somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রূপালী পর্দার তারকাদের আত্মহননঃ প্রথম পর্ব, ঢালিউড

১২ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


“আত্নহত্যা” শব্দটি আমাদের মধ্যে এক ধরনের অস্হিরতা ও এক রকমের হাহাকার সৃষ্টি করে। আত্নহত্যা যেন হত্যাকান্ডের চেয়েও ভয়াবহ একটা ব্যাপার। বিশেষ করে রূপালী জগতের মানুষদের। আলো ঝলমল তারকা ভুবনের বাসিন্দাদের জীবন থেকে দপ করে নিভে যাওয়া সংগত কারণেই চমকে দেয়, ভাবিয়ে তোলে; বিশেষ করে চলচ্চিত্রশিল্পে। কারণ তাদেরকে আমরা চিনি তাই আমাদের মাঝে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হয়। শোবিজ মিডিয়াটা খুব ফার্স্ট লাইফ ও রঙিন। বাইরে থেকে যতটা রঙিন মনে হয় ভেতরে তারচেয়ে ভয়াবহ রকমের অন্ধকার। রঙিন জীবনটাকে মানুষ দেখেন কিন্তু অন্ধকার জীবনের অংশটা তাকে একাই বহন করতে হয়। এই মানসিক চাপটা সবাই নিতে পারে না। হতাশ হয়ে যান। তখনি ঘটে অনাকাঙ্খিত ঘটনা। রূপালী জগতের তারকাদের বার বার ঘর ভাঙার খবর, আত্মহত্যার খবর, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বিরুদ্ধে নানান ধরনের অভিযোগ, সবকিছু মিলিয়ে মিডিয়া সম্পর্কে সাধারণ মানুষের খুব একটা ভালো ধারণা নেই। অনেকেই মনে করেন তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন বলতে কিছু নেই। কিন্তু তারাও তো রক্তে-মাংসে গড়ে ওঠা মানুষ, সেটা ভুলে গেলে চলবে না। কারণ আমাদের মতোই জীবনযাপন তাদের। মনোবিজ্ঞানী ড. মেহতাব খানমের কথায়— দুজনের মধ্যে বিশ্বাসের জায়গায় ফাটল ধরলেই নানা সমস্যা তৈরি হয়। বিবাহবিচ্ছেদ থেকে আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটে। আর তারকাদের মধ্যে নানা হতাশার কারণেই শেষ পর্যন্ত এমন অপমৃত্যুর দিকে তারা পা বাড়ায়। যা মোটেও উচিত নয়। পৃথিবীর বেশিরভাগ ধর্মে আত্নহত্যা ক্ষমাহীন অপরাধ। পরিবার, সম্পদ, যশ, খ্যাতির কমতি না থাকার পরেও তার কেন বেছে নেন আত্মহননের মতো জঘন্য অপরাধের পথ তা আজো অজানা রয়ে গেছে। তবে এ প্রসঙ্গে স্নেহা নামের আত্মহত্যা প্রতিরোধ কেন্দ্রের পরিচালক লক্ষ্মী বিজয়কুমার বলেন, অভিনেত্রীরা বড় স্বপ্ন নিয়ে আসেন। কিন্তু ব্যর্থ হলে ভগ্ন ইচ্ছা নিয়ে তাঁরা আর বাঁচতে পারেন না। তাঁরা যৌন নিপীড়নেরও শিকার হন। এ বিষয়ে তামিল চলচ্চিত্রের ইতিহাস রচয়িতা বলেন, বিনোদন জগতে পুরুষ ও নারীর বৈষম্য অনেক অভিনেত্রীকে চরম পরিণতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিনয়, নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র ইতিহাসের অধ্যাপক প্রীতম কে চক্রবর্তী জানিয়েছেন, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিতে বড় ধরনের লিঙ্গবৈষম্য আছে। তিনি বলেন, ‘দুঃখ-দুর্দশা ভুলতে পুরুষেরা যে স্বাধীনতা পান নারীদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হয় না।’ তবে সব আত্মহত্যাই হতাশা থেকে হয়ে থাকে। কী আছে, কী নেই, সেই দোলাচলে মন পড়ে যায় বিপাকে। সেটা তারকার ক্ষেত্রেও কম নয়। খ্যাতির বিড়াম্বনা পেয়ে বসে বলেই অনেকের ধারণা। শুধুই কি খ্যাতির বিড়াম্বনা। পাওয়া না পাওয়ার হিসেব নিকেশ একজন মানুষকে এপথে হাটতে বাধ্য করে? না। তারকাদেরও থাকে মা-বাবার সঙ্গে সম্পর্ক, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক, এমনকি সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না হলে একটা পর্যায়ে গিয়ে হতাশায় ডুবে যান অনেকে। সংসারিক টানাপড়েন, কাজ কমে যাওয়া, সাফল্য না পাওয়া কিংবা প্রেম সংক্রান্ত নানাবিধ কারণে কমবেশি হতাশা দেখা যায় তাদের মধ্যেও। এসব প্রভাবিত করে আত্মহত্যার দিকে। তবে এর বাইরেও আরো অনেক কারণ থাকতে পারে। অভিনেত্রী মিতা নূর ও অভিনেতা অলি সাংসারিক কারণে বেছে নিয়েছিলেন আত্মহত্যার পথ। লাক্স তারকা রাহা প্রেম সংক্রান্ত কারণে আত্মহত্যা করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। পরবর্তীতে অনেক তারকা বিষাদগ্রস্ত হয়ে ঘুমের ওষুধ কিংবা বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। ন্যানসি, মমরাও এমন স্টেপ নিয়েছিলেন বলে শোনা যায়। শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি তো নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। কয়েকবার রিহ্যাব সেন্টারেরও আশ্রয় নিতে হয়েছে। অর্ণব, আনুশেহরাও বিষাদময় জীবনে নেশাকে টেনে নিয়েছিলেন। মায়ের মৃত্যুর কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন অভিনেত্রী নায়লা। রিসিলা স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়াতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। সাবিরা নামে এক মডেল বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যা করেন। মিডিয়ার বাইরেও অহরহ এই ধরনের ঘটনা ঘটে। তবে তা আমাদেরকে তেমন প্রভাবিত না করলেও রূপালী জগতের কারো্ আত্মহত্যা আমরা সহজে ভুলতে পারিনা।


অন্যদিকে আত্মহত্যার চেষ্টা করেও বেঁচে গেছেন লাক্স তারকা জাকিয়া বারী মম, কণ্ঠশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যানসি, মডেল-অভিনেত্রী প্রভা ও সারিকা। যদিও প্রভা এবং সারিকা আত্মহত্যা চেষ্টার খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। সামাজিক অবক্ষয়, বিদেশি অপসংস্কৃতির প্রভাব, মাদকাসক্তি, বেকারত্ব, সন্তানদের প্রতি মা-বাবার অবহেলাসহ আরও অনেক নেতিবাচক কারণে আসলে ছেলেমেয়েরা সহজেই আত্মহননের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। আর মিডিয়ায় এই প্রবণতা বাড়ার কারণ হলো নতুনদের ধারণা রুপালি জগতে আসতে পারলেই সহজে অর্থবিত্ত আর খ্যাতি পাওয়া যায়। পরে বাস্তবতার সঙ্গে স্বপ্নের দূরত্ব তৈরি হলেই অপমৃত্যুর পথে এগোয় তারা।এই ব্যাধি কিন্তু বেড়েই চলছে। তারকাদের আত্মহত্যা সবচেয়ে বেশি ভক্তদের নাড়া দিয়েছিল নব্বই দশকে জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহর আত্মহননের মধ্য দিয়ে। মাত্র সাতাশ বছর বয়সে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ইচ্ছামৃত্যু বেঁছে নিয়েছিলেন ওই প্রিয় নায়ক। এ মৃত্যু মেনে নিতে না পেরে তার অগণিত ভক্তদেরও আত্মহত্যা করতে দেখা গিয়েছিল। ভালোবাসাটা হয়তো এমনই। প্রিয় তারকা বেঁচে নেই, বেঁচে থেকে কি লাভ! এরপরেও বাংলাদেশে তারকাদের আত্মহত্যা কিংবা তার চেষ্টা থেমে থাকেনি। এক এক করে তা পরিণত হয় মিছিলে। প্রিয় তারকাদের এমন চলে যাওয়া কিংবা তার চেষ্টা করার বিষয়টিকে ব্যাপকভাবে নাড়া দেয় ভক্তদের। শুধু বাংলাদেশেই নয়, দেশ পেরিয়ে বিভিন্ন দেশের তারকারাও আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিয়ে ইচ্ছামৃত্যুর স্বাদ মিটিয়েছেন। বলিউড তারকা দিব্যা ভারতী, অভিনেত্রী জিয়া খান, ভিভেকা বাবাজি, দক্ষিণ ভারতের অভিনেত্রী সিল্ক স্মিতা, জনপ্রিয় মডেল ও টিভি তারকা কুলজিৎ রানধাওয়া, জনপ্রিয় টিভি তারকা ও উপস্থাপিকা নাফিসা জোসেফ, জনপ্রিয় অভিনেতা ও পরিচালক গুরু দত্ত, সুশান্ত সিং রাজপুত, এছাড়া হলিউড সুপারস্টার মেরিলিন মনরো, লুসি গর্ডন তো রয়েছেনই।বিদেশী তারকাদের মতো দেশের মিডিয়া অঙ্গণের তারকারাও বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা মতো কঠিন পথ বেছে নেন। কখনো ক্যারিয়ারে প্রতি হতাশ হয়ে, কখনোবা পারিবারিক কারণে। তারকাদের আত্মহননের প্রথম পর্বে রয়েছে বাংলাদেশী তারকাকথন। পরবর্তী পর্বে থাকবে বলিউড. হলিউডের তারকাদের আত্মহত্যার সাতকাহন।


ডলি আনোয়ারঃ
সত্তর দশকের জনপ্রিয় ও প্রতিভাবান টিভি ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ডলি আনোয়ার। ডলি আনোয়ারের চলচ্চিত্রযাত্রা শুরু হয় ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ দিয়ে। ছবির প্রধান নারী চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। মসিহউদ্দিন শাকের ও শেখ নিয়ামত আলী নির্মিত ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’-তে অভিনয়ের জন্য ১৯৭৯ সালে তিনি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ নারী অভিনয়শিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াও তিনি চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির পুরস্কার ও ফটোগ্রাফিতে জাতিসংঘের ইউনেস্কো পুরস্কার লাভ করেন ১৯৮৭ সালে। আর সূর্য দীঘল বাড়ি ছায়াছবির শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক হিসেবে আনোয়ার হোসেন জাতীয় পুরস্কার পান। আনোয়ার হোসেন পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। এছাড়া্ও তিনি কমনওয়েলথ স্বর্ণপদকসহ আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন ৬৮টি। কিংবদন্তি আলোকচিত্রী এবং প্রখ্যাত সিনেমাটোগ্রাফার আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে 'সূর্য দীঘল বাড়ি' চলচ্চিত্র তৈরির সময় ডলির পরিচয় হয়। পরবর্তীতে তারা বিয়ে করেন। বাংলাদেশের প্রখ্যাত নারীনেত্রী ও লেখক ড. নীলিমা ইব্রাহিম এবং প্রখ্যাত চিকিৎসক ও বারডেমের প্রতিষ্ঠাতা ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিমের মেয়ে তিনি। পরিবার, সম্পদ, যশ, খ্যাতির কমতি ছিল না। তবুও ১৯৯১ সালের ৩ জুলাই মাসে ডলি আনোয়ার বিষপান করে আত্মহত্যা করেন। আনোয়ার হোসেন তখন তার পাশে ছিলেন না। আত্মহত্যার পর নানা রকম গুজব শোনা যায়। বলা হয়, ডলি আনোয়ারের স্বামী আনোয়ার হোসেন তাকে তালাকনামা প্রেরণ করেন যা সহ্য করতে না পেরে ডলি আনোয়ার বিষপান করেন। এই গুজবের কোন সত্যতা প্রমাণিত হয় নি, ফলে আরও অনেকের মতই ডলি আনোয়ারের এই মৃত্যু রহস্যই থেকে যায়।


মডেল সুমাইয়া আজগর রাহাঃ
অভিনেত্রী ও মডেল ও লাক্স-তারকা সুমাইয়া আজগার রাহার মোহাম্মদপুরের চানমিয়া হাউজিংয়ের ২ নম্বর সড়কের ৪১/সি মেঘহিল ভবনের চতুর্থ তলার বি-১০ ফ্ল্যাটে আত্মহত্যা করেন। প্রেমিক চলচ্চিত্র নায়ক অনন্ত জলিল, বয়ফ্রেন্ড শাকিব ও নিজ পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনের কারণে লাক্স তারকা সুমাইয়া আজগর রাহা আত্মহত্যা করেছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল মিডিয়াপাড়ায়। ২০১০ সালের ১৬ এপ্রিল মুক্তি পাওয়া । ইফতেখার চৌধুরী পরিচালিত ‘খোঁজ দ্য সার্চ’ ছবিতে নায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় করেন এম এ জলিল অনন্ত। নায়িকা ছিলেন বর্ষা। ওই ছবিতে সহ-অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করেন রাহা। এছাড়াও তিনি একাধিক টিভি নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের মন কাড়েন। রাহার আত্মহত্যা ব্যাথিত করে ভক্ত-দর্শকদের। তখন থেকেই অনন্তর সঙ্গে রাহার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই ছবিরই নায়িকা বর্ষাকে ২০১১ সালে বিয়ে করেন অনন্ত। এতে রাহার সঙ্গে সম্পর্কের কিছুটা ভাটা পড়ে। পাশাপাশি মিডিয়ারই এক ছেলের সঙ্গেও রাহা প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। স্বামীর প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি বর্ষা জানার পর তাদের দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। রাহার ঘনিষ্ঠজনরা বলেছেন, রাহার পরিবার ধর্মভীরু। তার বাবা-মা ধর্মীয় অনুশাসন কঠোরভাবে মেনে চলেছেন। কিন্তু রাহা ছিলেন ঠিক এর উল্টো। তার উগ্র চলাফেরা ও কর্মকাণ্ডে কখনোই সায় দেননি তারা। বরং এ বিষয়ে মেয়েকে অনেকবারই সাবধান হতে বলেন। মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের তিক্ততা ছিল চূড়ান্ত। কিন্তু কোনো কিছুই রাহাকে দমাতে পারেনি। নিজ ফ্ল্যাটে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন রাহা। কিন্তু এখনো এই আত্মহত্যার কেনো কারণ পাওয়া যায়নি। তবে ‘চিত্রনায়ক অনন্তকে জড়িয়ে রাহার মৃত্যু নিয়ে গুঞ্জন ওঠে। যা এই গুঞ্জনকে উড়িয়ে দেন তার পরিবার।


মিতা নূরঃ
নব্বই দশকে টিভির মিষ্টিমুখ মিতা নূর। বিজ্ঞাপন বা নাটক; সবখানেই নিয়মিতই দেখা মিলতো লাস্যময়ী এই অভিনেত্রীর। মিতার সহকর্মীরা বলেন, সবসময় হাসি মুখে থাকতেন তিনি। নিজে হাসতেন এবং অন্যদেরও হাসাতেন।এমন একজন না রীর জীবনে কী এমন ঘটলো যে হুট করে তিনি আত্মহত্যা করে বসলেন! সেই রহস্য আর জানা যায়নি। ২০১৩ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসার ড্রয়িংরুম থেকে অভিনেত্রী মিতা নূরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে মিতার পোস্টমর্টেম রিপোর্টে আত্মহত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়। মিতা নূরের পিতা এর সমর্থন করে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্বামীর সঙ্গে অনেকদিন ধরেই বনিবনা হচ্ছিলো না মিতার। সেই অভিমান থেকেই নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এর আগেও মিতা দু’দুবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলেও তথ্য দেন তার বাবা। তবে মিতা নূরের আত্মহত্যার খবরটি মেনে নিতে পারেননি শোবিজের প্রায় কেউই। অনেকে সরাসরি মুখ না খোললেও এই মৃত্যুকে রহস্যজনক বলেই মনে করেন। কেউ কেউ মিতা নূরকে স্বামীর পরকীয়ার বলি বলে উল্লেখ করে থাকেন।


মঈনুল হক অলিঃ
বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী, থিয়েটার-কর্মী, মডেল ও অভিনেতা মঈনুল হক অলি। ২০১২ সালের ২৭ মার্চ গভীর রাতে আত্মহত্যা করেছেন মডেল ও অভিনেতা অলি। ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পারিবারিকভাবে অলি বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে তার দাম্পত্য জীবন ভালো যাচ্ছিলো না বলে অলির ঘনিষ্ঠজনরা জানান। আর নিজের ক্যারিয়ার নিয়েও হতাশ ভুগছিলেন এ অভিনেতা। ঢাকার মালিবাগস্থ নিজ বাসায় স্ত্রী ও অন্যদের সঙ্গে ঝগড়া করে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। পারিবারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকমাস ধরে অলির সঙ্গে ঝগড়া চলছিল। এতে তিনি মানসিকভাবে একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন। মানসিক বিপর্যয় তিনি আর কাটিয়ে ওঠতে পারেননি। আর এ জন্যই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। 'লাইফবয়' খ্যাত মডেল ও অভিনেতা মইনুল হক অলির আত্মহত্যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। আত্মহত্যার সময় জলন্ত সিগারেটের আগুন থেকে তার পরিহিত পোশাকে আগুন লাগে। আত্মহত্যা সময় তার হাতে জলন্ত সিগারেট ছিল। সিগারেটের আগুন থেকে তার পরনের কাপড়ে আগুন লেগে যায়। কাপড় পোড়া গন্ধ পেয়েই অলির বাবা মা রুমে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।


সালমান শাহঃ
ঢাকাই সিনেমার অমর নায়ক সালমান শাহ। তার মৃত্যু এই ইন্ডাস্ট্রির কাছে দারুণ এক শোকের, আক্ষেপের এবং যাতনার। ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে যখন নক্ষত্র হয়ে জেগেছিলেন বাংলা সিনেমার আকাশে ঠিক তখনই নিভে গেলেন সালমান। মাত্র ২৭ বছর বয়সে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পৃথিবী ছেড়ে চলে যান জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ। অভিযোগ উঠে যে, তাকে হত্যা করা হয়; কিন্তু তার সিলিং ফ্যানে ফাঁসিতে হত্যাকাণ্ডের কোনো আইনি সুরাহা শেষ পর্যন্ত হয়নি। তুমুল জনপ্রিয় একজন অভিনেতা কেনে হুট করে আত্মহত্যা করে বসলেন সে প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি। তার মা ও ভক্তরা সালমানকে খুন করা হয়েছে দাবি করে নানা রকম কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে তার খুনের দায় নিয়ে সাবেক স্ত্রী সামিরা লড়ে যাচ্ছেন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য। তিনি এরমধ্যে গণমাধ্যমে মুখও খুলেছেন দীর্ঘ ২১ বছর পর। গত ২০১৭ সালে জাগো নিউজকে দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে তিনি সালমানের মৃত্যু নিয়ে খোলামেলা অনেক কথা বলেন।এখনো ধোঁয়াশার মধ্যে রয়ে গেছে তার মৃত্যু সহস্য। তবে বেশিরভাগের বিশ্বাস, পারিবারিক কলহই দায়ী এই মৃত্যুর পেছনেও। তার অস্বাভাবিক মৃত্যুকে মেনে নিতে পারেনি ভক্তরা। বেশ কিছু ভক্ত প্র্যিও নায়কের অন্তর্ধানের কষ্টে নিজেরাও বেঁছে নেন আত্মহননের পথ।


নায়লাঃ
লোকনাট্য দল বনানীর একজন সদস্য ছিলেন নায়লা। মঞ্চে কাজ করে নিজের অভিনয়ের দক্ষতাও বাড়াতে থাকেন। ‘ললিতা’, ‘পা রেখেছি যৌবনে’, ‘অ-এর গল্প’ ও ‘মুম্বাসা’সহ বেশ কিছু টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি। নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি উপস্থাপনার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন নায়লা। নায়লা বিটিভি, ইটিভি, বাংলাভিশন ও এশিয়ান টিভিসহ বেশ কয়েকটি চ্যানেলে উপস্থাপিকা হিসেবে যুক্ত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি বিটিভির `ভ্রান্তিবিলাত-কালের অপেরা` অনুষ্ঠানে উপস্থাপিকা হিসেবে কাজ করেছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই হতাশায় পেয়ে বসে তাকে। সম্প্রতি তার মা মারা যাবার পর তিনি আরো বেশি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন এবং তিনি তার ফেসবুকে হতাশামূলক স্ট্যাটাস দিতেন বলে জানান তার সহকর্মীরা। কি কারণে তার এই হতাশা, সে প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই ২০১৫ সালের ২০ মার্চ তিনি আত্মহত্যা করেন। শ্যামলীর বাসা থেকে নায়লার সিলিং ফেনে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকে মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। খুব বেশি জনপ্রিয় ছিলেন না বলেই তার চলে যাওয়াটা প্রভাব ফেলেনি শোবিজে।


পিয়াস রেজাঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও উদয়ীমান সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন নাঈম ইবনে পিয়াস রেজা। পিয়াস রেজা পরিবারের সঙ্গে থাকতেন রাজধানীর ভাষানটেকে। ২০১৪ সালের রোজা ঈদের দিন ছিলো। সেদিনই ফ্যানের সঙ্গে প্রেমিকার ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন এই গায়ক। তার পুরো নাম নাঈম ইবনে রেজা ওরফে পিয়াস। বয়স ছিলো মাত্র ২১। ‘একমুঠো সুখ’ ‘অবশেষে’ ‘সাদাকালো মন’- এর মতো বেশকিছু জনপ্রিয় গান রয়েছে তরুণ এই কণ্ঠশিল্পীর। জানা গেছে, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে পড়ার সময় সহপাঠীর সঙ্গে পিয়াসের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ভালোই চলছিল। হঠাৎ করে তাদের সম্পর্কের ইতি ঘটে। সেটা মেনে নিতে পারেননি পিয়াস। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে পড়ার সময় সহপাঠীর সঙ্গে পিয়াসের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ভালোই চলছিল। হঠাৎ করে কয়েক দিন আগে ওই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি ঘটে। ওই মেয়ের একটি ওড়না পিয়াসের কাছে ছিল। সেই ওড়না দিয়েই পিয়াস আত্মহত্যা করেছেন।


নায়ার সুলতানা লোপাঃ
বিটিভিতে প্রচারিত হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় ‘এইসব দিনরাত্রি’ ধারাবাহিক নাটকের টুনি চরিত্রে অভিনয় করা নায়ার সুলতানা ওরফে লোপা। নব্বইয়ের দশকে বিটিভিতে প্রচারিত ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকে ‘টুনি’ চরিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান লোপা। নাটকের শেষ পর্যায়ে ‘টুনি’ অসুস্থ হয়ে পড়লে সারা দেশের অসংখ্য মানুষ হুমায়ূন আহমেদের কাছে চিঠি লিখে টুনির প্রাণ রক্ষার আবেদন জানান। টুনির জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবরে অনেকে যেমন চোখের পানি ফেলেছিল, তেমনি দেশের বিভিন্ন স্থানে হয়েছিল মিছিলও। ২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর রাতে আত্মহত্যা করেন লোপা নায়ার। গুলশান ১ নম্বরের ১২৬ নম্বর রোডের নিজ ফ্ল্যাট থেকে নায়ার সুলতানার লাশ উদ্ধার করে গুলশান থানার পুলিশ। লাশটি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে শাড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়। পারিবারিক অশান্তির কারণেই নাকি এই অপমৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। তবে সুরতহাল রিপোর্টে পুলিশ উল্লেখ করে, নায়ারের দুই পায়ের হাঁটু খাটের সঙ্গে লাগানো ছিল। গলার ডান দিকে কালো দাগ ও বাঁ হাতের কবজিতে আঘাতের কাটা দাগ ছিল। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে অভিনেত্রী নায়ার সুলতানা লোপা ‘আত্মহত্যা‘ই করেছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়।


মডেল জ্যাকুলিন মিথিলাঃ
প্রথমে গুজব মনে হলেও পরে নিশ্চিত হওয়া গেছে মডেল জ্যাকুলিন মিথিলা আত্মহত্যা করেছেন। মূল ধারার মিডিয়ায় তিনি খুব বেশি আলোচিত না হলেও সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে আলোচনা-সমালোচনার শীর্ষে ছিলেন। সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য বেছে নিয়েছিলেন ভুল পথ। যার শেষ পরিণতি হলো জীবননাশে। ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে চট্টগ্রামের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন মিথিলা। এ ঘটনায় তার বাবা স্বপন শীল থানায় মামলা করেন। মিথিলার বাবা জানান, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া, শ্বশুরবাড়ির মানুষদের খারাপ ব্যবহারের কারণে তার মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। প্রসঙ্গত, ফেসবুকে খোলামেলা ছবি পোস্ট ও বিভিন্ন মন্তব্যের কারণে বেশ আলোচিত ছিলেন জ্যাকুলিন মিথিলা। আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে এ সংন্ত্রান্ত কয়েকটি পোস্টও করেন মিথিলা। ৩০ জানুয়ারি রাত ১১টা ৪৯ মিনিটে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘কালকে আমি আত্মহত্যা করব। কেউ আমাকে প্রত্যাখান করে নাই। আমিও কাউকে প্রত্যাখান করি নাই। কিন্তু আমি আত্মহত্যা করব।’ এছাড়া, ৩১ জানুয়ারি সকাল ৭টা ২৮ মিনিটে লিখেন, ‘ধীরে ধীরে মৃত্যুর পথে পা বাড়াচ্ছি।’


অভিনেত্রী তমা খান ইতিঃ
শোবিজে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন তমা খান। কিন্ত সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি তার। গতবছর (২০১৯) ৯ মে রাজধানীর মিরপুরে চিত্রপরিচালক শামীম আহমেদ রনির সাবেক স্ত্রী ও অভিনেত্রী তমা খান গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই দিন সন্ধ্যায় দুই বোন ফ্যানের সঙ্গে তমা খানকে ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু তমার মৃত্যুর কারণ কী সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি। তার পরিবারও মুখ খুলছে না। মৃত্যুর কারণ জানা না গেলেও তমা খানের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস পাওয়া যায়। বুধবার বিকালে ওই স্ট্যাটাস দেন এ অভিনেত্রী। সেখানে তিনি সাবেক স্বামী শামীম আহমেদ রনিসহ কয়েকজনের সঙ্গে বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন। আর স্ট্যাটাসে লেখেন- 'মরিলে কান্দিস না, আমার দায়!'। সেগুলো দেখে অনেকেই ফেসবুক লিখেছেন রনির কাছে প্রতারিত হয়েই নিজের জীবন শেষ করে দিলেন তমা।


সাবিরা হোসাইন
মডেল ও উপস্থাপক সাবিরা হোসাইন। সাবিরা বেশ কিছু পণ্যের স্থিরচিত্রে মডেল হয়েছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন। মডেলিং ছাড়াও উপস্থাপনায়ও তাকে দেখা গেছে। মোহনা টিভি ও গানবাংলা টিভিতেও কাজ করতেন তিনি।২০১৬ সালের ২৪ মে ফেসবুকে ‌‘সুইসাইড নোট’ ও ‘ভিডিও বার্তা’য় ঘোষণা দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন মডেল ও উপস্থাপক সাবিরা হোসাইন। প্রথমবার ছুরি দিয়ে আত্মহুতির চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু নিজের পেটে ছুরি ঢুকাতে ব্যর্থ হয়ে গলায় ফাঁস দেন মডেল সাবিরা। রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরের একটি বাসা থেকে মঙ্গলবার সকালে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সাবিরা ওই বাসায় একাই থাকতেন। নির্ঝর সিনহা রওনক নামের একজনের উদ্দেশে সাবিরা তার স্ট্যাটাসে লেখেন, আমি তোমাকে দোষ দিচ্ছি না। এটা তোমার ছোট ভাইকে বলছি। সে আমাকে যা ইচ্ছে বলেছে। সে আমাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। আর আমার প্রশ্ন হলো, তোমার কি একটুও ফিল হয়নি? সাবিরা আরো লিখেন, ‘আমাকে ব্যবহার করবে, সেক্স করবে আর আমি সরে যাব, এটা তো হতে পারে না। বিয়ের কথা বললে তোমার পরিবার অসুস্থ হয়ে যায়। আর সেক্সের কথা বললে সব ঠিক হয়ে যায়। ভালো ভালো আমি আত্মহত্যার চেষ্টা করছি। নির্ঝরকে ট্যাগ করে সবশেষে তিনি লেখেন, আমার মৃত্যুর জন্য সে দায়ী। যদি আমি মারা যাই, তাহলে এর দায় তার।’জানা যায়, সাবিরার প্রেমিক নির্ঝর একজন আলোকচিত্রী। ফেসবুকেও সাবিরার সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ ছবি পাওয়া গেছে।


সিনহা রাজঃ
২০১৬ সালের ১৪ জুন সিনহা রাজ নামের মডেল গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। মিডিয়ায় সিনহা রাজ নামে পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম মাহাতারা রহমান শৈলী। ১৪ মে মঙ্গলবার রাত ১২টার পরে মহাখালীর দক্ষিণপাড়ার ভাড়া বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সিনহাকে দেখতে পেয়ে তার স্বামী অভিজিৎ ও প্রতিবেশীরা উদ্ধার করেন। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় মহাখালী মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সিনহা মা-বাবার একমাত্র সন্তান। পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রথম সংসার ছেড়ে নতুন সংসার গড়েছিলেন অভিজিতের সঙ্গে। আগের সংসারে একটি ফুটফুটে মেয়ে সন্তানও রয়েছে। নতুন সংসার গড়ার পর স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কাজ করতেন মিডিয়ায়। স্বামী অভিজিৎ অভিনয় করেন বিভিন্ন নাটকে। পরিচালনাও করেন। সিনহা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন। জানা গেছে, স্বামী অভিনেতা ও পরিচালক অভিজিৎ অভির সঙ্গে মনোমালিন্যের জের ধরে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ ঘটনায় পুলিশ অভিজিৎ অভিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানা গেছে। অভিজিৎ পুলিশকে জানিয়েছেন, আর্থিক সংকটের কারণে তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। ঘটনার দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। যার জের ধরেই আত্মহত্যা করেন সিনহা।


উপর্সংহারঃ আমাদের মাঝে সামাজিক মূল্যবোধ কমছে বলেই আত্মহননের প্রবণতা বাড়ছে। সঙ্গে রয়েছে বিদেশি অপসংস্কৃতির অনুকরণ। এখন সহজেই তরুণরা মাদকাসক্ত হতে পারছে। হতাশার কারণেই প্রথমে মাদকের আশ্রয় তারপর অপমৃত্যুর পথ বেছে নেয় তারা। মিডিয়ায় এসে কাজ না পেয়ে অনেকে অনৈতিক পথে পা বাড়ায়। তারপর হতাশা থেকে আত্মহত্যা করে। এই প্রবণতা দূর করতে পরিবার আর সমাজকে সত্যিকার অর্থে সচেতন হতে হবে। আত্মহননের তালিকায় কেবল দেশী তারকরাই নয়, রয়েছে বিদেশী তারকারাও…............জানতে চোখ রাখুন আগামী পর্বে

২। রূপালী পর্দার তারকাদের আত্মহননঃ দ্বিতীয় পর্ব, বলিউড

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৭
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদ্ভুতত্ব.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩

অদ্ভুতত্ব.....

আমরা অনিয়ম করতে করতে এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, অনিয়মকেই নিয়ম আর নিয়মকে অনিয়ম মনে হয়। নিয়মকে কারো কাছে ভালো লাগে না, অনিয়মকেই ভালো লাগে। তাই কেউ নিয়ম মাফিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের কালো রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অধ্যাপক ইউসুফ আলী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৮




অধ্যাপক ইউসুফ আলী মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।

উনি ছিলেন বাংলার অধ্যাপক। ৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য হন। ৬৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার দশটা ইচ্ছে

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



প্রত্যেক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হয়-
যদি সকালটাকে দেখতে না পাই। কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর জিনিস কি? তাহলে বলব মানুষের বেচে থাকা। মরে গেলেই তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×