গত ১৯ জুলাই নিউইয়র্কে চিকিত্সাধীন অবস্থায় ক্যান্সারে আক্রান্ত বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ মারা গেছেন। এই লেখকের মৃত্যু পরবর্তীতে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে এক ধরনের হতাশা লক্ষ করেছিলাম। বিশেষ করে সাহিত্য প্রেমী যারা তাদের ভালোবাসা দেখে আমি আপ্লুত হয়েছি। আমি মনে করি তারা তাদের আপনজন হারিয়েছে। ব্লগ ফেসবুক পাড়ায় হুমায়ুন আহমেদ এর প্রতি স্মৃতিচারণ করেছেন সাহিত্য প্রেমীরা।
আবার কিছু মানুষ যারা জীবিত হুমায়ুন আহমেদ কে নাস্তিক বলে ঘোষণা দিয়েছিল, এমনকি মৃত হুমায়ুন আহমেদ এর জানাজা পড়া ইসলামে জায়েজ না বলে বিভিন্ন ব্লগে, ফেসবুক এ প্রচার প্রচারণা পর্যন্ত চালিয়েছিল তারা হুমায়ুন আহমেদ এর মৃত্যুতে যথেষ্ট পরিমাণ আনন্দ উযাপন করেছে। যা আমরা বিভিন্ন ব্লগ বা ফেসবুক এ দেখেছি। এমনকি, খোজ খবর নিতে শুরু করেছিলেন, দেশে বিদেশে এই জনপ্রিয় লেখক এর সমগ্র সৃষ্টিকে কলঙ্কিত করার লক্ষে তাদের অনুগত কিছু হলুদ সাংবাদিকদের মাধ্যমে। কতটুকু কী করা যায়। অযথা মামলা করে এই কুলাঙ্গাররা দেখানো শুরু করে দিয়েছে হুমায়ুন আহমেদ যেন তাদের সম্পত্ত্বি ছিল। আমরা জানি তারা কারা তারা হলো সময়ের নর্দমা কুলাঙ্গার জামাত শিবির। আমি এই ঘৃণ্য অপরাধের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি মামলার বাদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।
আমি জানি না ইসলাম ধর্মের কোন অংশে লেখা রয়েছে যে একজন মৃত মানুষের লাশ নিয়ে টানা হেচড়া করতে হবে। আজকে বিষয়টি ছিল যে মৃত হুমায়ুন আহমেদ এর নিকটাত্তয়ীও কেউ হলে মেনে নেওয়া যেত। মামলার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠত না। কিন্তু যে ব্যাক্তি মামলা দায়ের করেছে, মৃত হুমায়ুন আহমেদ এর সাথে ওই ব্যাক্তির সম্পর্ক কী ? খোজ নিয়ে যতটুকু জেনেছি, উনি হুমায়ুন আহমেদ এর কোনও আপনজন না। তাছাড়া উনি স্থানীয় জামাতের রাজনীতির সাথে জড়িত।
এখন প্রশ্ন হলো, হুমায়ুন আহমেদ বিষয়ে জামাতীদের চিন্তা ধারা অনমনীয় ছিল বরাবর জামাত সবসময় মনে করতো হুমায়ুন আহমেদ একজন নাস্তিক তাহলে জামাতের এই কর্মী মামলা করল কেন ? জীবিত হুমায়ুন আহমেদ কে, যে জামাত কোনও দিন সহজ ভাবে মেনে নিতে পারেনি। কিন্তু হটাত্ করে তাদের মুখে হুমায়ুন আহমেদ এর প্রীতি কেন ? সরকারের কাছে আবেদন জানাই বিষয়টি তদন্ত করা হোক।
উল্লেখ্য গত ১ আগস্ট ২০১২ ইং চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম নিজামুল হকের আদালতে হুমায়ূন আহমেদকে হত্যার অভিযোগে একটি মামলা করেন নজরুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক জামাত সমর্থক। যে মামলায় আসামি করা হয়েছে মরহুম হুমায়ুন আহমেদ এর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও অন্যপ্রকাশের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম কে। এই মামলার স্বাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে দৈনিক আমার দেশের বার্তা সম্পাদক, চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদীর বার্তা সম্পাদক ও লেখক আবদুল হাই শিকদারকে।
কিন্তু কেন ? এই মামলার কী খুব দরকার ছিল ?
আমি ইতিপূর্বে ব্লগে একটি লেখায় লিখেছিলাম, যে হুমায়ুন আহমেদ আমাদের অনেক কিছু দিয়ে গেছেন আমরা যেন শুধুমাত্র উনার সৃষ্টি গুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাই। তাহলে সত্যিকার অর্থে প্রকাশ পাবে হুমায়ুন আহমেদ কে আমরা কতটুকু ভালবাসতাম। কিন্তু না তা আর হয়নি,এই মৃত মানুষটার উপর চোখ পড়েছে শকুনের। হলুদ সাংবাদিকতা আর জামাতপন্থীদের অতিরিক্ত ভালবাসায় মৃত হুমায়ুন আহমেদ এর সর্বনাশ করে দিল। জানি না কবে বন্ধ হবে এই হীন প্রচেষ্টা তবে অনুরোধ করে বলব হুমায়ুন আহমেদ এর সৃষ্টি গুলো নিয়ে আলোচনা করুন। অন্য কিছু না।
ধন্যবাদ
@সুলতান মির্জা
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১২ রাত ৯:৪৭