মনে করুন, বাসায় গিন্নী নেই।
আপনার ইচ্ছে হল সরিষার তেল, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, চনাচুর দিয়ে সুন্দর করে মুড়ি মেখে খাবেন। উপকরন সব রেডি, কিন্তু পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে চোখের জলে- নাকের জলে একাকার! এটা আর কিছু না রসায়নের কারসাজি। আবার পুরাতন কুয়া বা সেপটি ট্যাঙ্কে ঢুকে মানুষের মৃত্যুর খবর প্রায়ই শেনা যায়। অথবা ভুপালের সেই দুর্ঘটনা। কিংবা কয়েক দিন আগে শাহবাগে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস বা টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা। মনে আছে??
গণবিধ্বংসী অস্ত্র (Weapon of mass destruction - WMD):
এগুলো এমন অস্ত্র, যা অনেক মানুষকে মেরে ফেলার ক্ষমতা রাখে। যা প্রকৃতি, মনুষ্য নির্মিত (দালান) বা প্রাকৃতিক (পাহাড়) কাঠামোর বিপুল ক্ষতি সাধন করে। যেমনঃ রাসায়নিক অস্ত্র, পারমাণবিক অস্ত্র, জৈবিক অস্ত্র ইত্যাদি।
★★★রাসায়নিক অস্ত্রঃ
নাম থেকেই বুঝা যাচ্ছে, এটা কি। পর্যায় সারণীতে যে মৌলগুলো আছে, সেগুলো জোড়াতালি দিয়ে এটা তৈরী করা হয়। মানবদেহ তথা প্রাণিদেহের জন্য অতিমাত্রায় ক্ষতিকর, এমন রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে তৈরি অস্ত্রই হলো রাসায়নিক অস্ত্র। যেমনঃ সারিন গ্যাস, ভি-এক্স নার্ভ এজেন্ট, ক্লোরিন, জিবি, মাস্টার্ড, টিয়ার গ্যাস বা কাঁদানে গ্যাস (আমাদের দেশে হরতালে ব্যবহার করা হয়)।
১. সারিন গ্যাসঃ
এটি সেই গ্যাস যাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়া উত্তাল। যেটা সিরিয়াতে প্রয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। যেটা মানবদেহকে আক্রান্ত করার জন্য সবচেয়ে কুখ্যাত নার্ভ এজেন্ট। আচ্ছা, এটা আসলে কী??
জাতিসংঘ ঘোষিত ডব্লিউ-এম- ডি (WMD = Weapons of Mass Destruction) এর মতে, সারিন হলঃ
অরগানো-ফসফরাস যৌগ। এটি একটি নার্ভ এজেন্ট। যা স্বাদহীন, বর্নহীন ,গন্ধহীন ও স্বচ্ছ তরল(উদ্বায়ী)। যার কারণে মানুষ হামলা হওয়ার সাথে সাথে বুঝতে পারেনা । এর রাসায়নিক নাম হল আইসোপ্রোপাইল-মিথাইল ফসফোনো ফ্লোরিডেট। এটি বাতাসের চেয়েও ভারী এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তিকে মারার জন্য এক ফোটা সারিনই যথেষ্ট।(কপি)
২. ভিএক্স নার্ভ এজেন্টঃ
২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সৎ-ভাই, কিং জং-ন্যামকে এই রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করে হত্যা করা হয় । এটি তৈলাক্ত পদার্থ এবং অত্যন্ত শক্তিশালী এজেন্ট নার্ভ এজেন্ট। এর এক গ্রামের একশ ভাগের এক ভাগও; অর্থাৎ ভিএক্স-এর একটি ছোট্ট ফোঁটাও মানুষের চামড়ার ওপর পড়লে, তা কয়েক মিনিটের মধ্যে মৃত্যু ঘটাতে পারে।
গ্যাস মাস্ক ও নিরাপত্তা পোষাক পরিহিত এক সৈনিক। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের মুভিতে দেখতে পাবেন।।
★★★জীবাণু অস্ত্র বা বায়োলজিক্যাল উইপনঃ
বায়োলজিক্যাল এজেন্ট (জীবাণু অস্ত্র) হলো একটি বিশেষ ধরনের অণুজীব, যা যুদ্ধ ক্ষেত্রে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অণুজীবগুলোকে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে জেনেটিক্যালি বদলে ফেলে স্বাভাবিক কার্যক্ষমতার থেকে কয়েক'শ গুণ বেশি কর্মক্ষম করে তোলা হয়। এই জীবাণুগুলো বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টি করে শত্রুদের নির্বংশ করে। যেমনঃ অ্যানথ্রাক্স জীবাণু, র ্যাবিট ফিভার, প্লেগ, টাইফাস, গুটিবসন্তের জীবানু সহ আরো অনেক ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া।
এত কিছু থাকতে রাসায়নিক অস্ত্র কেন?
এক কথায় উত্তরঃ লাখ টাকা দিয়ে স্নাইপার রাইফেল কিনে সারাদিনে দু-চার জনকে মারার চেয়ে, কয়েক হাজার টাকা খরচ করে কয়েক মিনিটের মধে হাজারো শত্রুকে নির্বংশ করার জন্য।
চোরের মায়ের বড় গলাঃ
সিরিয়ার ঘটনা নিয়ে আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেন খুব লাফাচ্ছে। রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না, ভালো কথা। ক্ষেপনাস্ত্র, মিসাইল, বন্দুক, বোমা ওগুলো কি নিষ্পাপ শিশু??? রাসায়নিক অস্ত্রের সূচনা করেছে হারামি জার্মানি। এরপর নানা সময়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান, রাশিয়া, ইরাক বা হালের সিরিয়া তা ব্যবহার করেছে। মানবতা লঙ্ঘিত হয়েছে কিন্তু যুদ্ধ থামেনি। কসাইদের কাছে মানবতা কীসের???
সারমর্মঃ
১. রাসায়নিক হামলার কারনে অস্ত্রের রপ্তানিতে ভাটা পড়েছে, তাই মোড়লদের এত ----
২. যুদ্ধ নয় শান্তি চাই। কসাইরা নিপাত যাক্, মানবতা মুক্তি পাক।
অথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া + বই + নেট।
ছবিঃ একটাও আমার নয় (নেট)।
/
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:৪৯