্রামেও রয়েছে তাঁর ১ লক্ষ ফলোয়ার। ফলে কাজের জগতের জন্য নয়, ব্যক্তিগত কারণেই সিয়া কক্কর আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।


সন্ধ্যা চৌহানঃ
গত ৫ জুলাই সন্ধ্যায় আত্মহত্যা করেন ভারতের আরও এক টিকটক তারকা। তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা চৌহান নামের ওই তরুণী দিল্লির গ্রিন পার্কে নিজের পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন। তিনি যখন আত্মহত্যা করেন বাসায় তখন শুধু তার মা ছিলেন। তার আত্মহত্যার বিষয়টি টের পেয়ে তার মা পুলিশকে খবর দেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


সুশীল গৌড়াঃ
গত ৮ জুলাই দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা সুশীল গৌড় আত্মহত্যা করেছেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। কর্নাটকের মন্দ্যা জেলায় নিজের বাড়িতেই আত্মহত্যা করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৩০ বছর। তবে ঠিক কী কারণে অভিনেতা সুশীল আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তা এখনও রহস্যাবৃত। অন্তপুরা নামে একটি দক্ষিণী সিরিয়ালে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সুশীল গৌড়া। ঠিক কী কারণে এমনটা ঘটালেন তিনি, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে তদন্তকারীরা। সুশান্ত কেন আত্মঘাতী হয়েছেন, তাও এখনও জানা যায়নি স্পষ্ট ভাবে। সুশীলের ক্ষেত্রেও একই ধোঁয়াশা থেকে গেল। এত কম বয়সে কেন নিজেকে শেষ করে দিলেন অভিনেতা, হতবাক সকলে। কন্নড় ভাষায় বহু ছবিতে অভিনয় করেছেন সুশীল। টেলিভিশনেও সুশীল অভিনয়ের ছাপ রেখে গিয়েছেন। কন্নড় টেলিভিশনে ‘অন্তঃপুরা’ বলে একটি ধারাবাহিকে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন সুশীল। ফিটনেস ট্রেনার হিসেবেও বিখ্যাত ছিলেন তিনি। কয়েক দিন বাদেই মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল দুনিয়া বিজয়ের পরিচালনায় সুশীলের নতুন ছবি ‘সালাগা’।

তৃতীয় পর্বে আছে রূপালী পর্দার তারকাদের আত্মহননঃ হলিউডজানতে সাথে থাকুন

দেখুন রূপালী পর্দার তারকাদের আত্মহননঃ ১ম পর্ব, ঢালিউড

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৫০
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদ্ভুতত্ব.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩

অদ্ভুতত্ব.....

আমরা অনিয়ম করতে করতে এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, অনিয়মকেই নিয়ম আর নিয়মকে অনিয়ম মনে হয়। নিয়মকে কারো কাছে ভালো লাগে না, অনিয়মকেই ভালো লাগে। তাই কেউ নিয়ম মাফিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের কালো রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অধ্যাপক ইউসুফ আলী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৮




অধ্যাপক ইউসুফ আলী মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।

উনি ছিলেন বাংলার অধ্যাপক। ৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য হন। ৬৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার দশটা ইচ্ছে

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



প্রত্যেক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হয়-
যদি সকালটাকে দেখতে না পাই। কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর জিনিস কি? তাহলে বলব মানুষের বেচে থাকা। মরে গেলেই তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×