আমার গার্লফ্রেন্ড কনা(ছদ্দনাম) থাকে পাবানায়। আমারে অনেকবার বলছে তার বাড়িতে যেতে। কিন্তু শ্বশুর বাড়ি বলে কথা আগেই যাই কেমনে কন?? কিন্তু আমার গার্লফ্রেন্ড নাছোড়বান্দা, না আমাকে যেতেই হবে। কি আর করার বললাম জো হুকুম মহারানী, আপনার সিদ্ধান্ত শিরধার্য।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে ১৮ তারিখ রওনা দিব ঠিক করলাম।এই দিন আবার আমার জন্মদিনও।জন্মদিন হওয়াতে একটু এক্ট্রা কিছু পেয়েছিলাম, সেটা অবশ্য বলা যাবে না। তা যাই হোক, যাওয়ার সময় অনেক মজা হল। দুজনে গল্প করতে করতে প্রকৃতি দেখতে দেখতে যেতে লাগলাম। আসলে ওর সাথে এত লম্বা journey তে কখনো যাওয়া হই নি। দুজনে journey তে এত মজা আগে জানলে …………থাক আসল কথায় আসি।
পাবনা দু-একদিন থাকার পর সে বলল, mental hospital এ যাবা। আমি বললাম , চল। দুজনে রওনা দিলাম। ওখানকার এক ডাক্তার আবার আমার gf এর মামা। তাই অনেক আদর-যত্ন পেলাম।আপ্নাদের বলে রাখি পাগলদের সম্পর্কে আমার আগে থেকে আগ্রহ, যদিও তারে বলা হই নি কি মনে করে না করে বলে। তা ডাক্তার uncle আমাদের অনেক পাগল ঘুরে ঘুরে দেখলেন।এক জায়গায় আমি থেমে বললাম, uncle আমি কি এনার(পাগল) সাথে কথা বলতে পারি। ‘অবশ্যই’ আমি ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম …
জিজ্ঞাস করলাম, ‘আপ্নার নাম??’
-কালাম
-হু… আপ্নি কবে থেকে এখানে আছেন ??
-মনে নাই (মাথা চুল্কাইয়া)
কিছুক্ষনের মধ্যে পাগলটা অনেক সহজ আচরন করতে লাগল।
আমি তৎখনাত তারে একটা প্রশ্ন করে বসলাম,
- আপ্নার মতে সবচেয়ে বড় পাগল কে ??

সে কিছুক্ষন মাথা চুল টানলো, তারপর বলল- ওই ডাক্তার, ওই শালা পাগল না হয়েও সারাজীবন পাগলা গারদে কাটায়। এই বলে কালাম হি হি করে হাসতে শুরু করলো।



এইসময় ডাক্তার uncle এর মুখখানা দেখার মত হয়েছিল।আমরা সেখান থেকে চলে আসলাম।


বিকেল পর্যন্ত থেকে চলে আসছি, এমন সময় দেখলাম এক ডাক্তার লোহার বল(লৌহগোল্ক যারা খেলেছেন তারা দেখেছেন)নিয়ে মাঠের দিকে যাচ্ছে

এগিয়ে গিয়ে ডাক্তার সাহেবকে জিজ্ঞাস করলাম, এটা দিয়ে কি করবেন।
বলল- বাবা, একটা পরীক্ষা করব।এই সামনের কয়েকজন পাগলের মধ্যে কেউ কি ভালো হয়েছে কি না দেখব।
-কিভাবে??

-এই লোহার বল মাঠে রেখে তাদেরকে খেলতে বলব। কেউ যদি সুস্থ হয়ে যায় সে লাথি মারবে না। আর মারলেও একবারের বেশি মারবে না।
-এটা তো অনেক ভয়ংকর!!!

-বাবা আমাদের অনেক সময় এর চেয়েও কঠিন পরীক্ষা করতে হয়। তার নির্বিকার উত্তর।

আমি আর কথা বাড়ালাম না। শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম কি ঘটে।
খেলা শুরু হল। সবাই বলটা তে লাথি মারতে শুরু করল। ব্যাথা পাচ্ছে তবুও লাথি মারছে। দেখলাম একজন দাড়িয়ে বলটার দিকে তাকিয়ে আছে। ডাক্তার সাহেবরে অনেক উচ্ছসিত মনে হল।ওনি destiny public এর মত বলেই ফেল্লেন, yes yes. একটারে তো ভালো করতে পারছি


ডাক্তার সাহেব জিগাইলো, তুমি বলে লাথি মারছো না কেন??

ছেলেটা হেসে হেসে উত্তর দিল,আমি head দেয়ার জন্য দাড়িয়ে আছি, আর হালা সইরা দাড়া, আমি বল দেখতে পারতেছি না।



ডাক্তার সাহেবের মুখের সব হাসি উবে গেল। চুপসে ঠিক বাতাস ভরা বেলুনের মত




.।.।.।.।.।.।.।.।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১২ দুপুর ২:১১