তলোয়ার , যৌনতা, রাজনীতি আর বিভিন্ন চরিত্রের সাইকোলজিক্যাল চক্রান্ত , টানটান প্লট আর মধ্যযুগীয় ফ্যান্টাসি, হাতে– হাত ধরে এগিয়ে গেছে প্রতিটা এপিসোডে।আর এই গেম অফ থ্রোন(Game of Thrones) এর কাহিনী নেওয়া হয়েছে নিউইয়র্ক টাইমসের বেস্টসেলিং লেখক জর্জ মার্টিনের ফ্যান্টাসি সাগা “A Song of Ice and Fire” থেকে । আর এটা সন্দেহাতীত ভাবেই দর্শক ও ক্রিটিক উভয়ের মতেই বর্তমানের সেরা এবং সর্বকালের অন্যতম সেরা এপিক টিভি সিরিজ।গেম অফ থ্রোন যেন চোখ ও মনের ধ্রুপদী সঙ্গীত।এই খেলায় তুমি হয় জিতবে নয়ত মরবে,কোন মাঝামাঝি যায়গা নেই। IMDB রেটিং ৯.৪
(উইকি থেকে)
----------------------------------------------------------------------------------
.............................................প্লট
----------------------------------------------------------------------------------
পৌরাণিক জনপদ ওয়েস্টেরস জয় করার জন্য সাতটি অভিজাত পরিবার আগুন আর রক্তের খেলায় মেতে উঠেছে। ঐদিকে সমুদ্রের অপর পাড়ে অতীতের সিংহাসনচ্যুত টারগারিন পরিবারের সর্বশেষ জীবিত সদস্য পুরনো ক্ষমতা ফিরে পাবার পরকিল্পনায় নিমজ্জিত।প্রায় শতাব্দী হয়ে এলো, হোয়াইট ওয়াকারদের দেখা নেই কিন্তু গ্রেট ওয়ালের রক্ষকরা ভীত, হয়তবা সামনের শীতে তাদের দেখা মিলবে । গ্রীষ্মকাল প্রায় দশ বছর ধরে চলছে আর শীত আসছে। কিন্তু কথা সেটা না বরং বর্তমানে যেটা দুশ্চিন্তার কারণ সেটা হচ্ছে রাজার প্রধান উপদেষ্টা মারা গেছে আর কিং রবার্ট উইন্টারফলে এসেছে , তার সে পদে নেড স্টার্ককে আমন্ত্রণ জানাতে।এখানেই শুরু সিরিজের প্রথম মাইন্ড গেমের।
----------------------------------------------------------------------------------
...................................প্রভাবশালী চরিত্র
----------------------------------------------------------------------------------
নেড স্টার্কঃ
Sean Bean কে নিশ্চয় চিনতে পেরেছেন (Lord of the Rings trilogy)।হ্যাঁ,তিনিই এডার্ড নেড স্টার্ক, স্টার্ক পরিবারের প্রধান এবং নর্থের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর লর্ড ।সিরিজের শুরুতেই দেখা যায় নাইট ওয়াচ-ম্যানের শিরশ্ছেদের মত ঘটনা নিজ হাতেই দেওয়ার সময় তার দশ বছরের ছোট ছেলে ব্রানকে কর্তব্যপরায়ণ হওয়ার শিক্ষা দিতে সেখানে তার সঙ্গে রাখেন । অর্থাৎ যে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিবে, তার নিজের তা পালন করা উচিত এবং এর প্রতিক্রিয়ায় যা ঘটবে তার দায়িত্ব তাকে নিজেই নিতে হবে। আর এই ছোট্ট একটি ঘটনাতেই সে তার সততা ও সম্মান দর্শকের কাছ থেকে আদায় করে নেয়। এডার্ড নিশ্চিতভাবেই এই সিরিজের সবচেয়ে সম্মানজনক ব্যক্তি এবং ব্যাসিক্যালি ভাল মানুষ, যতটুকু ভাল একজন কিং এর পক্ষে সম্ভব। হ্যাঁ, সে দোষ-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয় কিন্তু একজন বিশ্বাসভাজন ব্যক্তি এবং তাদের-ই ক্ষমা করেন যারা ক্ষমার যোগ্য।আমার সবচেয়ে প্রিয় এবং আফসোসের একটি চরিত্র এবং আশা করি আপনাদের অনেকের-ও তাই হবে।
ট্রিয়ন ল্যানিস্টারঃ
সম্ভবত এই প্রথম একজন dwarf কোন মুভি বা টিভি সিরিজের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করল।তার রয়েছে অত্যন্ত ধূর্ত মন , সকলের তার প্রতি রয়েছে এক ধরনের underestimation এবং সেখান থেকে সে খুব ভাল ভাবেই ফায়দা নিতে জানে। যদি এই টিভি সিরিজের কোন হিরো থেকে থাকে তাহলে সে ট্রিয়ন ল্যানিস্টার , যে কিনা যথেষ্ট পরিমাণে নিষ্ঠুর তার মননে কিন্তু একই সাথে অন্যের ব্যক্তিগত আবেগ-অনুভূতির সাথে একাত্ম হওয়ার সুকুমার হৃদয় অর্থাৎ বিনোদন এবং মোরালিটির কমপ্লিট প্যাকেজ। আর সবসময় তার কাজে এবং কথায় একধরনের বন্য রসময়টা বিরাজ করে। তার কৌশল গত ডিসিশন অনেক ধরনের শারীরিক নির্যাতনের চেয়েও অনেক বেশি কার্যকরী।তার ডায়লগ থ্র-ইং যেন একধরনের পিওর আর্ট। তার একটা ডায়লগ খুব ভাল লাগে (ক্ষমতা হচ্ছে দেয়ালে ফেলা ছায়ার মত “And a very small man can cast a very large shadow.”
খালিসীঃ
টারগারিন ড্যাইন্যাস্টির নির্বাসিত প্রিন্সেস ডিনেরিস টারগারিন।যদিও তার ক্যারেক্টার এই দুই সিজন মিলিয়ে এখনও তেমন কোন প্রভাবশালী চরিত্র রূপে গড়ে উঠেনি । তবে এটা নিশ্চিত ভাবেই ধরা যায় পুরো সিরিজটাকে সে উলটপালট করে দিবে। কারণ সে ড্রাগনের বংশধর ড্রাগন-মাতা।
আরিয়া স্টার্কঃ
কঠোর –কঠিন একটা চরিত্র । যেখানে তার বড় বোন ট্র্যাডিশনাল সেলাই শিখতে কিংবা কুইন হওয়ার স্বপ্নে বিভোর সেখানে সে ব্যস্ত অস্ত্রচালনা শিখতে ব্যস্ত। ডায়লগ থ্রইং, এটিচিউড সবকিছুতে একটা ওয়াইল্ড ভাব আছে, যা যে কোন দর্শকে মুগ্ধ করবে।
জন স্ন, ব্রান স্টার্ক, গ্রেট কার্ল দ্রগো, রব স্টার্ক,ম্যাড কিং সহ আরও অসংখ্য ক্যারেক্টার আছে , যারা প্রত্যেকে স্বকীয় । এমনকি সাইড ক্যারেক্টার গুলাও কোন অংশেই কম আকর্ষণীয় নয়।
----------------------------------------------------------------------------------
...................................যে কারণে দেখবেন
----------------------------------------------------------------------------------
1. সর্বপ্রথম যে জিনিসটা দর্শকদের ইমপ্রেস করে সেটা হচ্ছে লুকিং ,যা সত্যকার অর্থেই পরিপূর্ণ মুভি দেখার অনুভূতি এনে দেয়। আর প্রতিটা এপিসোড তার আগের এপিসোডের চেয়ে ভাল।
2. এটা কোন টিপিকাল ফ্যান্টাসি না বরং সেই সাথে এপিক ড্রামা।যদি সন্দেহ হয় তবে, শুধুমাত্র প্রথম সিজনের প্রথম এপিসোড দেখলেই ফ্যান হয়ে যাবেন আশা করি।
3. গেম অফ থ্রোন শৈল্পিক এবং ১৮+(ফার্স্ট সিজন টিভির জন্য চরমভাবেই অশ্লীল,বাচ্চারা দেখতে পারে, তবে অবশ্যই এডিটিং এর পর)...প্রতিটা ক্যরাক্টারের স্ট্রং এবং রাজকীয় ম্যানারিজম আর মাস্টারমাইন্ড অভিনয় দক্ষতা।
4. নভেল থেকে মুভি কিংবা টিভি সিরিজ বানানো সবসময়েই খুব কঠিন।অথচ HBO এর এই এপিক টিভি সিরিজ টাকে এখন ধরা হচ্ছে ,সবচেয়ে ভাল এডাপ্টেশনগুলার মধ্যে, সবচেয়ে ভাল উদাহরণ হিসেবে।
5. এটার কাহিনী জটিল, পুরোপুরিভাবে আনপ্রেডিক্টেবল,স্যুরিয়ালিস্টিক,রোমাঞ্চকর, কল্পনাশ্রয়ী , যা আপনার দৃষ্টিকে নিয়ে যাবে খুব সংকীর্ণ অন্ধকার কক্ষ থেকে সুরম্য ক্যাসেল কিংবা মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে। আপনি শুধুমাত্র তাকিয়ে থাকার জন্যও সিরিজটা দেখতে পারেন।
6. অনেকে সিরিজটাকে "Lord Of the Rings" সাথে তুলনা করে থাকে (যদিও তুলনা আসলে হয় না,একটা ছোট পর্দায় লিজেন্ডারি হওয়ার পথে আর অন্যটা বড় পর্দায় লিজেন্ড)। পরিশেষে কিছু পাবলিক থাকবে যারা সিরিজটার রেটিং ৯ এর নিচে দিবে, তাদের ইগনোর করুন
৭. এবার একটু পরিসংখ্যান( উপরের কথাগুলা যে ফ্লাটারিং না তা প্রমানের চেস্টা )
টরেন্ট লিঙ্কঃ
সিজন ০১
সিজন ০২