somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"সম অধিকার, সম সুযোগঃ সবার জন্যই উন্নয়ন" - উন্নয়নের জন্য নারীর ক্ষমতায়ন

০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিশ্ব আজ উদযাপন করছে আন্তজার্তিক নারী দিবস। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অবদানকে তুলে ধরার প্রয়াসেই এই উদযাপন। প্রারম্ভিক অবস্থায় সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে দিনটি পালন করা হলেও সমকালীন বিশ্বে নারীর সংগ্রামকে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে তুলে ধরাই দিবসটির মূল লক্ষ্য।

প্রায় এক শতক যাবত দিবসটি বিশেষ নির্দেশনা নিয়ে পালিত হয়ে আসছে সারা বিশ্বব্যাপী। বিশ্ব জুড়ে অস্থিরতার শিকার নারীকে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে মূল্যায়নের প্রেক্ষাপটেই দিবসটির অবস্থান। বিশ্বের অনেক দেশে দিবসটিকে অফিসিয়াল ছুটির দিন হিসাবে পালন করা হয় যেমন, অ্যাঙ্গোলা, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, কম্বোডিয়া, চীন, কিউবা, জর্জিয়া, কাজাকিস্তান, লাওস, মাদাগাস্কার, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, রাশিয়া, সার্বিয়া, উগান্ডা, ইউক্রেন, ভিয়েতনাম, জিম্বাবুয়ে সহ আরো অনেক দেশে।

নারীর ক্ষমতায়ন সহ সুঅধিকার প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ আজ মানব সভ্যতার জন্য বিশাল চ্যালেন্জ। বিশ্বজুড়ে নারীর উন্নয়নে যেসব অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে বা হচ্ছে তারমধ্যে নারীশিক্ষা, চাকুরীক্ষেত্রে সম অধিকার প্রাপ্তি, রাজনৈতিক অঙ্গনে অংশগ্রহন সহ সমঅধিকারের জন্য আইনগত ভিত্তি উল্লেখ্যযোগ্য। কিন্তু উন্নত বিশ্বের তুলনায় উন্নয়নশীল বা উন্নয়নগামী বিশ্বে এচিত্র কিছুটা ভিন্ন। সেখানে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতার প্রতিফলন রয়ে গিয়েছে নারীর ক্ষমতায়নে। প্রসবকালীন উচ্চ মৃত্যুহার, পরিবারে সিদ্ধান্ত গ্রহন ও পরিকল্পনায় সুযোগহীনতা, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, যৌন হয়রানী আজো এবিশ্বের জন্য এক লজ্জা। পৃথিবীব্যাপী নারীর বিরুদ্ধে যেসব সহিংসতা পরিলক্ষিত হয়, তারমধ্যে ভয়াবহ হচ্ছে ‘honor killing’, নারী পাচার ও যৌন হয়রানী। দারিদ্রতা ও বিভিন্ন বির্পযয়ের প্রথম শিকারও হয় নারী। সে প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের মহাসচিব তার আর্ন্তজাতিক নারী দিবসে প্রদত্ত বানীতে নারীর বিরুদ্ধে সকল অসাম্যতা দূরকরণের জন্য “UNite to End Violence against Women” নামক ক্যাম্পেইনের ঘোষনা দিয়েছেন।

উন্নয়নের জন্য নারীর ক্ষমতায়নঃ প্রেক্ষিত বাংলাদেশ
বাংলাদেশে নারীর সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান সাম্প্রতিক কালে কিছুটা স্থিতিশীল হলেও সামাজের অন্ধকার কোনগুলোতে এখনো রয়েছে অনেক অসাম্যতা। প্রতিদিন পত্রিকার কোন না কোন পৃষ্ঠায় থাকে নারীর প্রতি অসাম্যতা, হয়রানি আর সহিংসতার খবর। এখনো প্রতিটি গৃহের নারীর কর্মকে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বলে রাষ্ট্রীয় ভাবে স্বীকৃত দেয়া হয়না। নারীর ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হলেও ভোটদান সুনিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি দেশের সবর্ত্র। হয়তো প্রতিটি গ্রামেই এখনো দেখা মিলে মজিদ-জমিলা চরিত্র।

সামগ্রিক ভাবে দেশের উন্নয়নে প্রতিটি মানুষেরই অবদান রয়েছে। প্রত্যেকের দক্ষতার যোগফলই রাষ্ট্রীয় অগ্রগতির মাপকাঠি। তাই রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের জন্য প্রথমেই বিবেচনা করতে হবে সুযোগ ও অধিকার বন্চিত অর্ধেক জনসংখ্যা, নারীর উন্নয়নের। সামগ্রিক বিবেচনায় নারীর ক্ষমতায়নের কোন বিকল্প এই মুহুর্ত্বে নেই। নারীর ক্ষমতায়নে যেসব কার্যকরী ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে হবে-
১) প্রাইমারী থেকে উচ্চ শিক্ষার প্রতিটি স্তরে নারীর সম অধিকার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে অংশগ্রহনে উদ্ধুদ্ধ করতে হবে। শিক্ষা গ্রহনের প্রতিটি স্তরে নারীর ঝরে পরার হার কমানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনে প্রতিটি স্তরে ইনসেনটিভের ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
২) শিক্ষা পরবর্তী নারীর কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দিতে হবে। এটা শুধুমাত্র নারীই নয়, দেশের প্রতিটি নাগরিকের এই অধিকারটি নিশ্চিতকরণে সরকারকে আন্তরিক হতে হবে। দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা লাঘব করে আর্ন্তজার্তিক বিনেয়োগকারীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে হবে।
৩) অফিস-আদালতে পুরুষের সাথে একত্রে কাজ করার অধিকার নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি কাজের বিনিময়ে ন্যায্য ও সমান প্রতিদান (বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি) পাবার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৩) নারীর আত্ব-কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি করতে হবে। নারীর জন্য স্বল্প সুদে এবং বন্ধক বিহীন ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪) নারীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সেলক্ষ্যে আইনগত প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করতে হবে।
৫) নারীর গৃহকর্মকে রাষ্ট্রীয় ভাবে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে।
৬) নারীর ভোটদানের অধিকার, সম্পত্তি লাভের অধিকার, আইনগত চুক্তিতে অংশগ্রহণের অধিকার এবং বিবাহ, অভিভাবক, ও ধর্মীয়গত অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।

আর এইসব নিশ্চয়তার আলোকেই সম্ভব নারীর ক্ষমতায়ন, সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ। আমরা রয়েছি সেদিনের প্রতিক্ষায়।


========================
তথ্য ও ছবিসূত্রঃ ইন্টারনেট

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১০ সকাল ১০:১৫
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রিয় কন্যা আমার- ৭৫

লিখেছেন রাজীব নুর, ১৬ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১:৩৩



প্রিয় কন্যা আমার-
আজ শুক্রবার। তোমার স্কুল নেই। অথচ আজ তুমি ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে বসে আছো। বলছো, মেকাপ বক্স দাও। মাকে মেকাপ করে দিবো। যেদিন তোমার স্কুল থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এক প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাকে ইসলামের হৃদয়ছোঁয়া আহ্বান

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২০

এক প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাকে ইসলামের হৃদয়ছোঁয়া আহ্বান

ক্যালিগ্রাফি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

প্রিয় যামিনী সুধা,

আপনার নাম আমাদের হৃদয়ে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার এক অমলিন আলো জ্বালায়। একজন প্রবীণ নাগরিক হিসেবে আপনি শুধু জীবনের অভিজ্ঞতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তদ্বির বানিজ্যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও এনসিপির নেতা

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১৬ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭

জনপ্রিয় অনলাইন এক্টিভিস্ট জুলকারনাই সায়েরের এক পোস্ট ভাইরাল হয়েছে গতকাল যেখানে রেলভবনে, রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) এর একান্ত সচিবের কক্ষে তদ্বির বানিজ্যে দেখা গেছে এনসিপির সংগঠক (হবিগঞ্জ) নাহিদ উদ্দিন তারেক ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

'লেখা আছে অশ্রুজলে’......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৬ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:৩৭

আমার গুম নির্যাতনের উপর লেখা 'গুম এবং অতঃপর' বইয়ের পাঠপ্রতিক্রিয়া লিখেছেন এসোসিয়েট প্রফেসর ডক্টর মো: আদনান আরিফ সালিম( Md. Adnan Arif Salim) । লিংক পাঠিয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক Mesbah Shemul লিংক-... ...বাকিটুকু পড়ুন

টরন্টোর চিঠি - "অতএব জাগ, জাগ গো ভগিনী!"

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই মে, ২০২৫ ভোর ৬:৩৭


গত বছর গ্রীষ্মের শুরুতে টরন্টোয় বসবাসরত আমার জন্মস্থান জেলা-শহর থেকে আগত অভিবাসীদের একটি পিকনিকে গিয়েছিলাম। ৫০–৬০ জন নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরের অংশগ্রহণে আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সকলে ছিলেন নারী। তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×