ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় এসে হাউকাউ করছে। তাদেরকে সমর্থন করে আরো বহু মানুষ হাউকাউ ও উদ্ভট ধরনের যুক্তি প্রদান করে যাচ্ছে। যাইহোক মানুষ মানুষের বিশ্বাস থেকে যে কেউ যে কিছু করতে পারে কিন্তু সেটার একটি লিমিটেশন আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছে আমরা আরো ভালো কিছু আশা করছি, তারা বলতে গেলে দেশের টপ লেভেলের শিক্ষার্থী। এখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়লে বা পড়েছে বললে মানুষ চিন্তা করে মানুষটি অবশ্যই বুদ্ধিমান ও আধুনিক মন মানসিকতার। কিন্তু আমাদের এই আধুনিক ও বুদ্ধিমান শিক্ষার্থীরা বৃষ্টি কেনো হয়, পানিচক্র এগুলি নিশ্চয়ই স্কুলে থাকতে পড়ে এসেছে। একটা মানুষের পানি চক্র সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে সে অবশ্যই বুঝতে পারবে বৃষ্টি কেন হয়, আর বৃষ্টি না হওয়ার বা কারণ কি।
নামাজ পড়লে যদি বৃষ্টি আসতো তাহলে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি বৃষ্টির জন্য নামাজের উপরেই থাকতো। কিন্তু তারা সেটা করছে না, তারা করছে ক্লাউড সিডিং, অর্থাৎ কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামাচ্ছে।
আধুনিক বিশ্বে যারা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে তারা জানে আগামী কয়েক যুগ পর পৃথিবী এমন অবস্থায় চলে যাবে প্রযুক্তিতে দক্ষ না হলে মানুষ যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে না। দেশের অর্থনীতি, সামাজিক পরিস্থিতি সবকিছুই নিচের দিকে নামতে থাকবে। দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিস্থিতি আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য দরকার আধুনিক মন মানসিকতা ও কুসংস্কার মুক্ত দক্ষ লোকবল। আর দক্ষ লোকবল উৎপাদনের কারখানা হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ঢাকা মেডিকেল এসব জায়গা। কিন্তু এখানে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়ে পৃথিবী ঢাল তলোয়ার দিয়ে শাসন করার জন্য চেষ্টা করছে। এমন একটি জেনারেশন শেখ হাসিনা রেখে যাচ্ছে যারা দেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার বদলে স্থির করে রাখবে অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে পিছনে নিয়ে যাবে।
বলা হয়ে থাকে বুদ্ধিমান লোকজনকে অপশাসন করাটা শাসকদের জন্য বেশ কঠিন। তাই তারা চায়, তারা যাদেরকে শাসন করবে জ্ঞানে বিজ্ঞানে, কথায় কর্মে তারা যেন তাদের উপরে না চলে যায়। তাদেরকে যেন শাসন করতে গিয়ে বিজ্ঞ মানুষের চ্যালেঞ্জে পড়তে না হয়। অবস্থা দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে তেমন একটি জেনারেশন সৃষ্টি করে দিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামীলীগ সরকার!
যাইহোক, নামাজ পড়ার জন্য কখনোই বৃষ্টি আসবে না। তবে আমি খুবই অবাক হয়েছি এই কাজটি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা একযোগে অনুমতির জন্য কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছে। অথচ তার চেয়ে বেশি খুশি হতাম যদি একদল শিক্ষার্থী এই গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমানোর জন্য কি কি করা দরকার আমাদের মত ছোট রাষ্ট্রের সে ধরনের প্রস্তাবনা নিয়ে কোনো সেমিনার করলে। অথবা স্বল্প খরচে এবং সহজ প্রযুক্তিতে ক্লাউড সিডিং করে সাময়িকভাবে বৃষ্টি নামিয়ে যদি দেখাতে পারতো সেটাও অনেক আনন্দের হতো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট এসব প্রতিষ্ঠান দিন দিন এমন হয়ে যাচ্ছে এখান থেকে বড় ধরনের কোন আশা করা যাচ্ছে না। বেশ কয়েক বছর আগে শুনছিলাম গবেষণার জন্য এখানে যে ফান্ড দেওয়া হয় সেটাও পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। উদ্বৃত্ত টাকা তারা বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করে শেষ করে দিচ্ছে। কেননা যখন সরকার বলেছে উদ্বৃত্ত টাকা থেকে সরকার আয়কর কেটে নিবে!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫১